ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম সালাত শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)
(৩৩৫) সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণের নামায আদায় করার বিধান কি?

অধিকাংশ বিদ্বানের মতে সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণের নামায সুন্নাতে মুআক্কাদা। ওয়াজিব নয়। নিঃসন্দেহে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ নামাযের নির্দেশ প্রদান করেছেন। অতি গুরুত্বসহকারে অন্যান্য নামায থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন পদ্ধতিতে তিনি এ নামায আদায় করেছেন।

বিদ্বানদের মধ্যে কেউ কেউ এ নামাযকে ফরযে আঈন বা ফরযে কেফায়া হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাদের দলীল হচ্ছে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ নামাযের নির্দেশ প্রদান করেছেন। আর নির্দেশ মানেই ফরয বা ওয়াজিব। তাছাড়া অন্যান্য নিদর্শন থেকেও এনামাযের অতিরিক্ত গুরুত্ব পাওয়া যায়। এছাড়া বান্দার ত্রুটির কারণেই এই সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ হয়ে থাকে এবং আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে এটি একটি সতর্কতা। তাই বান্দাদের উপর ওয়াজিব হচ্ছে এই শাস্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আল্লাহ্‌র কাছে কাকুতি-মিনতী করা এবং ছালাত আদায় করা।

নিঃসন্দেহে এমতের পক্ষের দলীল ও যুক্তি শক্তিশালী। সর্বনিম্ন বিষয়টি ফরযে কেফায়া। আমিও এটাই মনে করি। জমহুর (অধিকাংশ) বিদ্বান যে মত পোষণ করেন্ত অর্থাৎ সুন্নাতে মুআক্কাদা- তাদের মতের পক্ষে ওয়াজিবকে প্রত্যাখ্যান করার কোন দলীল নেই। তবে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর এই হাদীছটি তাদের পক্ষে দলীল হতে পারে: গ্রাম্য ব্যক্তিকে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোর নির্দেশ দিলেন তখন সে প্রশ্ন করল, এই পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত ছাড়া কি আমার উপর অন্য কিছু ফরয রয়েছে? তিনি বললেন, “না, তবে তুমি নফল আদায় করতে পার।” এ হাদীছের মাধ্যমে অন্যান্য নামাযের আবশ্যকতা বা ফরয হওয়া অস্বীকার করা যাবে না- যদি তার যথাপযোক্ত কারণ থাকে। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর ‘না’ বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে সুন্নাত নামায সমূহ যা দিন্তরাতে বার বার আদায় করতে হয় তা আবশ্যক নয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণের সাথে সংশ্লিষ্ট নামায সমূহের আবশ্যকতা এখানে নিষেধ করা হয়নি।

মোটকথা, আমরা যা মনে করি তা হচ্ছে, সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণের নামায ফরযে আঈন বা ফরযে কেফায়া।

১। এ নামায চারটি রুকু ও চারটি সিজদার মাধ্যমে সর্বমোট দু'রাকাত আদায় করতে হয়। ইমাম প্রথমে সুরা ফাতিহা পাঠ করে দীর্ঘ একটি সুরা পাঠ করবেন, এরপর রুকু করবেন। রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে সিজদায় না গিয়ে আবার দীর্ঘ একটি সুরা পাঠ করবেন। তারপর দুটি সিজদা করে দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দণ্ডায়মান হবে এবং এ রাকাতও প্রথম রাকাতের ন্যায় দুটি রুকু ও দুটি সিজাদার মাধ্যমে আদায় করবেন।