ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
রমাযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল চতুর্দশ অধ্যায়- রমাযানের রোযা কাযা করার বিবরণ আবদুল হামীদ ফাইযী
আগামী রমাযান পর্যন্ত কাযা রোযা রাখতে না পারলে

কোন ওযর ব্যতীত রমাযানের কাযা রোযা না রেখে পরবর্তী রমাযান পার করে দেওয়া বৈধ নয়। কার্যক্ষেত্রে কাযা পালন না করতে পারা অবস্থায় দ্বিতীয় রমাযান এসে উপস্থিত হলে বর্তমান রমাযানের রোযা পালন করতে হবে। তারপর (প্রথম সুযোগে) ঐ কাযা রোযা রেখে নিতে হবে। আর এ ক্ষেত্রে কোন ফিদ্য়্যাহ বা দন্ড-জরিমানা নেই।[1]

পক্ষান্তরে বিনা ওযরে কাযা না তুলে পরবর্তী রমাযান পার করে দিলে গোনাহগার হতে হবে। আর এ ক্ষেত্রে কাযা করার সাথে সাথে প্রত্যেক দিনের বিনিময়ে একটি করে মিসকীনকে খানা দান করতে হবে। এই মত হল কিছু উলামার।[2] যেহেতু এই মত পোষণ করতেন সাহাবী আবূ হুরাইরা ও ইবনে আববাস (রাযি.)।[3]

অন্য দিকে অন্য কিছু উলামা বলেন যে, কেবল কাযাই করতে হবে; মিসকীনকে খাদ্য দান করতে হবে না। আর উভয় সাহাবী থেকে যে আসার বর্ণনা করা হয়েছে, তা উক্ত দাবীর দলীল নয়। কারণ, অকাট্য দলীল কেবল কিতাব ও সুন্নাহ থেকেই গৃহীত হবে। পক্ষান্তরে সাহাবাগণের উক্তি দলীল হওয়ার ব্যাপারটা বিবেচনাধীন; বিশেষ করে যখন তাঁদের কথা কুরআনের বাহ্যিক উক্তির প্রতিকূল হয়। আর এখানে কাযা রাখার সাথে মিসকীনকে খানা দান করা ওয়াজেব করার বিধান কুরআনের বাহ্যিক উক্তির বিরোধী। যেহেতু মহান আল্লাহ ভিন্ন দিনে কাযা করা ছাড়া অন্য কিছু ওয়াজেব করেন নি। অতএব এই যুক্তিতে আমরা আল্লাহর বান্দাদেরকে সেই জিনিস পালন করতে বাধ্য করতে পারি না, যে জিনিস পালন করতে তিনি তাদেরকে বাধ্য করেন নি। অবশ্য এ বিষয়ে যদি কোন দায়মুক্তকারী দলীল থাকত, তাহলে সে কথা ভিন্ন ছিল।

পক্ষান্তরে আবূ হুরাইরা ও ইবনে আববাস (রাযি.) কর্তৃক যে উক্তি বর্ণিত হয়েছে, সে ব্যাপারে বলা যেতে পারে যে, কাযা রাখার সাথে সাথে একটি করে মিসকীন খাইয়ে দেওয়া উত্তম; ওয়াজেব নয়। সুতরাং এ ব্যাপারে সঠিক মত এই যে, পরবর্তী রমাযান অতিবাহিত করে কাযা রাখলে রোযা ছাড়া অন্য কিছু ওয়াজেব নয়। তবে এ কথা ঠিক যে, এই দেরী করার জন্য সে গোনাহগার হবে।[4]

গত কয়েক বছরের হলেও রমাযানের রোযা কাযা করা ওয়াজেব। সুতরাং কেউ যদি ২০ বছর বয়সে রোযা রাখতে শুরু করে, তাহলে তাকে সাবালক হওয়ার পর থেকে ৫ বছরের ছাড়া রোযা কাযা করতে হবে। আর সেই সাথে তাকে লজ্জিত হয়ে তওবাও করতে হবে এবং এই সংকল্পবদ্ধ হতে হবে যে, জীবনে পুনঃ কোন দিন রোযা ছাড়বে না।[5]

মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘আমরা রোযা কাযা করতে আদিষ্ট হতাম এবং নামায কাযা করতে আদিষ্ট হতাম না।’[6]

[1] (ফিকহুস সুন্নাহ ১/৪১৬)

[2] (ফাসিঃ মুসনিদ, ৮২পৃঃ, আহকামুস সাওমি অল-ই’তিকাফ, আবূ সারী মঃ আব্দুল হাদী ৯৯পৃঃ)

[3] (দারাকুত্বনী, সুনান ২৩১৮, ২৩১৯, ২৩২২নং, বাইহাকী ৪/২৫৩)

[4] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/৪৫১)

[5] (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ ৩০/১০৯)

[6] (মুসলিম ৩৩৫নং)