(১) আয়লার (أَيْلَة) খ্রিষ্টান গবর্ণর ইউহান্নাহ বিন রু’বাহ(يُحَنَّةُ بنُ رُؤْبَةَ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর খিদমতে হাযির হয়ে সন্ধি করেন এবং তাঁকে জিযিয়া প্রদান করেন। (২) আযরুহ (أذْرُح) ও জারবা (جَرْبَاء)-এর নেতৃবৃন্দ এসে জিযিয়া প্রদান করেন। রাসূল (ছাঃ) তাদের প্রত্যেককে সন্ধির চুক্তিনামা প্রদান করেন, যা তাদের কাছে রক্ষিত থাকে। শুধুমাত্র জিযিয়ার বিনিময়ে তাদের জান-মাল-ইয্যত ও ধর্মের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখার গ্যারান্টি দেওয়া হয়। (৩) রাসূল (ছাঃ) দূমাতুল জান্দালের শাসনকর্তা উকায়দিরের (أُكَيْدِرُ) নিকটে ৪২০ জন অশ্বারোহী সৈন্যের একটি বাহিনীসহ খালেদ বিন অলীদকে প্রেরণ করেন। যাত্রাকালে তিনি বলে দেন যে,إنَّكَ سَتَجِدُهُ يَصِيْدُ الْبَقَرَ ‘তুমি তাকে জংলী নীল গাভী শিকার করা অবস্থায় দেখতে পাবে’ (বায়হাক্বী হা/১৯১১৪)। সেটাই হ’ল। চাঁদনী রাতে দুর্গটি পরিষ্কার দেখা যায়, এমন দূরত্বে পৌঁছে গেলে হঠাৎ দেখা গেল যে, একটি নীল গাভী জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে দুর্গদ্বারে শিং দিয়ে গুঁতা মারছে। এমন সময় উকায়দির গাভীটাকে শিকার করার জন্য লোকজন নিয়ে বের হ’লেন। এই সুযোগে খালেদ তাকে বন্দী করে ফেললেন। এভাবে রাসূল (ছাঃ)-এর ভবিষ্যদ্বাণী কার্যকর হয়’ (ইবনু হিশাম ২/৫২৬)।
উকায়দিরকে রাসূল (ছাঃ)-এর দরবারে আনা হ’ল। অতঃপর ২০০০ উট, ৮০০ গোলাম, ৪০০ লৌহবর্ম ও ৪০০ বর্শা দেবার শর্তে এবং জিযিয়া কর প্রদানে স্বীকৃত হওয়ায় তার সঙ্গে সন্ধিচুক্তি সম্পাদিত হ’ল। যেমন ইতিপূর্বে আয়লাহ, তাবূক, ও তায়মার সাথে সম্পাদিত হয়েছিল। একইভাবে রোমকদের মিত্র অন্যান্য গোত্রসমূহ তাদের পুরানো মনিবদের ছেড়ে মুসলমানদের নিকটে এসে মৈত্রীবন্ধনে আবদ্ধ হ’ল।
এভাবে একেবারেই বিনাযুদ্ধে এবং কোনরূপ জানমালের ক্ষয়-ক্ষতি ছাড়াই আল্লাহর গায়েবী মদদে মদীনার ইসলামী খেলাফতের সীমানা বিস্তৃত হয়ে রোম সাম্রাজ্যের প্রান্তসীমা পর্যন্ত পৌঁছে গেল। ফালিল্লাহিল হাম্দ।