ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
নবীদের কাহিনী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) - মাদানী জীবন ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
অন্যান্য দুর্গ জয় (فتح حصون أخرى)

না‘এম দুর্গ জয়ের পর দ্বিতীয় প্রধান দুর্গ ছা‘ব বিন মু‘আয(حِصْنُ الصَّعْب بن مُعَاذ) দুর্গটি বিজিত হয় হযরত হুবাব ইবনুল মুনযির (রাঃ)-এর নেতৃত্বে তিনদিন অবরোধের পর। এই দুর্গটি ছিল খাদ্যসম্ভারে পূর্ণ। আর এই সময় মুসলিম সেনাদলে দারুণ খাদ্য সংকট চলছিল। তখন এ দুর্গটি জয়ের জন্য আল্লাহর নিকটে রাসূল (ছাঃ) বিশেষ দো‘আ করেন[1] এবং সেদিনই সন্ধ্যার পূর্বে দুর্গ জয় সম্পন্ন হয়। এ সময় ক্ষুধার তাড়নায় মুসলিম সেনাদলের কেউ কেউ গাধা যবহ করে তার মাংস রান্না শুরু করে দেয়। এ খবর শুনে রাসূল (ছাঃ) গৃহপালিত গাধার মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করে দেন’ (বুখারী হা/৫৪৯৭)। এই দুর্গ থেকে সেই আমলের প্রচলিত কিছু ট্যাংক ও কামান (মিনজানীক্ব ও দাববাবাহ) হস্তগত হয়। যা দুর্গ দুয়ার ভাঙ্গা এবং পাহাড়ের চূড়া বা উচ্চ ভূমিতে আগুনের গোলা নিক্ষেপের কাজে ব্যবহৃত হ’ত। পরবর্তী যুদ্ধগুলিতে যা খুবই কার্যকর প্রমাণিত হয়। যেমন অত্যন্ত মযবুত ‘নেযার’ (نِزَار) দুর্গটি জয় করার সময় আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) উক্ত ট্যাংক ও কামানের গোলা নিক্ষেপ করে সহজ বিজয় অর্জন করেন। ইসলামের ইতিহাসে এটিই ছিল যুদ্ধে কামান ব্যবহারের প্রথম ঘটনা। নাত্বাত ও শিক্ব অঞ্চলে ৫টি দুর্গের পতনের পর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কাতীবাহ অঞ্চলে গমন করেন ও তাদেরকে অবরোধ করেন। পরে তাদের উপরে কামানের গোলা নিক্ষেপের হুমকি দিলে ১৪দিন পর তারা বেরিয়ে এসে আত্মসমর্পণ করে ও সন্ধির প্রস্তাব দেয়। অতঃপর সন্ধিচুক্তির মাধ্যমে ‘কাতীবাহ’ অঞ্চলের তিনটি দুর্গ বিজিত হয়। এভাবে খায়বর বিজয় সম্পন্ন হয়।

[1]. এখানে নিম্নোক্ত দো‘আটি প্রসিদ্ধ আছে,

اللَّهُمَّ إنَّكَ قَدْ عَرَفْتُ حَالَهُمْ وَأَنْ لَيْسَتْ بِهِمْ قُوَّةٌ، وَأَنْ لَيْسَ بِيَدِي شَيْءٌ أُعْطِيهِمْ إيَّاهُ، فَافْتَحْ عَلَيْهِمْ أَعْظَمَ حُصُونِهَا عَنْهُمْ غَنَاءً، وَأَكْثَرَهَا طَعَامًا وَوَدَكًا-

‘হে আল্লাহ! তাদের (আমার সৈন্যদের) অবস্থা তুমি ভালোভাবে জান। তাদের সহায়-সম্পদ কিছুই নেই। আর আমার নিকটেও এমন কিছু নেই, যা আমি তাদেরকে দিতে পারি। অতএব তুমি ইহূদীদের সবচেয়ে বড় দুর্গটির উপর তাদেরকে বিজয়ী কর। যা তাদের জন্য যথেষ্ট হয়ে যায় এবং সেখান থেকে তাদের অধিক খাদ্য ও চর্বি হস্তগত হয়’ (ইবনু হিশাম ২/৩৩২; আর-রাহীক্ব ৩৭১ পৃঃ, সনদ মু‘যাল বা যঈফ, ঐ তা‘লীক্ব ১৬৫-৬৬ পৃঃ; আলবানী, ফিক্বহুস সীরাহ ৩৪৪ পৃঃ)।