লগইন করুন
(১০) ইক্বামতের বাক্যগুলো জোড়া জোড়া দেয়ার পক্ষে গোঁড়ামী করা :
ইক্বামতের শব্দগুলো জোড়া জোড়া বলা জায়েয। এর পক্ষে দু’একটি হাদীছ বর্ণিত হয়েছে।[1] কিন্তু এর উপর যিদ ও গোঁড়ামী করার কোন সুযোগ নেই। কারণ ইক্বামত একবার করে বলাই উত্তম এবং এর প্রতি আমল করাই উচিৎ। এর পক্ষেই বেশী হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। বরং আবু মাহযূরা (রাঃ) ছাড়া যে সমস্ত ছাহাবী উক্ত মর্মে হাদীছ বর্ণনা করেছেন, তারা সকলেই একবারের কথা উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া অনুধাবন করার বিষয় হল, রাসূল (ছাঃ)-এর নিযুক্ত মুয়াযযিন ছিলেন বেলাল (রাঃ)। আর তিনি তাকে একবার করে ইক্বামত দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাহলে কোন্ আমলটি গ্রহণ করা উত্তম?
عَنْ أَنَسٍ قَالَ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ أَمَرَ بِلاَلاً أَنْ يَشْفَعَ الأَذَانَ وَأَنْ يُوْتِرَ الإِقَامَةَ.
আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বেলাল (রাঃ)-কে আযান দুইবার করে আর ইক্বামত একবার করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।[2]
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ إِنَّمَا كَانَ الأَذَانُ عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ مَرَّتَيْنِ مَرَّتَيْنِ وَالإِقَامَةُ مَرَّةً مَرَّةً غَيْرَ أَنَّهُ يَقُوْلُ قَدْ قَامَتِ الصَّلاَةُ قَدْ قَامَتِ الصَّلاَةُ
ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ)-এর যুগে আযান ছিল দুই বার দুইবার করে এবং ইক্বামত ছিল একবার একবার করে। তবে ‘ক্বাদ ক্বা-মাতিছ ছালাহ’ দুইবার ছিল।[3]
জ্ঞাতব্য : ইক্বামতের শব্দগুলো একবার করে বলা যাবে না বলে যে বর্ণনা প্রচলিত আছে, তা জাল। যেমন-
(أ) مَنْ أَفْرَدَ الْإِقَامَةَ فَلَيْسَ مِنَّا
(ক) ‘যে ব্যক্তি একবার করে ইক্বামত দিবে সে আমার উম্মত নয়’।[4]
তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি জাল। এর কোন সনদ নেই।[5]
(ب) عَنْ عَوْنِ بْنِ أَبِىْ جُحَيْفَةَ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ أَذَّنَ بِلاَلٌ لِرَسُوْلِ اللهِ مَثْنىَ مَثْنىَ وَأَقَامَ مِثْلَ ذَلِكَ.
(খ) আওউন বিন আবী জুহায়ফাহ তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন যে, বেলাল (রাঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর সময় আযান দিতেন জোড়া জোড়া করে। আর ইক্বামতও দিতেন অনুরূপভাবে।[6]
তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি জাল।[7]
[2]. নাসাঈ হা/৬২৭, ১/৭৩ পৃঃ; ছহীহ বুখারী হা/৬০৫, ৬০৬, ৬০৭, ১/৮৫ পৃঃ, (ইফাবা হা/৫৭৮-৫৮০, ২/৪২-৪৩ পৃঃ), ‘আযান’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২ ও ৩; ছহীহ মুসলিম হা/৮৬৪, ৮৬৫, ৮৬৭, ১/৬৪ পৃঃ, (ইফাবা হা/৭২২, ৭২৩ ও ৭২৫), ‘ছালাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২; মিশকাত হা/৬৪১, পৃঃ ৬৩; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৯০, ২/১৯০ পৃঃ, ‘আযান’ অনুচ্ছেদ।
[3]. আবুদাঊদ হা/৫১০, ১/৭৬ পৃঃ; মিশকাত হা/৬৪৩, পৃঃ ৬৩; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৯২, ২/১৯২ পৃঃ।
[4]. তাযকিরাতুল মাওযূ‘আত, পৃঃ ৩৫।
[5]. তাযকিরাতুল মাওযূ‘আত, পৃঃ ৩৫।
[6]. ত্বাবারাণী, আল-আওসাত্ব হা/৭৮২০।
[7]. তাযকিরাতুল মাওযূ‘আত, পৃঃ ৩৫; ইবনুল জাওযী (৫১০-৫৯৭ হিঃ), আল-মাওযূ‘আত ২/৯২ পৃঃ; আল-আওসাত্ব হা/৭৮২০।