লগইন করুন
আব্দুল কাদির জীলানী (রাহ) হিজরী ৬ষ্ঠ শতকের প্রসিদ্ধতম ব্যক্তিত্ব। (জন্ম ৪৭১-মৃত্যু ৫৬১ হি) একদিকে তিনি হাম্বালী মাযহাবের বড় ফকীহ ছিলেন। অন্যদিকে তিনি প্রসিদ্ধ সূফী ছিলেন। তাঁর নামে অনেক তরীকা, কথা ও পুস্তক মুসলিম বিশ্বে প্রচলিত। এ সকল তরীকা, কথা ও পুস্তক অধিকাংশ বানোয়াট। কিছু কিছু পুস্তক তাঁর নিজের রচিত হলেও পরবর্তীকালে এগুলোর মধ্যে অনেক বানোয়াট কথা ঢুকানো হয়েছে। এখানে আমরা তাঁর নামে প্রচলিত কাদিরিয়া তরীকা ও ‘সির্রুল আসরার’ পুস্তকটির পর্যালোচনা করব।
প্রচলিত কাদিরিয়া তরীকার আমল, ওযীফা, মুরাকাবা ইত্যাদি পদ্ধতির বিবরণ আব্দুল কাদির জীলানী (রাহ)-এর পুস্তকে পাওয়া যায় না। ঐতিহাসিকগণ উল্লেখ করেন যে, আব্দুল কাদির জীলানী (রাহ)-এর ওফাতের প্রায় দুইশত বছর পরে তাঁর এক বংশধর ‘গাওস জীলানী’ ৮৮৭ হিজরী সালে (১৪৮২ খৃস্টাব্দে) ‘কাদিরীয়া তরীকা’-র প্রচলন করেন। বিভিন্ন দেশে ‘কাদিরীয়া তরীকার’ নামে বিভিন্ন পদ্ধতি প্রচলিত। আব্দুল কাদির জীলানী (রাহ)-এর নিজের লেখা প্রচলিত বইগুলোতে যে সকল আমল, ওযীফা ইত্যাদি লিখিত আছে প্রচলিত ‘কাদিরীয়া তরীকার’ মধ্যে সেগুলো নেই।
আমাদের দেশে প্রচলিত ‘কাদিরীয়া তরীকা’র সূত্র বা ‘শাজারা’ থেকে আমরা দেখি যে, শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী (১১৭৬ হি/১৭৬২খৃ) থেকে তা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু শাহ ওয়ালী উল্লাহ তাঁর ‘আল-কাওলুল জামীল’ গ্রন্থে কাদিরীয়া তরীকার যে বিবরণ দিয়েছেন তাঁর সাথে সাইয়েদ আহমাদ ব্রেলবীর (১২৪৬ হি/১৮৩১খৃ) ‘সিরাতে মুস্তাকীমের’ বিবরণের পার্থক্য দেখা যায়। আবার তাঁদের দুজনের শেখানো পদ্ধতির সাথে বর্তমানে আমাদের দেশে প্রচলিত কাদিরীয়া তরীকার ওযীফা ও আশগালের অনেক পার্থক্য দেখা যায়। এগুলোর কোন্টি তাঁর নিজের প্রবর্তিত ও কোন্টি তাঁর নামে পরবর্তীকালে প্রবর্তিত তা জানার কোনো উপায় নেই।