লগইন করুন
কারো জুমআর এক রাকআত ছুটে গেলে বাকী আর এক রাকআত ইমামের সালাম ফিরার পর উঠে পড়ে নিলে তার জুমুআহ হয়ে যাবে। অনুরুপ কেউ দ্বিতীয় রাকআতের রুকূ পেলেও ঐ রাকআত এবং তার সাথে আর এক রাকআত পড়লে তারও জুমুআহ হয়ে যাবে। কিন্তু যদি কেউ দ্বিতীয় রাকআতের রুকূ থেকে ইমামের মাথা তোলার পর জামাআতে শামিল হয়, তাহলে সে জুমআর নামায পাবে না। এই অবস্থায় তাকে যোহরের ৪ রাকআত আদায়ের নিয়তে জামাআতে শামিল হয়ে ইমামের সালাম ফিরার পর ৪ রাকআত ফরয পড়তে হবে। (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ্, সঊদী উলামা-কমিটি ১/৪১৮, ৪২১) যেমন জামাআত ছুটে গেলে জুমআও ছুটে যাবে। এ ক্ষেত্রেও একাকী যোহ্র পড়তে হবে। কারণ জামাআত ছাড়া জুমুআহ হয় না।
মহানবী (ﷺ) বলেন, “যে ব্যক্তি জুমআর এক রাকআত নামায পায়, সে যেন অপর এক রাকআত পড়ে নেয়।” (ইবনে মাজাহ্, সুনান,হাকেম, মুস্তাদরাক, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৬২২, জামে ৫৯৯১নং)
মহানবী (ﷺ) বলেন, “যে ব্যক্তি এক রাকআত নামায পায়, সে নামায পেয়ে যায়।” (বুখারী ৫৭৯, মুসলিম, সহীহ ৬০৭, তিরমিযী, সুনান ৫২৪নং)
এর বিপরীত অর্থ এই দাঁড়ায় যে, “যে ব্যক্তি এক রাকআত নামায পায় না, সে নামায পায় না।” এ জন্যই ইমাম তিরমিযী উক্ত হাদীসের টীকায় বলেছেন, ‘এ হাদীসটি হাসান সহীহ। নবী (ﷺ)-এর অধিকাংশ সাহাবা ও অন্যান্য আহলে ইলমগণ এহাদীসের উপর আমল করেছেন। তাঁরা বলেছেন, “যে ব্যক্তি জুমআর এক রাকআত পেয়ে যায়, সে ব্যক্তি যেন আর এক রাকআত পড়ে নেয়। কিন্তু যে (দ্বিতীয় রাকআতের তাশাহহুদের) বৈঠক অবস্থায় জামাআত পায়, সে যেন যোহরের ৪ রাকআত পড়ে নেয়।” এ মত গ্রহণ করেছেন সুফয়্যান সওরী, ইবনুল মুবারক, শাফেয়ী, আহমাদ এবং ইসহাক (রহঃ)।’
ইবনে মাসঊদ (রাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি জুমআর এক রাকআত পেয়ে যায়, সে ব্যক্তি যেন আর এক রাকআত পড়ে নেয়। কিন্তু যে (দ্বিতীয় রাকআতের) রুকূ না পায়, সে যেন যোহরের ৪ রাকআত পড়ে নেয়।” (ইবনে আবী শাইবা, ত্বাবারানীরানী, মু’জাম, বায়হাকী, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৬২১নং)
ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি জুমআর এক রাকআত পেয়ে যায়, সে ব্যক্তি যেন আর এক রাকআত পড়ে নেয়। কিন্তু যে (দ্বিতীয় রাকআতের) তাশাহহুদ পায়, সে যেন যোহরের ৪ রাকআত পড়ে নেয়।” (বায়হাকী, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৬২১)
কোন কোন বর্ণনায় তাশাহহুদ পেলে নামায পেয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। আর তার মানে হল জামাআতের সওয়াব পেয়ে যাওয়া। (ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৩/৮২)
প্রকাশ থাকে যে, জুমআর খুতবা না শুনলেও; বরং ১ রাকআত নামায না পেলেও জুমুআহ হয়ে যাবে। যেমন, জুমআর খুতবা দিলে অথবা শুনলেও যদি নামাযের ১ রাকআতও না পায়, তাহলে তাকে যোহ্রই পড়তে হবে। (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ্, সঊদী উলামা-কমিটি ১/৪১০)
উল্লেখ্য যে, জুমআর নামায পড়তে পড়তে যদি কারো ওযূ নষ্ট হয়ে যায় এবং ওযূ করে ফিরে এসে যদি দ্বিতীয় রাকআতের রুকূ পেয়ে যায়, তাহলে সে আর এক রাকআত পড়ে নেবে। নচেৎ সিজদা বা তাশাহহুদ পেলে যোহরের নিয়তে শামিল হয়ে ৪ রাকআত পড়বে। তদনুরুপ জামাআত ছুটে গেলেও যোহ্র পড়বে।
অনুরুপ কোন ইমাম সাহেব যদি বিনা ওযূতে জুমুআহ পড়িয়ে নামাযের শেষে মনে হয়, তাহলে মুক্তাদীদের নামায সহীহ হয়ে যাবে। আর ইমাম ঐ নামায কাযা করতে ৪ রাকআত যোহ্র পড়বেন। (আল-মুন্তাকা মিন ফাতাওয়াল ফাওযান ৩/৬৮)