ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
রমাযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল সপ্তদশ অধ্যায়- সুন্নত ও নফল রোযা আবদুল হামীদ ফাইযী
১০। যৌন-পীড়িত যুবকদের রোযা

যৌন-পীড়িত যে যুবক ব্যভিচারে লিপ্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা করে অথচ ভরণ-পোষণ বহন করার সামর্থ্য না থাকার ফলে বিবাহ করতে পারে না, সে যুবকের জন্য রোযা রাখা বিধেয়।

এ ব্যাপারে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) যুবকদেরকে পথনির্দেশ করে বলেন, ‘‘হে যুবকদল! তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি (বিবাহের অর্থাৎ স্ত্রীর ভরণপোষণ ও রতিক্রিয়ার) সামর্থ্য রাখে সে যেন বিবাহ করে। কারণ, বিবাহ চক্ষুকে দস্ত্তরমত সংযত করে এবং লজ্জাস্থান হিফাযত করে। আর যে ব্যক্তি ঐ সামর্থ্য রাখে না সে যেন রোযা রাখে। কারণ, তা যৌনেন্দ্রিয় দমনকারী।’’[1]

তিনি খাসী হওয়ার কথা অবৈধ ঘোষণা করে বলেন, ‘‘আমার উম্মতের খাসী করা হল, রোযা রাখা।’’[2]

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, এই হল সেই যৌন-পীড়িত ও যৌবনের অগ্নিদাহে দগ্ধ এবং বিবাহে অসমর্থ যুবকদের জন্য নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর অব্যর্থ চিকিৎসা। আর তা হল রোযা। সুতরাং তাদের জন্য গুপ্ত অভ্যাস হস্তমৈথুন ব্যবহার করা বৈধ নয়। নচেৎ, তারা তাদের দলভুক্ত হয়ে পড়বে, যাদের জন্য বলা হয়েছিল,

(أَتَسْتَبْدِلُونَ الَّذِي هُوَ أَدْنَى بِالَّذِي هُوَ خَيْرٌ)

‘‘তোমরা কি যা উৎকৃষ্ট তার বিনিময়ে নিকৃষ্ট জিনিস গ্রহণ করতে চাও?’’ (কুরআনুল কারীম ২/৬১)

আর যেহেতু হস্তমৈথুন অভ্যাসটাই সেই মুমিনদের গুণ নয়, যাদের কথা মহান আল্লাহ নিজ কুরআনে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন,

(وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ- إِلاَّ عَلَى أَزْوَاجِهِمْ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ- فَمَنِ ابْتَغَى وَرَاءَ ذَلِكَ فَأُولَئِكَ هُمُ الْعَادُونَ)

অর্থাৎ, যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে। তবে নিজেদের পত্নী অথবা অধিকারভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে অন্যথা করলে তারা নিন্দনীয় হবে না। আর যারা এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করে তারাই সীমালংঘনকারী।’’

(কুরআনুল কারীম ২৩/৫-৭)

মা আয়েশা (রাঃ) উক্ত আয়াতের তফসীরে বলেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের বিবাহিত স্ত্রী অথবা ক্রীতদাসী ছাড়া (যৌনক্ষুধা নিবারণের জন্য) অন্য পথ অবলম্বন করবে সেই সীমালংঘনকারী।’[3]

[1] (আহমাদ, মুসনাদ ১/৫৭, বুখারী ১৯০৫, মুসলিম ১৪০০, আবূ দাঊদ ২০৪৬, তিরমিযী ১০৮১, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ প্রমুখ, মিশকাতুল মাসাবীহ ৩০৮০নং)

[2] (আহমাদ, মুসনাদ ২/১৭৩ প্রমুখ, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ১৮৩০নং)

[3] (হাকেম, মুস্তাদ্রাক ২/৩৯৩, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ৪/৪৪৬)