লগইন করুন
(2) قَالَ النَّبِىُّ مَنَ تَرَكَ صَلاَةً حَتىَّ مَضَى وَقْتُهَا ثُمَّ قَضَى عُذِّبَ فِى النَّارِ حُقْبًا وَالْحُقْبُ ثَمَانُوْنَ سَنَةً كُلُّ سَنَةٍ ثَلاَثمائة وَسِتُّوْنَ يَوْمًا كُلُّ يَوْمٍ اَلْفُ سَنَةٍ مِمَّا تَعُدُّوْنَ.
(২) নবী (ছাঃ) বলেন, যদি কোন ব্যক্তি এক ওয়াক্ত ছালাত ছেড়ে দেয় আর ইতিমধ্যে ঐ ছালাতের ওয়াক্ত পার হয়ে যায় এবং ছালাত আদায় করে নেয়, তবুও তাকে এক হুকবা জাহান্নামে শাস্তি দেওয়া হবে। এক হুকবা হল, ৮০ বছর। আর প্রত্যেক বছর ৩৬০ তিন। আর প্রত্যেক দিন এক হাযার বছরের সমান, যেভাবে তোমরা গণনা কর। উল্লেখ্য, উক্ত হিসাব অনুযায়ী সর্বমোট দুই কোটি অষ্টাশি লক্ষ বছর হয়।[1]
তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি মিথ্যা ও বানোয়াট। উক্ত বক্তব্য তাবলীগ জামা‘আতের অনুসরণীয় গ্রন্থ ফাযায়েলে আমল-এর ফাযায়েলে নামায অংশে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে কোন প্রমাণ পেশ করা হয়নি। বরং বলা হয়েছে, كَذَا فِىْ مَجَالِسِ الْأَبْرَارِ قُلْتُ لَمْ أَجِدْهُ فِيْمَا عِنْدِىْ مِنْ كُتُبِ الْحَدِيْثِ ‘এভাবেই ‘মাজালিসুল আবরারে’ উল্লেখ করা হয়েছে। তবে আমার নিকটে হাদীছের যে সমস্ত গ্রন্থ রয়েছে, তার মধ্যে আমি উহা পাইনি’।[2] লেখক নিজেই যেহেতু স্বীকার করেছেন, সেহেতু আর মন্তব্যের প্রয়োজন নেই। তবে দুঃখজনক হল, স্পষ্ট হওয়ার পর কেন তা রাসূল (ছাঃ)-এর নামে বর্ণনা করতে হবে? এটা নিঃসন্দেহে তাঁর নামে মিথ্যাচারের শামিল।
জ্ঞাতব্য : ছহীহ হাদীছের দৃষ্টিকোণ থেকেও কথাটি সঠিক নয়। কারণ রাসূল (ছাঃ) বলেন, ঘুম বা ভুলের কারণে যে ব্যক্তির ছালাত ছুটে যাবে, তার কাফ্ফারা হল যখন স্মরণ হবে তখন তা পড়ে নেয়া’।[3] এছাড়া রাসূল (ছাঃ) এবং ছাহাবায়ে কেরাম খন্দকের যুদ্ধের দিন সূর্য ডুবার পর আছরের ছালাত আদায় করেন। অতঃপর মাগরিবের ছালাত আদায় করেন।[4] তাছাড়া ফজর ছালাতও একদিন তাঁরা সূর্যের তাপ বাড়ার পরে পড়েছেন।[5] তাহলে তাঁদের শাস্তি কত বছর হবে? (নাঊযুবিল্লাহ)।
[2]. ফাযায়েলে আমল (উর্দূ), পৃঃ ৩৯; বাংলা, পৃঃ ১১৬।
[3]. ছহীহ বুখারী হা/৫৯৭, ১/৮৪ পৃঃ, (ইফাবা হা/৫৭০, ২/৩৫ পৃঃ), ‘ছালাতের ওয়াক্ত সমূহ’ অধ্যায়, ‘যে ব্যক্তি ছালাত ভুল করে’ অনুচ্ছেদ-৩৭; ছহীহ মুসলিম হা/১৫৯২, ১৫৯৮, ১৬০০, ১/২৩৮, (ইফাবা হা/১৪৩১ ও ১৪৩৬), ‘মসজিদ সমূহ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৫৬; মিশকাত হা/৬০৩, পৃঃ ৬১ এবং হা/৬৮৪, পৃঃ ৬৬-৬৭; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৬৩৩, ২/২০৮ পৃঃ।
[4]. ছহীহ বুখারী হা/৫৯৬ ও ৫৯৮, ১/৮৪ পৃঃ, (ইফাবা হা/৫৬৯, ২/৩৫ পৃঃ), ‘ছালাতের সময়’ অধ্যায়, ‘ওয়াক্ত পার হয়ে যাওয়ার পর রাসূল (ছাঃ) জামা‘আতের সাথে ছালাত আদায় করেছেন’ অনুচ্ছেদ-৩৬; ছহীহ মুসলিম হা/১৪৬২, ১/২২৭, (ইফাবা হা/১৩০৩), ‘মসজিদ সমূহ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৩৭।
[5]. ছহীহ মুসলিম হা/১৫৯২, ১/২৩৮ পৃঃ, (ইফাবা হা/১৪৩১), ‘মসজিদ সমূহ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৫৬; মিশকাত হা/৬৮৪, পৃঃ ৬৬-৬৭; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৬৩৩, ২/২০৮ পৃঃ।