কাউকে দেখানো (রিয়া) বা শুনানো (সুম্’আহ্) এর শির্ক বলতে কোন নেক আমল করার সময় তা কাউকে দেখানো বা শুনানোর উদ্দেশ্যে করাকে বুঝানো হয়। যাতে মানুষের প্রশংসা কুড়ানো যায়।
কোন নেক আমল লুক্কায়িতভাবে করার পর পুনরায় তা কাউকে জানিয়ে দেয়াও এ শির্কের অন্তর্গত।
আল্লাহ্ তা’আলা বলেন:
قُلْ إِنَّمَآ أَنَا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوْحَى إِلَيَّ أَنَّمَآ إِلاَهُكُمْ إِلاَهٌ وَّاحِدٌ، فَمَنْ كَانَ يَرْجُوْ لِقَآءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا، وَلاَ يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا
‘‘আপনি বলে দিন: নিশ্চয়ই আমি তো তোমাদের মতোই একজন মানুষ। তবে আমার প্রতি এ প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের মা’বূদই একমাত্র মা’বূদ। সুতরাং যে ব্যক্তি তার প্রভুর সাক্ষাৎ কামনা করে সে যেন সৎকর্ম করে এবং তার প্রতিপালকের ইবাদাতে কাউকে যেন শরীক না করে’’। (কাহ্ফ : ১১০)
ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ্) উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন:
كَمَا أَنَّ اللهَ وَاحِدٌ، لاَ إِلاَهَ سِوَاهُ، فَكَذَلِكَ يَنْبَغِيْ أَنْ تَكُوْنَ الْعِبَادَةُ لَهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، فَكَمَا تَفَرَّدَ بِالْإِلاَهِيَّةِ يَجِبُ أَنْ يُفْرَدَ بِالْعُبُوْدِيَّةِ، فَالْعَمَلُ الصَّالِحُ هُوَ الْـخَالِصُ مِنَ الرِّيَاءِ الْـمُقَيَّدُ بِالسُّنَّةِ
‘‘যখন আল্লাহ্ তা’আলা একক। তিনি ছাড়া কোন মা’বূদ নেই। তখন সকল ইবাদাত একমাত্র তাঁরই জন্য হতে হবে। অতএব নেক আমল বলতে রাসূল (সা.) এর আদর্শ সম্মত রিয়ামুক্ত ইবাদাতকেই বুঝানো হয়। মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্য থাকলে তা নেক আমল বলে গণ্য হবে না’’।
আল্লাহ্ তা’আলা কোর’আন মাজীদে রিয়াকে মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন:
إِنَّ الْـمُنَافِقِيْنَ يُخَادِعُوْنَ اللهَ وَهُوَ خَادِعُهُمْ، وَإِذَا قَامُوْا إِلَى الصَّلاَةِ قَامُوْا كُسَالَى يُرَاؤُوْنَ النَّاسَ وَلاَ يَذْكُرُوْنَ اللهَ إِلاَّ قَلِيْلًا
‘‘নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহ্ তা’আলার সাথে প্রতারণা করে। তিনি অচিরেই তাদের প্রতারণার শাস্তি দিবেন। যখন তারা নামাযের জন্য দাঁড়ায় তখন তারা লোকদেরকে দেখানোর জন্য আলস্যভাবেই দাঁড়ায় এবং তারা আল্লাহ্ তা’আলাকে খুব কমই স্মরণ করে থাকে’’। (নিসা’ : ১৪২)
উক্ত ব্যাধিটি কাফিরদের মধ্যেও প্রচলিত ছিলো। তারা যে কোন কাজ দাম্ভিকতার সঙ্গে লোকদেরকে দেখানোর জন্যই করতো।
আল্লাহ্ তা’আলা বলেন:
وَلاَ تَكُوْنُوْا كَالَّذِيْنَ خَرَجُوْا مِنْ دِيَارِهِمْ بَطَرًا وَّرِئَاءَ النَّاسِ، وَيَصُدُّوْنَ عَنْ سَبِيْلِ اللهِ، وَاللهُ بِمَا يَعْمَلُوْنَ مُحِيْطٌ
‘‘তোমরা তাদের (কাফিরদের) ন্যায় আচরণ করোনা যারা নিজেদের ঘর হতে বের হয়েছে সদর্পে ও লোকদেরকে নিজেদের শক্তি দেখানোর জন্য। তারা মানুষকে আল্লাহ্’র পথ থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। আল্লাহ্ তা’আলা তাদের কর্ম সম্পর্কে সম্যক অবগত’’। (আন্ফাল্ : ৪৭)
কেউ কোন নেক আমল শুধু মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে করলে অথবা সাওয়াবের জন্য এবং মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে করলে তাতে কোন সাওয়াব হবে না। বরং তা বাতিল বলে গণ্য হবে।
আবু হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
قَالَ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى: أَنَا أَغْنَى الشُّرَكَاءِ عَنِ الشِّرْكِ، مَنْ عَمِلَ عَمَلًا أَشْرَكَ فِيْهِ مَعِيْ غَيْرِيْ، تَرَكْتُهُ وَشِرْكَهُ
‘‘আমি শির্কের প্রতি সম্পূর্ণরূপে অমুখাপেক্ষী। যে ব্যক্তি কোন নেক আমলের মধ্যে আমি ছাড়া অন্য কাউকে আমার সাথে শরীক করলো আমি সে আমল ও সে শরীককে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করি’’। (মুসলিম, হাদীস ২৯৮৫ ইবনু মাজাহ্, হাদীস ৪২৭৭)
আবু উমামা বাহিলী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فَقَالَ: يَا رَسُوْلَ اللهِ! أَرَأَيْتَ رَجُلًا غَزَا يَلْتَمِسُ الْأَجْرَ وَالذِّكْرَ، مَا لَهُ؟ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ: لاَ شَيْءَ لَهُ، فَأَعَادَهَا عَلَيْهِ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ، يَقُوْلُ لَهُ رَسُوْلُ اللهِصلى الله عليه وسلم : لاَ شَيْءَ لَهُ، ثُمَّ قَالَ: إِنَّ اللهَ لاَ يَقْبَلُ مِنَ الْعَمَلِ إِلاَّ مَا كَانَ لَهُ خَالِصًا، وَابْتُغِيَ بِهِ وَجْهُهُ
‘‘জনৈক ব্যক্তি রাসূল (সা.) এর নিকট এসে বললো: হে আল্লাহ্’র রাসূল! জনৈক ব্যক্তি যুদ্ধ করছে সাওয়াব ও সুনামের জন্য। এমতাবস্থায় সে পুণ্য পাবে কি? রাসূল (সা.) বললেন: সে কিছুই পাবে না। লোকটি রাসূল (সা.) কে এ কথাটি তিন বার জিজ্ঞাসা করলো। আর রাসূল (সা.) প্রতিবারই তাকে বললেন: সে কিছুই পাবে না। অতঃপর রাসূল (সা.) বললেন: নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা’আলা এমন আমলই গ্রহণ করে থাকেন যা হবে একেবারেই নিষ্কলুষ এবং যা শুধু তাঁরই জন্য নিবেদিত’’। (নাসায়ী, হাদীস ৩১৪০ বায়হাক্বী, হাদীস ৪৩৪৮)
আবু হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি:
إِنَّ أَوَّلَ النَّاسِ يُقْضَى يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَيْهِ، رَجُلٌ اسْتُشْهِدَ، فَأُتِيَ بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَـهَا، قَالَ: فَمَا عَمِلْتَ فِيْهَا؟ قَالَ: قَاتَلْتُ فِيْكَ حَتَّى اسْتُشْهِدْتُ، قَالَ: كَذَبْتَ، وَلَكِنَّكَ قَاتَلْتَ لِأَنْ يُّقَالَ جَرِيْءٌ، فَقَدْ قِيْـلَ، ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِيَ فِيْ النَّارِ، وَرَجُلٌ تَعَلَّمَ الْعِلْمَ وَعَلَّمَهُ وَقَرَأَ الْقُرْآنَ، فَأُتِيَ بِهِ، فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا، قَالَ: فَمَا عَمِلْتَ فِيْهَا؟ قَالَ: تَعَلَّمْتُ الْعِلْمَ وَعَلَّمْتُهُ وَقَرَأْتُ فِيْكَ الْقُرْآنَ، قَالَ: كَذَبْتَ، وَلَكِنَّكَ تَعَلَّمْتَ الْعِلْمَ لِيُقَالَ عَالِمٌ، وَقَرَأْتَ الْقُرْآنَ لِيُقَالَ هُوَ قَارِئٌ، فَقَدْ قِيْلَ، ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِيَ فِيْ النَّارِ، وَرَجُلٌ وَسَّعَ اللهُ عَلَيْهِ وَأَعْطَاهُ مِنْ أَصْنَافِ الْـمَالِ كُلِّهِ، فَأُتِيَ بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا، قَالَ: فَمَا عَمِلْتَ فِيْهَا؟ قَالَ: مَا تَرَكْتُ مِنْ سَبِيْلٍ تُحِبُّ أَنْ يُنْفَـقَ فِيْهَا إِلاَّ أَنْفَقْتُ فِيْهَا لَكَ، قَالَ: كَذَبْتَ، وَلَكِنَّكَ فَعَلْتَ لِيُقَالَ هُوَ جَوَادٌ، فَقَدْ قِيْلَ، ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ، ثُمَّ أُلْقِيَ فِيْ النَّارِ
‘‘নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন সর্ব প্রথম যে ব্যক্তির হিসেব হবে সে একজন শহীদ। সুতরাং তাকে উপস্থিত করা হবে অতঃপর তাকে আল্লাহ্ তা’আলার সকল নিয়ামত বুঝিয়ে দেয়া হবে যা সে দুনিয়াতে ভোগ করেছে। অতএব সে সকল নিয়ামত বুঝে পাবে। তখন আল্লাহ্ তা’আলা তাকে বলবেন: এ গুলোর শুকরিয়া সরূপ তুমি কি আমল করেছিলে? তখন সে বলবে: আমি আপনার দ্বীন দুনিয়ার বুকে প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করে শহীদ হয়ে গিয়েছি। তখন আল্লাহ্ তা’আলা বলবেন: তুমি মিথ্যা বলেছো। বরং তুমি যুদ্ধ করেছো এ জন্য যে, তোমাকে বলা হবে বীর সাহসী। আর তা বলা হয়েছে। অতএব তার ব্যাপারে আদেশ করা হবে এবং তাকে মুখের উপর টেনেহেঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
আরেক ব্যক্তি জ্ঞানার্জন করেছে এবং অন্যকেও শিখিয়েছে। তেমনিভাবে কোর’আন মাজীদও তিলাওয়াত করেছে। সুতরাং তাকে উপস্থিত করা হবে অতঃপর তাকে আল্লাহ্ তা’আলার সকল নিয়ামত বুঝিয়ে দেয়া হবে যা সে দুনিয়াতে ভোগ করেছে। অতএব সে সকল নিয়ামত বুঝে পাবে। তখন আল্লাহ্ তা’আলা তাকে বলবেন: এ গুলোর শুকরিয়া সরূপ তুমি কি আমল করেছিলে? তখন সে বলবে: আমি জ্ঞানার্জন করেছি এবং অন্যকেও শিখিয়েছি। তেমনিভাবে কোর’আন মাজীদও তিলাওয়াত করেছি। তখন আল্লাহ্ তা’আলা বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলেছো। বরং তুমি জ্ঞানার্জন করেছো এ জন্য যে, তোমাকে আলিম বা জ্ঞানী বলা হবে এবং কোর’আন মাজীদ তিলাওয়াত করেছো এ জন্য যে, তোমাকে ক্বারী বা কোর’আন তিলাওয়াতকারী বলা হবে। আর তা বলা হয়েছে। অতএব তার ব্যাপারে আদেশ করা হবে এবং তাকে মুখের উপর টেনেহেঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
আরেক ব্যক্তিকে আল্লাহ্ তা’আলা ধনী বানিয়েছেন এবং তাকে সর্ব ধরনের সম্পদ দিয়েছেন। সুতরাং তাকে উপস্থিত করা হবে অতঃপর তাকে আল্লাহ্ তা’আলার সকল নিয়ামত বুঝিয়ে দেয়া হবে যা সে দুনিয়াতে ভোগ করেছে। অতএব সে সকল নিয়ামত বুঝে পাবে। তখন আল্লাহ্ তা’আলা তাকে বলবেন: এ গুলোর শুকরিয়া সরূপ তুমি কি আমল করেছিলে? তখন সে বলবে: আমি এমন কোন খাত বাকি রাখিনি যেখানে দান করা আপনার নিকট পছন্দনীয় অথচ আমি দান করিনি। তখন আল্লাহ্ তা’আলা বলবেন: তুমি মিথ্যা বলেছো। বরং তুমি দান করেছো এ জন্য যে, তোমাকে দানবীর বলা হবে। আর তা বলা হয়েছে। অতএব তার ব্যাপারে আদেশ করা হবে এবং তাকে মুখের উপর টেনেহেঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে’’। (মুসলিম, হাদীস ১৯০৫)
জুন্দুব (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
مَنْ يُرَاءِ يُرَاءِ اللهُ بِهِ، وَمَنْ يُسَمِّعْ يُسَمِّعِ اللهُ بِهِ
‘‘যে ব্যক্তি কোন নেক আমল মানুষকে দেখানোর জন্য করবে আল্লাহ্ তা’আলা তা মানুষকে দেখিয়ে দিবেন। আখিরাতে তার জন্য কিছুই থাকবে না। আর যে ব্যক্তি কোন নেক আমল মানুষকে শুনানোর জন্য করবে আল্লাহ্ তা’আলা তা মানুষকে শুনিয়ে দিবেন। আখিরাতে তার জন্য কিছুই থাকবে না’’। (ইবনু মাজাহ্, হাদীস ৪২৮২)
আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم، وَنَحْنُ نَتَذَاكَرُ الْـمَسِيْحَ الدَّجَّالَ، فَقَالَ: أَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِمَا هُوَ أَخْوَفُ عَلَيْكُمْ عِنْدِيْ مِنَ الْـمَسِيْحِ الدَّجَّالِ؟ قُلْنَا: بَلَى، قَالَ: الشِّـرْكُ الْـخَفِيُّ؛ أَنْ يَقُوْمَ الرَّجُلُ يُصَلِّيْ، فَيُزَيِّنُ صَلاَتَهُ لِمَا يَرَى مِنْ نَظَرِ الرَّجُلِ
‘‘রাসূল (সা.) আমাদের নিকট আসলেন যখন আমরা দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। তিনি বললেন: আমি কি তোমাদেরকে এমন বস্ত্ত সম্পর্কে সংবাদ দেবো যা আমার জানা মতে তোমাদের জন্য দাজ্জাল চাইতেও অধিক ভয়ঙ্কর। আমরা বললাম: হাঁ, অবশ্যই বলুন। তিনি বললেন: লুক্কায়িত শির্ক। যেমন: কোন ব্যক্তি নামায পড়ছিলো অতঃপর কেউ তাকে দেখছে বলে সে নামাযকে খুব সুন্দর করে পড়তে শুরু করলো’’। (ইবনু মাজাহ্, হাদীস ৪২৭৯ আহমাদ : ৩/৩০ হা’কিম : ৪/৩২৯)
মাহমূদ বিন্ লাবীদ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ: يَا أَيُّهَا النَّاسُ! إِيَّاكُمْ وَشِرْكَ السَّرَائِرِ، قَالُوْا: يَا رَسُوْلَ الله! وَمَا شِرْكُ السَّرَائِرُ؟ قَالَ: يَقُوْمُ الرَّجُلُ فَيُصَلِّيْ، فَيُزَيِّنُ صَلاَتُهُ جَاهِدًا لِمَا يَرَى مِنْ نَظَرِ الرَّجُلِ إِلَيْهِ فَذَلِكَ شِرْكُ السَّرَائِرِ
‘‘নবী (সা.) নিজ হুজরা থেকে বের হয়ে বললেন: হে মানব সকল! তোমরা গুপ্ত শির্ক থেকে বেঁচে থাকো। সাহাবাগণ বললেন: হে আল্লাহ্’র রাসূল! গুপ্ত শির্ক কি? তিনি বললেন: যেমন: কোন ব্যক্তি নামায পড়ছে। এমতাবস্থায় কেউ তাকে দেখছে বলে সে অত্র নামাযটি খুব সুন্দরভাবে পড়তে শুরু করলো। এটিই হলো গুপ্ত শির্ক’’। (ইবনু খুজাইমাহ্, হাদীস ৯৩৭ বায়হাক্বী : ২/২৯০-২৯১)
তবে কোন ব্যক্তি যদি একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলার সন্তুষ্টির জন্য কোন নেক আমল করে। অতঃপর মানুষ তা দেখে তার কোন প্রশংসা করে এবং সে আল্লাহ্ তা’আলা তাকে এ কাজের জন্য তাওফীক দিয়েছেন বলে তাঁর অনুগ্রহের কথা স্মরণ করে মনে মনে খুশি হয়। গর্বিত নয়। তাতে কোন অসুবিধে নেই। বরং তা হবে তার জন্য আল্লাহ্ তা’আলার পক্ষ হতে অগ্রিম পাওনা। আবু যর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
قِيْلَ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم: أَرَأَيْتَ الرَّجُلَ يَعْمَلُ الْعَمَلَ مِنَ الْـخَيْرِ، وَيَحْمَدُهُ النَّاسُ عَلَيْهِ؟ قَالَ: تِلْكَ عَاجِلُ بُشْرَى الْـمُؤْمِنِ
‘‘রাসূল (সা.) কে বলা হলো: আপনি এ ব্যাপারে কি বলেন? জনৈক ব্যক্তি কোন নেক আমল করছে। আর মানুষ এতে করে তার প্রশংসা করছে। রাসূল (সা.) বললেন: এটি হচ্ছে একজন মু’মিনের জন্য অগ্রিম সুসংবাদ’’। (মুসলিম, হাদীস ২৬৪২ আহমাদ : ৫/১৫৬)
وَصَلَّى اللهُ عَلَى نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ وَّعَلَى آلِهِ وَصَحْبِهِ أَجْمَعِيْنَ
হে আল্লাহ্! আপনি আমাদের সকলকে শির্ক থেকে বাঁচার তাওফীক দান করুন। আ’মীন সুম্মা আ’মীন।