ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
শারহুল আক্বীদা আত্-ত্বহাবীয়া আল্লামা ইমাম ইবনে আবীল ইয্ আল-হানাফী রহিমাহুল্লাহ এর ভূমিকা (مقدمة) ইমাম ইবনে আবীল ইয আল-হানাফী (রহিমাহুল্লাহ)
নাবী-রসূলগণের আনুগত্য করা ওয়াজীব এবং তাদের উপর আল্লাহ তা‘আলা যা নাযিল করেছেন তার আনুগত্য করাও ওয়াজীব

আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাধ্যমে নাবী-রসূলদের আগমনের পরিসমাপ্তি ঘটিয়েছেন এবং তাকে আখেরী নাবী হিসাবে মনোনিত করেছেন। তার উপর অবতীর্ণ কিতাবকে পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবসমূহের সংরক্ষণকারী হিসাবে নির্ধারণ করেছেন।

আল্লাহ তা‘আলা তার সর্বশেষ নাবীর উপর কিতাব ও হিকমাত নাযিল করেছেন এবং তার দাওয়াতকে কবুল করা মানুষ ও জিন সকলের জন্য আবশ্যক করেছেন। তার দাওয়াত কিয়ামত পর্যন্ত অবশিষ্ট থাকবে। এ দাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর উপর মানুষের পক্ষ হতে নাবী-রসূল ও দলীল-প্রমাণ না পাঠানোর অভিযোগ পেশ করার সুযোগ নিঃশেষ হয়েছে।

আল্লাহ তা‘আলা এ উম্মতের জন্য নাবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাধ্যমে সবকিছুই বর্ণনা করেছেন ও সমগ্র উম্মতের জন্য দ্বীনের সমস্ত সংবাদ ও হুকুম-আহকাম পূর্ণ করেছেন।

আল্লাহ তা‘আলা তার নাবীর আনুগত্য করা তারই আনুগত্য এবং নাবীর নাফরমানীকে তারই নাফরমানী হিসাবে গণ্য করেছেন।

তিনি নিজে কসম করে বলেছেন, তারা তাদের নিজেদের পারস্পরিক বিবাদের ক্ষেত্রে তাকে একমাত্র ফায়ছালাকারী হিসাবে মেনে না নেয়া পর্যন্ত ঈমানদার হতে পারবে না।

তিনি আরো সংবাদ দিয়েছেন যে, মুনাফেকরা তাকে বাদ দিয়ে অন্যকে ফায়ছালাকারী বানাতে চায়। আর তাদেরকে যখন আল্লাহ, তার রসূল, তার কিতাব এবং রসূলের সুন্নাতের দিকে আহবান করা হয়, তখন মুনাফেকরা আল্লাহ এবং তার রসূল থেকে মুখ ফিরিয়ে পাশ কাটিয়ে যায়। তারা আরো দাবি করে যে, তাদের কার্যকলাপের পিছনে সৎ উদ্দেশ্য এবং সমন্বয় সাধনই লক্ষ্য ছিল।

অনেক তর্কশাস্ত্রবিদ, দার্শনিক এবং অন্যরা মুনাফেকদের মতোই বলে থাকে। তারা বলে, আমরা কেবল বিষয়গুলোর আসল অবস্থা উপলব্ধি করতে চাই। অর্থাৎ ভালভাবে আয়ত্ত করা ও জানার ইচ্ছা পোষণ করি। যেগুলোকে তারা আকলী বা জ্ঞানগত দলীল হিসাবে নাম দিয়েছে, যদিও সেগুলো জাহেলিয়াত ছাড়া আর কিছু নয়, সেগুলো এবং রসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে যেসব দলীল এসেছে, দার্শনিক ও কালামশাস্ত্রবিদরা উভয় বিষয়ের ক্ষেত্রে বলে যে, আমরা শরী‘আত ও দর্শনের মধ্যে সমন্বয় করতে চাই।[1]

অনুরূপ অনেক বিদ‘আতী, সন্ন্যাসী ও সূফী বলে যে, আমরা আমলগুলোকে সুন্দর করতে চাই। আর শরী‘আত এবং যে বাতিলের দিকে তারা আহবান করে উভয়ের মাঝে সমন্বয় সাধন করতে চায়। এসব বাতিল বিষয়কে তারা হাকীকত (বাস্তবসম্মত) বলে দাবী করে, সেগুলো প্রকৃত পক্ষে মুর্খতা ও ভ্রষ্টতা ছাড়া আর কিছু নয়।

অনুরূপ অনেক কালামশাস্ত্রবিদ এবং তাদের দ্বারা প্রভাবিত অনেক লোক বলে থাকে আমরা কার্যাবলীকে অতি সুন্দর করতে চাই এবং শরী‘আত ও রাজনীতির মধ্যে সমন্বয় করতে চাই। এমনি তারা আরো অনেক কথাই বলে থাকে।

>
[1]. মূলতঃ সমন্বয় করতে চায় না; আসলে এরা শরী‘আতকে দর্শনের অনুগত করতে চায়।