ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
মানহাজ (আল-আজবিবাতুল মুফীদাহ) নিত্য নতুন মানহাজ সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উপকারী জবাব শাইখ ড. ছলিহ ইবনে ফাওযান আল ফাওযান
প্রশ্ন-৪৮ : বিদাতীদের বই-পুস্তক পড়া বা তাদের ক্যাসেট (অডিও-ভিডিও লেকচার) শোনার হুকুম কী?

উত্তর : বিদাতীদের বই-পুস্তক পড়া ও তাদের ক্যাসেট শ্রবণ করা জায়েয নয়। তবে কেউ যদি তাদের মতামত খণ্ডন করা ও তাদের গোমরাহী থেকে সতর্ক করার উদ্দেশ্যে তাদের বই পড়ে অথবা ক্যাসেট শ্রবণ করে তাহলে তার জন্য জায়েয হবে। নবীণ শিক্ষার্থী, সাধারণ লোক ও যে ব্যক্তি তাদের মতামত খণ্ডন ও অবস্থা বর্ণনার নিয়াত ব্যতীত শুধু জানার উদ্দেশ্যে পড়ে তাদের জন্য এসকল বই-পুস্তক পড়া ও এই লোকদের আলোচনা শোনা জায়েয নয়। কেননা এর দ্বারা অনেকের অন্তর প্রভাবিত হবে। ঝুঁকে পড়বে তাদের প্রতি।[1]

সুতরাং ভ্রান্তদের বই-পুস্তক পাঠ করা জায়েয নয়। তবে বিদ্বানদের জন্য তাদের মতামত খণ্ডন ও তাদের থেকে সতর্ক করার উদ্দেশ্যে পড়া জায়েয।


[1]. প্রবৃত্তিবাদী ও বিদাতীদের থেকে সতর্ক করার বিষয়ে সালাফদের নিকট থেকে অনেকগুলো আছার রয়েছে। হক অন্বেষু সম্মানিত পাঠক আপনার অবগতির জন্য এখানে কিছু আছার উল্লেখ করা হলো: আবু কিলাবাহ বলেন ‘তুমি, বিদাতীর সাথে বসবে না, তাদের সাথে মিশবে না। তাদের সাথে বসলে অথবা তাদের সাথে চলাফেরা করলে তারা তোমাদেরকে ভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত করবে এবং তোমাদের জানা অনেক বিষয়ে তোমাদেরকে সংশয়ে ফেলে দেবে। (আল-লালকাঈ ১/১৩৪ ‘আল বিদা‘ ওয়ান নাহয়্যু আনহা পৃ. ৫৫, আল-ই‘তিসাম ১/১৭২)।

ইবরাহীম নাখয়ী (রহ.) বলেন, বিদাতীদের নিকট বসো না, তাদের সাথে কথা বলো না। আমি আশংকা করি যে তারা তোমাদের অন্তরকে প্রভাবিত করে ফেলবে। (‘আল-বিদা‘ ওয়ান নাহয়্যু আনহা’’ পৃ. ৫৬, আল-ই‘তিছাম ০১/১৭২)

আবু কিলাবাহ বলেন, হে আইউব আস-সাখতিয়ানী, তোমার শ্রবণে প্রবৃত্তিবাদীদেরকে স্থান দিও না। আল-লালকাঈ ০১/১৩৪ ফুযাইল ইবনে ‘ইয়ায বলেন, রাস্তায় কোন বিদাতী দেখতে পেলে অন্য রাস্তায় যাও। (আল-ইবানা ২/৪৭৬)

আবু যুরআহকে হারিছ ইবনে আসাদ আল মুহাসিবী এবং তার কিতাবাদি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি প্রশ্নকারীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তুমি এসকল বই-পুস্তক থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করো। এই বইগুলো বিদআত ও ভ্রষ্টতার বই। তাকে বলা হলো এ বই-পুস্তকে তো অনেক জ্ঞান রয়েছে? আল্লাহর কিতাবে যার কোন শিক্ষা নেই, এতেও তার কোন শিক্ষা নেই। (মানুষ বিদআতের প্রতি দ্রুত ছুটে যায়। (আত-তাহযীব ০২/১১৭, তারিখে বাগদাদ  ০৮/২১৫)

মুহাসিবী সম্পর্কে ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বাল (রহ.) কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি প্রশ্নকারীকে উত্তরে বলেন, তুমি তার অর্ধনমিত দৃষ্টি দেখে ধোঁকাগ্রস্থ হয়ো না। সে একজন খারাপ লোক তার সাথে কথা বলো না। তার কোন মর্যাদা নেই। অর্থাৎ সামনাসামনি তার চোখের সম্মান-মর্যাদার প্রতি লক্ষ্য করার মতোও কিছু নেই। দেখুন পৃ. ৪৯

বিদাতীদের সাথে কাজ করা, তাদের বই-পড়া ও তাদের কথা শ্রবণ করার ব্যাপারে এই হলো সালাফদের মানহাজ। এর উপর তাদের ক্যাসেট শ্রবণ করাকে অনুমান করুন। ক্যাসেটের ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথাগুলো আরো বেশি মারাত্মক। হায় আফসোস! যদি আমাদের এই মানহাজের যুবকেরা বিদাতী ও প্রবৃত্তিবাদীদের ক্যাসেট, বই-পুস্তক ইত্যাদি দ্বারা ধোঁকায় না পড়ত।