লগইন করুন
বেহেশ্তে সীমাহীন আনন্দময় স্থান। মনের আনন্দে গান বের হয়। গান শুনতে ভাল লাগে। স্বামীর মনে আনন্দ পরিপূর্ণ করার জন্য মধুর কণ্ঠে তারা গান করবে জান্নাতে। সেই গানের নমুনা নিম্নরূপঃ
نحن الخيرات الحسان
أزواج قوم کرام
ينظرن بقرة أعيان
অর্থাৎ, আমরা সচ্চরিত্র সুন্দরী দল, সম্মানিত সম্প্রদায়ের স্ত্রী। যে স্ত্রীরা শীতল নজরে দৃষ্টিপাত করবে। অন্য শব্দে -
نحن الحور الحسان
خبئنا لأزواج کرام
نحن الحور الحسان
هدينا لأزواج کرام
অর্থাৎ, আমরা হুরী সুন্দরী, সম্মানিত স্বামীদের জন্য গুপ্ত আছি। আমরা হুরী (সুনয়না) সুন্দরী, সম্মানিত স্বামীদের জন্য উপহার।
نحن الخالدات فلا يمتنه
نحن الآمنات فلا يخفنه
نحن المقيمات فلا يظعته
অর্থাৎ, আমরা সেই চিরস্থায়ী রমণী, যারা কখনই মারা যাবে না, আমরা সেই নিরাপদ রমণী, যারা কখনই ভয় পাবে না, আমরা সেই স্থায়ী বসবাসকারিণী, যারা কখনই চলে যাবে না। (সঃ জামে ১৫৫৭, ১৫৯৮নং)
জান্নাতের এই হুরীরা বড় প্রেমময়ী, পৃথিবীতে স্বামীর কষ্ট দেখে কষ্ট পায়। নবী (ﷺ) বলেন, যখনই কোন মহিলা দুনিয়াতে নিজ স্বামীকে কষ্ট দেয়, তখনই তার সুনয়না হুর (বেহেশ্তী) স্ত্রী (অদৃশ্যভাবে) ঐ মহিলার উদ্দেশ্যে বলে, আল্লাহ তোকে ধ্বংস করুন। ওকে কষ্ট দিস না। ও তো তোর নিকট সাময়িক মেহমান মাত্র। অচিরেই সে তোকে ছেড়ে আমাদের কাছে। এসে যাবে। (তিরমিযী)
অনন্তকাল ধরে তারা এই বয়স নিয়েই চিরসুন্দর যুবক-যুবতী হয়ে থাকবে। (মুসলিম ২৮৩৬) সেখানে যৌন-মিলনে অধিক তৃপ্তিলাভ করবে। প্রত্যেক জান্নাতীকে একশ জন পুরুষের সমান যৌনশক্তি ও সঙ্গম ক্ষমতা প্রদান করা হবে। (তিরমিযী ২৫৩৬)।
যেহেতু পান-ভোজন, বসনভূষণ, বাসভবন এবং নারী-সংসর্গ ও যৌনসম্ভােগ ইত্যাদিতেই মানুষের প্রকৃতিগত সুখ ও পরম আনন্দ, তাই তাদেরকে তাদের প্রকৃতির উপযোগী অভীষ্ট প্রতিদান দেওয়া হবে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, জান্নাতীরা যখন জান্নাতে প্রবেশ করে যাবে, তখন একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করবে যে, তোমাদের জন্য এখন অনন্ত জীবন; তোমরা আর কখনো মরবে না। তোমাদের জন্য এখন চির সুস্বাস্থ্য; তোমরা আর কখনো অসুস্থ হবে না। তোমাদের জন্য এখন চির যৌবন; তোমরা আর কখনো বৃদ্ধ হবে না। তোমাদের জন্য এখন চির সুখ ও পরমানন্দ; তোমরা আর কখনো দুঃখ-কষ্ট পাবে না। (মুসলিম)
তাদের পরস্পরের অভিবাদন হবে সালাম আর সালাম। শান্তিবাক্য ছাড়া তারা কোন অসন্তোষজনক, মিথ্যা বা অসার বাক্য শুনবে না।
لَّا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًا وَلَا كِذَّابًا
অর্থাৎ, সেখানে তারা শুনবে না কোন অসার ও মিথ্যা কথা। (নাবাঃ ৩৫)
لَّا تَسْمَعُ فِيهَا لَاغِيَةً
অর্থাৎ, সেখানে তারা কোন অসার বাক্য শুনবে না। (গাশিয়াহঃ ১১)
لَا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًا وَلَا تَأْثِيمًا (25) إِلَّا قِيلًا سَلَامًا سَلَامًا (26)
অর্থাৎ, তারা শুনবে না কোন অসার অথবা পাপবাক্য। সালাম-সালাম (শান্তি) বাণী ব্যতীত। (ওয়াক্বিআহঃ ২৫-২৬)
لَّا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًا إِلَّا سَلَامًا ۖ وَلَهُمْ رِزْقُهُمْ فِيهَا بُكْرَةً وَعَشِيًّا
অর্থাৎ, সেখানে তারা শান্তি’ ছাড়া কোন অসার বাক্য শুনবে না এবং সেথায় সকাল-সন্ধ্যায় তাদের জন্য থাকবে জীবনোপকরণ। (মারয়ামঃ ৬২)
وَقَالُوا الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَذْهَبَ عَنَّا الْحَزَنَ ۖ إِنَّ رَبَّنَا لَغَفُورٌ شَكُورٌ (34) الَّذِي أَحَلَّنَا دَارَ الْمُقَامَةِ مِن فَضْلِهِ لَا يَمَسُّنَا فِيهَا نَصَبٌ وَلَا يَمَسُّنَا فِيهَا لُغُوبٌ (35)
অর্থাৎ, তারা বলবে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর; যিনি আমাদের দুঃখ-দুর্দশা দুরীভূত করেছেন; নিশ্চয়ই আমাদের প্রতিপালক বড় ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী, যিনি নিজ অনুগ্রহে, আমাদেরকে স্থায়ী আবাস দান করেছেন; যেখানে আমাদেরকে কোন প্রকার ক্লেশ স্পর্শ করে না এবং স্পর্শ করে না কোন প্রকার ক্লান্তি। (ফাত্বিরঃ ৩৪-৩৫)
دَعْوَاهُمْ فِيهَا سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَتَحِيَّتُهُمْ فِيهَا سَلَامٌ ۚ وَآخِرُ دَعْوَاهُمْ أَنِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
অর্থাৎ, সেখানে তাদের বাক্য হবে, সুবহানাকাল্লাহুম্মা’ (হে আল্লাহ! তুমি মহান পবিত্র)! এবং পরস্পরের অভিবাদন হবে সালাম। আর তাদের শেষ বাক্য হবে, আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’ (সমস্ত প্রশংসা সারা জাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য)। (ইউনুসঃ ১০)