ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
মুখতাসার যাদুল মা‘আদ অনুচ্ছেদ সমুহের সূচী ও বিবরন ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ)
জুমআর সলাতে রসূল (সাঃ) এর হিদায়াত কেমন ছিল?

নাবী (ﷺ) থেকে সহীহ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, আমাদের পূর্ববর্তী জাতিসমূহকে আল্লাহ্ তা‘আলা জুমআর দিনের সন্ধান দেন নি। ইহুদীরা বেছে নিয়েছে শনিবারকে, নাসারসূণ পেয়েছে রোববার। আর আল্লাহ্ তা‘আলা আমাদেরকে জুমআর দিনের সন্ধান দিয়েছেন। সুতরাং আমাদের জন্য জুমআর দিন। ইহুদীরা আমাদের এক দিন পর, নাসারারা দুই দিন পর। এমনি কিয়ামতের দিন তারা আমাদের পিছনে থাকবে। আমরা দুনিয়াতে এসেছি সবার পরে, কিন্তু কিয়াতের দিন থাকবো সকলের আগে। আমাদের মাঝেই কিয়ামতের দিন সকলের পূর্বে ফায়সালা করা হবে।

ইমাম তিরমিযী আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে সহীহ সূত্রে একটি মারফু হাদীস বর্ণনা করেছেন। তাতে নাবী (ﷺ) বলেন- সমস্ত দিনের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হচ্ছে জুমআর দিন। এই দিনে আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে, এ দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে। জুমআর দিনেই কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবে। ইমাম মালেক (রহঃ) মুআত্তায় এই হাদীসকে কয়েকটি শব্দ বাড়িয়ে বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরমিযী সেই বর্ণনাকেও সহীহ বলেছেন। রসূল (ﷺ) বলেন- সমস্ত দিবসের মধ্যে জুমআর দিনই হচ্ছে সর্বোত্তম দিন। এ দিনে আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে, এতেই তাঁকে দুনিয়ায় নামিয়ে দেয়া হয়েছে, এ দিনেই তাঁর তাওবা কবুল করা হয়েছে, এতেই তিনি মৃত্যু বরণ করেছেন এবং এতেই কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবে। জুমআর দিন সূর্য উদয় হওয়ার পর মানুষ এবং জিন ব্যতীত প্রত্যেক প্রাণীই কিয়ামতের ভয়ে আতঙ্কিত থাকে। জুমআর দিনে এমন একটি বরকতময় সময় আছে যাতে মুসলিম বান্দা সলাতরত অবস্থায় আল্লাহর কাছে যা চাইবে আল্লাহ্ তাকে তা দান করবেন। কা’ব বিন মালেক হাদীছের রাবী আবু হুরায়রাকে জিজ্ঞেস করলেন- এটি কি প্রত্যেক বছরে হয়ে থাকে? আবু হুরায়রা বললেন- বরং প্রত্যেক জুমআতেই তা রয়েছে। অতঃপর কা’ব তাওরাত খুলে পাঠ করলেন এবং বললেন- আল্লাহর রসূল সত্য বলেছেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন- অতঃপর আমি আব্দুল্লাহ বিন সালামের সাথে সাক্ষাৎ করে কা’বের সাথে আমার বৈঠকের কথা জানালাম। তিনি বললেন- আমি সেই সময়টি সম্পর্কেও অবগত আছি। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন- আমি তাকে বললামঃ আমাকে সেই সময়টি সম্পর্কে সংবাদ দিন। তিনি বললেন- এটি হচ্ছে জুমআর দিনের শেষ মুহূর্ত। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন- আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, এটি কি করে সম্ভব? রসূল (ﷺ) তো বলেছেন- মুসলিম বান্দা তখন সলাতরত অবস্থায় আল্লাহর কাছে যা চাইবে আল্লাহ্ তাকে উহা দান করবেন। আর জুমআর দিনের শেষ মুহূর্ত এমন একটি সময় যাতে সলাত পড়া বৈধ নয় (আসর সলাতের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সলাত পড়া নিষিদ্ধ)। সুতরাং উহা তো সলাতের সময় নয়। আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম তখন বললেন- রসূল (ﷺ) কি বলেন নি, যে ব্যক্তি কোন মজলিসে বসে সলাতের অপেক্ষায় থাকে সে ব্যক্তি সলাত পড়া পর্যন্ত সলাতেই মশগুল থাকে? মুসনাদে আহমাদে আবু হুরায়রা (রাঃ) এর হাদীসটি এই শব্দে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন- নাবী (ﷺ) কে জিজ্ঞেস করা হল, কি কারণে জুমআর দিনকে এই নামে নাম করণ করা হয়েছে? তিনি বললেন- জুমআর দিনে তোমাদের পিতা আদমকে তৈরীর জন্য সংগৃহিত মাটিকে মানবাকৃতি প্রদান করা হয়েছে, এ দিনেই সিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে, এ দিনেই হাশর হবে এবং কাফেরদেরকে পাকড়াও করা হবে। এই দিনের শেষাংশে তিনটি মুহূর্ত রয়েছে। তার মধ্যে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে তাতে যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে দু’আ করবে তার দু’আ কবুল করা হবে।