মাসিকের খুন একটানা আসতেই থাকলে অথবা ২/১ দিন ছাড়া সারা মাসে খুন বন্ধ না হলে এমন খুনকে ইস্তিহাযার খুন বলে। আর যে নারীর এমন খুন আসে তাকে মুস্তাহাযা বলে।
মুস্তাহাযার তিন অবস্থা হতে পারেঃ-
১- একজন মহিলার পূর্বে যথানিয়মে মাসিক হত। কিন্তু পরে ধারাবাহিক খুন এসে আর বন্ধ হয় না। সুতরাং এমন মহিলার অভ্যাসগতভাবে যে ক’দিন খুন আসত সেই ক’দিনকে মাসিক ধরে বাকী পরের দিনগুলিকে ইস্তিহাযার খুন ধরে নেবে। সুতরাং পরের এই দিনগুলিতে গোসলাদি করে নামায-রোযা করবে।[1]
২- একজন মহিলার শুরু থেকেই একটানা খুন আসে। মাসিক ও ইস্তিহাযার দিন তার অজানা। এমন মহিলা কোন লক্ষণ বুঝে মাসিক ও ইস্তিহাযার মাঝে পার্থক্য নির্বাচন করবে। যেমন যদি ১০ দিন কালো এবং বাকী মাসে লাল খুন, অথবা ১০দিন মোটা এবং বাকী মাসে পাতলা খুন, অথবা ১০ দিন দুর্গন্ধময় এবং বাকী মাসে গন্ধহীন খুন দেখে তবে ঐ কালো মোটা ও দুর্গন্ধময় খুনকে মাসিকের এবং বাকী ইস্তিহাযার খুন ধরে নিয়ে পবিত্রা হয়ে নামায-রোযা করবে।[2]
৩- এমন মহিলা যার মাসিকের কোন নির্দিষ্ট দিন জানা নেই এবং কোন লক্ষণও বুঝতে পারে না, সে যখন থেকে প্রথম খুন দর্শন করেছে তখন থেকে হিসাব ধরে ঠিক সেই সময় করে প্রত্যেক মাসে ৬ বা ৭ দিন (সাধারণ মহিলাদের অভ্যাসমত) অশুচিতার জন্য অপেক্ষা করে গোসল করবে এবং বাকী দিনগুলিতে নামায-রোযা করবে।[3]
কোন ব্যাধির ফলে গর্ভাশয় তুলে ফেললে বা কোন এমন অপারেশন করলে যাতে মাসিক চিরদিনের মত বন্ধ হয়ে যায়; যদি তার পরেও কোনক্রমে খুন দেখা যায়, তবে সে খুন মাসিক বা ইস্তিহাযার নয়। বরং সেই খুন পবিত্রতার পর মেটে বা গাবড়া বর্ণের খুনের সমপর্যায়ের। এতে মহিলা অপবিত্রা হয় না এবং নামায রোযাও বন্ধ করা বৈধ নয়। এতে গোসলও ফরয নয়। খুন ধুয়ে নামাযের জন্য অযু যথেষ্ট। অনুরূপ যোনীপথে সর্বদা সাদাস্রাব দেখা দিলেও একই নির্দেশ।[4]
সুতরাং উক্ত প্রকার মহিলারা (মুস্তাহাযাগণ) পবিত্রা মহিলার মত। অতএব এদের জন্য নামায, রোযা, হজ্জ, স্বামী-সহবাস ইত্যাদি সকল কর্ম পবিত্রতার মতই পালন করা ফরয ও বৈধ। তবে সর্বদা খুন থাকলে পবিত্রতার জন্য প্রথম গোসলের পর প্রত্যেক নামাযের জন্য অন্তর্বাস বদলে লজ্জাস্থান ধুয়ে ওযু করবে। খুন বাইরে আসার ভয় থাকলে কাপড় বা তুলা বেঁধে নেবে।[5]
[2] (রিসালাতুন ফী দিমাইত ত্বাবীইয়্যাতি লিন্নিসা, ৩৪পৃঃ)
[3] (রিসালাতুন ফী দিমাইত ত্বাবীইয়্যাতি লিন্নিসা, ৩৫পৃঃ)
[4] (ফাতাওয়া ইবনে উসাইমীন ১/২৯৮)
[5] (রিসালাতুন ফী দিমাইত ত্বাবীইয়্যাতি লিন্নিসা, ৩৭-৩৮পৃঃ)