যুগের কাউকে কুতুব ও গাউস নামে আখ্যায়িত করার বিধান - ১

আর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কিতাবে তার নিজের হক-অধিকারসমূহ বর্ণনা করেছেন, যেগুলো কেবল তার জন্যই হতে পারে, অন্য কারও সেগুলো থাকতে পারে না। অনুরূপভাবে তিনি তার রাসূলের অধিকারও বর্ণনা করেছেন আর মুমিনদের পরস্পরের অধিকারসমূহ বর্ণনা করেছেন। যা আমরা অন্য স্থানে বর্ণনা করেছি। আর তা যেমন আল্লাহর বাণী,

﴿وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَيَخۡشَ ٱللَّهَ وَيَتَّقۡهِ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡفَآئِزُونَ ٥٢﴾ [النور: ٥٢]

“আর যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর তাকওয়া অবলম্বন করে, তাহলে তারাই কৃতকার্য।” [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৫২] সুতরাং আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য, ভয় এবং তাকওয়া অবলম্বন করতে হবে একমাত্র আল্লাহর। মহান আল্লাহ বলেন,

﴿وَلَوۡ أَنَّهُمۡ رَضُواْ مَآ ءَاتَىٰهُمُ ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥ وَقَالُواْ حَسۡبُنَا ٱللَّهُ سَيُؤۡتِينَا ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦ وَرَسُولُهُۥٓ إِنَّآ إِلَى ٱللَّهِ رَٰغِبُونَ ٥٩﴾ [التوبة: ٥٩]

“আর ভালো হত যদি তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তাদেরকে যা দিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট হত এবং বলত, ‘আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট, অচিরেই আল্লাহ আমাদেরকে দেবেন নিজ করুণায় এবং তাঁর রাসূলও; নিশ্চয় আমরা আল্লাহরই প্রতি অনুরক্ত।” [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৫৯]

অতএব যেতে হবে আল্লাহ ও তার রাসূলের কাছে, কিন্তু অনুরক্ত হতে হবে কেবল আল্লাহর দিকে।

আর মহান আল্লাহ বলেন,

﴿وَمَآ ءَاتَىٰكُمُ ٱلرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَىٰكُمۡ عَنۡهُ فَٱنتَهُوا ٧﴾ [الحشر: ٧]

“রাসূল তোমাদেরকে যা দেয় তা তোমরা গ্রহণ কর এবং যা থেকে তোমাদেরকে নিষেধ করে তা থেকে বিরত থাক।” [সূরা আল-হাশর, আয়াত: ৭] কেননা হালাল হলো আল্লাহ ও তার রাসূল যা হালাল করেছেন এবং হারাম হলো আল্লাহ ও তার রাসূল হারাম করেছেন। তবে সহায়, উপায় ও যথেষ্টতা কেবল আল্লাহর কাছেই প্রাপ্ত হতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, সাহাবায়ে কেরাম বলেছিলেন,

﴿وَقَالُواْ حَسۡبُنَا ٱللَّهُ﴾ [ال عمران: ١٧٣]

“আর তারা বলেছিল, আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৭৩] তারা বলেন নি যে, ‘আমাদের জন্য আল্লাহ ও তার রাসূল যথেষ্ট।’

মহান আল্লাহ আরও বলেন,

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ حَسۡبُكَ ٱللَّهُ وَمَنِ ٱتَّبَعَكَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٦٤﴾ [الانفال: ٦٤]

“হে নবী! আপনার জন্য ও আপনার অনুসারীদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।” [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ৬৪] অর্থাৎ আল্লাহ আপনার জন্য যথেষ্ট, অনুরূপভাবে মুমিনদের মধ্য থেকে যারা আপনার অনুসরণ করে তাদের জন্যও আল্লাহ যথেষ্ট।

এটাই হচ্ছে এ আয়াতের বিশুদ্ধ ও অকাট্য অর্থ, আর এজন্যই ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারা উভয়েই সংকটের সময় বলেছিলেন,

﴿حَسۡبُنَا ٱللَّهُ وَنِعۡمَ ٱلۡوَكِيلُ﴾

“আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট আর তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক”।

মহান আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন এবং সবচেয়ে প্রজ্ঞাময়। আর সালাত ও সালাম পেশ করুন আল্লাহ তা‘আলা তার সর্বোত্তম সৃষ্টি আমাদের নেতা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর, তার পরিবার এবং সাহাবীগণেরও ওপর।