লগইন করুন
আমলের মাধ্যমে ব্যক্তি পরিচয় ফুটে উঠে ও আল্লাহর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। সৎ আমল করা একজন মুসলিম ব্যক্তির প্রধান দায়িত্ব। আর সেজন্যই তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ আমলের বিশুদ্ধতা যাচাইয়ের প্রয়োজন মনে করে না। যে আমল সমাজে চালু আছে সেটাই করে থাকে। এমনকি আল্লাহর নৈকট্য লাভের সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম ছালাতের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। অথচ সমাজে প্রচলিত ছালাতের হুকুম-আহকাম অধিকাংশই ত্রুটিপূর্ণ। ওযূ, তায়াম্মুম, ছালাতের ওয়াক্ত, আযান, ইক্বামত, ফরয, নফল, বিতর, তাহাজ্জুদ, তারাবীহ, জুম‘আ, জানাযা ও ঈদের ছালাত সবই বিদ‘আত মিশ্রিত এবং যঈফ ও জাল হাদীছে আক্রান্ত। ফলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছালাতের সাথে আমাদের ছালাতের কোন মিল নেই। বিশেষ করে জাল ও যঈফ হাদীছের করালগ্রাসে রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাত সমাজ থেকে প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। ফলে সমাজ জীবনে প্রচলিত ছালাতের কোন প্রভাব নেই। নিয়মিত মুছল্লী হওয়া সত্ত্বেও অনেকে নানা অবৈধ কর্মকান্ড ও দুর্নীতির সাথে জড়িত।
সমাজে মসজিদ ও মুছল্লীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও দুর্নীতি, সন্ত্রাস, সূদ-ঘুষ, চুরি-ডাকাতি, যুলুম-নির্যাতন, রাহাজানি কমছে না। অথচ আল্লাহ তা‘আলার দ্ব্যর্থহীন ঘোষণা হল, ‘নিশ্চয়ই ছালাত অন্যায় ও অশ্লীল কর্ম থেকে বিরত রাখে’ (সূরা আনকাবূত ৪৫)। অতএব মুছল্লীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে যাবতীয় অন্যায়-অপকর্ম বন্ধ হবে, নিঃসন্দেহে কমে যাবে এটাই আল্লাহর দাবী। কিন্তু সমাজে প্রচলিত ছালাতের কোন কার্যকারিতা নেই কেন? এ জন্য মৌলিক তিনটি কারণ চিহ্নিত করা যায়।
(এক) খুলূছিয়াতে ত্রুটি রয়েছে। অর্থাৎ ছালাত আদায় করি কিন্তু একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে তা পেশ করি না। অধিকাংশ মুছল্লী মসজিদেও সিজদা করে মাযারেও সিজদা করে, রাসূল (ছাঃ)-কেও সম্মান করে পীরেরও পূজা করে, ইসলামকেও মানে অন্যান্য তরীক্বা ও বিজাতীয় মতবাদেরও অনুসরণ করে। এই আক্বীদায় ছালাত আদায় করলে ছালাত হবে না। একনিষ্ঠচিত্তে একমাত্র আল্লাহর জন্যই সবকিছু করতে হবে, তাঁরই আইন ও বিধান মানতে হবে।[1]
(দুই) রাসূল (ছাঃ)-এর পদ্ধতিতে ছালাত আদায় না করা। অধিকাংশ মুছল্লীই তার ছালাত সম্পর্কে উদাসীন। তিনি যত জ্ঞানী ও বুদ্ধিমানই হোন লক্ষ্য করেন না, তার ছালাত রাসূল (ছাঃ)-এর তরীক্বায় হচ্ছে কি-না। অথচ ছালাতের প্রধান শর্তই হল, রাসূল (ছাঃ) যেভাবে ছালাত আদায় করেছেন ঠিক সেভাবেই আদায় করা।[2] এ ব্যাপারে শরী‘আতের নির্দেশ অত্যন্ত কঠোর। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘সুতরাং দুর্ভোগ ঐ সমস্ত মুছল্লীদের জন্য, যারা ছালাতের ব্যাপারে উদাসীন, যারা লোক দেখানোর জন্য আদায় করে’ (মাঊন ৪-৬)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘ক্বিয়ামতের মাঠে বান্দার সর্বপ্রথম হিসাব নেওয়া হবে ছালাতের। ছালাতের হিসাব শুদ্ধ হলে তার সমস্ত আমলই সঠিক হবে আর ছালাতের হিসাব ঠিক না হলে, তার সমস্ত আমল বরবাদ হবে’।[3]
জনৈক ছাহাবী রাসূল (ছাঃ)-এর উপস্থিতিতে তিনবার ছালাত আদায় করেন। কিন্তু রাসূল (ছাঃ) তিনবারই তাকে বলেন, তুমি ফিরে যাও এবং ছালাত আদায় কর, তুমি ছালাত আদায় করোনি।[4] ঐ ব্যক্তি তিন তিনবার অতি সাবধানে ছালাত আদায় করেও রাসূল (ছাঃ)-এর পদ্ধতি মোতাবেক না হওয়ায় তা ছালাত বলে গণ্য হয়নি। উক্ত হাদীছ থেকে বুঝা যায় যে, রাসূল (ছাঃ)-এর তরীক্বায় ছালাত আদায় না করলে কা‘বা ঘরে ছালাত আদায় করেও কোন লাভ নেই। তাঁর ছাহাবী হলেও ছালাত হবে না। অন্য হাদীছে এসেছে, হুযায়ফাহ (রাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে ছালাতে রুকূ-সিজদা পূর্ণভাবে আদায় করতে না দেখে ছালাত শেষে তাকে ডেকে বললেন, তুমি ছালাত আদায় করনি। যদি তুমি এই অবস্থায় মারা যাও, তাহলে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে যে ফিতরাতের উপর আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন সেই ফিতরাতের বাইরে মারা যাবে।[5] অন্য বর্ণনায় রয়েছে, হুযায়ফা (রাঃ) তাকে প্রশ্ন করলে বলে, সে প্রায় ৪০ বছর যাবৎ ছালাত আদায় করছে। তখন তিনি উক্ত মন্তব্য করেন।[6] অতএব বছরের পর বছর ছালাত আদায় করেও কোন লাভ হবে না, যদি তা রাসূল (ছাঃ)-এর পদ্ধতি মোতাবেক না হয়।
(তিন) হারাম উপার্জন। ‘হালাল রূযী ইবাদত কবুলের পূর্বশর্ত’ কথাটি সমাজে প্রচলিত থাকলেও এর প্রতি কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। প্রত্যেককে লক্ষ্য করা উচিৎ তার খাদ্য, পানীয়, পোশাক, আসবাবপত্র হালাল না হারাম। কারণ হারাম মিশ্রিত কোন ইবাদত আল্লাহ কবুল করেন না। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র। তিনি পবিত্র বস্ত্ত ছাড়া কবুল করেন না’।কারো খাদ্য, পানীয় ও পোশাক হারাম হলে তার প্রার্থনা গ্রহণযোগ্য হবে না।[7] তাই দুর্নীতি, আত্মসাৎ, প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ এবং সূদ-ঘুষ, জুয়া-লটারী ও অবৈধ পন্থায় প্রাপ্ত অর্থ ভক্ষণ করে ইবাদত করলে কোন লাভ হবে না।
মুছল্লী উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন না হওয়ার কারণে ছালাত যেমন পরিশুদ্ধ হয় না, তেমনি মুছল্লীর মাঝে একাগ্রতা ও মনোযোগ আসে না। ফলে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে ছালাতের কার্যকর কোন প্রভাবও পড়ে না।
অতএব আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হবে এমন ছালাত আদায় করতে চাইলে ছালাতকে অবশ্যই পরিশুদ্ধ করতে হবে এবং একমাত্র রাসূল (ছাঃ)-এর দেখানো পদ্ধতিতেই আদায় করতে হবে। অন্য সব পদ্ধতি বর্জন করতে হবে। কারণ অন্য কোন তরীক্বায় ছালাত আদায় করলে কখনোই একাগ্রতা ও খুশূ-খুযূ সৃষ্টি হবে না। আর আল্লাহভীতি ও একনিষ্ঠতা স্থান না পেলে মুছল্লী পাপাচার থেকে মুক্ত হতে পারবে না (সূরা বাক্বারাহ ২৩৮; মুমিনূন ২)। মনে রাখতে হবে যে, এই ছালাত যদি দুনিয়াবী জীবনে কোন প্রভাব না ফেলে, তাহলে পরকালীন জীবনে কখনোই প্রভাব ফেলতে পারবে না। তাই দলীয় গোঁড়ামী, মাযহাবী ভেদাভেদ, তরীক্বার বিভক্তিকে পিছনে ফেলে রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাতের পদ্ধতি অাঁকড়ে ধরতে হবে। ফলে সকল মুছল্লী একই নীতিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ছালাত আদায়ের সুযোগ পাবে। পুনরায় মুসলিম ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হবে। ছালাতের মাধ্যমেই সমাজ দুর্নীতি মুক্ত হবে। ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ জীবনে শান্তির ফল্গুধারা প্রবাহিত হবে।
চরম দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, দেশে প্রচলিত ইসলামী দলগুলো সমাজের সংস্কার কামনা করে এবং এ জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করে থাকে। কিন্তু তাদের মাঝে রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাত নেই। মাযহাব ও তরীক্বার নামে যে ছালাত প্রচলিত আছে, সেই ছালাতই তারা আদায় করে যাচ্ছে। ইসলামী আন্দোলনের কর্মী হিসাবে তারা যদি নিজেদের ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে মাযহাবী গোঁড়ামীর উপর রাসূল (ছাঃ)-এর আদর্শকে প্রাধান্য দিতে না পারেন, তাহলে জাতীয় জীবনে তারা কিভাবে ইসলামের শাসন কায়েম করবেন? বিশেষ করে রাসূল (ছাঃ)-এর তরীক্বায় ছালাত আদায় করতে তো সামাজিক ও প্রশাসনিক কোন বাধা নেই। তাহলে মূল কারণ কী? মাযহাবী আক্বীদা ও মায়াবন্ধনই মূল কারণ।
এক্ষণে রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাত প্রতিষ্ঠার জন্য কিভাবে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়, সে সম্পর্কে আলোচনা করা প্রয়োজন। আমাদের একান্ত বিশ্বাস নিম্নোক্ত ব্যক্তিবর্গ বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করলে ইনশাআল্লাহ কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাওয়া যাবে।
(ক) সম্মানিত ইমাম, খত্বীব ও আলেমগণ। সাধারণ মানুষকে সংশোধনের দায়িত্ব মূলতঃ তাদের উপরই অর্পিত হয়েছে। তাই তারা ছালাতের সঠিক পদ্ধতি জেনে মুছল্লীদেরকে বাস্তব প্রশিক্ষণ প্রদান করবেন। প্রয়োজনে জুম‘আর দিন মিম্বরে দাঁড়িয়ে ছালাত শিক্ষা দিবেন।[8] তবে অনেক হক্বপন্থী আলেম সঠিক বিষয়টি জানা সত্ত্বেও সামাজিক মর্যাদার কারণে প্রকাশ করেন না। তারা কি আল্লাহর সামনে দাঁড়ানোকে ভয় পান না (রহমান ৪৬; নাযিয়াত ৪০)? তাদেরকে মনে রাখতে হবে যে, যাবতীয় সম্মানের মালিক আল্লাহ (আলে ইমরান ২৬; নিসা ১৩৯)। অতএব তারা উক্ত দায়িত্বে অবহেলা করলে মুছল্লীদের ভুল ছালাতের পাপের ভার ক্বিয়ামতের দিন তাদেরকেও বহন করতে হবে।[9] আর যদি গোঁড়ামী করে জাল, যঈফ ও ভিত্তিহীন-বানোয়াট হাদীছ কিংবা বিদ‘আতী পদ্ধতিতে ছালাত শিক্ষা দেন এবং রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাতকে অবজ্ঞা করেন তবে তাদের শাস্তি আরো কঠোর হবে।[10] উক্ত ইমাম, খত্বীব ও আলেমগণ যেন আল্লাহকে ভয় করেন। আল্লাহ তাদের অন্তরের খবর রাখেন (হূদ ৫)।
(খ) দ্বীনের দাঈ, মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পরিবারের অভিভাবকগণ। যে সমস্ত দাঈ সমাজের সর্বস্তরে দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করেন, আলোচনা, বক্তব্য, সেমিনার, সম্মেলন, জালসা ইত্যাদি করে থাকেন, তারা আক্বীদা সংশোধনের দাওয়াত প্রদান করার পর বিশুদ্ধভাবে ছালাত আদায়ের গুরুত্ব আলোচনা করবেন এবং তার পদ্ধতি তুলে ধরবেন।[11] তারা যদি ছহীহ দলীল ছাড়া দাওয়াতী কাজ করেন তবে তা হবে জাহেলিয়াতের দাওয়াত, যার পরিণাম অত্যন্ত ভায়াবহ।[12] মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যদি এক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করেন, তবে সমাজে দ্রুত এর প্রভাব পড়বে। কারণ তারা কিতাব দেখে, পর্যালোচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত পেশ করতে পারবেন।[13] অনুরূপ পরিবারের অভিভাবকগণ যদি তাদের সন্তানদেরকে শুরুতেই রাসূল (ছাঃ)-এর তরীক্বায় ছালাত শিক্ষা দেন, তবে সমাজ থেকে প্রচলিত বিদ‘আতী ছালাত দ্রুত বিদায় নিবে এবং রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাত প্রতিষ্ঠিত হবে। কারণ সন্তানদেরকে ছালাত শিক্ষা দেয়ার মূল দায়িত্ব অভিভাবকের।[14] পক্ষান্তরে তারা যদি অবহেলা করেন এবং বিদ‘আতী ছালাতকেই চালু রাখেন, তবে তারাও আল্লাহর কাছে মুক্তি পাবেন না। তাদের সন্তানেরা উল্টা তাদের বিরুদ্ধে নালিশ করবে (আহযাব ৬৭-৬৮; ফুছি্ছলাত ২৯)।
(গ) সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত জ্ঞানী-গুণী ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, কলেজের শিক্ষক ও বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত অনেক জ্ঞানী ব্যক্তিও ছালাত আদায় করেন। প্রশাসনিক ব্যক্তি হিসাবে বিচারপতি, ম্যাজিস্ট্রেট, সচিব, ডিসি, এসপি, ওসি এবং জনপ্রতিনিধি হিসাবে মন্ত্রী, এমপি, চেয়ারম্যান, পরিচালক, সভাপতি, দায়িত্বশীল বিভিন্ন শ্রেণীর অনেকেই ছালাত আদায় করেন। তারা নিজেদের ছালাত যাচাই করে আদায় করলে সমাজ উপকৃত হয়। কারণ সাধারণ জনগণ তাদের প্রতি দৃষ্টি রাখে। তারাও মসজিদের ইমামকে বা অন্যান্য মুছল্লীদেরকে ছহীহ হাদীছ মোতাবেক ছালাত আদায়ের প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে পারেন। ছালাত যেহেতু অন্যায়-অশ্লীল কর্ম থেকে বিরত রাখে, তাই বিশুদ্ধ ছালাত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিতে পারেন। কিন্তু অশনিসংকেত হল, এই শ্রেণীর অধিকাংশ মানুষই সমাজে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে শিরক ও বিদ‘আতের পক্ষে অবস্থান নিয়ে থাকেন। এটা কখনোই কাম্য হতে পারে না। পৃথিবীতে যে যে শ্রেণীরই মানুষ হোন না কেন আল্লাহর কাছে তাক্বওয়া ছাড়া কোনকিছুর মূল্য নেই।[15] অতএব তারা যদি ক্ষমতা ও দম্ভের কারণে ছহীহ হাদীছকে প্রত্যাখ্যান করেন, তবে তাদেরকেও নমরূদ, আযর, ফেরআউন, হামান, কারূণ ও আবু জাহলদের ভাগ্যবরণ করতে হবে। ইবরাহীম (আঃ)-এর পিতা আযরের জন্য সুপারিশ করলেও আল্লাহ কবুল করবেন না। বরং তাঁর সামনে আযরকে পশুতে পরিণত করা হবে, নর্দমায় ডুবানো হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।[16] কারণ ইবরাহীম (আঃ) তাকে অহির দাওয়াত দিয়েছিলেন কিন্তু সে দাপট দেখিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছিল (মারইয়াম ৪২-৪৬)। তারা বহু বছর রাজত্ব করেও চরম অপমান ও লাঞ্ছনা নিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে। বর্তমান নেতারা স্বল্প সময়ের ক্ষমতা পেয়ে দাপট দেখাতে চান। কিন্তু পূর্ববর্তীদের কথা এতটুকুও চিন্তা করেন না। বর্তমানে বিভিন্ন সমাজে ও মসজিদে সমাজপতিদের দাপটে অসংখ্য বিদ‘আত চালু আছে। অতএব ক্ষমতাশীনরা সাবধান!
(ঘ) তরুণ ছাত্র ও যুব সমাজ। তারুণ্যের ঢেউ ও যৌবনের উদ্যমকে যে আল্লাহর ইবাদতের মাধ্যমে পরিচালনা করবে, আল্লাহ তাকে ক্বিয়ামতের মাঠে তাঁর আরশের নীচে ছায়া দান করবেন।[17] সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত হল ছালাত। তারা উন্মুক্ত ও স্বাধীনচেতা কাফেলা হিসাবে যদি যাচাই সাপেক্ষে খোলা মনে ছালাতের সঠিক পদ্ধতি গ্রহণ করে তবে সমাজ সংস্কার দ্রুত সম্ভব হবে। বরং যারা নেতৃত্বের আসনে বসে প্রভাব-প্রতিপত্তি দেখিয়ে সুন্নাত বিরোধী আমল চালু রাখতে চায়, তাদেরকেও তারা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবে। কিন্তু যে সমস্ত ছাত্র ও যুবক বিদ‘আতী ছালাতে অভ্যস্ত থাকে এবং ছালাতকে যাচাই না করে তবে তাদের মত হতভাগা আর কেউ নেই। কারণ তারা এর জবাব না দেয়া পর্যন্ত ক্বিয়ামতের মাঠে পার পাবে না।[18]
(ঙ) গ্রন্থকার, লেখক, কলামিষ্ট, প্রাবন্ধিক, গবেষক, সাংবাদিক, আইনজীবী। তাদের মধ্যেও অনেকে ছালাতে অভ্যস্ত এবং দ্বীনদার তাক্বওয়াশীল মানুষ আছে। সমাজে তাদের যেমন মর্যাদা আছে তেমনি ব্যক্তি প্রভাবও আছে। রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাত প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে তারাও অবদান রাখতে পারেন। কিন্তু তারা যদি নিজেদের ছালাত বিশুদ্ধভাবে আদায় না করেন, তবে তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন অন্যদেরকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবেন। কারণ সমাজে তারা শ্রদ্ধার পাত্র। মানুষ তাদেরকে অনুসরণ করে। তাই তাদের দায়িত্বও বেশী। তারা নিজেদের পেশার ব্যাপারে যতটা সচেতন ও তথ্য উদ্ঘাটনে যতটা অনুসন্ধানী, বিশুদ্ধভাবে ছালাত আদায়ের ক্ষেত্রে ততটা অনুরাগী নন। অথচ এটা চিরস্থায়ী আর অন্যান্য বিষয় ক্ষণস্থায়ী।
জাল-যঈফ হাদীছ মিশ্রিত প্রচলিত ছালাত উঠিয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাত প্রতিষ্ঠা করা নিঃসন্দেহে কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তবে নিম্নের বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিলে ইনশাআল্লাহ মাযহাবী গোঁড়ামী ও প্রাচীন ধ্যান-ধারণা পরিত্যাগ করা সহজ হবে।
(১) ছালাতের যাবতীয় আহকাম ছহীহ দলীল ভিত্তিক হতে হবে।
ছালাত ইবাদতে তাওক্বীফী যাতে দলীল বিহীন ও মনগড়া কোন কিছু করার সুযোগ নেই। প্রমাণহীন কোন বিষয় পাওয়া গেলে তা সঙ্গে সঙ্গে পরিত্যাগ করতে হবে। কত বড় ইমাম, বিদ্বান, পন্ডিত, ফক্বীহ বলেছেন বা করেছেন তা দেখার প্রয়োজন নেই। কারণ প্রমাণহীন কথার কোন মূল্য নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, فَاسْأَلُوْا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لاَ تَعْلَمُوْنَ- بِالْبَيِّنَاتِ وَالزُّبُرِ ‘সুতরাং তোমরা যদি না জান তবে স্পষ্ট দলীলসহ আহলে যিকিরদের জিজ্ঞেস কর’ (সূরা নাহল ৪৩-৪৪)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম সর্বদা দলীলের ভিত্তিতেই মানুষকে আহবান জানাতেন।[19]
ইসলামের ইতিহাসে প্রসিদ্ধ চার ইমামসহ মুহাদ্দিছ ওলামায়ে কেরামও দলীলের ভিত্তিতে মানুষকে আহবান জানিয়েছেন। ইমাম আবু হানীফা (৮০-১৫০হিঃ) বলেন, لَايَحِلُّ لِأَحَدٍ أَنْ يَّأْخُذَ بِقَوْلِنَا مَا لَمْ يَعْلَمْ مِنْ أَيْنَ أَخَذْنَاهُ ‘ঐ ব্যক্তির জন্য আমাদের কোন বক্তব্য গ্রহণ করা হালাল নয়, যে জানে না আমরা উহা কোথা থেকে গ্রহণ করেছি’।[20]
ইমাম শাফেঈ (১৫০-২০৪হিঃ) বলেন, إِذَا رَأَيْتَ كَلاَمِىْ يُخَالِفُ الْحَدِيْثَ فَاعْمَلُوْا بِالْحَدِيْثِ وَاضْرِبُوْا بِكَلاَمِىْ الْحَائِطَ. ‘যখন তুমি আমার কোন কথা হাদীছের বরখেলাফ দেখবে, তখন হাদীছের উপর আমল করবে এবং আমার কথাকে দেওয়ালে ছুড়ে মারবে’।[21] ইমাম মালেক (৯৩-১৭৯হিঃ), ইমাম আহমাদ (১৬৪-২৪১হিঃ) সহ অন্যান্য ইমামও একই কথা বলেছেন।[22]
(২) জাল ও যঈফ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত সকল প্রকার আমল নিঃসঙ্কোচে ও নিঃশর্তভাবে বর্জন করতে হবে।
জাল ও যঈফ হাদীছ দ্বারা কোন শারঈ বিধান প্রমাণিত হয় না। জাল হাদীছের উপর আমল করা পরিষ্কার হারাম।[23] সে কারণ ছাহাবায়ে কেরাম যঈফ ও জাল হাদীছের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। আস্থাহীন, ত্রুটিপূর্ণ, অভিযুক্ত, পাপাচারী, ফাসিক্ব শ্রেণীর লোকের বর্ণনা তারা গ্রহণ করতেন না। প্রসিদ্ধ চার ইমামসহ অন্যান্য মুহাদ্দিছগণও এর বিরুদ্ধে ছিলেন। ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর চূড়ান্ত মূলনীতি ছিল যঈফ হাদীছ ছেড়ে কেবল ছহীহ হাদীছকে অাঁকড়ে ধরা। তাই দ্ব্যর্থহীনভাবে তিনি ঘোষণা করেন, إِذَا صَحَّ الْحَدِيْثُ فَهُوَ مَذْهَبِيْ ‘যখন হাদীছ ছহীহ হবে সেটাই আমার মাযহাব’।[24]
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) বলেন, إِنَّ الْعَالِمَ إِذَا لَمْ يَعْرِفِ الصَّحِيْحَ وَالسَّقِيْمَ وَالنَّاسِخَ والْمَنْسُوْخَ مِنَ الْحَدِيْثِ لاَيُسَمَّى عَالِمًا. ‘নিশ্চয়ই যে আলেম হাদীছের ছহীহ-যঈফ ও নাসিখণ্ডমানসূখ বুঝেন না তাকে আলেম বলা যাবে না’। ইমাম ইসহাক্ব ইবনু রাওয়াহাও একই কথা বলেছেন।[25] ইমাম মালেক, শাফেঈ (রহঃ)-এর বক্তব্যও অনুরূপ।[26]
মুহাদ্দিছ যায়েদ বিন আসলাম বলেন, مَنْ عَمِلَ بِخَبْرٍ صَحَّ أَنَّهُ كِذْبٌ فَهُوَ مِنْ خَدَمِ الشَّيْطَانِ. ‘হাদীছ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও যে তার উপর আমল করে সে শয়তানের খাদেম’।[27] অতএব ইমাম হোন আর ফক্বীহ হোন বা অন্য যেই হোন শরী‘আত সম্পর্কে কোন বক্তব্য পেশ করলে তা অবশ্যই ছহীহ দলীলভিত্তিক হতে হবে। উল্লেখ্য যে, কিছু ব্যক্তি নিজেদেরকে মুহাদ্দিছ বলে ঘোষণা করছে এবং না জেনেই যেকোন হাদীছকে যখন তখন ছহীহ কিংবা যঈফ বলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। এরা আলেম নামের কলঙ্ক। এদের থেকে সাবধান থাকতে হবে। (এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা দ্রঃ ‘যঈফ ও জাল হাদীছ বর্জনের মূলনীতি’ শীর্ষক বই)।
(৩) প্রচলিত কোন আমল শারঈ দৃষ্টিকোন থেকে ভুল প্রমাণিত হলে সাথে সাথে তা বর্জন করতে হবে এবং সঠিকটা গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র গোঁড়ামী করা যাবে না। পূর্বপুরুষদের মাঝে চালু ছিল, বড় বড় আলেম করে গেছেন, এখনো অধিকাংশ আলেম করছেন, এখনো সমাজে চালু আছে, এ সমস্ত জাহেলী কথা বলা যাবে না।
ভুল হওয়া মানুষের স্বভাবজাত। মানুষ মাত্রই ভুল করবে, কেউই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। তবে ভুল করার পর যে সংশোধন করে নেয় সেই সর্বোত্তম। আর যে সংশোধন করে না সে শয়তানের বন্ধু। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, كُلُّ ابْنِ آدَمَ خَطَّاءٌ وَخَيْرُ الْخَطَّائِيْنَ التَّوَّابُوْنَ. ‘প্রত্যেক আদম সন্তান ভুলকারী আর উত্তম ভুলকারী সে-ই যে তওবাকারী’।[28] যারা ভুল করার পর তওবা করে এবং সংশোধন করে নেয় আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেন এবং ইহকাল ও পরকালে চিন্তামুক্ত রাখবেন (আন‘আম ৪৮, ৫৪)। সর্বশ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)ও ভুল করেছেন এবং সংশোধন করে নিয়েছেন।[29] সাহো সিজদার বিধানও এখান থেকেই চালু হয়েছে। অনুরূপ চার খলীফাসহ অন্যান্য ছাহাবীদেরও ভুল হয়েছে।[30] বিশেষ করে ওমর (রাঃ) ছাহাবীদের মধ্যে সর্বাধিক জ্ঞানী হওয়া সত্ত্বেও অনেক বিষয় অজানা ও স্মরণ না থাকার কারণে ভুল সিদ্ধান্ত পেশ করেছিলেন। কিন্তু সঠিক বিষয় জানার পর বিন্দুমাত্র দেরী না করে তার প্রতি আত্মসমর্পণ করেছেন।[31] তাই একথা অনুস্বীকার্য যে, আগের আলেমগণ অনেক কিছু জানতেন। তবে তারা সবকিছু জানতেন, তারা কোন ভুল করেননি এই দাবী সঠিক নয়। কারণ তিনি আদম সন্তান হলে ভুল করবেনই। এমনকি আল্লাহ তা‘আলা যাকে নির্বাচন করে মুজাদ্দিদ হিসাবে পাঠান, তিনিও ভুল করতে পারেন বলে রাসূল (ছাঃ) ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।[32] সুতরাং সাধারণ আলেমের ভুল হবে এটা অতি স্বাভাবিক। তাই যিদ না করে ভুল সংশোধন করে নেয়াই উত্তম বান্দার বৈশিষ্ট্য। তাছাড়া অনেক সময় আল্লাহ তা‘আলা এবং রাসূল (ছাঃ) কোন বিধানকে রহিত করেছেন এবং তার স্থলে অন্যটি চালু করেছেন (বাক্বারাহ ১০৬)। তখন সেটাই সকল ছাহাবী গ্রহণ করেছেন। গোঁড়ামী করেননি, কোন প্রশ্ন করেননি। তাদের থেকেও আমরা শিক্ষা নিতে পারি। কারণ ভুল সংশোধন না করে বাপ-দাদা বা বড় বড় আলেমদের দোহাই দেওয়া অমুসলিমদের স্বভাব (বাক্বারাহ ১৭০; লোকমান ২১)। তাছাড়া এটাও বিশ্বাস করতে হবে যে, অসংখ্য পথভ্রষ্ট আলেম থাকবে যারা মানুষকে জাহান্নামের দিকে ডাকবে।[33] ইসলামের নামে অসংখ্য ভ্রান্ত দল থাকবে। তারা নতুন নতুন শরী‘আত আবিষ্কার করবে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করবে।[34] এগুলো রাসূল (ছাঃ)-এর ভবিষ্যদ্বাণী। সুতরাং উক্ত আলেম ও দলের ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে। তাদের দোহাই দেয়া যাবে না।
(৪) খুঁটিনাটি বলে কোন সুন্নাতকে অবজ্ঞা করা যাবে না :
ইসলামের কোন বিধানই খুঁটিনাটি নয়। অনুরূপ কোন সুন্নাতই ছোট নয়। রাসূল (ছাঃ) তাঁর উম্মতের জন্য ছোট বড় যা কিছু বলেছেন সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশপ্রাপ্ত।[35] সুতরাং উক্ত ভ্রান্ত আক্বীদা থেকে বেরিয়ে এসে রাসূল (ছাঃ)-এর যেকোন সুন্নাতকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। কেননা সুন্নাতকে অবজ্ঞা করা ও খুঁটিনাটি বলে তাচ্ছিল্য করা অমার্জনীয় অপরাধ। রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবীগণ এই অবহেলাকে মুহূর্তের জন্যও বরদাশত করেননি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একদা বারা ইবনু আযেব (রাঃ)-কে ঘুমানোর দু‘আ শিক্ষা দিচ্ছিলেন। তার এক অংশে তিনি বলেন, ‘(হে আল্লাহ!) আপনার নবীর প্রতি ঈমান আনলাম, যাকে আপনি প্রেরণ করেছেন’। আর বারা (রাঃ) বলেন, ‘এবং আপনার রাসূলের প্রতি ঈমান আনলাম, যাকে আপনি প্রেরণ করেছেন’। উক্ত কথা শুনে রাসূল (ছাঃ) তার হাত দ্বারা বারার বুকে আঘাত করে বলেন, বরং ‘আপনার নবীর প্রতি ঈমান আনলাম যাকে আপনি প্রেরণ করেছেন’।[36] এখানে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ‘নবীর’ স্থানে ‘রাসূল’ শব্দটিকে বরদাশত করলেন না। জনৈক ছাহাবী ছালাতের মধ্যে সামান্য ত্রুটি করলে তিনি তাকে ডেকে বলেন, হে অমুক! তুমি কি আল্লাহকে ভয় কর না। তুমি কি দেখ না কিভাবে ছালাত আদায় করছ?[37]
রাসূল (ছাঃ) একদিন ছালাতের জন্য তাকবীরে তাহরীমা বলতে শুরু করেছেন। এমতাবস্থায় দেখতে পেলেন যে, এক ব্যক্তির বুক কাতার থেকে সম্মুখে একটু বেড়ে গেছে তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহর বান্দারা! হয় তোমরা কাতার সোজা করবে, না হয় আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের চেহারা সমূহকে বিকৃতি করে দিবেন’।[38] নবী (ছাঃ) একদা এক ব্যক্তিকে ডান হাতের উপর বাম হাত রেখে ছালাত আদায় করতে দেখে তিনি ডান হাতটাকে বাম হাতের উপর করে দেন।[39]
অতএব ছালাতের যেকোন আহকামকে খুঁটিনাটি বলে অবজ্ঞা করা যাবে না। বরং সেগুলো পালনে বাহ্যিকভাবে যেমন নানাবিধ উপকার রয়েছে, তেমনি অঢেল নেকীও রয়েছে। যেমন- রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের পিছনে রয়েছে ধৈর্যের যুগ। সে সময় যে ব্যক্তি সুন্নাতকে শক্ত করে অাঁকড়ে ধরে থাকবে সে তোমাদের সময়ের ৫০ জন শহীদের নেকী পাবে’।[40] বর্তমান যুগের প্রত্যেক সুন্নাতের পাবন্দ ব্যক্তির জন্যই এই সুসংবাদ।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি (কাতারের মধ্যে দু’জনের) ফাঁক বন্ধ করবে, আল্লাহ তা‘আলা এর বিনিময়ে তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দিবেন এবং তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর তৈরি করবেন’।[41] যে ব্যক্তি ছালাতে স্বশব্দে আমীন বলবে এবং তা ফেরেশতাদের আমীনের সাথে মিলে যাবে, তার পূর্বের পাপ সমূহ ক্ষমা করা হবে।[42] উক্ত সুন্নাতগুলো সাধারণ কিন্তু নেকীর ক্ষেত্রে কত অসাধারণ তা কি আমরা লক্ষ্য করি?
সবচেযে বড় বিষয় হল, এই সুন্নাতগুলো সমাজে চালু করতে শত শত হক্বপন্থী আলেমের রক্ত প্রবাহিত হয়েছে। ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলতে হয়েছে, অন্ধ কারাগারে জীবন দিতে হয়েছে, দীপান্তরে কালাপানির ভাগ্য বরণ করতে হয়েছে। যেমন বুকের উপর হাত বাঁধা, জোরে আমীন বলা, রাফঊল ইয়াদায়েন করা ইত্যাদি। আর সেই সুন্নাত সমূহকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা কত বড় অন্যায় হতে পারে?
(৫) সঠিক পদ্ধতিতে ছালাত আদায় করতে গিয়ে দেখার প্রয়োজন নেই যে, কতজন লোক তা করছে, কোন্ মাযহাবে চালু আছে, কোন্ ইমাম কী বলেছেন বা আমল করেছেন কিংবা কোন্ দেশের লোক করছে আর কোন্ দেশের লোক করছে না :
আল্লাহ প্রেরিত সংবিধান চিরন্তন, যা নিজস্ব গতিতে চলমান। এই মহা সত্যকেই সর্বদা অাঁকড়ে ধরে থাকতে হবে একাকী হলেও। ইবরাহীম (আঃ) নানা যুলুম-অত্যাচার সহ্য করে একাই সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। তাই তিনি বিশ্ব ইতিহাসে মহা সম্মানিত হয়েছেন (নাহল ১২০; বাক্বারাহ ১২৪)। সমগ্র জগতের বিদ্রোহী মানুষরা তার সম্মান ছিনিয়ে নিতে পারেনি। সংখ্যা কোন কাজে আসেনি। মূলকথা হল- অহীর বিধান সংখ্যা, দেশ, অঞ্চল, বয়স, সময়, মেধা কোন কিছুকেই তোয়াক্কা করে না। অনেকে বলতে চায়, চার ইমামের পরে মুহাদ্দিছগণের জন্ম। সুতরাং ইমামদের কথাই গ্রহণযোগ্য। অথচ ছাহাবীরা সুন্নাতকে অগ্রাধিকার দিতে বয়স্ক ব্যক্তি উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও মাত্র ৬/৭ বছরের বাচ্চাকে দিয়ে ছালাত পড়িয়ে নিয়েছেন।[43] ওমর (রাঃ) কনিষ্ঠ ছাহাবী আবু সাঈদ খুদরীর নিকট থেকে কারো বাড়ীতে গিয়ে তিনবার সালাম দেওয়া সংক্রান্ত হাদীছের পক্ষে সাক্ষী গ্রহণ করেন। কারণ তিনি এই হাদীছ জানতেন না।[44] অতএব মহা সত্যের উপর কোন কিছুর প্রাধান্য নেই। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, ‘হক্ব-এর অনুসারী দলই হল জামা‘আত যদিও তুমি একাকী হও’।[45] অতএব হক্বপন্থী ব্যক্তি একাকী হলেও সেটাই জান্নাতী দল।
[2]. ইমাম আবু আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল আল-বুখারী, ছহীহ বুখারী (রিয়ায : মাকতাবাতু দারিস সালাম, ১৯৯৯ খৃঃ/১৪১৭ হিঃ), হা/৬৩১; ছহীহ বুখারী (করাচী ছাপা : ক্বাদীমী কুতুবখানা, আছাহহুল মাতাবে‘ ২য় প্রকাশ : ১৩৮১হিঃ/১৯৮১খৃঃ), ১ম খন্ড, পৃঃ ৮৮, (ইফাবা হা/৬০৩, ২/৫২ পৃঃ), ‘আযান’ অধ্যায়, ‘মুসাফিরদের জন্য আযান যখন তারা জামা‘আত করবে’ অনুচ্ছেদ-১৮; মুহাম্মাদ ইবনু আব্দিল্লাহ আল-খত্বীব আত-তিবরীযী, মিশকাতুল মাছাবীহ, তাহক্বীক্ব : মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী (বৈরুত : আল-মাকতাবুল ইসলামী, ১৯৮৫/১৪০৫), হা/৬৮৩, ১/২১৫ পৃঃ; ভারতীয় ছাপা, পৃঃ ৬৬; মাওলানা নূর মোহাম্মদ আজমী, বঙ্গানুবাদ মিশকাত (ঢাকা : এমদাদিয় পুস্তকালয়, আগস্ট ২০০২), হা/৬৩২, ২/২০৮ পৃঃ, ‘ছালাত’ অধ্যায়, ‘সংশ্লিষ্ট আযান’ অনুচ্ছেদ; ছহীহ বুখারী হা/৬০০৮, ৭২৪৬।
[3]. আবুল ক্বাসেম সুলায়মান ইবনু আহমাদ আত-ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল আওসাত্ব (কায়রো : দারুল হারামাইন, ১৪১৫), হা/১৮৫৯; মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদীছ আছ-ছহীহাহ হা/১৩৫৮।
[4]. ছহীহ বুখারী হা/৭৫৭, ১/১০৪-১০৫, (ইফাবা হা/৭২১, ২/১১০ পৃঃ), ‘আযান’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৯৫; মিশকাত হা/৭৯০, ৭৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৭৩৪, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৫০।
[5]. ছহীহ বুখারী হা/৭৯১, ১/১০৯ পৃঃ, (ইফাবা হা/৭৫৫, ২/১২৫ পৃঃ), ‘আযান’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১১৯; ছহীহ ইবনে হিববান হা/১৮৯৪; মিশকাত হা/৮৮৪, পৃঃ ৮৩; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৮২৪, ২/২৯৫ পৃঃ।
[6]. ছহীহ সুনানে নাসাঈ, তাহক্বীক্ব : মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী, (রিয়ায : মাকতাবাতুল মা‘আরিফ, তাবি), হা/১৩১২, ১/১৪৭ পৃঃ; ছহীহ ইবনে হিববান হা/১৮৯৪, সনদ ছহীহ।
[7]. মুসলিম হা/২৩৯৩, ১/৩২৬ পৃঃ, ‘যাকাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২০; মিশকাত হা/২৭৬০, পৃঃ ২৪১; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২৬৪০, ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃঃ ১-২।
[8]. ছহীহ বুখারী হা/৯১৭, ১/১২৫ পৃঃ, (ইফাবা হা/৮৭১, ২/১৮৪ পৃঃ), ‘জুম‘আ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২৬; ছহীহ মুসলিম হা/১২৪৪, ১/২০৬ পৃঃ; মিশকাত হা/১১১৩, পৃঃ ৯৯; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১০৪৫, ৩য় খন্ড, পৃঃ ৬৫।
[9]. সূরা নাহল ২৫; আহযাব ৬৭-৬৮; মায়েদাহ ৬৭; ছহীহ বুখারী হা/১৩৮৬, ১/১৮৫ পৃঃ, (ইফাবা হা/১৩০৩, ২/৪২৭ পৃঃ), ‘জানাযা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৯৩; মিশকাত হা/৪৬২১, পৃঃ ৩৯৫-৩৯৬।
[10]. আন‘আম ১৪৪; নাহল ২৫; হা-ক্কাহ ৪৪-৪৬; ছহীহ বুখারী হা/১০৯, ১/২১, (ইফাবা হা/১১০, ১/৭৮ পৃঃ), ‘ইলম’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৩৮।
[11]. ছহীহ বুখারী হা/৭৩৭২, ২/১০৯৬ পৃঃ, ‘তাওহীদ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১।
[12]. আহমাদ হা/১৭৮৩৩; তিরমিযী হা/২৮৬৩, ‘আমছাল’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৩; মিশকাত হা/৩৬৯৪।
[13]. সূরা তওবা ১২২; ছহীহ বুখারী হা/৭২৪৬, ২/১০৭৬ পৃঃ, ‘খবরে আহাদ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১।
[14]. সূরা ত্ব-হা ১৩২; আবুদাঊদ হা/৪৯৫, পৃঃ ৭১, ‘ছালাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২৬; মিশকাত হা/৫৭২, পৃঃ ৫৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫২৬, ২/১৬১ পৃঃ, ‘ছালাত’ অধ্যায়।
[15]. হুজুরাত ১৩; আহমাদ হা/২৩৫৩৬।
[16]. ছহীহ বুখারী হা/৩৩৫০, ১/৪৭৩ পৃঃ, ‘নবীদের ঘটনাবলী’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৮; মিশকাত হা/৫৫৩৮, পৃঃ ৪৮৩, ‘হাশর’ অনুচ্ছেদ।
[17]. ছহীহ বুখারী হা/১৪২৩, ১/১৯১ পৃঃ, (ইফাবা হা/১৩৪০, ৩/১৯ পৃঃ), ‘যাকাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১৬; মিশকাত হা/৭০১, পৃঃ ৬৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৬৪৯, ২/২১৬ পৃঃ।
[18]. তিরমিযী হা/২৪১৬, ২/৬৭ পৃঃ, ‘ক্বিয়ামতের বর্ণনা’ অধ্যায়; মিশকাত হা/৫১৯৭, পৃঃ ৪৪৩, ‘রিক্বাক্ব’ অধ্যায়।
[19]. সূরা ইউসুফ ১০৮; নাজম ৩-৪; হা-ক্কাহ ৪৪-৪৬; ছহীহ বুখারী হা/৫৭৬৫, ২য় খন্ড, পৃঃ ৮৫৮, ‘চিকিৎসা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৪৮; আহমাদ ইবনু শু‘আইব আবু আব্দির রহমান আন-নাসাঈ, সুনানুন নাসাঈ আল-কুবরা (বৈরুত : দারুল কুতুব আল-ইলমিয়াহ, ১৪১১/১৯৯১), হা/১১১৭৪, ৬/৩৪৩ পৃঃ; আব্দুল্লাহ ইবনু আব্দির রহমান আবু মুহাম্মাদ আদ-দারেমী, সুনানুদ দারেমী (বৈরুত : দারুল কিতাব আল-আরাবী, ১৪০৭ হিঃ), হা/২০২; সনদ হাসান, মিশকাত হা/১৬৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১৫৯, ১/১২৩ পৃঃ; ছহীহ বুখারী হা/১৪৬৫, ১ম খন্ড, পৃঃ ১৯৮, ‘যাকাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৪৬; মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫১৬২।
[20] . ইবনুল ক্বাইয়িম, ই‘লামুল মুআক্কেঈন আন রাবিবল আলামীন (বৈরুত : দারুল কুতুব আল ইলমিয়াহ, ১৯৯৯৩/১৪১৪), ২য় খন্ড, পৃঃ ৩০৯; ইবনু আবেদীন, হাশিয়া বাহরুর রায়েক্ব ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃঃ ২৯৩; মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী, ছিফাতু ছালাতিন নাবী (ছাঃ) মিনাত তাকবীর ইলাত তাসলীম কাআন্নাকা তারাহু (রিয়ায : মাকতাবাতুল মা‘আরিফ, ১৯৯১/১৪১১), পৃঃ ৪৬।
[21]. আল-খুলাছা ফী আসবাবিল ইখতিলাফ, পৃঃ ১০৮; শাহ অলিউল্লাহ দেহলভী, ইক্বদুল জীদ ফী আহকামিল ইজতিহাদ ওয়াত তাক্বলীদ (কায়রো : আল-মাতবাআতুস সালাফিয়াহ, ১৩৪৫হিঃ), পৃঃ ২৭।
[22]. শারহু মুখতাছার খলীল লিল কারখী ২১/২১৩ পৃঃ; ইক্বদুল জীদ ফী আহকামিল ইজতিহাদ ওয়াত তাক্বলীদ, পৃঃ ২৮।
[23]. সূরা আন‘আম ১৪৪; আ‘রাফ ৩৩; হুজুরাত ৬; ছহীহ বুখারী হা/৫১৪৩ ও ৬০৬৪, ২/৮৯৬ পৃঃ; ইমাম আবুল হুসাইন মুসলিম বিন হাজ্জাজ আল-কুশাইরী, ছহীহ মুসলিম (দেওবন্দ : আছাহহুল মাতাবে‘ ১৯৮৬), হা/৬৫৩৬, ২/৩১৬; মিশকাত হা/৫০২৮, পৃঃ ৪২৭।
[24]. আব্দুল ওয়াহহাব শা‘রাণী, মীযানুল কুবরা (দিল্লী : ১২৮৬ হিঃ), ১ম খন্ড, পৃঃ ৩০।
[25]. আলবানী, ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব (রিয়ায : মাকতাবাতুল মা‘আরিফ, ২০০০/১৪২১), ১/৩৯, ভূমিকা দ্রঃ; আবু আব্দিল্লাহ আল-হাকিম, মা‘রেফাতু উলূমিল হাদীছ, পৃঃ ৬০।
[26]. ছহীহ মুসলিম, মুক্বাদ্দামাহ দ্রঃ, ১/১২ পৃঃ, ‘যা শুনবে তাই প্রচার করা নিষিদ্ধ’ অনুচ্ছেদ-৩; প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আল-খত্বীব, আস-সুন্নাহ ক্বাবলাত তাদবীন (রৈরুত : দারুল ফিকর, ১৯৮০/১৪০০), পৃঃ ২৩৭।
[27]. মুহাম্মাদ তাহের পাট্টানী, তাযকিরাতুল মাওযূ‘আত (বৈরুত : দারুল এহইয়াইত তুরাছ আল-আরাবী, ১৯৯৫/১৪১৫), পৃঃ ৭; ড. ওমর ইবনু হাসান ফালাতাহ, আল-ওয়ায‘উ ফিল হাদীছ (দিমাষ্ক : মাকতাবাতুল গাযালী, ১৯৮১/১৪০১), ১ম খন্ড, পৃঃ ৩৩৩।
[28]. ছহীহ তিরমিযী হা/২৪৯৯, ২/৭৬ পৃঃ,; মিশকাত হা/২৩৪১, পৃঃ ২০৪; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২২৩২, ৫/১০৪ পৃঃ।
[29]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, বুখারী হা/১২২৯, ১/১৬৪ পৃঃ এবং ১/৬৯ পৃঃ, (ইফাবা হা/১১৫৭, ২/৩৪৬); মিশকাত হা/১০১৭; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৯৫১, ৩/২৫ পৃঃ।
[30]. ইবনুল ক্বাইয়িম, ই‘লামুল মুআক্কেঈন ২/২৭০-২৭২।
[31]. বুখারী হা/৪৪৫৪, ২/৬৪০-৬৪১ পৃঃ, (ইফাব হা/৪১০২, ৭/২৪৪ পৃঃ), ‘মাগাযী’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৮৩; ছহীহ মুসলিম হা/৫৭৫৩, ২/২১০ পৃঃ, ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৭।
[32]. ছহীহ বুখারী হা/৭৩৫২, ২/১০৯২ পৃঃ, (ইফাবা হা/৬৮৫০, ১০/৫১৮ পৃঃ), ‘কিতাব ও সুন্নাহকে অাঁকড়ে ধরা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২১; মিশকাত হা/৩৭৩২, পৃঃ ৩২৪।
[33]. বুখারী হা/৭০৮৪, ২/১০৪৯ পৃঃ, (ইফাবা হা/৬৬০৫, ১০/৩৮০ পৃঃ), ‘ফিতনা সমূহ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১১; মুসলিম হা/৩৪৩৫; মিশকাত হা/৫৩৮২, পৃঃ ৪৬১; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫১৪৯, ১০/৩ পৃঃ।
[34]. আবুদাঊদ হা/৪৫৯৭, ২/৬৩১ পৃঃ, ‘সুন্নাহ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১; মিশকাত হা/১৭২, পৃঃ ৩০, সনদ ছহীহ, ‘কিতাব ও সুন্নাহকে অাঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ।
[35]. আবুদাঊদ হা/১৪৫, পৃঃ ১৯; মিশকাত হা/৪০৮, পৃঃ ৪৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৩৭৪, ২/৮৩ পৃঃ, ‘ওযূর সুন্নাত’ অনুচ্ছেদ।
[36]. آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِيْ أَنْزَلْتَ وَنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ قَالَ الْبَرَاءُ فَقُلْتُ وَبِرَسُوْلِكَ الَّذِيْ أَرْسَلْتَ قَالَ فَطَعَنَ بِيَدِهِ فِيْ صَدْرِيْ ثُمَّ قَالَ وَنَبِيِّكَ الَّذِيْ أَرْسَلْتَ -তিরমিযী হা/৩৩৯৪, ২/১৭৬-১৭৭, ‘দু‘আ সমূহ’ অধ্যায়, ‘ঘুমানোর জন্য বিছানায় গিয়ে দু‘আ পড়া’ অনুচ্ছেদ; ছহীহ বুখারী হা/৬৩১১, ২/৯৩৪ পৃঃ, ‘দু‘আ সমূহ’ অধ্যায়-৮৩, অনুচ্ছেদ-৬; ছহীহ মুসলিম হা/৭০৫৭, ২/৩৪৮ পৃঃ, ‘দু‘আ ও যিকির’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১৭।
[37]. আহমাদ হা/৯৭৯০, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৮১১; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৭৫৫, ২/২৬২ পৃঃ।
[38]. خَرَجَ يَوْمًا فَقَامَ حَتَّى كَادَ يُكَبِّرُ فَرَأَى رَجُلاً بَادِيًا صَدْرُهُ مِنَ الصَّفِّ فَقَالَ عِبَادَ اللهِ لَتُسَوُّنَّ صُفُوْفَكُمْ أَوْ لَيُخَالِفَنَّ اللَّهُ بَيْنَ وُجُوْهِكُمْ-ছহীহ মুসলিম হা/১০০৭, ১/৮২ পৃঃ, ‘ছালাতে কাতার সোজা করা’ অনুচ্ছেদ; মিশকাত হা/১০৮৫, পৃঃ ৯৭; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১০১৭।
[39]. عَنْ جَابِرٍ قَالَ مَرَّ رَسُوْلُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِرَجُلٍ وَهُوَ يُصَلِّي وَقَدْ وَضَعَ يَدَهُ الْيُسْرَى عَلَى الْيُمْنَى فَانْتَزَعَهَا وَوَضَعَ الْيُمْنَى عَلَى الْيُسْرَى -মুসনাদে আহমাদ হা/১৫১৩১; ছহীহ আবুদাঊদ হা/৭৫৫, পৃঃ ১১০, সনদ হাসান।
[40]. إِنَّ مِنْ وَرَائِكُمْ زَمَانَ صَبْرٍ لِلمُتَمَسِّكِ فِيْهِ أَجْرُ خَمْسِيْنَ شَهِيْدًا فَقَالَ عُمَرُ يَا رَسُوْلَ اللَّهِ، مِنَّا أَوْ مِنْهُمْ؟ قَالَ مِنْكُمْ. -ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল কাবীর হা/১০২৪০; মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদীছ আছ-ছহীহাহ ওয়া শাইয়ুন মিন ফিক্বহিহা ওয়া ফাওয়াইদিহা (বৈরুত : আল-মাকতাবাতুল ইসলামী, ১৯৮৫/১৪০৫), হা/৪৯৪; সনদ ছহীহ, ছহীহুল জামে‘ হা/২২৩৪।
[41]. مَنْ سَدَّ فُرْجَةً فِيْ صَفٍّ رَفَعَهُ اللهُ بِهَا دَرَجَةً وَبَنَى لَهُ بَيْتًا فِى الْجَنَّةِ -ত্বাবারাণী, আওসাত্ব হা/৫৭৯৭; সনদ ছহীহ, সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৮৯২।
[42]. বুখারী হা/৭৮০, ১ম খন্ড, পৃঃ ১০৭, (ইফাবা হা/৭৪৪ ও ৭৪৬, ২/১২১ পৃঃ); মুসলিম হা/৯৪২, ১ম খন্ড, পৃঃ ১৭৬; আবুদাঊদ হা/৯৩২ ও ৯৩৩, ১/১৩৫ পৃঃ; তিরমিযী হা/২৪৮, ১/৫৭ ও ৫৮ পৃঃ; ইবনু মাজাহ হা/৮৫৬।
[43]. ছহীহ বুখারী হা/৪৩০২, ২/৬১৫-৬১৬ পৃঃ, ‘মাগাযী’ অধ্যায়-৬৭, অনুচ্ছেদ-৫০; মিশকাত হা/১১২৬, পৃঃ ১০০; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১০৫৮, ৩/৭১ পৃঃ।
[44]. ছহীহ মুসলিম হা/৫৬২৬, ২/২১০ পৃঃ, ‘আদব’ অধ্যায়, ‘অনুমতি’ অনুচ্ছেদ-৭; মিশকাত হা/৪৬৬৭, পৃঃ ৪০০; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪৪৬২ ৯/১৯ পৃঃ।
[45]. إِنَّ الْجَمَاعَةَ مَا وَافَقَ الْحَقَّ وَ إِنْ كُنْتَ وَحْدَكَ -ইবনু আসাকির, তারীখু দিমাষ্ক ১৩/৩২২ পৃঃ; সনদ ছহীহ, আলবানী, মিশকাত হা/১৭৩-এর টীকা দ্রঃ, ১/৬১ পৃঃ; ইমাম লালকাঈ, শারহু উছূলিল ই‘তিক্বাদ ১/১০৮ পৃঃ।