লগইন করুন
এমন কিছু কথা ও কাজ রয়েছে যা সরাসরি শির্ক না হলেও রাসূল (সা.) নিজ উম্মতকে তা করতে ও বলতে নিষেধ করেছেন। কারণ, তা যে কোন ব্যক্তিকে অতিসত্বর শির্কের দিকে পৌঁছিয়ে দেয়। সে কথা ও কাজগুলো নিম্নরূপ:
১. রাসূল (সা.) এমন শব্দ উচ্চারণ করতে নিষেধ করেছেন যা সৃষ্টি ও স্রষ্টার মাঝে সমতা বুঝায়। যেমন: এমন বলা যে, আপনি ও আল্লাহ্ তা’আলা চেয়েছেন বলে কাজটি হয়েছে। নতুবা হতো না। আপনি ও আল্লাহ্ তা’আলা ছিলেন বলে ঘটনাটি ঘটেনি। নতুবা ঘটে যেতো। ইত্যাদি ইত্যাদি।
২. নবী (সা.) কারোর কবরকে নিয়ে যে কোন ধরনের বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন। যেমন: কবরের উপর বসা, কবরের উপর ঘর বানানো, পাকা করা, মোজাইক করা, চুনকাম করা, কবরস্থানে বা কবরের দিকে ফিরে নামায পড়া, কবরকে যে কোন ধরনের ইবাদাত বা মেলা ক্ষেত্র বানানো, কবরের মাটির সাথে অন্য কিছু বাড়ানো, কবরকে উঁচু করা ইত্যাদি ইত্যাদি।
আবুল্ হাইয়াজ্ আসাদী (রাহিমাহুল্লাহ্) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: ’আলী (রা.) একদা আমাকে বললেন:
أَلاَ أَبْعَثُكَ عَلَى مَا بَعَثَنِيْ عَلَيْهِ رَسُوْلُ اللهِ؟ أَنْ لاَ تَدَعَ تِمْثَالًا وَلاَ صُوْرَةً إِلاَّ طَمَسْتَهَا، وَلاَ قَبْرًا مُشْرِفًا إِلاَّ سَوَّيْتَهُ
‘‘আমি কি তোমাকে এমন কাজে পাঠাবো না যে কাজে আমাকে রাসূল (সা.) পাঠিয়েছেন?! তুমি কোন মূর্তি বা ছবি পেলে তা মুছে দিবে এবং কোন উঁচু কবর পেলে তা সমান করে দিবে’’।
(মুসলিম, হাদীস ৯৬৯ আবু দাউদ, হাদীস ৩২১৮ তিরমিযী, হাদীস ১০৪৯ নাসায়ী : ৪/৮৮-৮৯ আহমাদ্ : ১/৯৬, ১২৯ হা’কিম : ১/৩৬৯)
বাকি প্রমাণগুলো মূল আলোচনায় আসবে।
৩. নবী (সা.) সূর্য উঠা ও ডুবার সময় নামায পড়তে নিষেধ করেছেন। কারণ, তাতে সূর্য পূজারীদের সাথে মিল পাওয়া যায়।
’উক্ববাহ্ বিন্ ’আমির জুহানী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
ثَلاَثُ سَاعَاتٍ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَنْهَانَا أَنْ نُصَلِّيَ فِيْهِنَّ أَوْ أَنْ نَقْبُـرَ فِيْهِنَّ مَوْتَانَا، حِيْنَ تَطْلُعُ الشَّمْسُ بَازِغَةً حَتَّى تَرْتَفِعَ، وَحِيْنَ يَقُوْمُ قَائِمُ الظَّهِيْرَةِ حَتَّى تَمِيْلَ الشَّمْسُ، وَحِيْنَ تَضَيَّفُ الشَّمْسُ لِلْغُرُوْبِ حَتَّى تَغْرُبَ
‘‘তিনটি সময় এমন যে, রাসূল (সা.) আমাদেরকে সে সময়গুলোতে নামায পড়তে অথবা মৃত ব্যক্তিকে দাফন করতে নিষেধ করেছেন। সূর্য উঠার সময় যতক্ষণ না তা পূর্ণভাবে উঠে যায়। ঠিক দুপুর বেলায় যতক্ষণ না তা মধ্যাকাশ থেকে সরে যায়। সূর্য ডুবার সময় যতক্ষণ না তা সম্পূর্ণরূপে ডুবে যায়’’। (মুসলিম, হাদীস ৮৩১)
৪. রাসূল (সা.) সাওয়াবের আশায় তিনটি মসজিদ তথা মসজিদে হারাম (মক্কা মসজিদ), মসজিদে নববী (মদীনা মসজিদ), মসজিদে ’আক্বসা (বায়তুল মাক্বদিস) ছাড়া অন্য কোথাও সফর করতে নিষেধ করেন।
এর প্রমাণ মূল আলোচনায় আসবে।
৫. রাসূল (সা.) পূজা মন্ডপে অথবা মেলা ক্ষেত্রে মানত পুরা করতে নিষেধ করেছেন। কারণ, তাতে মূর্তি পূজারীদের সাথে মিল পাওয়া যায়।
এর প্রমাণ মূল আলোচনায় আসবে।
৬. রাসূল (সা.) তাঁর সম্মান ও প্রশংসায় যে কোন ধরনের বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন।
আব্দুল্লাহ্ বিন্ শিখ্খীর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি বনু ’আ’মির গোত্রের এক প্রতিনিধি দলের সাথে রাসূল (সা.) এর নিকট গেলাম। অতঃপর আমরা রাসূল (সা.) কে সম্বোধন করে বললাম: আপনি আমাদের সাইয়েদ! রাসূল (সা.) বললেন: সাইয়েদ হচ্ছেন আল্লাহ্ তা’আলা। আমি নই। তখন আমরা বললাম: আপনি আমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ও প্রতিপত্তিশীল! তখন তিনি বললেন:
قُوْلُوْا بِقَوْلِكُمْ أَوْ بَعْضِ قَوْلِكُمْ ، وَلاَ يَسْتَجْرِيَنَّكُمُ الشَّيْطَانُ
‘‘তোমরা এমন কিছু বলতে পারো। তবে মনে রাখবে যে, শয়তান যেন তোমাদেরকে নিজ কাজের জন্য প্রতিনিধি বানিয়ে না নেয়’’। (আবু দাউদ, হাদীস ৪৮০৬)
যদিও কোন উপযুক্ত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তাকে সাইয়েদ বলা যায় তবুও রাসূল (সা.) তাঁর ব্যাপারে তা বলতে এ জন্যই নিষেধ করেছেন যে, যেন কেউ তাঁর সম্মান ও প্রশংসায় বাড়াবাড়ি করে তাঁকে আল্লাহ্ তা’আলার সমপর্যায়ে বসিয়ে না দেয় যা বড় শির্কের অন্তর্গত।
এ কারণেই কেউ কারোর নিকট রাসূল (সা.) এর পরিচয় দিতে চাইলে তিনি তাকে শুধু তাঁর ব্যাপারে এতটুকুই বলতে আদেশ করেছেন যে, তিনি আল্লাহ্ তা’আলার বান্দাহ্ ও তদীয় রাসূল।
’উমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি নবী (সা.) কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেন:
لاَ تُطْرُوْنِيْ كَمَا أَطْرَتِ النَّصَارَى ابْنَ مَرْيَمَ ، فَإِنَّمَا أَنَا عَبْدُهُ، فَقُوْلُوْا: عَبْدُ اللهِ وَرَسُوْلُهُ
‘‘তোমরা আমার প্রশংসা করতে গিয়ে কখনো বাড়াবাড়ি করোনা যেমনিভাবে বাড়াবাড়ি করেছে খ্রিষ্টানরা ’ঈসা বিন্ মার্য়াম্ (আ.) এর ব্যাপারে। আমি কেবল আল্লাহ্ তা’আলার বান্দাহ্। সুতরাং তোমরা আমার ব্যাপারে বলবেঃ তিনি আল্লাহ্ তা’আলার বান্দাহ্ এবং তদীয় রাসূল’’। (বুখারী, হাদীস ৩৪৪৫, ৬৮৩০)
৭. রাসূল (সা.) কারোর সম্মুখে তার প্রশংসা করতে নিষেধ করেছেন। যাতে তার প্রশংসায় বাড়াবাড়ি করা না হয় এবং সেও আত্মম্ভরিতা থেকে বেঁচে থাকতে পারে।
এমনকি রাসূল (সা.) কাউকে কারোর সম্মুখে প্রশংসা করতে দেখলে তার চেহারায় বালি ছুঁড়ে মারতে নির্দেশ দিয়েছেন।
মু’আবিয়া (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেন:
إِيَّاكُمْ وَالتَّمَادُحَ فَإِنَّهُ الذَّبْحُ
‘‘তোমরা একে অপরের প্রশংসা করা থেকে দূরে থাকো। কারণ, সম্মুখ প্রশংসা হচ্ছে কাউকে জবাই করার শামিল’’। (ইবনু মাজাহ্, হাদীস ৩৮১১)
আবু বাক্রাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: জনৈক ব্যক্তি নবী (সা.) এর সম্মুখে অন্য জনের প্রশংসা করছিলো। তখন নবী (সা.) প্রশংসাকারীকে উদ্দেশ্য করে বলেন:
وَيْحَكَ! قَطَعْتَ عُنُقَ صَاحِبِكَ، قَطَعْتَ عُنُقَ صَاحِبِكَ مِرَارًا، إِذَا كَانَ أَحَدُكُمْ مَادِحًا صَاحِبَهُ لاَ مَحَالَةَ، فَلْيَقُلْ: أَحْسِبُ فُلاَنًا، وَاللهُ حَسِيْبُهُ، وَلاَ أُزَكِّيْ عَلَى اللهِ أَحَدًا، أَحْسِبُهُ، إِنْ كَانَ يَعْلَمُ ذَلِكَ كَذَا وَكَذَا
‘‘তুমি ধ্বংস হও! তুমি ওর ঘাড় ভেঙ্গে দিয়েছো। তুমি ওর ঘাড় ভেঙ্গে দিয়েছো। এ কথা রাসূল (সা.) কয়েক বার বলেছেন। তবে যদি তোমাদের কেউ অবশ্যই কারোর প্রশংসা করতে চায় তাহলে সে যেন বলেঃ আমি ধারণা করছি, তবে আল্লাহ্ তা’আলাই ভালো জানেন। আমি তাঁর উপর কারোর পবিত্রতা বর্ণনা করতে চাই না। আমি ধারণা করছি, সে এমন এমন। সে ওব্যক্তির ব্যাপারে ততটুকুই বলবে যা সে তার ব্যাপারে ভালোভাবেই জানে’’। (বুখারী, হাদীস ২৬৬২, ৬০৬১ মুসলিম, হাদীস ৩০০০ আবু দাউদ, হাদীস ৪৮০৫ ইবনু মাজাহ্, হাদীস ৩৮১২)
হাম্মাম (রাহিমাহুল্লাহ্) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: একদা জনৈক ব্যক্তি ’উসমান (রা.) এর সম্মুখে তাঁর প্রশংসা করলে মিক্বদাদ (রা.) তার চেহারায় মাটি ছুঁড়ে মারেন এবং বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
إِذَا رَأَيْتُمُ الْـمَدَّاحِيْنَ فَاحْثُوْا فِيْ وُجُوْهِهِمُ التُّرَابَ
‘‘যখন তোমরা প্রশংসাকারীদেরকে দেখবে তখন তোমরা তাদের মুখে মাটি ছুঁড়ে মারবে’’।
(মুসলিম, হাদীস ৩০০২ আবু দাউদ, হাদীস ৪৮০৪ ইবনু মাজাহ্, হাদীস ৩৮১০)
৮. রাসূল (সা.) কোন নেক্কার বান্দাহ্’র ব্যাপারে যে কোন ধরনের বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন এবং তিনি এ জাতীয় লোকদেরকে কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা’আলার নিকট তাঁর সর্ব নিকৃষ্ট সৃষ্টি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
’আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আন্হা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: উম্মে হাবীবা ও উম্মে সালামা (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) নবী (সা.) এর নিকট একদা ইথিওপিয়ার এক গীর্জার কথা বর্ণনা করেন। যাতে অনেক ধরনের ছবি টাঙ্গানো ছিলো। তখন নবী (সা.) তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন:
إِنَّ أُوْلَآئِكَ إِذَا كَانَ فِيْهِمُ الرَّجُلُ الصَّالِحُ فَمَاتَ، بَنَوْا عَلَى قَبْرِهِ مَسْجِدًا وَصَوَّرُوْا فِيْهِ تِلْكَ الصُّوَرَ، أُوْلَآئِكَ شِرَارُ الْـخَلْقِ عِنْدَ اللهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
‘‘ওরা এমন যে, ওদের মধ্যে কোন নেক্কার ব্যক্তির মৃত্যু হলে তারা তার কবরের উপর মসজিদ বানিয়ে নেয় এবং তাতে এ জাতীয় ছবি অঙ্কন করে। ওরা কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা’আলার নিকট সর্ব নিকৃষ্ট সৃষ্টি হিসেবে পরিগণিত হবে’’। (বুখারী, হাদীস ৪২৭, ১৩৪১, ৩৮৭৩ মুসলিম, হাদীস ৫২৮)
মূলতঃ নেক্কার লোকদের প্রতি আমাদের শরীয়ত সম্মত দায়িত্ব হলো এই যে, আমরা তাদের শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করবো। তাদের জন্য আল্লাহ্ তা’আলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবো। তাদের প্রতি কোন ধরনের বিদ্বেষ পোষণ করবো না এবং কোন ধরনের বাড়াবাড়ি ব্যতিরেকে তাদের যে কোন নেক আমল কোর’আন ও হাদীস সম্মত হলে তা আমরা মেনে নেবো।
আল্লাহ্ তা’আলা বলেন:
«وَالَّذِيْنَ جَآؤُوْا مِنْ بَعْدِهِمْ يَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِيْنَ سَبَقُـوْنَا بِالْإِيْمَانِ ، وَلاَ تَجْعَلْ فِيْ قُلُوْبِنَا غِلاًّ لِلَّذِيْنَ آمَنُوْا، رَبَّنَا إِنَّكَ رَؤُوْفٌ رَّحِيْمٍ»
‘‘যারা তাদের পরে এসেছে তারা বলেঃ হে আমাদের প্রভু! আমাদেরকে এবং যারা আমাদের পূর্বে খাঁটি ঈমান নিয়ে মৃত্যু বরণ করেছে তাদেরকে ক্ষমা করুন। হে প্রভু! আমাদের অন্তরে যেন কোন ঈমানদারের প্রতি সামান্যটুকু হিংসে-বিদ্বেষও না থাকে। নিশ্চয়ই আপনি পরম দয়ালু ও অত্যন্ত মেহেরবান’’। (হাশ্র : ১০)
৯. রাসূল (সা.) ছবি তুলতে নিষেধ করেছেন। কারণ, ছবি তোলাই ছিলো মূর্তিপূজার প্রথম পর্যায়। শয়তান ইবলিস সর্ব প্রথম নূহ (আ.) এর সম্প্রদায়কে তাদের নেক্কারদের ছবি এঁকে তাদের মজলিসে স্থাপন করতে পরামর্শ দেয়। যাতে করে তাদেরকে স্মরণ করা যায় এবং ইবাদাতের ক্ষেত্রে তাদের অনুসরণ করা যায়। পরবর্তীতে সে ছবিগুলোর পূজা শুরু হয়ে যায় এবং তারা কারোর লাভ বা ক্ষতি করতে পারে এমনও মনে করা হয়। এ পরিণতির কথা চিন্তা করেই রাসূল (সা.) ছবি তুলতে নিষেধ করেছেন এবং ছবি উত্তোলনকারীরাই কিয়ামতের দিন কঠিন শাস্তি ভোগ করবে।
’আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আন্হা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেনঃ
أَشَدُّ النَّاسِ عَذَابًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ الَّذِيْنَ يُضَاهُوْنَ بِخَلْقِ اللهِ
‘‘কিয়ামতের দিন সর্ব কঠিন শাস্তির অধিকারী হবে ওরা যারা আল্লাহ্ তা’আলার সৃষ্টির ন্যায় কোন কিছু বানাতে চায়’’। (বুখারী, হাদীস ৫৯৫৪ মুসলিম, হাদীস ২১০৭ বাগাওয়ী, হাদীস ৩২১৫ নাসায়ী : ৮/২১৪ বায়হাক্বী : ২৬৯)
আব্দুল্লাহ্ বিন্ মাস’ঊদ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি নবী (সা.) কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেন:
إِنَّ أَشَدَّ النَّاسِ عَذَابًا عِنْدَ اللهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الْـمُصَوِّرُوْنَ
‘‘নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা’আলার নিকট সর্ব কঠিন শাস্তির অধিকারী হবে ওরা যারা (বিনা প্রয়োজনে) ছবি তোলে বা তৈরি করে’’।
(বুখারী, হাদীস ৫৯৫০ মুসলিম, হাদীস ২১০৯)
’আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’আববাস্ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেন:
كُلُّ مُصَوِّرٍ فِيْ النَّارِ ، يُجْعَلُ لَهُ بِكُلِّ صُوْرَةٍ صَوَّرَهَا نَفْسٌ فَتُعَذِّبُهُ فِيْ جَهَنَّمَ
‘‘প্রত্যেক ছবিকার জাহান্নামী। প্রত্যেক ছবির পরিবর্তে তার জন্য একটি করে প্রাণী ঠিক করা হবে যে তাকে সর্বদা জাহান্নামের মধ্যে শাস্তি দিতে থাকবে’’। (মুসলিম, হাদীস ২১১০)
’আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’আববাস্ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে আরো বর্ণিত তিনি বলেন: আমি মুহাম্মাদ (সা.) কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেন:
مَنْ صَوَّرَ صُوْرَةً فِيْ الدُّنْيَا كُلِّفَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَنْ يَنْفُخَ فِيْهَا الرُّوْحَ، وَلَيْسَ بِنَافِخٍ
‘‘যে ব্যক্তি দুনিয়াতে কোন ছবি এঁকেছে কিয়ামতের দিন তাকে এ ছবিগুলোতে রূহ্ দিতে বলা হবে। কিন্তু সে কখনোই তা করতে পারবে না’’। (বুখারী, হাদীস ২২২৫, ৫৯৬৩, ৭০৪২ মুসলিম, হাদীস ২১১০ বাগাওয়ী, হাদীস ৩২১৯ নাসায়ী : ৮/২১৫ ইবনু আবী শাইবাহ্ : ৮/৪৮৪-৪৮৫ আহমাদ্: ১/২৪১, ৩৫০ ত্বাবারানী/কাবীর, হাদীস ১২৯০০)
’আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আন্হা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
إِنَّ أَصْحَابَ هٰذِهِ الصُّوَرِ يُعَذَّبُوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، يُقَالُ لَـهُمْ: أَحْيُوْا مَا خَلَقْتُمْ، وَإِنَّ الْـمَلَآئِكَةَ لاَ تَدْخُلُ بَيْتًا فِيْهِ الصُّوْرَةُ
‘‘নিশ্চয়ই এ সকল ছবিকারদেরকে কিয়ামতের দিন কঠিন শাস্তি দেয়া হবে। তাদেরকে বলা হবে: তোমরা যা বানিয়েছো তাতে জীবন দাও। কিন্তু তারা কখনো তা করতে পারবে না। নিশ্চয়ই ফিরিশ্তারা এমন ঘরে প্রবেশ করে না যে ঘরে ছবি রয়েছে’’।
(বুখারী, হাদীস ২১০৫, ৫৯৫৭ মুসলিম, হাদীস ২১০৭)
আবু হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেন: আল্লাহ্ তা’আলা বলেন:
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ ذَهَبَ يَخْلُقُ كَخَلْقِيْ، فَلْيَخْلُقُوْا حَبَّةً، وَلْيَخْلُقُـوْا ذَرَّةً، وَلْيَخْلُقُوْا شَعِيْرَةً
‘‘ও ব্যক্তির ন্যায় জালিম আর কেউ হতে পারে না? যে আমার সৃষ্টির ন্যায় কোন কিছু বানাতে চায়। মূলতঃ সে কখনোই তা করতে পারবে না। যদি সে তা করতে পারবে বলে দাবি করে তাহলে সে যেন একটি দানা, একটি অণু-পরমাণু এবং একটি যব বানিয়ে দেখায়’’।
(বুখারী, হাদীস ৫৯৫৩, ৭৫৫৯ মুসলিম, হাদীস ২১১১ বায়হাক্বী : ৭/২৬৮ বাগাওয়ী, হাদীস ৩২১৭ ইবনু আবী শাইবাহ্ : ৮/৪৮৪ আহমাদ্ : ২/২৫৯, ৩৯১, ৪৫১, ৫২৭)