ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
নবীদের কাহিনী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) - মাদানী জীবন ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
ওহোদ যুদ্ধের উল্লেখযোগ্য বিষয়সমূহ- ৩. দুই ভাই পরস্পরের বিপক্ষে (الإخوان خصم للآخر)
ওহোদ যুদ্ধে রাসূল (ছাঃ)-এর উপরে হামলাকারী তিন জনের প্রথম জন ছিল উৎবাহ বিন আবু ওয়াকক্বাছ। তার নিক্ষিপ্ত পাথরের আঘাতেই রাসূল (ছাঃ)-এর ডান দিকের নীচের রুবাঈ দাঁত ভেঙ্গে যায়। এই উৎবাহর ভাই ছিলেন ‘ইসলামে প্রথম রক্ত প্রবাহিতকারী’ এবং মুসলিম বাহিনীর খ্যাতনামা বীর ও পরবর্তীকালে ইরাক বিজেতা সেনাপতি হযরত সা‘দ বিন আবু ওয়াকক্বাছ (রাঃ)।[1]
[1]. সা‘দ বিন আবু ওয়াকক্বাছ ১৯ বছর বয়সে মক্কায় ৭ম ব্যক্তি হিসাবে ইসলাম কবুল করেন। তিনি ৪র্থ নববী বর্ষে মক্কায় আল্লাহর পথে কাফেরদের বিরুদ্ধে উটের চোয়ালের শুকনা হাড্ডি নিক্ষেপ করে রক্ত প্রবাহিত করেন। এজন্য তাঁকে ‘ইসলামে প্রথম রক্ত প্রবাহিতকারী’ (أَوّلَ دَمٍ هُرِيقَ فِي الْإِسْلاَمِ) বলা হয়’ (ইবনু হিশাম ১/২৬৩; আল-ইছাবাহ ৩১৯৬)। এ সময় তিনি তার সাথীদের নিয়ে মক্কার একটি সংকীর্ণ স্থানে গোপনে ছালাত আদায় করছিলেন। তখন কাফেররা তাদের উপর হামলা করে। ফলে তিনি তাদের প্রতি উক্ত আঘাত করেন এবং তারা ফিরে যায়। ১ম হিজরীর শাওয়াল মাসে শত্রুদের বিরুদ্ধে ‘রাবেগ’ অভিযানে সর্বপ্রথম তিনিই আল্লাহর রাস্তায় তীর নিক্ষেপ করেন। এজন্য তাঁকে ‘ইসলামে প্রথম তীর নিক্ষেপকারী’ (أَوَّلُ مَنْ رَمَى بِسَهْمٍ فِي سَبِيلِ الله) বলা হয় (আল-ইছাবাহ ৩১৯৬)। তিনি জীবদ্দশায় জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ১০ জন ছাহাবীর (আশারায়ে মুবাশশারাহ) অন্যতম ছিলেন। তিনি বদর, ওহোদ, হোদায়বিয়াহ সহ রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে সকল যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যাদের দো‘আ কবুল হয় (مُسْتَجَابُ الدَّعْوَةِ), তিনি ছিলেন তাদের অন্যতম। রাসূল (ছাঃ) তাঁর সম্পর্কে দো‘আ করেন اللَّهمَّ سَدِّدْ سَهْمَهُ وَأَجِبْ دَعْوَتَهُ ‘হে আল্লাহ তুমি তার তীরকে লক্ষ্যভেদী কর এবং তার দো‘আ কবুল কর’। আলী (রাঃ) বলেন, ওহোদের যুদ্ধে তিনি বলেছিলেন, يَا سَعْدُ إرْمِ فِدَاكَ أَبِي وَأُمِّي ‘হে সা‘দ! তুমি তীর নিক্ষেপ কর। তোমার জন্য আমার পিতা-মাতা উৎসর্গীত হৌন’! এরূপ কথা তিনি অন্য কারু জন্য বলেছেন বলে আমি শুনিনি’ (বুখারী হা/৪০৫৯; মুসলিম হা/২৪১১; মিশকাত হা/৬১০৩)। তিনি ওমর (রাঃ) কর্তৃক নির্বাচিত ৬ সদস্য বিশিষ্ট খেলাফত বোর্ডের সদস্য ছিলেন। তিনি ওমর (রাঃ)-এর সময় কূফার গবর্ণর ছিলেন। অতঃপর ৫৫ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন। -ইবনু হাজার, আল-ইছাবাহ ক্রমিক সংখ্যা ৩১৯৬; ঐ, অন্য মুদ্রণে ৩১৮৭, ৪/১৬০-৬৪ পৃঃ; ইবনু আব্দিল বার্র, আল-ইস্তী‘আব ক্রমিক সংখ্যা ৯৬৩; আল-ইছাবাহ সহ ৪/১৭০-৭১ পৃঃ।