আক্বীদার ক্ষেত্রে মুসলিমদের বিভ্রান্তির কারণ

আসলে আল্লাহর কালাম ও রাসূলের সুন্নাত থেকে বিমুখ হয়ে গ্রীক দর্শন এবং বিভিন্ন মানুষের মতাদর্শ নিয়ে ব্যস্ত থাকাই আক্বীদার ক্ষেত্রে মুসলিমদের গোমরাহীর মূল কারণ। এ শ্রেণীর গোমরাহ লোকদেরকে আহলে কালাম এ জন্য বলা হয় যে, তারা নতুন কোনো ইলম নিয়ে আসেনি। বরং তারা এমন কিছু বাড়তি কথা-বার্তা বলেছে, যাতে কোনো উপকার নেই। তারা শুধু ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বিষয় সমূহকে অধিকতর সুস্পষ্ট করার জন্য কিছু উপমা-উদাহরণ পেশ করেছে। যদিও কিয়াস ও উপমা পেশ করে আক্বীদার বিষয়গুলো বাদ দিয়ে দ্বীনের অন্যান্য মাস‘আলায় উপকৃত হওয়া যায়। সেই সঙ্গে যারা বিবেক-বুদ্ধি ও অনুভূতির দলীলকে অস্বীকার করে তাদের সামনে কিয়াস ও উপমার মাধ্যমে দলীলও পেশ করা যায়।

আসল কথা হলো কোনো বিষয়ে কুরআন-হাদীছের দলীল থাকার পরও যে ব্যক্তি স্বীয় রায়, রুচি এবং মতাদর্শের উপর ভিত্তি করে কথা বলল অথবা নিজের বিবেক-বুদ্ধির উপর নির্ভর করল সে কেবল ইবলীসেরই সাদৃশ্য অবলম্বন করলো। ইবলীস আল্লাহর আদেশের সামনে বশীভূত না হয়ে সে বলেছিল,

أَنَا خَيْرٌ مِنْهُ خَلَقْتَنِي مِنْ نَارٍ وَخَلَقْتَهُ مِنْ طِين

‘‘আমি আদমের চেয়ে ভালো। তুমি তাকে সৃষ্টি করেছ মাটি থেকে। আর আমাকে সৃষ্টি করেছ আগুন থেকে’’। (সূরা আল ‘আরাফ: ১২) আল্লাহ আরো বলেন,

مَنْ يُطِعْ الرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ وَمَنْ تَوَلَّى فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظًا

‘‘যে ব্যক্তি রসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ করল সে আল্লাহর অনুসরণ করল। আর যারা মুখ ফিরিয়ে নিবে, আমি তাদের জন্য আপনাকে সংরক্ষণকারী হিসাবে প্রেরণ করিনি’’। (সূরা আন নিসা: ৮০)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمْ اللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَاللَّهُ غَفُوْرٌ رَحِيْمٌ

‘‘বলো, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমার অনুসরণ করো। তাহলে আল্লাহও তোমাদেরকে ভালবাসবেন।’’ (সূরা আলে-ইমরান: ৩১)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُونَ حَتَّى يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوا فِي أَنفُسِهِمْ حَرَجًا مِمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا تَسْلِيمًا

‘‘অতএব তোমার পালকর্তার কসম, তারা ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে ন্যায়বিচারক বলে মেনে নেয়। অতঃপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোন রকম সংকীর্ণতা বোধ না থাকে এবং তা সন্তুষ্ট চিত্তে কবুল করে নেবে’’। (সূরা আন নিসা: ৬৫)

এখানে আল্লাহ তা‘আলা তার নিজের সত্তার শপথ করে বলেছেন যে, তারা তার নাবীকে ফায়ছালাকারী না বানালে, তার ফায়ছালাতে সন্তুষ্ট না থাকলে এবং তার ফায়ছালাকে মাথা পেতে মেনে না নিলে মুমিন হতে পারবে না।