লগইন করুন
মুসলিম উম্মার ইতিহাসের অবক্ষয়, বিচ্ছিন্নতা, অজ্ঞানতা ও বহির্শত্রুর আক্রমনের যুগের, হিজরী ৬ষ্ঠ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলিম, ফকীহ ও সূফী ছিলেন আব্দুল কাদির জীলানী। তিনি ৪৭১ হিজরীতে জন্মগ্রহণ করেন এবং ৯০ বৎসর বয়সে (৫৬১ হি/১১৬৬খৃ) ইন্তেকাল করেন। তিনি হাম্বলী মাযহাবের একজন বড় ফকীহ ছিলেন। এছাড়া তাসাউফের বড় সাধক ও ওয়ায়িয ছিলেন। তাঁর ওয়াযের প্রভাবে অগণিত মানুষ সে অন্ধকার যুগে আল্লাহর দীনের পথে ফিরে আসেন। তাঁর জীবদ্দশাতেই তাঁর অনেক কারামত প্রসিদ্ধি লাভ করে। তাঁর ছাত্রগণ বা নিকটবর্তীগণ, যেমন যাহাবী, সাম‘আনী ও অন্যান্যরা তাঁর বিশুদ্ধ জীবনী রচনা করেছেন। এছাড়া তিনি নিজে অনেক গ্রন্থ লিখে হাম্বলী মাযহাব অনুসারে মুসলিমগণের ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক জীবনের শিক্ষা প্রদান করেন। যদিও তিনি তৎকালীন মাযহাবী কোন্দোলের প্রভাবে ইমাম আবূ হানীফা (রাহ) ও তাঁকে অনুসারীদেরকে জাহান্নামী ফিরকা হিসেবে উল্লেখ করেছেন[1], তবুও হানাফীগণ-সহ সকল মাযহাবের মানুষই তাঁকে ভক্তি করেন।
পরবর্তী যুগে তাঁর নামে অগণিত আজগুবি ও মিথ্যা কথা কারামতের নামে বানানো হয়। এসকল কথা যেমন ভিত্তিহীন ও মিথ্যা, তেমনি তা ইসলামী ধ্যানধারণার পরিপন্থী। তবে এখানে আমাদের আলোচ্য হলো রাসূলুল্লাহ ﷺ কেন্দ্রিক মিথ্যা কথা। আব্দুল কাদির জীলানীকে (রাহ) কেন্দ্র করে মিথ্যাবাদীদের বানোয়াট কথার একটি হলো, মি’রাজের রাত্রিতে নাকি রাসূলুল্লাহ ﷺ আব্দুল কাদির জিলানীর কাঁধে পা রেখে আরশে উঠেছিলেন। কথাটি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নামে বানোয়াট জঘন্য মিথ্যা কথা। কোনো হাদীসের গ্রন্থেই এর অস্তিত্ব নেই। আর যে কথা রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন নি, কোনো হাদীসের গ্রন্থে নেই বা সনদ নেই, সে সকল আজগুবি বানোয়াট কথা একজন মুমিন কিভাবে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নামে বলতে পারেন সে কথা ভাবলে অবাক হতে হয়। যেখানে সাহাবীগণ তাঁদের মুখস্থ ও জানা কথা সামান্য কমবেশি হওয়ার ভয়ে বলতে সাহস পেতেন না, সেখানে নির্বিচারে যা শুনছি তাই তাঁর নামে বলে কিভাবে কিয়ামতের দিন তাঁর সামনে মুখ দেখাব!