ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
ইসলাম কিউ এ ফতোয়া সমগ্র আকীদা শাইখ মুহাম্মাদ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ
ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান বলতে কী বুঝায়?

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

ফেরেশতারা অদৃশ্য জগৎ। আল্লাহ তাদেরকে নূর দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। তারা আল্লাহর নির্দেশ পালনে রত আছেন। “তারা আল্লাহ তা’আলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করে।”[সূরা তাহরীম, আয়াত:০৬]

ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান চারটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে:

১. এই স্বীকৃতি প্রদান করা যে, ফেরেশতাদের অস্তিত্ব রয়েছে, তারা আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি এবং তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন ও পরিচালনাধীন। “তারা তাঁর আগ বাড়িয়ে কোন কথা বলে না, তাঁর নির্দেশেই তারা কাজ করে যায়।” [সূরা আম্বিয়া, আয়াত: ২৬-২৭] এবং “তারা আল্লাহ তা’আলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করে।”[সূরা তাহরীম, আয়াত: ০৬] এবং “তারা অহঙ্কারবশতঃ তাঁর ইবাদত হতে বিমুখ হয় না এবং ক্লান্তিও বোধ করে না। তারা দিন-রাত তাঁর তাসবীহ পাঠ করে, তারা শিথিলতা দেখায় না।” [সূরা আম্বিয়া, আয়াত ১৯:২০]

২. যে সব ফেরেশতার নাম জানা গেছে তাদের নামের প্রতি ঈমান আনা। যেমন জিব্রাইল (আঃ), মিকাইল (আঃ), ইস্রাফিল (আঃ), মালিক (আঃ), রেদোয়ান (আঃ) প্রমুখ।

৩. যেসব ফেরেশতার কিছু কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা আমরা জানতে পেরেছি সেগুলোর প্রতি ঈমান আনা। যেমন আমরা হাদিসের মাধ্যমে জানতে পেরেছি- জিব্রাইল (আঃ) এর দিগন্ত জুড়ানো ছয়শত ডানা রয়েছে।

৪. ফেরেশতাদের যেসব দায়িত্ব সম্পর্কে আমরা অবহিত হয়েছি সেগুলোর প্রতি ঈমান আনা। যেমন- অহী বহনের দায়িত্বে আছেন জিব্রাইল (আঃ), যে অহী হচ্ছে- আত্মার জীবন। শিংগায় ফুঁ দেওয়ার দায়িত্বে আছেন ইস্রাফিল (আঃ)। বৃষ্টি বর্ষণের দায়িত্বে আছেন- মিকাইল (আঃ)। জাহান্নামের দায়িত্বে আছেন- মালিক (আঃ)।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টির প্রতি আমাদেরকে ঈমান আনতে হবে তা হচ্ছে- প্রত্যেক ব্যক্তির সাথে দুইজন করে ফেরেশতা থাকে। এ ফেরেশতাদ্বয় ব্যক্তির আমলসমূহ লিপিবদ্ধ করেন। “স্মরণ করুন!দুই ফেরেশতা ডানে ও বামে বসে তার আমল গ্রহণ করে। সে যে কথাই উচ্চারণ করে, তাই গ্রহণ করার জন্যে তার কাছে সদা প্রস্তুত প্রহরী রয়েছে।” [সূরা কাফ, আয়াত ১৭-১৮] অর্থাৎ এ শ্রেণীর ফেরেশতা সর্বদা পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত থাকে।

অতএব, সাবধান হে মুসলিম! এ ফেরেশতাদ্বয় যেন এমন কিছু লিপিবদ্ধ করতে না পারে যা কিয়ামতের দিন আপনার জন্য অকল্যাণকর হবে। আপনি যা কিছু বলেন বা উচ্চারণ করেন সবই লিপিবদ্ধ হচ্ছে। কেয়ামতের দিন এই লিপিকা বের করে বান্দার সামনে পেশ করা হবে। “এবং কিয়ামতের দিন তার জন্য আমি বের করব একটি কিতাব, যা সে পাবে উন্মুক্ত। পাঠ কর তোমার কিতাব, আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব-নিকাশকারী হিসেবে যথেষ্ট।”[সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ১৩-১৪]

আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি তিনি যেন আমাদের গুনাহগুলো গোপন রাখেন এবং এড়িয়ে যান। নিশ্চয় তিনি প্রার্থনায় সাড়াদানকারী।

আল্লাহই ভাল জানেন।

দেখুন:

আলামুস সুন্নাহ আল-মানশুরা (৮৬) এবং শাইখ উছাইমীনের ফতোয়া সমগ্র (৩/১৬০)।

আরো বিস্তারিত জানতে পড়ুন প্রশ্ন নং (843) ও প্রশ্ন নং (14610)।
শাইখ মুহাম্মদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ

http://islamqa.info/bn/9477