লগইন করুন
১২ বছর বয়সে পিতৃব্য আবু ত্বালিবের সাথে সর্বপ্রথম ব্যবসা উপলক্ষে শাম বা সিরিয়া সফর করেছিলেন। কিন্তু ‘বাহীরা’ রাহেবের কথা শুনে চাচা তাকে সাথে সাথেই মক্কায় ফেরৎ পাঠিয়েছিলেন।[1] এখন তিনি পঁচিশ বছরের পরিণত যুবক। কুরায়েশ বংশে অনেকে ছিলেন, যারা নির্দিষ্ট লভ্যাংশের বিনিময়ে ব্যবসায়ে পুঁজি বিনিয়োগ করতেন। কিন্তু নিজেরা সরাসরি ব্যবসায়িক সফরে যেতেন না। এজন্য তারা সর্বদা বিশ্বস্ত ও আমানতদার লোক তালাশ করতেন। খাদীজা বিনতে খুওয়াইলিদ ছিলেন এমনই একজন বিদুষী ব্যবসায়ী মহিলা। মুহাম্মাদের সততা ও আমানতদারীর কথা শুনে তিনি তার নিকটে অন্যদের চেয়ে অধিক লভ্যাংশ দেওয়ার অঙ্গীকারে ব্যবসায়ের প্রস্তাব পাঠান। চাচার সাথে পরামর্শক্রমে তিনি এতে রাযী হয়ে যান। অতঃপর খাদীজার গোলাম মায়সারাকে সাথে নিয়ে প্রথম ব্যবসায়িক সফরে তিনি সিরিয়া গমন করেন।[2] ব্যবসা শেষে মক্কায় ফিরে আসার পরে হিসাব-নিকাশ করে মূল পুঁজি সহ এত বেশী লাভ হস্তগত হয় যে, খাদীজা ইতিপূর্বে কারু কাছ থেকে এত লাভ পাননি।
[2]. ইবনু ইসহাক এখানে বিনা সনদে উল্লেখ করেন যে, শামে গিয়ে রাসূল (ছাঃ) একজন পাদ্রীর উপাসনালয়ের পাশে একটি গাছের ছায়ায় অবতরণ করেন। তখন পাদ্রীটি গোলাম মায়সারাকে এসে বলেন, এ ব্যক্তি কে? তিনি বলেন, ইনি হারামের অধিবাসী কুরায়েশ বংশের একজন ব্যক্তি। পাদ্রী বলেন, এই গাছের নীচে নবী ব্যতীত কেউ কখনো অবতরণ করেন না’ (ইবনু হিশাম ১/১৮৮)। এই পাদ্রীর নাম নাস্তূরা (نَسْطُورا)। সুহায়লী বলেন, ঈসা (আঃ) থেকে এত দীর্ঘ বছর পর্যন্ত ঐ গাছটি বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। অতএব এক্ষেত্রে সঠিক বর্ণনা এটাই হ’তে পারে যে, ঈসা (আঃ)-এর পরে এ যাবৎ কেউ এর নীচে অবতরণ করেন নি। ইবনু ইসহাক ব্যতীত অন্য কেউ উক্ত বর্ণনা করেছেন’ (ঐ, টীকা-৩)।
ইতিপূর্বে বাহীরা পাদ্রী এবং এখন নাস্তূরা পাদ্রীর ভবিষ্যদ্বাণী সমূহ বর্ণনা করে গল্পকারগণ প্রমাণ করতে চেয়েছেন যে, খাদীজা উক্ত কারণেই মুহাম্মাদ-এর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন (মোস্তফা চরিত ২৮৬-৮৮ পৃঃ)। অথচ এগুলি একেবারেই ভিত্তিহীন কল্পকথা মাত্র।