ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
দ্বীনী প্রশ্নোত্তর গান-বাজনা, খেলাধুলা আবদুল হামীদ ফাইযী
গান-বাজনা শোনা বৈধ কি? সেই সমস্ত টি,ভি সিরিজ দেখা বৈধ কি? যাতে অর্ধনগ্না নারীদেহ প্রদর্শন হয়?

গান-বাজনা শোনা হারাম। আর তা হারাম হওয়ার ব্যাপারে লেশমাত্র সন্দেহ নেই। সলফে সালেহীন; সাহাবা ও তাবেঈন কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে যে, গান অন্তরে মুনাফিকী (কপটতা) উদগত করে। উপরন্ত গান শোনা-অসার বাক্য শোনা এবং তার প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার পর্যায়ভুক্ত। আর আল্লাহ তা’আলা বলেন,

“মানুষের মধ্যে কেউ কেউ এমনও রয়েছে যারা অজ্ঞতায় লোকেদেরকে আল্লাহ্‌র পথ হতে বিচ্যুত করার জন্য অসাড় বাক্য বেছে নেয় এবং আল্লাহ্‌র প্রদর্শিত পথ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। ওদেরই জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি।” (সূরা লুকমান ৬ আয়াত)

ইবনে মাসঊদ (রাঃ) উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘সেই আল্লাহ্‌র কসম যিনি ছাড়া কেউ সত্য উপাস্য নেই! নিশ্চয় তা (অসার বাক্য) হচ্ছে গান।’ সাহাবাগণের ব্যাখ্যা (তফসীর) এক প্রকার দলীল। তফসীরের তৃতীয় পর্যায়ে এর মান রয়েছে। যেহেতু তফসীরের তিনটি পর্যায়; কুরআনের তাফসীর কুরআন দ্বারা, কুরআনের তাফসীর সুন্নাহ দ্বারা এবং কুরআনের তাফসীর সাহাবাগণের উক্তি দ্বারা। এমনকি কিছু উলামার সিদ্ধান্ত এই যে, সাহাবীর তাফসীর রাসূল এর তফসীরের পর্যায়ভুক্ত। কিন্তু শুদ্ধ অভিমত এই যে, তা রাসুল এর তাফসীরের পর্যায়ভুক্ত নয়। অবশ্য তা বিভিন্ন উক্তিসমূহের মধ্যে সঠিকতার অধিকতর নিকটবর্তী।

পক্ষান্তরে গান-বাজনা শ্রবণ করার অর্থই হল, সেই কর্মে আপতিত হওয়া, যা থেকে নবী সাবধান করেছেন। বিতি বলেন, “নিশ্চয় আমার উম্মতের মধ্যে এমন কতক সম্প্রদায় হবে যারা ব্যাভিচার, রেশম বস্ত্র, মদ্য এবং বাদ্য-যন্ত্রকে হালাল মনে করবে।” (বুখারী) অর্থাৎ, তারা নারী-পুরুষের অবৈধ যৌন সম্পর্ক, মদপান এবং রেশমের কাপড় পরাকে হালাল ও বৈধ মনে করবে অথচ তারা পুরুষ, তাঁদের জন্য রেশম বস্ত্র পরিধান বৈধ নয়। অনুরূপ মিউজিক বা বাজনা শোনাকেও বৈধ ভাববে। আর বাদ্য-যন্ত্র, যার শব্দে মন উদাস হয়, এমন অসার যন্ত্রকে বলে। হাদিসটিকে ইমাম বুখারী আবু মালেক আল আশআরী অথবা আবু আমের আল আশআরী থেকে বর্ণিত করেছেন।

সুতরাং এই কথার উপর ভিত্তি করে আমি আমার মুসলিম ভ্রাতৃবৃন্দের প্রতি গান-বাদ্য শ্রবণ করা থেকে সাবধান হওয়ার জন্য এই উপদেশবানী প্রেরণ করছি। তারা যেন এমন আলেমদের কথায় ধোঁকা না খাঁয়, যারা বাদ্য যন্ত্রকে বৈধ বলে মত প্রকাশ করেছেন। যেহেতু এর অবৈধতার সপক্ষে সমস্ত দলীল ব্যক্ত ও সুস্পষ্ট।

আর টিভি সিরিজ যাতে মহিলা প্রদর্শিত হয় তা দেখাও হারাম। যেহেতু তা ফিতনা (বিঘ্ন) এবং (অবৈধ) নারীর প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার দিকে ধাবিত করে। পরন্ত সমস্ত সিরিজের অধিকাংশই ক্ষতিকারক। যদিও তাতে পুরুষ নারীকে এবং নারী পুরুষকে দর্শন না করে। যেহেতু এসবের পশ্চাতে সাধারণতঃ উদ্দেশ্য থাকে সমাজেকে তার আচরণ এবং চরিত্রে ক্ষতিগ্রস্ত করা। আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করি যে, তিনি যেন মুসলমানদেরকে এই অনিষ্ট থেকে বাঁচান। আর আল্লহই অধিক জানেন। (ইবনে উষাইমীন)