লগইন করুন
মহান আল্লাহ কুরআন মাজীদে ও তাঁর রসূলের মুখে আমাদেরকে নামায পড়তে ও কায়েম করতে বলেছেন। সুতরাং নামায পড়াই যথেষ্ট নয়; নামায কায়েম করা জরুরী। আর নামায কায়েম হবে তখনই, যখন নামাযী নামাযের শর্তাবলী, রুক্ন, ফরয বা ওয়াজেব প্রভৃতি পালন করে বাহ্যিকভাবে এবং তার আধ্যাত্মিক বিষয়াবলী প্রতিষ্ঠা করে আন্তরিকভাবে নামায আদায় করবে। আর তখনই নামায সেই নামায হবে, যে নামায পাপ ও নোংরা কাজ হতে নামাযীকে বিরত রাখে।
নামাযের বাহ্যিক দিকটা কিভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে তা আমরা পূর্বেই জেনেছি। এবারে তার আধ্যাত্মিক দিকটা কিভাবে প্রতিষ্ঠা করা যাবে তাই আলোচিতব্য।
আন্তরিক বিষয়াবলীর মধ্যে হৃদয় উপস্থিত রেখে একাগ্রতা ও মনোনিবেশের সাথে নামায পড়াই প্রধান। এর সঙ্গে থাকবে মনের কাকুতি-মিনতি, অনুনয়-বিনয়, সর্বমহান বিশ্বাধিপতি এবং একমাত্র প্রভু ও উপাস্যের সম্মুখে দন্ডায়মান হয়ে অন্তরে থাকবে নিরতিশয় আদব, ভক্তি ও বিনতি। আল্লাহ তাআলা বলেন, “মু’মিনগণ অবশ্যই সফলকাম হয়েছে; যারা নিজেদের নামাযে বিনয়-নম্র---।” (কুরআন মাজীদ ২৩/১)
আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেন, “যে মুসলিম ব্যক্তির নিকটে কোন ফরয নামায উপস্থিত হয়, অতঃপর সে ঐ নামাযের ওযু, কাকুতি-মিনতি ও রুকূ সুন্দরভাবে করে, তাহলে এর ফলে কাবীরা গুনাহ না করলে তার পূর্বেকার গুনাহসমূহের তার জন্য কাফফারা হয়ে যায়। আর এরুপ হয় সব সময়ের জন্য। (মুসলিম, মিশকাত ২৮৬ নং)
“যে মুসলিম ব্যক্তি সুন্দরভাবে ওযু করে, অতঃপর খাড়া হয়ে সে তার দেহ্-মন নিয়ে একাগ্রতার সাথে ২ রাকআত নামায পড়ে, সে ব্যক্তির জন্য জান্নাত ওয়াজেব হয়ে যায়।” (মুসলিম, সহীহ ২৩৪ নং)
বিনতির মানে এই নয় যে, নামাযীকে নামাযে কাঁদতে হবে। বিনতি হল হৃদয়ের উপস্থিতি ও সর্বাঙ্গের স্থিরতার নাম। (আলমুমতে’, শারহে ফিক্হ, ইবনে উষাইমীন ৩/৪৫৬)
অতএব একাগ্রতা, মনোযোগ ও বিনতির সাথে আপনি আপনার নামায কায়েম করতে চাইলে নিম্নেক্ত কয়েকটি উপদেশ গ্রহণ করুন :-
১। আপনি যে নামায পড়ছেন তা নিশ্চয় একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে। সুতরাং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে, তাঁর হুকুম পালনার্থে, তাঁর প্রতি বিশেষ অনুরাগ, ভক্তি ও প্রেম প্রকাশার্থে, তাঁর নৈকট্য ও ভালোবাসা অর্জনের আশায়, তাঁর আযাবের ভয়ে, তাঁর সওয়াব ও ক্ষমার কামনাতেই আপনি নামায পড়ুন।
২। নামাযে দাঁড়িয়ে আপনি মনে করুন যে, আল্লাহর খাস দরবারে আপনি হাজির হয়েছেন। আপনি যেন তাঁকে দেখছেন, তিনি আরশের উপর রয়েছেন। সেখান হতেই তিনি সারা সৃষ্টির প্রতি সূক্ষ্ণদৃষ্টি রেখেছেন। তিনি আপনার নামায পড়াও দেখছেন। অবশ্য তাঁর কোন প্রকার আকার ও প্রতিমূর্তি মনে কল্পনা করবেন না। কারণ, তাঁর মত কোন কিছুই নেই।
আপনি আপনার মর্মমূলে ভাবুন যে, তিনি অবিনশ্বর, চিরঞ্জীব, সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা, মহাপরাক্রমশালী, বিজ্ঞানময়। তিনি আদেশ করেন, নিষেধ করেন, ভালোবাসেন আবার ক্রোধান্বিতও হন। বান্দার কোনও গোপন বা প্রকাশ্য কথা বা কর্ম তাঁর নিকট গুপ্ত নয়। সকল বিষয়ে তিনি সবিশেষ অবহিত। “চক্ষুর ছল-চাহ্নি এবং হৃদয় যা গোপন করে তা তিনি জানেন।” (কুরআন মাজীদ ৪০/১৯) এই প্রত্যয়ের সাথে সাথে তাঁর জন্য আপনার অন্তরে যথার্থ তা’যীম, ভক্তি, অনুরাগ, ভীতি, প্রেম, আগ্রহ্, আশা, ভরসা, বিনতি প্রভৃতি সমবেত হবে। টুটে যাবে সাংসারিক সকল বন্ধন। শুধু টিকে থাকবে আল্লাহ ও আপনার মাঝে মুনাজাতের ও নিরালায় গভীর আলাপের বন্ধন।
৩। নামাযে দাঁড়িয়ে আপনি স্মরণ করুন, আপনাকে মরতেই হবে এবং ফিরে যেতে হবে সেই বিশাল বাদশার নিকট, যাঁর সামনে আপনি দন্ডায়মান আছেন, আর হিসাবও লাগবে তাঁর কাছে সকল কাজের। ধরে নিন্ হয়তো আপনার এটা শেষ নামায। সালাম ফিরে হয়তো আর নামাযের সুযোগ পাবেন না। যেন আপনি আপনার প্রিয়তমের নিকট থেকে বিদায়কালে শেষ সাক্ষাৎ করছেন, শেষ কথা বলছেন ও শেষ আবেদন জানিয়ে নিচ্ছেন। আর এই সময় কি আপনি আপনার চোখের পানি রুখে রাখতে পারেন? এই মুহূর্তে কি আপনার মন অন্য দিকে ছুটতে পারে?
প্রিয় নবী (ﷺ) বলেন, “তুমি তোমার নামাযে মরণকে স্মরণ কর। কারণ, মানুষ যখন তার নামাযে মরণকে স্মরণ করে, তখন যথার্থই সে তার নামাযকে সুন্দর করে। আর তুমি সেই ব্যক্তির মত নামায পড়, যে মনে করে না যে, এ ছাড়া সে অন্য নামায পড়তে পারবে। তুমি প্রত্যেক সেই কর্ম থেকে দূরে থাক, যা করে তোমাকে (অপরের নিকটে) ক্ষমা চাইতে হয়। (মুসনাদে ফেরদাঊস, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ১৪২১, জামে ৮৪৯ নং)
এক ব্যক্তি নবী (ﷺ) এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল, আমাকে সংক্ষেপে কিছু উপদেশ দিন। তিনি বললেন, “যখন তুমি তোমার নামাযে দাঁড়াবে তখন (মরণ পথের পথিকের বিদায় নেওয়ার সময়) শেষ নামায পড়ার মত নামায পড়। এমন কথা বলো না, যা বলে (অপরের নিকট) ক্ষমা চাইতে হয়। আর লোকেদেরহাতে যা আছে তা থেকে সম্পূর্ণভাবে নিরাশ হয়ে যাও।” (বুখারী তারীখ, ইবনে মাজাহ্, সুনান ৪১৭১ নং, আহমাদ, মুসনাদ ৫/৪১২, বায়হাকী, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ৪০১ নং)
আর এক বর্ণনায় তিনি বলেছেন, “তুমি (মরণ পথের পথিকের বিদায় নেওয়ার সময়) শেষ নামায পড়ার মত নামায পড়। (মনে মনে কর,) যেন তুমি আল্লাহকে দেখছ, নচেৎ তিনি তোমাকে দেখছেন---।” (ত্বাবারানীরানী, মু’জাম, বায়হাকী, প্রমুখ সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ১৯১৪ নং)
৪। মনে করুন আপনি আল্লাহর সাথে কথা বলছেন এবং আল্লাহ আপনার কথা শুনছেন ও জওয়াবও দিচ্ছেন। কারণ, মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি নামাযকে আমার ও আমার বান্দার মাঝে আধাআধি ভাগ করে নিয়েছি। আর আমার বান্দার জন্য তাই রয়েছে, যা সে প্রার্থনা করে।’ সুতরাং বান্দা যখন বলে, ‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আ’-লামীন।’ তখন আল্লাহ বলেন, ‘আমার বান্দা আমার প্রশংসা করল ---।’ (মুসলিম, মিশকাত ৮২৩ নং)
আপনি মনে করুন, আপনি তাঁর সাথে একান্ত নিরালায় আলাপন করছেন। সুতরাং কারো সাথে নিভৃত আলাপে কানে-কানে কথা বলার সময় আপনার মন ও খেয়াল কি অন্য দিকে থাকতে পারে? মহানবী (ﷺ) বলেন, “অবশ্যই নামাযী তার প্রভুর সাথে নির্জনে আলাপ করে ---।” (মালেক, মুঅত্তা, আহমাদ, মুসনাদ, মিশকাত ৮৫৬ নং)
৫। নামাযে খেয়াল করুন। আপনি এক অপরাধী, ক্ষমার ভিখারী। আপনি এক পলাতক দাস, অ নু তপ্ত হয়ে তাঁর অনুগ্রহ-প্রার্থনা। আপনি একজন দুর্বল ক্ষমতাহীন, ক্ষমতার ভিখারী। আপনি একজন নিঃস্ব অসহায়, সাহায্য ও সহায়তার অভিলা ষী । পথভ্রষ্ট, পথ-নির্দেশের আশাধারী। কি¾ষ্ট ও পীড়িত, নিরাপত্তা ও নিরাময়ের ভিখারী। রুযীহীন, রুযীর ভিখারী। আর মনে রাখুন যে, এসব ভিক্ষা আপনি তাঁর দরজা ছাড়া অন্য কারো দরজায় পাবেন না, পেতে পারেন না। তাই তো আপনি প্রত্যেক রাকআতে বলে থাকেন, “আমরা কেবল তোমারই ইবাদত করে থাকি এবং তোমারই নিকট সাহায্য ভিক্ষা করি।” (সূরা ফাতিহা/৪)
৬। নামাযে আপনার চক্ষু শীতল হোক। হৃদয়-মন ভরে উঠুক শান্তি ও স্বস্তিতে। উপশম হোক সকল প্রকার ব্যথা ও বেদনার। মহানবী (ﷺ) বলেন, “নামাযে আমার চক্ষু শীতল করা হয়েছে।” (আহমাদ, মুসনাদ, নাসাঈ, সুনান,হাকেম, মুস্তাদরাক, বায়হাকী, জামে ৩১২৪ নং) একদা তিনি বিলাল (রাঃ) কে বললেন, “নামাযের ইকামত দিয়ে ত্বরা আমাদেরকে শান্তি দাও, হে বিলাল!” (আবূদাঊদ, সুনান ৪৯৮৫, মিশকাত ১২৫৩ নং) অতএব আপনিও আপনার মনের পরম শান্তি নামাযেই খুঁজে পাবেন।
৭। এই সময় আপনি মিষ্টি সুরে সুন্দর ক্বিরাআত করুন। দেখবেন, যত পড়বেন তত আরো পড়তে মন হবে। ক্বিরাআত ছাড়তেই ইচ্ছা হবে না। সেই সময় মুনাজাতের এমন এক মিষ্ট স্বাদ আছে, যা ত্যাগ করতেই মন হবে না। ইমামের পশ্চাতে হলে মনে হবে নামায আরো লম্বা হোক।
৮। আর নামায যদি আপনার চক্ষুর শীতলতা হয় তাহলে নিশ্চয়ই কোন নামায আপনার পক্ষে ভারি হওয়া উচিৎ নয়। তা এক প্রকার বোঝা মনে করা এবং সময় হলে তা কোন রকম আদায় করে নামিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত অস্বস্তি বোধ করতে থাকাও উচিৎ নয়। কারণ নামাযকে ভারি মনে করা মুনাফিকের চরিত্র ও লক্ষণ। ঐ দেখুন না, আল্লাহ তার সাক্ষ্য দিয়ে বলেন, “মুনাফিকরা --- যখন নামাযে দাঁড়ায়, তখন শৈথিল্যের সাথে কেবল লোক-দেখানোর জন্য দাঁড়ায় এবং আল্লাহকে তারা অল্পই স্মরণ করে।” (কুরআন মাজীদ ৪/১৪২) “আর তারা আলস্য ভরা মন নিয়ে নামাযে উপস্থিত হয়।” (কুরআন মাজীদ ৯/৫৪)
প্রিয় নবী (ﷺ) বলেন, “এশা ও ফজরের নামায মুনাফিকদের জন্য সবচেয়ে বেশী ভারি নামায।” (আবূদাঊদ, সুনান, নাসাঈ, সুনান, মিশকাত ১০৬৬ নং)
সুতরাং নামাযকে ভারি মনে করবেন না এবং দায় সারার মত চটপট পড়ে নিয়ে কি করে অব্যাহ্তি মিলে সেই চেষ্টায় থাকবেন না। কারণ, জানেন যে, শান্তির সময় সংক্ষেপ হয় এবং কষ্টের সময় লম্বা। অতএব নামায যদি আপনার জন্য শান্তিপ্রদ হয়, তবে আপনাকে মনে হবে যে, তা চট করে শেষ হয়ে গেল। পক্ষান্তরে যদি তা ভারি ও কষ্টদায়ক মনে করে তাড়াতাড়ি শেষ করার জন্য অস্বস্তিবোধ করে থাকেন, তাহলে সে নামাযের সময় আপনাকে আরো লম্বা লাগারই কথা। পরন্তু মহান আল্লাহ যদি আপনার নিকট প্রিয়তম হন, তবে তাঁর সাথে নিরালায় আলাপ করতে তো বিরক্তি ও অস্বস্তিবোধ করার কথা নয়!
৯। কিন্তু প্রিয়তমের সাথে নিরালায় আলাপনের মিষ্ট স্বাদ তখনই পাবেন, যখন আপনি সজ্ঞানে তার সাথে কথা বলবেন। নচেৎ, পাগল যেমন প্রলাপ বকে কোন শান্তি পায় না, তেমনি আপনিও পাবেন না। সুতরাং নামাযে আপনি যা বলছেন, তা সম্পূর্ণ না হলেও মোটামুটি বুঝে বলুন। যা বলছেন, তা সঠিকভাবে বলুন। নচেৎ আপনি কি বলছেন, তা যদি আপনি নিজেই না বোঝেন অথবা ‘দাদা’ বলতে ‘গাধা’ বলেন, তাহলে নিশ্চয়ই সেই আলাপে মজা পাবেন না, বিধায় ফলও হবে অপরিণত বা বিপরীত।
ঐ দেখুন না, প্রিয় নবী (ﷺ) বলেন, “অবশ্যই নামাযী তার প্রতিপালকের সাথে নিরালায় আলাপ করে। সুতরাং সে কি আলাপ করছে, তা যেন সে লক্ষ্য করে।” (মালেক, মুঅত্তা, আহমাদ, মুসনাদ, মিশকাত ৮৫৬ নং)
যদি আপনি বুঝে ও খেয়াল করে সূরা তথা দুআ-দরুদ পড়েন, তাহলে তার ফল যে সুন্দর ও মিষ্ট হবে তা নিশ্চিত। ঐ ফলের ব্যাপারে রসূল (ﷺ) বলেন, “যখনই কোন মুসলিম পূর্ণরুপে ওযূ করে নামায পড়তে দাঁড়ায় এবং (তাতে) যা বলছে তা সে বুঝে, তখনই সে প্রথম দিনের শিশুর মত (নিষ্পাপ) হয়ে নামায সম্পন্ন করে।” (আবূদাঊদ, সুনান, নাসাঈ, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান, ইবনে খুযাইমাহ্, সহীহ,হাকেম, মুস্তাদরাক, সহিহ তারগিব ১৮৩, ৫৪৪ নং)
নামাযে ‘রুহ্’ বা ‘জান’ আনতে যে জিনিস বেশী সাহায্য করে, তা হল নামাযে যা পড়া বা বলা হয় তার অর্থ বুঝা। অন্যথায় নারকেলের খোসা না ভেঙ্গে উপরে কামড় দিলে যেমন নারকেলের স্বাদ পাওয়া যায় না, পরন্তু মেহনত বরবাদ ও দাঁতে দরদ হয়, অনুরুপ আরবী ভেঙ্গে না বুঝে নামায পড়লে নামাযেরও কোন স্বাদ পাওয়া যায় না। তাতে বিশেষ তৃপ্তি ও ফললাভ হয় না।
প্রিয় নবী (ﷺ) বলেন, “বান্দা নামায পড়ে, অথচ তার নামাযের ১০, ৯, ৮, ৭, ৬, ৫, ৪, ৩ অথবা ২ ভাগের ১ ভাগ মাত্র (কবুল বলে) লিপিবদ্ধ হয়!” (আবূদাঊদ, সুনান ৭৯৬ নং, নাসাঈ, সুনান)
বলাই বাহুল্য যে, যার নামায যত মহানবী (ﷺ) এর সুন্নাহ্ মোতাবেক এবং রুহ্বিশিষ্ট হবে, তার নামায তত পূর্ণাঙ্গ ও বেশী শুদ্ধ হবে। নচেৎ, সেই কমি অনুসারে সওয়াবও কম হতে থাকবে।
মহান আল্লাহ বলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা নেশার অবস্থায় নামাযের নিকটব র্তী হ্য়ো না, যতক্ষণ না তোমরা কি বলছ তা বুঝতে পার---।” (কুরআন মাজীদ ৪/৪৩) সুতরাং মাদকদ্রsব্যর মত ঔদাস্য, গাফলতি, খেল-তামাশা, পার্থিব সম্পদ এবং (নামাযী নামাযে যা বলছে তা বুঝতে চেষ্টা না করার) আলস্য যাকে নেশাগ্রস্ত করে রেখেছে সে কি নামাযের নিকটে আসার অযোগ্য নয়?
ফলকথা, সর্বপ্রকার মাদকতা, নেশা, ঔদাস্য ও অমনোযোগিতা থেকে পবিত্র হয়ে আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হয়ে তাঁর সাথে আলাপ করাই মু’মিনের কর্তব্য।
১০। নামাযের ভিতর আপনি আপনার আত্মf ও শয়তানের বিরুদ্ধে লড়াই করুন। আপনি নামাযে মন বসালেও শয়তান কিন্তু আপনার পিছন ছাড়ে না। তাই তো অনেক ভুলে যাওয়া কথা নামাযে মনে পড়ে থাকে। মহানবী (ﷺ) বলেন, “নামাযের জন্য আযান দেওয়া হলে শয়তান পাদতে পাদতে এত দূরে পালায়, যেখানে আযান শোনা যায় না। আযান শেষ হলে আবার ফিরে আসে। ইকামত শুরু হলে পুনরায় পালায়। ইকামত শেষ হলে নামাযীর কাছে এসে তার মনে বিভিন্ন কুমন্ত্রণা আনয়ন করে বলে, ‘এটা মনে কর, ওটা মনে কর।’ এইভাবে নামাযীর যা মনে ছিল না তা মনে করিয়ে দেয়। এর ফলে নামাযী শেষে কত রাকআত নামায পড়ল তা জানতে পারে না।” (বুখারী ৬০৮ নং, মুসলিম, আবূদাঊদ, সুনান, নাসাঈ, সুনান, দারেমী, সুনান, মালেক, মুঅত্তা, আহমাদ, মুসনাদ ২/৩১৩)
উসমান বিন আবুল আস (রাঃ) মহানবী (ﷺ) এর নিকট উপস্থিত হয়ে আরজ করলেন, হে আল্লাহর রসূল! শয়তান আমার ও আমার নামায এবং ক্বিরাআতের মাঝে অন্তরাল ও গোলমাল সৃষ্টি করে। (বাঁচার উপায় কি?)’ তিনি বললেন, “ওটা হল ‘খিনযাব’ নামক এক শয়তান। সুতরাং ঐরুপ অনুভব করলে তুমি আল্লাহর নিকট ওর থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করো এবং তোমার বাম দিকে ৩ বার থুথু মেরো।” উসমান বলেন, এরুপ করলে আল্লাহ আমার নিকট থেকে শয়তানের ঐ কুমন্ত্রণা দূর করে দেন। (মুসলিম, সহীহ ২২০৩ নং)
১১। নামাযে দাঁড়িয়ে আপনার দৃষ্টিকে ঠিক সিজদার জায়গায় নিবদ্ধ রাখুন। তাশাহ্হুদে বসে দৃষ্টি রাখুন শাহাদতের আঙ্গুলের উপর। এতে আপনার মন সজাগ ও সতর্ক থাকবে। এ ব্যাপারেহাদীস পূর্বে উল্লেখিত হয়েছে।
১২। উপর দিকে খবরদার নজর তুলবেন না। আল্লাহর রসূল (ﷺ) নামায পড়তে পড়তে আকাশের দিকে দৃষ্টি তুলে দেখতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন, “লোকেদের কি হয়েছে যে, ওরা নামাযের মধ্যে ওদের দৃষ্টি আকাশের দিকে তোলে?” এ ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য খুব কঠেfর হয়ে উঠল। পরিশেষে তিনি বললেন, “অতি অবশ্যই ওরা এ কাজ হতে বিরত হোক, নচেৎ ওদের চক্ষু ছিনিয়ে নেওয়া হতে পারে।” (বুখারী৭৫০নং, আবূদাঊদ, সুনান, নাসাঈ, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান)
নবী (ﷺ) আরো বলেন, “নামাযের মধ্যে আকাশের (উপরের) দিকে দৃষ্টিপাত করা হতে লোকেরা অতি অবশ্যই বিরত হোক, নচেৎ ওদের দৃষ্টি আর ফিরে না-ও আসতে পারে। (ওরা অন্ধ হয়ে যেতে পারে!)” (মুসলিম, সহীহ৪২৮নং)
১৩। আর এদিক-সেদিকও তাকাবেন না। চোরা ও টেরা নজরে কোন কিছু দেখবেন না। কারণ, এই দৃষ্টি আকর্ষণ ও চুরি করা শয়তানের কাজ। (বুখারী ৭৫১নং, আবূদাঊদ, সুনান)
বান্দা যদি তার নামাযে এদিক-ওদিক দৃষ্টি না ফিরায়, তাহলে আল্লাহ তার নামাযের প্রতি বিশেষ আগ্রহী হন। (তিরমিযী, সুনান,হাকেম, মুস্তাদরাক, সহিহ তারগিব ৫৫০ নং) বান্দার এদিক-ওদিক চেহারা ফিরিয়ে দিলে আল্লাহও আর সে নামাযের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করেন না। (আবূদাঊদ, সুনান, ইবনে খুযাইমাহ্, সহীহ, ইবনে হিব্বান, সহীহ, সহিহ তারগিব ৫৫২ নং) সুতরাং সাবধান! আপনার নামায থেকে মহান আল্লাহ যেন মুখ ফিরিয়ে না নেন এবং দুশমন শয়তানও যেন আপনার নামায ছিনতাই করে না নেয়।
১৪। আপনি নামাযে দাঁড়াবার আগে আপনার সম্মুখ হতে সেই সমস্ত জিনিসকে দূরে সরিয়ে দেন, যা আপনার নজর কেড়ে নেবে, মনোযোগ ছিনিয়ে নেবে, খেয়াল আকর্ষণ করবে ও একাগ্রতা নষ্ট করবে বলে আশঙ্কা করেন। এই জন্যই প্রিয় নবী (ﷺ) বলেন, “গৃহে (মসজিদে) এমন কোন জিনিস থাকা উচিৎ নয়, যা নামাযীকে মশগুল (অন্যমনস্ক) করে ফেলে।” (আবূদাঊদ, সুনান, আহমাদ, মুসনাদ ৪/৬৮, ৫/৩৮০) একদা তিনি নক্সাদার কাপড়ে নামায পড়ে বললেন, “আমি এর নক্সার দিকে একবার তাকালে আমাকে তা আমার নামায থেকে অমনোযোগী করে ফেলার উপক্রম করেছিল।” (বুখারী, মুসলিম, মালেক, মুঅত্তা, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৩৭৬ নং) মা আয়েশা رضي الله عنها এর একটি ছবিযুক্ত কাপড় টাঙ্গানো থাকলে সেদিকে মুখ করে নামায পড়ার পর তিনি বললেন, “এটাকে আমার নিকট থেকে দূরে সরিয়ে দাও। কারণ, এর ছবিগুলো আমার নামাযে বাধা সৃষ্টি করছিল।” (বুখারী, মুসলিম, আহমাদ, মুসনাদ, আহমাদ, মুসনাদ ৬/১৭২)
১৫। নামাযের পূর্বে আপনি প্রস্রাব-পায়খানার কাজ সেরে নিন এবং প্রস্রাব বা পায়খানার চাপ নিয়ে নামাযে দাঁড়ান না। কারণ, এতে নামাযে মন বসে না। হয়তো বা তাড়াহুড়ো করে নামায শেষ করতে হয় অথবা নামাযে অন্যমনõতা আসে। অনুরুপ পেটে খিদে রেখে সামনে খাবার উপস্থিত থাকলে অথবা খাবারের দিকে মন পড়ে থাকলেও নামাযে দাঁড়ানো উচিৎ নয়। কারণ এতে নামায হয় না। (বুখারী, মুসলিম, ইবনে আবী শাইবা, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৮নং)
১৬। এমন কোন ভারী জিনিস সঙ্গে নিয়ে নামাযে দাঁড়াবেন না, যাতে নামাযের বদলে ঐ ভারের প্রতিই আপনার মন লেগে না থাকে।
১৭। এমন কোন স্থানে বা লেবাসে নামায পড়তে শুরু করবেন না, যার দুর্গন্ধ আপনাকে অতিষ্ঠ করে তোলে।
১৮। এমন টাইট-ফিট লেবাস পরে নামায পড়বেন না, যাতে বসা-ওঠা কষ্টকর হয়।
১৯। বেপর্দা মহিলারা যখন গায়ে-মাথায় কাপড় বা চাদর নিয়ে নামায পড়ে, তখন স্বাভাবিকভাবে তাদেরকে গরম লাগে। এতে নামাযে মন বসে না এবং যত তাড়াতাড়ি শেষ করে চাদর খুলতে পায় সেই চেষ্টা করে। সুতরাং নামাযী হওয়ার সাথে সাথে আপনি পর্দানশীন মহিলা হতে চেষ্টা করুন। যেমন ওযু করার পর ‘মেক-আপ’ করলে যাতে নামাযের আগে ওযু ভেঙ্গে গিয়ে পুনরায় ওযুতে তা নষ্ট হয়ে না যায়, তার জন্য তাড়াতাড়ি নামায শেষ করা এবং মাথার চুল বেঁধে বা চুলে ফুল গুঁজে নামায পড়তে পড়তে চুলের ও ফুলের পারিপাট্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় বারবার ওড়নার প্রতি খেয়াল করাও নামাযে অমনোযোগিতার দলীল।
২০। পরনে এমন ওড়না, কাপড়, শাল, চাদর, বা শাড়ি হতে হবে, যেন নামাযের অবস্থায় তা বারবার পড়ে না যায়। নচেৎ, সোজা করতে করতেই নামায শেষ হবে অথচ নামাযে মন থাকার পরিবর্তে মন থাকবে কাপড় পড়ার দিকে। পক্ষান্তরে যদি মহিলাদের মাথা, বুক, পেট অথবা হাত বা পায়ের রলা থেকে কাপড় সরে যায়, তাহলে তো মূলে নামাযই নষ্ট হয়ে যাবে। সুতরাং বিশেষ করে মহিলাদের জন্য এ বিষয়ে সতর্কতা জরুরী।
২১। কোন লটকে রাখা কাজ বন্ধ করে - যেমন চুলোর উপর হাঁড়ি রেখে নামায পড়বেন না। কারণ, এ অবস্থায় নামাযে মন না থেকে মন পড়ে থাকবে ঐ চুলোর হাঁড়ির উপরেই। পাছে উল্টে না যায় বা পুড়ে না যায়, ইত্যাদি।
২২। সম্ভব হলে এমন স্থানে নামায পড়ুন, যেখানে খুব গরম আপনাকে অতিষ্ঠ করবে না এবং খুব শীতও আপনাকে কাতর করে ফেলবে না। অনুরুপ যে স্থানে হৈ-হুল্লোড়, চেচামেচি বা গোলমাল-গন্ডগোলের ফলে আপনার নামাযে একাগ্রতার ব্যাঘাত ঘটে, সে স্থানে নামায পড়বেন না। (কাইফা তাখশাঈনা ফিস স্বালাহ্ ১৯-২৪ দ্র:)
২৩। আপনার সামনে কোন ঘুমন্ত ব্যক্তি থাকলে এবং তার কাপড় সরে যাওয়া বা ঘুমের ঘোরে আপনার নামাযের স্থান দখল করার আশঙ্কা হলে সে জায়গায় নামায পড়তে দাঁড়াবেন না। অনুরুপ যে ব্যক্তি কথা বলছে, তাকে সামনে করেও নামায পড়বেন না। এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞাও এসেছে। (আবূদাঊদ, সুনান ৬৯৪ নং)
২৪। নামাযের সময় ঘুম এলে যথাসম্ভব তা দূর করে নামায পড়ুন। নচেৎ, মন যে আপনাকে ফাঁকি দেবে, তা বলাই বাহুল্য। মহানবী (ﷺ) বলেন, “তোমাদের মধ্যে কেউ নামায পড়া অবস্থায় ঘুমে ঢুলতে থাকলে সে যেন একটু শুয়ে ঘুম তাড়িয়ে নেয়। নচেৎ, ঢুলতে ঢুলতে নামায পড়তে থাকলে সে হয়তো আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে গিয়ে নিজেকে গালি দিয়ে বসবে।” (বুখারী ২১২ নং, মুসলিম, আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান, মালেক, মুঅত্তা, দারেমী, সুনান, আহমাদ, মুসনাদ ৬/৫৬)
তিনি আরো বলেন, “কেউ নামাযে ঢুলতে লাগলে সে যেন ঘুমিয়ে নেয়। যাতে সে কি পড়ছে, তা বুঝতে পারে।” (বুখারী ২১৩ নং)
অবশ্য এমন ঘুম বৈধ নয়, যাতে নামাযের সময়ই পার হয়ে যায়।
২৫। আপনি নামায পড়ছেন তার জন্য নিজে নিজে গর্বিত না হয়ে আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞ হন। যেহেতু তাঁর তওফীক দানের ফলেই আপনি এত বড় ইবাদত পালনে সক্ষম হয়েছেন। ঈমান, ইবাদত প্রভৃতি এক একটি অমূল্য ধন ও এক একটি বিশেষ অনুগ্রহ। আর বান্দার যাবতীয় ধন ও অনুগ্রহ তো আল্লাহরই দান। (কুরআন মাজীদ ১৬/৫৩)
২৬। আপনি আল্লাহর বন্দেগী ও দাসত্ব করেছেন। এই দাসত্ব আপনার ঠিকমত হ্চ্ছে কি না, তা আপনি জানেন না। সুতরাং আপনি নিজের ত্রুটি ও অবহেলা স্বীকার করে মনকে ইবাদত কবুল না হওয়ার আশঙ্কা ও ভীতি দ্বারা পরিপূর্ণ রাখুন। মহান আল্লাহ বলেন, “আর যারা তাদের প্রতিপালকের দিকে ফিরে যাবে এই বিশ্বাসে তাদের যা দান করার তা ভয়-ভয় মনে দান করে। তারাই দ্রুত কল্যাণকর কাজ সম্পাদন করে এবং তারা ওতে অগ্রগামী হয়।” (কুরআন মাজীদ ২৩/৬০-৬১)
মা আয়েশা رضي الله عنها জিজ্ঞাসার ছলে আল্লাহর রসূল (ﷺ) কে বললেন, ‘ওরা কি তারা, যারা মদ খায়, চুরি করে (বা ব্যভিচার করে এবং এর কারণেই আল্লাহকে ভয় করে)?’ তিনি বললেন, “না, হে সিদ্দীক-তনয়া! বরং (আল্লাহ তাদের কথা বলেছেন) যারা রোযা করে, নামায পড়ে, দান-খয়রাত করে, অথচ তারা এই ভয় করে যে, হয়তো এসব তাদের কবুল হবে না।” (আহমাদ, মুসনাদ, তিরমিযী, সুনান ৩১৭৫, ইবনে মাজাহ্, সুনান ৪১৯৮ নং)
আপনি যতই ইবাদত করুন না কেন, তা প্রয়োজনের তুলনায় নেহাতই কম। জান্নাতের মূল্য তো অবশ্যই নয়। এ জন্যই প্রিয় নবী (ﷺ) বলেন, “কেউই তার আমলের জোরে জান্নাত যেতে পারবে না।” বলা হল, ‘আপনিও কি নন, হে আল্লাহর রসূল?’ বললেন, “আমিও নই। তবে যদি আল্লাহ তাঁর রহ্মত দ্বারা আমাকে আচ্ছন্ন করেন তাহলে!” (বুখারী ৫৬৭৩, ৬৪৬৩, মুসলিম, সহীহ ২৮১৬ নং, প্রমুখ, দ্র: স্বালাতুল মুহিব্বীন, ইবনুল কাইয়িম)
ইবনুল জাওযী বলেন, ‘হে সেই নামাযী! যে তার দেহ্ নিয়ে নামাযে দন্ডায়মান অথচ তার হৃদয় অনুপস্থিত! যেটুকু বন্দেগী তুমি করেছ তা তো বেহেশ্তের মোহ্র হওয়ার জন্যও যথেষ্ট নয়, বেহেশ্তের মূল্য হওয়া তো দূরের কথা। একদা একটি ইদুর এক উট দেখে তাকে পছন্দ করল। (বন্ধুত্ব গড়ার আশায়) সে তার লাগাম ধরে টান দিলে উটটি তার অনুসরণ করল। অতঃপর যখন উভয়ে ইদুরের ঘরের দরজায় সামনে উপস্থিত হল, তখন থমকে দাঁড়িয়ে উট যেন তার ভাব-জিভে বলতে লাগল, প্রেম করতে হলে তুমি প্রেমিকের জন্য এমন ঘর প্রস্তুত কর, যা তোমার প্রেমিকের জন্য উপযুক্ত অথবা এমন প্রেমিক নির্বাচন কর, যে তোমার ঘরের উপযুক্ত।
এই উদাহ্রণ থেকে তুমি শিক্ষা নাও, আর এমন নামায পড় যা তোমার সেই (বিশাল পরাক্রমশালী) মা’বূদের জন্য উপযুক্ত। নচেৎ এমন মা’বূদ দেখ, যে তোমার নামাযের উপযুক্ত।’ (আল-মুদহিশ ৪৭২-৪৭৩পৃ:)
এই সকল উপদেশ যদি মেনে চলেন, তাহলে ইনশাআল্লাহ আপনার নামাযে রুহ্ আসবে এবং তা কায়েম ও প্রতিষ্ঠা হবে। আর এই নামাযই হবে আপনাকে মন্দ কাজ হতে বিরতকারী।
এবার সলফে সালেহীনের নিকট থেকে একাগ্রতার কিছু উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত নিন। ইনশাআল্লাহ আপনি তাতে আরো উৎসাহ্ ও উদ্দীপনা পাবেন।