সবশেষে এই রিসার্স পেপারের সার-সংক্ষেপ হিসেবে আমরা বলব যে, এটাই হচ্ছে আহলে সুন্নাহ্‌ ওয়াল জামাআতের চারজন ইমামের প্রতি তথাকথিত বার ইমামের অনুসারী ইমামিয়া শিয়াদের দৃষ্টিভঙ্গি। যা তাদের কিতাবাদির গর্ভে লুপ্ত আছে। তাদের বড় বড় ব্যক্তিরা এ নিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে না। যেন তারা শিয়া ও সুন্নীদের সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলে রাখতে পারে।

সার-সংক্ষেপে আমরা এও বলব যে, আবু হানীফা, মালেক, শায়েফী ও আহমাদ ইবন হাম্বল (রাহিমাহুমুল্লাহ্‌) এই চারজন ইমামের প্রত্যেকে আহলে সুন্নাহর (সুন্নাহ্‌র অনুসারীরা) ইমাম। তাদের মাযহাবগুলো হচ্ছে কুরআন, সুন্নাহ্ ও সাহাবীদের মতামতের আলোকে ইজতিহাদ নির্ভর ফিকহী মাযহাব। (অর্থাৎ কোনটা হালাল, কোনটা হারাম এসব বিধি-বিধান নিয়ে যে মাযহাবগুলোতে আলোচনা করা হয়।) এই মাযহাবগুলোর মতভেদ আকীদা বা ধর্মবিশ্বাস সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে নয়। যেহেতু ইসলামের ধর্মবিশ্বাস একটাই।

নিঃসন্দেহে ইমামিয়া শিয়াদের চাইতে আহলে সুন্নাহ্‌, বিশেষতঃ এই চারজন ইমাম আহলে বাইতের ইমামদের আরো বেশী ঘনিষ্ঠ অনুসারী এবং তাদের চাইতে আরো বেশী ভালোবাসা পোষণকারী। যারা আহলে বাইতের ইমামদের নির্দেশ অমান্য করে তাদের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করে। বিভিন্ন রেওয়ায়েত বানিয়ে বানিয়ে অসুদোপায়ে আহলে বাইতের নামে চালিয়ে দেয়। অথচ সেসব মিথ্যা রেওয়ায়েত থেকে খলিফাতুল মুসলেমীন আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এবং আহলে বাইতের ইলমদার, দ্বীনদার অন্যান্য ইমামরা সম্পূর্ণ মুক্ত।

বারো-ইমামের অনুসারী শিয়ারা সাহাবীদের প্রতি অপবাদের ঝড় তোলার পর এই চার ইমাম ও তাদের মাযহাবকে সবচেয়ে বেশী অপবাদের তীরে বিদ্ধ করে। তাদের এসকল অপবাদ সম্পূর্ণ প্রমাণহীন। তাদের এসকল অপবাদের পক্ষে না কোনো নকলী (কুরআন-সুন্নাহ, সালাফদের বাণী) দলীল আছে, আর না আকলী (যুক্তিনির্ভর) দলীল আছে। বরং তারা অন্যায়ভাবে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে এসব অপবাদ দিচ্ছে নতুবা বলতে হবে তাদের মতিভ্রম ঘটেছে।

ইমাম শাফেয়ীকে রাহিমাহুল্লাহ শিয়া মতবাদের প্রতি অনুরক্ততার অপবাদ দেওয়া সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ইমাম আহমাদের রাহিমাহুল্লাহ একটা কিতাব আছে সাহাবীদের ফযীলত সম্পর্কে। সে কিতাবের বিশাল একটা অংশ জুড়ে আছে আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এর ফযীলতের আলোচনা। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ‘ইমাম আহমাদ রাহিমাহুল্লাহ আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এর প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করাকে ওয়াজিব বলেছেন’ এ ধরনের অভিযোগ ডাহা মিথ্যা।

সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজাহানের রব্ব আল্লাহ্‌র জন্য। আর আল্লাহ সালাত, সালাম ও বরকত পেশ করুন আমাদের নবী মুহাম্মদের প্রতি এবং নবীর পরিবার-পরিজন, তাঁর বংশধর ও সাহাবীদের প্রতিও অনুরূপ হোক।