(১) আববাস-এর সাথে সাক্ষাৎ(اللقاء مع العباس) : মদীনা থেকে মক্কার পথে ১৮৭ কি. মি. দূরে জুহফা (الْجُحْفَة) বা তার কিছু পরে পৌঁছে রাসূল (ছাঃ)-এর প্রিয় চাচা আববাস বিন আব্দুল মুত্ত্বালিবের সাথে সাক্ষাৎ হয়। যিনি পরিবার-পরিজনসহ মুসলমান হয়ে মদীনার পথে হিজরতে বের হয়েছিলেন। যদিও আববাস খায়বর বিজয়ের পূর্বেই ইসলাম কবুল করেছিলেন। উল্লেখ্য যে, আববাস ছিলেন রাসূল (ছাঃ)-এর বিশ্বস্ত চাচা। যিনি কুরায়েশদের খবরাখবর গোপনে তাঁকে সরবরাহ করতেন এবং আবু তালেবের পরে তিনিই ছিলেন মক্কায় দুর্বল মুসলমানদের প্রধান আশ্রয়স্থল।
(২) চাচাতো ও ফুফাতো ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ(اللقاء مع الأخوين من العم والعمة) : মদীনা থেকে দক্ষিণে মক্কার পথে ২৫০ কি. মি. দূরে আবওয়া (الْأَبْوَاء), যেখানে রাসূল (ছাঃ)-এর মা আমেনার কবর রয়েছে- সেখানে রাসূল (ছাঃ)-এর চাচাতো ভাই ও দুধ ভাই আবু সুফিয়ান মুগীরাহ ইবনুল হারেছ বিন আব্দুল মুত্ত্বালিব এবং ফুফাতো ভাই আব্দুল্লাহ বিন আবু উমাইয়া বিন মুগীরাহর সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। শেষোক্ত ব্যক্তি উম্মুল মুমিনীন উম্মে সালামার বিমাতা ভাই ছিলেন। তাদের সম্পর্কে উম্মে সালামা অনুরোধ করলে রাসূল (ছাঃ) বলেন, তাদের কাছে আমার কোন প্রয়োজন নেই’। চাচাতো ভাই মক্কায় আমার সম্মান বিনষ্ট করেছে এবং ফুফাতো ভাই মক্কায় আমার সম্পর্কে নানারূপ কুৎসা রটনা করেছে’। অতঃপর এ খবর জানতে পেরে তারা বলে উঠলেন, আল্লাহর কসম! হয় আল্লাহর রাসূল আমাদেরকে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দিবেন, না হয় আমরা আমাদের সন্তানাদি নিয়ে একদিকে চলে যাব। অতঃপর ক্ষুধায়-তৃষ্ণায় মারা যাব’। একথা শুনে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর অন্তর নরম হ’ল এবং তাদেরকে অনুমতি দিলেন’ (অতঃপর তারা ইসলাম কবুল করলেন)।[1]
অন্যদিকে হযরত আলী (রাঃ) আবু সুফিয়ান মুগীরাহ ইবনুল হারেছকে শিখিয়ে দিলেন যে, তুমি রাসূল (ছাঃ)-এর সম্মুখে গিয়ে সেই কথাগুলি বল, যা ইউসুফের ভাইয়েরা তাঁকে বলেছিলেন-تَاللهِ لَقَدْ آثَرَكَ اللهُ عَلَيْنَا وَإِنْ كُنَّا لَخَاطِئِيْنَ ‘আল্লাহর কসম! আল্লাহ আপনাকে আমাদের উপরে প্রাধান্য দিয়েছেন এবং আমরা অবশ্যই অপরাধী ছিলাম’ (ইউসুফ ১২/৯১)। আবু সুফিয়ান ইবনুল হারেছ তাই করলেন। আর সাথে সাথে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) সেই জবাবই দিলেন, যা ইউসুফ (আঃ) তার ভাইদের দিয়েছিলেন- لاَ تَثْرَيْبَ عَلَيْكُمُ الْيَوْمَ يَغْفِرُ اللهُ لَكُمْ وَهُوَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِيْنَ ‘আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন। তিনি হ’লেন দয়ালুদের সেরা দয়ালু’ (ইউসুফ ১২/৯২)।
আবু সুফিয়ান ইবনুল হারেছ ছিলেন আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি এবং রাসূল (ছাঃ)-এর বড় চাচা হারেছ-এর পুত্র। তিনিও হালীমা সা‘দিয়াহর দুধ পান করেছিলেন। সেকারণে রাসূল (ছাঃ) ছিলেন তার দুধ ভাই। অতঃপর রাসূল (ছাঃ) তাকে ক্ষমা করে দিলে খুশীতে তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে নয় লাইনের একটি কবিতা পাঠ করেন। যার মধ্যে ৩য় লাইনে তিনি বলেন,
هَدَاني هادٍ غيرُ نفسي ودَلَّني * على الله مَنْ طَرَّدتُ كُلَّ مُطَرَّدٍ
‘আমার নফস ব্যতীত অন্য একজন পথপ্রদর্শক আমাকে পথ দেখিয়েছেন এবং আমাকে আল্লাহর পথের সন্ধান দিয়েছেন, যাকে সকল প্রকারের তিরষ্কারের মাধ্যমে আমি তাড়িয়ে দিতাম’। একথা শুনে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তার বুকে থাবা মেরে বললেন, হ্যাঁ।أَنْتَ طَرَّدْتَنِيْ كُلَّ مُطَرَّدٍ ‘তুমিই তো আমাকে সর্বদা তাড়িয়ে দিতে’।[2]
ইসলাম গ্রহণের পর থেকে তিনি কখনো লজ্জায় রাসূল (ছাঃ)-এর সামনে মাথা উঁচু করে কথা বলতেন না। মক্কা বিজয়ের মাত্র ১৯ দিন পরে হোনায়েনের যুদ্ধে যে কয়জন ছাহাবী রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নিয়েছিলেন, তিনি ছিলেন তাদের অন্যতম। তিনি কোনমতেই রাসূল (ছাঃ)-এর উটের লাগাম ছাড়েননি। তাঁর ছেলে জা‘ফর হোনায়েন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। দুই ছেলে জা‘ফর ও আব্দুল্লাহ ছাহাবী ছিলেন। রাসূল (ছাঃ) তাকে খুবই ভালবাসতেন এবং বলতেন,أَرْجُو أَنْ يَكُوْنَ خَلَفًا مِنْ حَمْزَةَ ‘আশা করি তিনি হামযাহর স্থলাভিষিক্ত হবেন’। তিনি তার জন্য জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছিলেন। তিনি হোদায়বিয়ার সন্ধির প্রাক্কালে বায়‘আতুর রিযওয়ানে উপস্থিত ছিলেন। রাসূল (ছাঃ)-এর ওফাতের পর তিনি যে ১০ লাইনের শোকগাথা পাঠ করেন, তা ছিল অতীব মর্মস্পর্শী ও হৃদয় বিদারক। ১৫ অথবা ২০ হিজরীতে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তিনি বলেন,لاَ تَبْكُوْا عَلَيَّ فَوَاللهِ مَا نَطَقْتُ بِخَطِيئَةٍ مُنْذُ أَسْلَمْتُ ‘আমার জন্য তোমরা কেঁদো না। আল্লাহর কসম! ইসলাম গ্রহণের পর হ’তে আমি কোন গোনাহের কথা বলিনি’।[3]
ফুফাতো ভাই আব্দুল্লাহ বিন আবু উমাইয়া, যিনি রাসূল (ছাঃ)-এর ফুফু আতেকার পুত্র ছিলেন। ইনিই আবু ত্বালিবের মৃত্যুর সময় তাকে তার পিতৃধর্মের উপরে মৃত্যুর জন্য অন্যতম প্ররোচনা দানকারী ছিলেন। ইনিই সেই ব্যক্তি যিনি রাসূল (ছাঃ)-কে বলেছিলেন, আমরা কখনোই তোমার উপরে ঈমান আনবো না, যতক্ষণ না তুমি আমাদের জন্য ভূমি থেকে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত করে দিবে’ (ইসরা ১৭/৯০)। অতঃপর আল্লাহ তাকে হেদায়াত দান করেন এবং মক্কা বিজয়ের প্রাক্কালে তিনি ও আবু সুফিয়ান ইবনুল হারেছ ইসলাম কবুলের উদ্দেশ্যে মদীনায় হিজরত করেন। পথিমধ্যে রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ হয় এবং ইসলাম কবুল করেন।
প্রথম দিকে ইসলামের ঘোর দুশমন থাকলেও ইসলাম গ্রহণের পর সর্বক্ষণ রাসূল (ছাঃ)-এর সহযোগী ছিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে মক্কা বিজয়, হোনায়েন যুদ্ধ ও ত্বায়েফ যুদ্ধে যোগদান করেন এবং ত্বায়েফে শত্রুপক্ষের তীরের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেন।[4]
(৩) মার্রুয যাহরানে অবতরণ(النزول فى مر الظهران) : মক্কায় প্রবেশের আগের রাতে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মক্কা থেকে ৩০ কি.মি. পূর্বে মার্রুয যাহরান(مَرُّ الظَّهْرَانِ) উপত্যকায় অবতরণ করেন এবং প্রত্যেককে পৃথক পৃথকভাবে আগুন জ্বালাতে বলেন। তাতে সমগ্র উপত্যকা দশ হাযার অগ্নিপিন্ডের এক বিশাল আলোক নগরীতে পরিণত হয়। ওমর ইবনুল খাত্ত্বাবকে তিনি পাহারাদার বাহিনীর প্রধান নিয়োগ করেন।
মক্কাবাসীদের উপরে আসন্ন বিপদ অাঁচ করে হযরত আববাস (রাঃ) অত্যন্ত ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তিনি মনেপ্রাণে চাচ্ছিলেন যে, উপযুক্ত কোন লোক পেলে তিনি তাকে দিয়ে খবর পাঠাবেন যে, রাসূল (ছাঃ)-এর মক্কায় প্রবেশের পূর্বেই যেন কুরায়েশ নেতারা অনতিবিলম্বে এসে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে আত্মসমর্পণ করে। অতঃপর তিনি রাসূল (ছাঃ)-এর সাদা খচ্চরের উপরে সওয়ার হয়ে রাতের অাঁধারে বেরিয়ে পড়েন।
(৪) আবু সুফিয়ান গ্রেফতার(قبض أبى سفيان) :
ভীত ও শংকিত কুরায়েশ নেতা আবু সুফিয়ান, হাকীম বিন হেযাম ও বনু খোযা‘আহ নেতা বুদাইল বিন ওয়ারক্বা মুসলমানদের খবর জানার জন্য রাত্রিতে ময়দানে বের হয়ে এসেছিলেন। তারা হঠাৎ গভীর রাতে দিগন্তব্যাপী আগুনের শিখা দেখে হতচকিত হয়ে পড়েন ও একে অপরে নানারূপ আশংকার কথা বলাবলি করতে থাকেন। এমন সময় হযরত আববাস (রাঃ) তাদের কণ্ঠস্বর চিনতে পারেন ও কাছে এসে বলেন, কি দেখছ, এগুলি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সেনাবাহিনীর জ্বালানো আগুন। একথা শুনে ভীত কম্পিত আবু সুফিয়ান বলে উঠলেন,فَمَا الْحِيْلَةُ فِدَاك أَبِيْ وَأُمِّيْ ‘তোমার জন্য আমার পিতা-মাতা উৎসর্গীত হৌন- এখন বাঁচার উপায় কি? আববাস (রাঃ) বললেন,وَاللهِ لَئِنْ ظَفِرَ بِكَ لَيَضْرِبَنَّ عُنُقَكَ ‘আল্লাহর কসম! তোমাকে পেয়ে গেলে তিনি অবশ্যই তোমার গর্দান উড়িয়ে দেবেন’। অতএব এখুনি আমার খচ্চরের পিছনে উঠে বস এবং চলো রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে গিয়ে আমি তোমার জন্য আশ্রয় প্রার্থনা করছি’। কোনরূপ দ্বিরুক্তি না করে আবু সুফিয়ান খচ্চরের পিছনে উঠে বসলেন এবং তার সাথী দু’জন ফিরে গেলেন।
রাসূল (ছাঃ)-এর তাঁবুতে পৌঁছার আগ পর্যন্ত সকলে রাসূল (ছাঃ)-এর সাদা খচ্চর ও তাঁর চাচা আববাসকে দেখে সসম্মানে পথ ছেড়ে দিয়েছে। ওমরের নিকটে পৌঁছলে তিনি উঠে কাছে এলেন এবং পিছনে আবু সুফিয়ানকে দেখেই বলে উঠলেন,أَبُو سُفْيَانَ عَدُوُّ اللهِ ‘আবু সুফিয়ান, আল্লাহর দুশমন! আলহামদুলিল্লাহ কোনরূপ চুক্তি ও অঙ্গীকার ছাড়াই আল্লাহ তোমাকে আমাদের নাগালের মধ্যে এনে দিয়েছেন’। বলেই তিনি রাসূল (ছাঃ)-এর তাঁবুর দিকে চললেন। আববাস (রাঃ) বলেন, আমিও দ্রুত খচ্চর হাঁকিয়ে দিলাম এবং তার আগেই রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে পৌঁছে গেলাম। অতঃপর তাঁর সম্মুখে বসে গেলাম। ইতিমধ্যে ওমর এসে পৌঁছলেন এবং বললেন,يَا رَسُوْلَ اللهِ هَذَا أَبُوْ سُفْيَانَ فَدَعْنِيْ أَضْرِبْ عُنُقَهُ ‘হে আল্লাহর রাসূল! এই সেই আবু সুফিয়ান! আমাকে হুকুম দিন ওর গর্দান উড়িয়ে দেই’। আববাস (রাঃ) তখন রাসূল (ছাঃ)-কে বললেন,يَا رَسُوْلَ اللهِ، إنِّيْ قَدْ أَجَرْتُهُ ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমি তাকে আশ্রয় দিয়েছি’। অতঃপর আমি রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে উঠে গিয়ে কানে কানে বললাম,وَاللهِ لاَ يُنَاجِيْهِ اللَّيْلَةَ أَحَدٌ دُوْنِيْ ‘আল্লাহর কসম! আমি ছাড়া অন্য কেউ আজ রাতে আপনার সাথে গোপনে কথা বলবে না’। এরপর ওমর ও আববাসের মধ্যে কিছু বাক্য বিনিময় হয়। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, হে আববাস! এঁকে আপনার তাঁবুতে নিয়ে যান। সকালে ওঁকে নিয়ে আমার কাছে আসুন’।
(৫) আবু সুফিয়ানের ইসলাম গ্রহণ(إسلام أبى سفيان) :
সকালে তাঁর নিকটে গেলে তিনি আবু সুফিয়ানকে বললেন,وَيْحَكَ يَا أَبَا سُفْيَانَ أَلَمْ يَأْنِ لَكَ أَنْ تَعْلَمَ أَنْ لاَ إلَهَ إلاَّ اللهُ؟ ‘তোমার জন্য দুঃখ হে আবু সুফিয়ান! আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, একথা উপলব্ধি করার সময় কি তোমার এখনো আসেনি’? আবু সুফিয়ান বললেন,بِأَبِيْ أَنْتَ وَأُمِّيْ مَا أَحْلَمَك وَأَكْرَمَك وَأَوْصَلَك لَقَدْ ظَنَنْتُ أَنْ لَوْ كَانَ مَعَ اللهِ إلَهٌ غَيْرُهُ لَقَدْ أَغْنَى شَيْئًا بَعْدُ ‘আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য উৎসর্গীত হউন! আপনি কতইনা সহনশীল, কতই না সম্মানিত ও কতই না আত্মীয়তা রক্ষাকারী। আমি বুঝতে পেরেছি যে, যদি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য থাকত, তাহ’লে এতদিন তা আমার কিছু কাজে আসত’। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন,وَيْحَكَ يَا أَبَا سُفْيَانَ أَلَمْ يَأْنِ لَكَ أَنْ تَعْلَمَ أَنّيْ رَسُوْلُ اللهِ؟ ‘তোমার জন্য দুঃখ হে আবু সুফিয়ান! আমি যে আল্লাহর রাসূল একথা উপলব্ধি করার সময় কি তোমার এখনো আসেনি’? আবু সুফিয়ান বললেন, আপনার জন্য আমার পিতা-মাতা উৎসর্গীত হৌন! আপনি কতই না সহনশীল, কতই না সম্মানিত এবং কতই না আত্মীয়তা রক্ষাকারী।أَمَّا هَذِهِ فَإِنَّ فِي النَّفْسِ حَتَّى الْآنَ مِنْهَا شَيْئًا ‘কেবল এই ব্যাপারটিতে আমার মনের মধ্যে এখনো কিছুটা সংশয় রয়েছে’। সঙ্গে সঙ্গে ধমকের সুরে আববাস (রাঃ) তাকে বললেন,وَيْحَكَ أَسْلِمْ وَاشْهَدْ أَنْ لآ إلَهَ إلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُوْلُ اللهِ قَبْلَ أَنْ تُضْرَبَ عُنُقُكَ ‘তোমার ধ্বংস হৌক! গর্দান যাওয়ার পূর্বে ইসলাম কবুল কর এবং সাক্ষ্য দাও যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল’। সঙ্গে সঙ্গে আবু সুফিয়ান কালেমায়ে শাহাদাত পাঠের মাধ্যমে ইসলাম কবুল করলেন।
অতঃপর হযরত আববাস (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল!إنَّ أَبَا سُفْيَانَ رَجُلٌ يُحِبُّ الْفَخْرَ فَاجْعَلْ لَهُ شَيْئًا ‘আবু সুফিয়ান গৌরব প্রিয় মানুষ। অতএব এ ব্যাপারে তাকে কিছু প্রদান করুন’। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন,نَعَم مَنْ دَخَلَ دَارَ أَبِيْ سُفْيَانَ فَهُوَ آمِنٌ وَمَنْ أَغْلَقَ عَلَيْهِ بَابَهُ فَهُوَ آمِنٌ وَمَنْ أَلْقَى السَّلاَحَ فَهُوَ آمِنٌ وَمَنْ دَخَلَ الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ فَهُوَ آمِنٌ ‘বেশ, যে ব্যক্তি আবু সুফিয়ানের গৃহে প্রবেশ করবে, সে নিরাপদ থাকবে। যে ব্যক্তি তার ঘরের দরজা বন্ধ রাখবে, সে নিরাপদ থাকবে। যে ব্যক্তি অস্ত্র ফেলে দিবে, সে নিরাপদ থাকবে এবং যে ব্যক্তি মাসজিদুল হারামে প্রবেশ করবে, সে নিরাপদ থাকবে’।[5]
[2]. হাকেম হা/৪৩৫৯; আলবানী, ফিক্বহুস সীরাহ ৩৭৬ পৃঃ, সনদ হাসান।
[3]. যাদুল মা‘আদ ৩/৩৫২-৩৫৩; আল-ইছাবাহ, আবু সুফিয়ান ইবনুল হারেছ ক্রমিক ১০০২২।
[4]. আল-ইছাবাহ, আব্দুল্লাহ বিন আবু উমাইয়া ক্রমিক ৪৫৪৬।
[5]. ইবনু হিশাম ২/৪০৩; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩৩৪১; মুসলিম হা/১৭৮০; আবুদাঊদ হা/৩০২১; মিশকাত হা/৬২১০।