বাংলাদেশে নাস্তিক্যবাদী অপতৎপরতা : প্রতিরোধের উপায় বাংলাদেশে নাস্তিক্যবাদী অপতৎপরতা ইসলামহাউজ.কম
প্রথম আলোর ফান ম্যাগাজিনে মহানবীকে নিয়ে কার্টুন

১৭ সেপ্টেম্বর২০০৭তারিখে প্রকাশিত প্রথম আলোর কৌতুক ম্যাগাজিন আলপিনের ৪৩১তম সংখ্যায় স্থান পাওয়া একটি কার্টুন নিয়ে বাংলাদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। কার্টুনটিতে একটি পূর্ণবয়স্ক মানুষের সঙ্গে একজন বালকের সংলাপে বালকটি ইসলামের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম নিয়ে একটি কৌতুক করে।২০ বছর বয়সী কার্টুনিস্ট আরিফুর রহমানের আঁকা কার্টুনটির বিষয়বস্তু একজন বয়স্ক মানুষের সঙ্গে বিড়াল হাতে এক বালকের আলাপচারিতা। কার্টুনটির লিখিত সংলাপই মূলত বিতর্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যখন বালকটিকে তার নাম জিজ্ঞাসা করা হয় তখন সে নামের আগে ‘মুহাম্মদ’ উল্লেখ করে না, যা বাংলাদেশের মুসলিম সম্প্রদায়ইসলাম ধর্মেরনবীমুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্মানার্থে ব্যবহৃত করে। অগ্রজ লোকটি ছেলেটিকে সকল নামের আগে এই শব্দ ব্যবহার করতে বলে। কার্টুনের শেষ অংশে যখন লোকটি জানতে চায় যে, বালকটির হাতে কী, তখন জবাবে সে বলে ‘মুহাম্মদ বিড়াল’।

দেশের ধর্মপ্রাণ কোটি কোটি মুসলিম এবং হাজার হাজার আলেম-উলামা কার্টুনটির তীব্র প্রতিবাদ জানান। আয়োজন করা হয় গণপ্রতিবাদের। যা ২০০৭ সালের শুরুতে চালু হওয়া বাংলাদেশের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নিষিদ্ধ ছিল। এর ধারাবাহিকতায় রাস্তায় সংঘাতের সৃষ্টি হয়। ধর্মীয় নেতৃবর্গ সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন। দাবি জানান প্রথম আলোর অনুমোদন কেড়ে নেয়ার। তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আলপিনের ৪৩১তম সংখ্যাটির বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এর সকল কপি বাজেয়াপ্ত করে। গ্রেপ্তার করা হয় কার্টুনটির রচয়িতা আরিফুর রহমানকে।পরবর্তীতে আলপিন ও মূল পত্রিকা প্রথম আলোর সম্পাদকমতিউর রহমানদৈনিকটিতে একটি লিখিত মন্তব্যে কার্টুনটির জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। এটি প্রকাশের জন্য তিনি অনুতাপ প্রকাশ করেন। ইসলামপন্থীদের প্রচণ্ড চাপের মুখে তৎকালীন বায়তুল মুকাররমের খতীব মাওলানা উবাইদুল হকের হাতে হাত রেখে প্রকাশ্যে তওবা করেন।

বাংলাদেশে যতগুলো ইসলামী পরিভাষা আজ ঠাট্টা-মশকরা ও অপপ্রচারের শিকার যেমন ফতোয়া, তালাক, হিল্লা বিয়ে, মৌলবাদ ইত্যাদি শব্দ সেসবের পেছনেও প্রধান ভূমিকা এই প্রথম আলোর। এ পত্রিকাই মূলত সবার আগে এসব শব্দকে নেতিবাচক হিসেবে প্রচার করে। আলেমদের যতটা হেয় এ পত্রিকা করেছে অবশিষ্ট সব পত্রিকা মিলেও তা পারে নি।

এই পত্রিকাটি টাকা দিয়ে কেনার তো প্রশ্নই ওঠে না। তাদের অপসাংবাদিকতা সম্পর্কে সজাগ থাকতে কেবল অনলাইনে পড়ি। আজকাল অনলাইনেও তাদের এড্রেসে ক্লিক করতে রুচিতে বাধে। হেফাজতের লংমার্চ নিয়ে করা লিড নিউজে পত্রিকাটি বলেছে, ‘আল্লাহ, রাসুল ও ইসলামি অনুশাসনের বিরুদ্ধে কটূক্তিকারী কথিত নাস্তিক ব্লগারদের...’। ব্লগে ইসলাম অবমাননার বিষয়টি যেখানে সারাদেশের মানুষের কাছে দিবালোকের মত পরিষ্কার সেখানে প্রথম আলো কিভাবে ‘কথিত’ শব্দ লেখে?! খানিক বাদে বেলা ১১টায় খোদ প্রথম আলোই অনলাইনের চলতি আপডেটে ‘ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩’ শীর্ষক সংবাদে বলেছে, ‘উপকমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলামের ভাষ্য, গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য লিখতেন। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও হার্ডডিস্ক থেকে এর প্রমাণ পাওয়া গেছে।’ প্রমাণিত যদি হয় তাহলে কথিত হয় কিভাবে?