কাফিরদের বেষ্টনী থেকে মুসলিম বাহিনীকে মুক্ত করে যখন আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) ধীরে ধীরে পাহাড়ের উচ্চভূমির ঘাঁটিতে ফিরে আসছিলেন, তখন হঠাৎ করে অনেকের মধ্যে তন্দ্রা নেমে আসে। বদর যুদ্ধের ন্যায় এটা ছিল তাদের জন্য আল্লাহ প্রেরিত এক ধরনের প্রশান্তি। হযরত আবু ত্বালহা (রাঃ) বলেন, ওহোদ যুদ্ধের দিন যারা তন্দ্রাভিভূত হয়ে পড়েন, আমি ছিলাম তাদের অন্যতম। এমনকি এদিন আমার হাত থেকে কয়েকবার তরবারি পড়ে যায়। অবস্থা এমন ছিল যে, ওটা পড়ে যাচ্ছিল, আর আমি ধরে নিচ্ছিলাম। আবার পড়ে যাচ্ছিল, আবার ধরে নিচ্ছিলাম’ (বুখারী হা/৪৫৬২)। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন,ثُمَّ أَنْزَلَ عَلَيْكُمْ مِنْ بَعْدِ الْغَمِّ أَمَنَةً نُعَاسًا يَغْشَى طَائِفَةً مِنْكُمْ وَطَائِفَةٌ قَدْ أَهَمَّتْهُمْ أَنْفُسُهُمْ يَظُنُّونَ بِاللهِ غَيْرَ الْحَقِّ ظَنَّ الْجَاهِلِيَّةِ يَقُولُونَ هَلْ لَنَا مِنَ الْأَمْرِ مِنْ شَيْءٍ قُلْ إِنَّ الْأَمْرَ كُلَّهُ لِلَّهِ يُخْفُونَ فِي أَنْفُسِهِمْ مَا لاَ يُبْدُونَ لَكَ يَقُولُونَ لَوْ كَانَ لَنَا مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ مَا قُتِلْنَا هَاهُنَا قُلْ لَوْ كُنْتُمْ فِي بُيُوتِكُمْ لَبَرَزَ الَّذِينَ كُتِبَ عَلَيْهِمُ الْقَتْلُ إِلَى مَضَاجِعِهِمْ وَلِيَبْتَلِيَ اللهُ مَا فِي صُدُورِكُمْ وَلِيُمَحِّصَ مَا فِي قُلُوبِكُمْ وَاللهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ ‘অতঃপর আল্লাহ তোমাদের উপর দুঃখের পরে তন্দ্রার শান্তি নাযিল করলেন, যা তোমাদের একদলকে (দৃঢ়চেতাগণকে) আচ্ছন্ন করেছিল। আরেকদল (দুর্বলচেতাগণ) নিজেদের জান নিয়ে ভাবছিল। তারা আল্লাহ সম্পর্কে মূর্খদের মতো অন্যায় ধারণা করছিল। তারা বলছিল, এ বিষয়ে আমাদের কি কিছু করার আছে? তুমি বলে দাও যে, সকল কর্তৃত্ব আল্লাহর। ওরা বুকের মধ্যে লুকিয়ে রাখে, যা ওরা তোমার নিকট প্রকাশ করে না। ওরা বলে, যদি আমাদের কোন কর্তৃত্ব থাকত, তাহ’লে এখানে আমরা নিহত হতাম না। তুমি বল, যদি তোমরা তোমাদের বাড়ীতে থাকতে, তবুও যাদের উপর হত্যা নির্ধারিত হয়ে গেছে, তারা অবশ্যই তাদের বধ্যভূমিতে উপস্থিত হ’ত। আর আল্লাহ এটা করেছেন, তোমাদের বুকের মধ্যে যা লুকানো আছে তা পরীক্ষা করার জন্য এবং অন্তরে যা আছে, তা নির্মল করার জন্য। বস্ত্ততঃ আল্লাহ তোমাদের বুকের মধ্যে লুকানো বিষয়ে সম্যক অবহিত’ (আলে ইমরান ৩/১৫৪)। আল্লাহর উক্ত বাণীর মধ্যে ওহোদ যুদ্ধের বিপর্যয়ে মুসলমানদের অনেকের মধ্যে যে দোদুল্যমান অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল, সেটা প্রমাণিত হয়।