পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের রাক‘আত সংখ্যা ১৭ হলো কেন, ফজর ২ রাক‘আত, যুহর ৪ রাক‘আত, আসর ৪ রাক‘আত, মাগরিব ৩ রাক‘আত ও ইশা ৪ রাক‘আত হলো কেন, বিত্র ৩ রাক‘আত হলো কেন, ইত্যাদি বিষয়ে প্রচলিত সকল কথাই ভিত্তিহীন। অনুরূপভাবে বিভিন্ন ওয়াক্তের সালাতকে বিভিন্ন নবীর আদায় করা বা প্রতিষ্ঠিত বলে যে সকল গল্প বলা হয় সবই ভিত্তিহীন। এ জাতীয় অনেক ভিত্তিহীন কথা আমাদের সমাজে প্রচলিত। এখানে একটি গল্প উল্লেখ করছি।
আমাদের দেশে অতি প্রসিদ্ধ কোনো কোনো পুস্তকে লেখা হয়েছে: ‘‘বেতের নামায ওয়াজিব হইবার কারণ এই যে, এরশাদুত্বালেবীন কিতাবে লিখিত আছে হযরত (ﷺ) মেরাজ শরীফে যাইবার সময়ে যখন বাইতুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত তাশরীফ নিয়াছিলেন তখন সমস্ত পয়গম্বরের রুহ মোবারক হযরত (ﷺ)-এর সাক্ষাত ও আশীর্বাদের জন্য আসিলে জিব্রাইল (আঃ) এর আদেশানুযায়ী হযরত (ﷺ) ইমাম হইয়া এক রাকাত নামায পড়িলেন। তার পর মিকাইল (আঃ) ৭০ হাজার ফেরেশতা লইয়া হযরত (ﷺ)-এর মোলাকাত ও দোয়ার প্রত্যাশী হইলে জিব্রাইল (আঃ)-এর আদেশ অনুযায়ী রাসূল (ﷺ) পূনরায় আরও এক রাকাত নামায পড়িলেন। ইহার পর ইস্রাফীল (আঃ) ৭০ হাজার ফেরেশতা লইয়া হযরত (ﷺ)-এর দোওয়ার প্রত্যাশী হইলে জিব্রাইল (আঃ)-এর হুকুম অনুযায়ী আবার হযরত (ﷺ) তাহাদিগকে মুক্তাদি করিয়া এক রাকাত নামায পড়িলেন। অতঃপর আজরাঈল (আঃ) বহু ফেরেশতা লইয়া এরূপ বাসনা করিয়া উপস্থিত হইলে জিব্রাইল (আঃ) বলিলেন, হে প্রিয় পয়গম্বর আপনি ইহাদিগকে সঙ্গে করিয়া দোওয়া কুনুত পাঠ করান। হযরত (ﷺ) তাহাই করিলেন সুতারং ঐ তিন রাকাত নামাযই আমাদের উপর ওয়াজিব হইয়াছে এবং বেতের নামাযে দোওয়া কুনূত পড়াও ওয়াজেব হইয়াছে।’’[1]
কোনো কোনো জালিয়াত ঘুরিয়ে বলেছে যে, তিনি মি’রাজের রাত্রিতে মূসা (আঃ) এর জন্য এক রাক‘আত, তাঁর নিজের জন্য আরেক রাক‘আত এবং শেষে আল্লাহর নির্দেশে তৃতীয় রাক‘আত সালাত আদায় করেন। ...[2]
[2] অধ্যাপিকা কামরুন নেসা দুলাল, নেক কানুন, পৃ ১১৫।