ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
রাহে বেলায়াত প্রথম অধ্যায় - বেলায়াত ও যিকর ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.)
জ. মাসনূন যিকরের শ্রেণীবিভাগ - ৭. দু‘আ বা প্রার্থনা বিষয়ক বাক্যাদি - (খ) দু‘আর সুন্নাত-সম্মত নিয়ম ও আদব - চতুর্থ ভাগ

১২. আল্লাহর মহান নাম ও ইসমু আ’যম দ্বারা দু‘আ


সুন্নাতের আলোকে আমরা জানতে পারি যে, মুমিনের উচিত যে কোনো দু‘আর আগে বেশি বেশি করে আল্লাহর প্রশংসা ও হামদ-সানা করা, মহান আল্লাহর পবিত্র নামসমূহ ধরে তাঁকে ডেকে ডেকে এবং তাঁর পবিত্র নাম ও গুণাবলির ওসীলা দিয়ে দু‘আ করা। এ বিষয়ে অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। দু‘আর আগে এভাবে হামদ সানা ও আল্লাহর মহান নামসমূহ ধরে দু‘আ করলে একদিকে যেমন মনে আল্লাহর প্রতি আবেগ, ভালবাসা আসে, তেমনি দু‘আতে আন্তরিকতা সৃষ্টি হয়। এভাবে দু‘আ করলে দু‘আ কবুল হবে বলে বিভিন্ন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।

মহান আল্লাহ কুরআন কারীমে ইরশাদ করেছেনঃ

وَلِلَّهِ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَىٰ فَادْعُوهُ بِهَا ۖ وَذَرُوا الَّذِينَ يُلْحِدُونَ فِي أَسْمَائِهِ ۚ سَيُجْزَوْنَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ


“এবং আল্লাহর আছে সুন্দরতম নামসমূহ ; কাজেই তোমরা তাঁকে সে সকল নামে ডাকবে। যারা তাঁর নাম বিকৃত করে তাদেরকে বর্জন করবে। তাদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই তাদেরকে প্রদান করা হবে।”[1]

সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম ও অন্যান্য হাদীস গ্রন্থে সংকলিত হাদীসে আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ

إِنَّ لِلَّهِ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ اسْمًا مِائَةً إِلا وَاحِدًا مَنْ أَحْصَاهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ


“আল্লাহর ৯৯টি নাম আছে, ১০০’র একটি কম, যে ব্যক্তি এই নামগুলি সংরক্ষিত রাখবে বা হিসাব রাখবে (মুখস্থ রাখবে) সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।”[2]

এই হাদীসে নামগুলির বিবরণ দেওয়া হয়নি। ৯৯ টি নাম সম্বলিত একটি হাদীস ইমাম তিরমিযী, ইবনু মাজাহ ও অন্য কয়েকজন মুহাদ্দিস সংকলন করেছেন।[3] কিন্তু অধিকাংশ মুহাদ্দিস উক্ত বিবরণকে যয়ীফ বলেছেন। ইমাম তিরমিযী নিজেই হাদীসটি সংকলন করে তার সনদের দুর্বলতার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। কোনো কোনো মুহাদ্দিস বলেন, ৯৯ টি নামের তালিকা রাসূলুল্লাহ (সা.) বা আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত নয়। পরবর্তী রাবী এগুলি কুরআনের আলোকে বিভিন্ন আলিমের মুখ থেকে সংকলিত করে হাদীসের মধ্যে উল্লেখ করেছেন। কুরআন করীমে উল্লেখিত অনেক নামই এই তালিকায় নেই। কুরআন করীমে মহান আল্লাহকে সবচেয়ে বেশি ডাকা হয়েছে ‘রাব্ব’ নামে। এই নামটিও এই তালিকায় নেই।[4]

এক্ষেত্রে আগ্রহী মুসলিম চিন্তা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ৯৯ টি নাম হিসাব রাখতে নির্দেশনা দিলেন কিন্তু নামগুলির নির্ধারিত তালিকা দিলেন না কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে উলামায়ে কেরাম বলেন যে, কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আংশিক গোপন রাখা হয়, মুমিনের কর্মোদ্দীপনা বৃদ্ধির জন্য। যেমন, লাইলাতুল কদর, জুম’আর দিনের দু‘আ কবুলের সময়, ইত্যাদি। অনুরূপভাবে নামের নির্ধারিত তালিকা না বলে আল্লাহর নাম সংরক্ষণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যেন বান্দা আগ্রহের সাথে কুরআনে আল্লাহর যত নাম আছে সবই পাঠ করে, সংরক্ষণ করে এবং সেসকল নামে আল্লাহকে ডাকতে থাকে ও সেগুলির ওসীলা দিয়ে আল্লাহর কাছে দু‘আ করে।[5]

কোনো কোনো মুহাদ্দিস ইমাম তিরমিযীর সংকলিত তালিকাটিকে মোটামুটি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেছেন।[6] সর্বাবস্থায় আগ্রহী যাকির এই নামগুলি মুখস্থ করতে পারেন। এছাড়া কুরআন করীমে উল্লেখিত আল্লাহর সকল মুবারাক নাম নিয়মিত কুরআন পাঠের মাধ্যমে সংরক্ষিত রাখতে হবে।


যিকর নং ১৯: আল্লাহর নামসমূহের ওসীলায় দুশ্চিন্তা মুক্তির দু‘আ

اللَّهُمَّ إِنِّي عَبْدُكَ ابْنُ عَبْدِكَ ابْنُ أَمَتِكَ نَاصِيَتِي بِيَدِكَ مَاضٍ فِيَّ حُكْمُكَ عَدْلٌ فِيَّ قَضَاؤُكَ أَسْأَلُكَ بِكُلِّ اسْمٍ هُوَ لَكَ سَمَّيْتَ بِهِ نَفْسَكَ أَوْ أَنْزَلْتَهُ فِي كِتَابِكَ أَوْ عَلَّمْتَهُ أَحَدًا مِنْ خَلْقِكَ أَوِ اسْتَأْثَرْتَ بِهِ فِي عِلْمِ الْغَيْبِ عِنْدَكَ أَنْ تَجْعَلَ الْقُرْآنَ رَبِيعَ قَلْبِي وَنُورَ بَصرى (في روايات نُورَ صَدْرِي) وَجَلَاءَ حُزْنِي وَذَهَابَ هَمِّي


উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আবদুকা, ওয়া ইবনু আবদিকা ওয়াবনু আমাতিকা, না-সিয়্যাতি বিইয়াদিকা, মা-দিন ফিইয়্যা হুকমুকা, ‘আদলুন ফিইয়্যা ‘কাদাউকা, আসআলুকা বিকুল্লি ইসমিন হুআ লাকা, সাম্মাইতা বিহী নাফসাকা, আউ আনযালতাহু ফী কিতা-বিকা, আউ ‘আল্লামতাহু আহাদাম মিন খালকিকা, আউ ইসতা-সারতা বিহী ফী ‘ইলমিল ‘গাইবি ‘ইনদাকা আন তাজ’আলাল কুরআ-না রাবী’আ কালবী, ওয়া নূরা বাসারী [সাদরী] , ওয়া জালা-আ হুযনী, ওয়া যাহা-বা হাম্মী।

অর্থঃ “হে আল্লাহ, আমি আপনার বান্দা, আপনার (একজন) বান্দার পুত্র, (একজন) বান্দীর পুত্র। আমার কপাল আপনার হাতে। আমার বিষয়ে আপনার সিদ্ধান্ত কার্যকর। আমার বিষয়ে আপনার বিধান ন্যায়ানুগ। আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করছি আপনার সকল নাম ধরে বা নামের ওসীলা দিয়ে, যে নামে আপনি নিজেকে ভূষিত করেছেন, অথবা যে নাম আপনি আপনার কিতাবে নাযিল করেছেন, অথবা যে নাম আপনি আপনার কোনো সৃষ্টিকে শিখিয়েছেন, অথবা যে নাম আপনি গাইবী জ্ঞানে আপনার একান্ত নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন (সকল নামের ওসীলায় আমি আপনার কাছে চাচ্ছি যে,) আপনি কুরআন কারীমকে আমার অন্তরের বসন্ত, চোখের আলো, বেদনার অপসারণ ও দুশ্চিন্তার অপসারণ বানিয়ে দিন। (কুরআনের ওসীলায় আমাকে এগুলি দান করুন)।”

আব্দুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ

مَا قَالَ عَبْدٌ قَطُّ إِذَا أَصَابَهُ هَمٌّ وَحَزَنٌ ... إِلا أَذْهَبَ اللَّهُ هَمَّهُ وَأَبْدَلَهُ مَكَانَ حَزَنِهِ فَرَحًا قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ يَنْبَغِي لَنَا أَنْ نَتَعَلَّمَ هَؤُلاءِ الْكَلِمَاتِ قَالَ أَجَلْ يَنْبَغِي لِمَنْ سَمِعَهُنَّ أَنْ يَتَعَلَّمَهُنَّ


“যে কোনো ব্যক্তি যদি কখনো দুশ্চিন্তা ও উৎকণ্ঠাগ্রস্ত অবস্থায় বা দুঃখ বেদনার মধ্যে নিপতিত হয়ে উপরের বাক্যগুলি বলে

দু‘আ করে, তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তার দুশ্চিন্তা ও উৎকণ্ঠা দূর করবেনই এবং তার বেদনাকে আনন্দে রূপান্তরিত করবেনই।” উপস্থিত সাহাবীগণ বলেনঃ তাহলে আমাদের উচিত এই বাক্যগুলি শিক্ষা করা। তিনি বললেনঃ “হাঁ, অবশ্যই, যে এগুলি শুনবে তার উচিত এগুলি শিক্ষা করা।” হাদীসটির সনদ গ্রহণযোগ্য।[7]


মহান আল্লাহর ইসমু আ’যম :


বিশেষ করে আল্লাহর ‘ইসমে আ’যম’ বা শ্রেষ্ঠতম নাম ধরে দু‘আ করতে হাদীসে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। বিভিন্ন হাদীসে বলা হয়েছে যে, আল্লাহর ‘ ইসমে আ’যম ’-এর ওসীলায় আল্লাহর নিকট দু‘আ করলে আল্লাহ দু‘আ কবুল করবেন। কিন্তু ‘ইসমে আ’যম’ কী সে বিষয়ে একাধিক সহীহ ও যয়ীফ রেওয়ায়েত রয়েছে। এখানে কয়েকটি সহীহ হাদীস এ বিষয়ে উল্লেখ করছিঃ


যিকর নং ২০ : মহান আল্লাহর ইসমু আ’যম-১

বুরাইদাহ আসলামী (রাঃ) বলেন, তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে মসজিদে প্রবেশ করে দেখেন এক ব্যক্তি সালাতরত অবস্থায় দু‘আ করছে নিম্নের কথা দিয়েঃ

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنِّي أَشْهَدُ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّه لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ، الأَحَدُ، الصَّمَدُ، الَّذِي لَمْ يَلِدْ، وَلَمْ يُولَدْ، وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ


উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলূকা বিআন্নী আশহাদু আন্নাকা আনতাল্লা-হু, লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতাল আ‘হাদুস সামাদুল লাযী লাম ইয়ালিদ, ওয়া লাম ইউলাদ, ওয়া লাম ইয়াকুল লাহু কুফুআন আ‘হাদ।

অর্থঃ “হে আল্লাহ, আমি আপনার নিকট এই বলে প্রার্থনা করছি যে, আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি, আপনিই আল্লাহ, আপনি ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই। আপনিই একক, অমুখাপেক্ষী, যিনি জন্মদান করেননি ও জন্মগ্রহণ করেননি এবং তাঁর সমতুল্য কেউ নেই।” তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেনঃ

وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِه لَقَدْ سَأَلَ اللَّهَ بِاسْمِهِ الأَعْظَمِ الَّذِي إِذَا دُعِيَ بِهِ أَجَابَ وَإِذَا سُئِلَ بِهِ أَعْطَى


“যার হাতে আমার জীবন তাঁর শপথ করে বলছি, নিশ্চয় এই ব্যক্তি আল্লাহর কাছে তাঁর ইসমু আ’যম ধরে প্রার্থনা করেছে, যে নাম ধরে ডাকলে তিনি সাড়া দেন এবং যে নাম ধরে চাইলে তিনি প্রদান করেন।” হাদীসটি সহীহ।[8]


যিকর নং ২১ : মহান আল্লাহর ইসমু আ’যম-২

আনাস (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে বৃত্তাকারে বসে ছিলাম। এ সময় এক ব্যক্তি সালাত আদায় করছিল। সে সালাতের তাশাহহুদের পরে দু’আ করল এবং দু’আর মধ্যে বললঃ

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ (الْمَنَّانُ) (يَا) بَدِيعَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَا ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ

উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা, ইন্নী আসআলুকা বিআন্না লাকাল হামদা, লা-ইলা-হা ইল্লা-আনতা, [আল-মান্নানু], [ইয়া-] বাদী’আস সামাওয়া-তি ওয়াল আরদি, ইয়া- যাল জালা-লি ওয়াল ইকরা-ম, ইয়া- হাইউ ইয়া-কাইঊম।

অর্থঃ “হে আল্লাহ নিশ্চয় আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করছি (এই বলে) যে, সকল প্রশংসা আপনার, আপনি ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই, হে মহাদাতা, হে আসমানসমূহ ও পৃথিবীর উদ্ভাবক, হে মহত্ত্ব ও সম্মানের মালিক, হে চিরঞ্জীব, হে সর্বকর্তৃত্বময় অভিভাবক।”

তখন নবীয়ে আকরাম (সা.) বললেনঃ

لَقَدْ دَعَا اللَّهَ بِاسْمِهِ الْعَظِيمِ الَّذِي إِذَا دُعِيَ بِهِ أَجَابَ، وَإِذَا سُئِلَ بِهِ أَعْطَى


“নিশ্চয় সে আল্লাহর কাছে তাঁর ইসমে আ’যম ধরে দু‘আ করেছে, যে নামে ডাকলে তিনি সাড়া দেন এবং যে নামে চাইলে তিনি প্রদান করেন।” হাদীসটির সনদ সহীহ।[9]


যিকর নং ২২ : ইসমু আ‘যম-৩ , দু‘আ ইউনূস :


একটি হাদীসে দু‘আ ইউনূসকে আল্লাহর ‘ইসমু আ’যাম’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সা’দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ইউনূস (আ.) যে দু‘আ বলে দু‘আ করেছিলেন সেটি আল্লাহর ইসমু আ’যাম, যা দিয়ে ডাকলে আল্লাহ সাড়া দেন এবং যদ্দ্বারা চাইলে আল্লাহ প্রদান করেন।[10]

অন্য হাদীসে সা’দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন:

دعوة ذي النون، إذ دعا وهو في بطن الحوت (لا إله إلا أنت سبحانك إني كنت من الظالمين) فإنه لم يدع بها رجل مسلم في شيء قط إلا استجاب الله له


“যুন্নুন (ইউনূস আ) মাছের পেটে যে দু‘আ বলে দু‘আ করেছিলেনঃ (লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতা সুব‘হা-নাকা ইন্নী কুনতু মিনায যা-লিমীন) : (আপনি ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই, আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি, নিশ্চয় আমি অত্যাচারীদের অন্তর্ভুক্ত), - এই দু‘আ দ্বারা যে মুসলিমই যে কোনো বিষয়ে দু‘আ করবে, আল্লাহ অবশ্যই তার দু‘আয় সাড়া প্রদান করবেন (দু‘আ কবুল করবেন)।” হাদীসটি সহীহ।[11]

আল্লাহর নামের ওসীলা দিয়ে দু‘আ চাওয়া বিষয়ে অগণিত হাদীস বর্ণিত হয়েছে। এছাড়া মুমিন তাঁর নেক কর্ম ইত্যাদির ওসীলা দিয়ে আল্লাহর কাছে দু‘আ চাইতে পারে বলে ২/১ টি হাদীস থেকে আমরা জানতে পারি। যেমন,- “হে আল্লাহ, আমি গোনাহগার, আমি অমুক কর্মটি আপনার সন্তুষ্টির জন্য করেছিলাম, সেই ওসীলায় আমার প্রার্থনা কবুল করুন। হে আল্লাহ, আমি গোনাহগার, আমার কোনো উল্লেখযোগ্য নেক আমল নেই যে, যার ওসীলা দিয়ে আমি আপনার পবিত্র দরবারে দু‘আ চাইব। শুধুমাত্র আপনার হাবীব নবীয়ে মুসতাফা (সা.)-এর সামান্য মহব্বত হৃদয়ে ধারণ করেছি, এই মহব্বতটুকুর ওসীলায় আমার দু‘আ কবুল করুন। হে আল্লাহ, আমার কিছুই নেই, শুধুমাত্র আপনার নবীয়ে আকরাম (সা.)-এর সুন্নাতের মহব্বতটুকু হৃদয়ে আছে, সেই ওসীলায় আমাকে ক্ষমা করুন, আমার দু‘আ কবুল করুন। হে আল্লাহ, আমি কিছুই আমল করতে পারিনি, তবে আপনার পথে অগ্রসর ও আমলকারী নেককার বান্দাদেরকে আপনারই ওয়াস্তে মহব্বত করি, তাদের পথে চলতে চাই, আপনি সেই ওসীলায় আমার দু‘আ কবুল করুন ...।” ইত্যাদি।

[1] সূরা আ’রাফঃ ১৮০।

[2] সহীহ বুখারী ২/৯৮১, নং ২৫৮৫, সহীহ মুসলিম ৪/২০৬৩, নং ২৬৭৭।

[3] সুনানুত তিরমিযী ৫/৫৩০, নং ৩৫০৭, সুনানু ইবনি মাজাহ ২/১২৬৯, নং ৩৮৬১, মুসতাদরাক হাকিম ১/৬২-৬৩।

[4] ইবনু হাজার আসকালানী, ফাতহুল বারী ১১/২১৭।

[5] ইবনু হাজার আসকালানী, ফাতহুল বারী ১১/২১৭-২১৮, ১১/২২১, নাবাবী শারহু সহীহ মুসলিম ১৭/৫।

[6] নাবাবী, আল আযকার, পৃ. ১৫১, মাওয়ারিদুয যামআন ৮/১৪-১৬, জামিউল উসুল ৪/১৭৩-১৭৫।

[7] সহীহ ইবনু হিব্বান ৩/২৫৩, মাওয়ারিদুয যামআন ৭/৪০৪-৪০৭, মুসতাদরাক হাকিম ১/৬৯০, মুসনাদ আহমাদ ১/৩৯১, ৪৫২, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১৩৬, ১৮৬।

[8] সুনানুত তিরমিযী ৫/৫১৫, নং ৩৪৭৫, সুনানু আবী দাউদ ২/৭৯, ১৪৯৩, সুনানু ইবনি মাজাহ ২/১২৬৭, নং ৩৮৫৭, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩/১৭৪, মুসতাদরাক হাকিম ১/৬৮৩, ৬৮৪, সহীহ সুনানুত তিরমিযী ৩/১৬৩।

[9] সুনানুত তিরমিযী ৫/৫৫০, নং ৩৫৪৪, সুনানু ইবনি মাজাহ ২/১২৬৮, নং ৩৮৫৮, মুসতাদরাক হাকিম ১/৬৮৩, সুনানু আবী দাউদ ২/৭৯, নং ১৪৯৫, সুনানুন নাসাঈ ৩/৫২, নং ১৩০০, মাওয়ারিদুয যামআন ৮/৯-১২, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১৫৬, সহীহু সুনানুন নাসাঈ ১/২৭৯।

[10] মুসতাদরাক হাকিম ১/৬৮৫, হাকিম হাদিসটির সনদ সম্পর্কে কিছু বলেন নি। বাহ্যত সনদ গ্রহনযোগ্য।

[11] সুনানুত তিরমিযী ৫/৫২৯, নং ৩৫০৫, মুসতাদরাক হাকিম ১/৬৮৪-৬৮৫, মাজমাউয যাওয়াইদ ৭/৬৮, ১০/১৫৯।