শাইখ রুহুল আমিন লিখেন: ‘‘বর্ত্তমানে বেদাতি দলের যেরূপ বাড়াবাড়ি হইয়াছে, তাহাতে হজরতের ভবিষ্যদ্বাণী স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হইতেছে। হজরত নবি (ﷺ) শেষ যুগে একদল প্রবঞ্চক মিথ্যাবাদী লোকের আবির্ভাব হওয়ার কথা বলিয়াছেন, অবিকল তাহাই ঘটিয়াছে। এক্ষণে ‘তরিকতে রসুল রাহে হক’ নামক একখানি পুস্তক দেখিয়া অবাক হইলাম, বাগমারী নিবাসী আলিমদ্দিন শাহ নামক একজন অপরিচিত লোক কোরাণ ও হাদিছ ধবংস করার বাসনায় উক্ত বাতীল পুস্তক রচনা করিয়াছে।... লেখকের বিদ্যার দৌড় এত যে, কতকগুলি জাল বা অমূলক হাদিস লিখিয়া পুস্তকের কলেবর বৃদ্ধি করিয়াছে। ... লেখক এই পুস্তকের প্রথম পৃষ্ঠায় (لولاك لما خلقت الأفلاك) (তুমি না হলে নভোমন্ডলী সৃষ্টি করতাম না)- এই কথাটি হাদিস বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন। কিন্তু মোল্লা আলি কারী ‘‘মওজুয়াতে কবির’’ গ্রন্থের ৫৯ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন: সাগানী বলিয়াছেন যে, উক্ত হাদিসটি জাল। ফাতাওয়ায় আজিজি ১/১২২পৃ. ‘‘..উক্ত হাদিস: ‘লাওলাকা লামা খালাকতোল আফলাক’ কোন কেতাবে দেখি নাই। ফাতাওয়ায় এমদাদিয়া, ৪/১৯ পৃ. ‘‘এই উল্লিখিত হাদিসটি কোন কেতাবে দেখি নাই, ইহা স্পষ্ট জাল বলিয়া অনুমিত হয়।’’[1]
অন্যত্র মাওলানা রুহুল আমিন বলেন: ‘‘মিলাদ শরিফে মওজু (জাল) হাদিছ বা রেওয়াএত উল্লেখ করা নাজায়েজ, ইহা আমি কল্য সভায় প্রকাশ করিয়াছি। ‘লাওলাকা লামা খালাকতোল আফলাক’ কথাটী হাদিস নয়। মাওলানা শাহ আব্দুল আজিজ দেহলবী ও মাওলানা আশরাফ আলি ছাহেব নিজ নিজ ফতোয়ার কেতাবে লিখিয়াছেন যে, এই কথাটি কোন হাদিছের কেতাবে দৃষ্টিগোচর হয় নাই। ‘আকাশার (উকাশার প্রতিশোধ নেওয়ার) কথা জাল’ (একথা) সত্য, ইহা ওছুলে জোরজানিয়া টিকায় আছে।.. উর্দ্দু মিলাদ শরিফের কেতাবে কতকগুলি জাল কথা আছে, উহা পাঠ করা জায়েজ নহে, কিন্তু তাই বলিয়া মূল মিলাদ শরিফকে নাজায়েজ বলা যাইতে পারে না।.. ওয়াজ বর্ণনাকারি মৌলবি আলেমগণ ‘দোরাতোনাছেহিন কেতাবের’ রেওয়াএতগুলি উল্লেখ করিয়া ওয়াজ করিয়া থাকেন উক্ত কেতাবের অনেক রেওয়াএত জাল বা অমূলক।...’’[2]
[2] মোহাম্মাদ রুহুল আমিন, সিরাজগঞ্জের বাহাস, পৃষ্ঠা ৩৭-৩৮।