রাহে বেলায়াত প্রথম অধ্যায় - বেলায়াত ও যিকর ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি

আমরা উপরে যিকরের প্রকার ও প্রকরণ জেনেছি। কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত যিকরের ফযীলতের মধ্যে সকল প্রকারের যিকরই এসে যায়। তবে হাদীস শরীফে সাধারণত বিশেষ যিকর বা তাসবীহ, তাহলীল, তাকবীর ইত্যাদিকে বুঝানো হয়েছে।


ইমাম বুখারী তাঁর সহীহ গ্রন্থে যিকরের ফযীলত বিষয়ক অধ্যায়ের নামকরণ করেছেন: (باب فضل ذكر الله) “আল্লাহর যিকরের ফযীলতের অধ্যায়”। আল্লামা হাফিয ইবনু হাজার আসকালানী এই নামের ব্যাখ্যায় বলেনঃ “আল্লাহর যিকরের ফযীলত” - এখানে যিকর অর্থ ঐ সকল শব্দ বা বাক্য উচ্চারণ করা যা বললে সাওয়াব হবে বলে বিভিন্ন হাদীসে বলা হয়েছে; যেমন - ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘আলহামদুল্লিাহ’, ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, ‘আল্লাহু আকবার’ বলা। এসকল বাক্যের সাথে সম্পৃক্ত অন্যান্য বাক্য, যেমনঃ ‘লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’, ‘বিসমিল্লাহ’, ‘হাসবুনাল্লাহ’, ‘ইস্তিগফার’ ইত্যাদি বলা, দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ কামনা করে দু‘আ করা, সবই যিকর। এছাড়া যে কোনো ফরয বা নফল কাজ নিয়মিত করাকেও যিকর বলে গণ্য করা হয়। যেমন, কুরআন তিলাওয়াত করা, হাদীস পাঠ করা, জ্ঞান চর্চা করা, নফল সালাত আদায় করা।


অপরদিকে যিকর শুধুমাত্র জিহ্বার দ্বারাও হতে পারে। জিহ্বার উচ্চারণের কারণে উচ্চারণকারী সাওয়াব পাবেন। উচ্চারণের সময় উচ্চারিত বাক্যের অর্থ মনের মধ্যে উপস্থিত থাকা শর্ত নয়। তবে শর্ত যে, উক্ত উচ্চারিত বাক্যের বিপরীত কোনো অর্থ তার উদ্দেশ্য হবে না। মুখের উচ্চারণের সাথে সাথে যদি অন্তরের স্মরণ (ক্বলবী যিকর) সংযুক্ত হয় তাহলে তা হবে উত্তম ও পরিপূর্ণতর। আর যদি এর সাথে যিকরের বাক্যের অর্থ পরিপূর্ণরূপে মনের মধ্যে উপস্থিত থাকে, তাহলে তা আরো পূর্ণতা পাবে। সালাত, জিহাদ বা যে কোনো ফরয ইবাদতে যদি এরূপ অবস্থা উপস্থিত থাকে তাহলে তাও পূর্ণতা পাবে। সর্বোপরি পরিপূর্ণ ইখলাস, আন্তরিকতা ও অন্তরের পরিপূর্ণ তাওয়াজ্জুহ যদি আল্লাহর প্রতি হয় তাহলে তা হবে সর্বোত্তম কামালাত ও সর্বোচ্চ পূর্ণতা। ফাখরুদ্দীন রাযী (রহঃ) যিকরকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন। মুখের বা জিহ্বার যিকর ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘আলহামদুলিলাহ’, ‘আল্লাহু আকবার’ ইত্যাদি শব্দাবলী মুখে উচ্চারণ করা। ক্বালবের বা মনের যিকর আল্লাহর জাত, গুণাবলী, বিধানাবলী, আদেশ, নিষেধ ইত্যাদি বিষয়ে চিন্তা-গবেষণা করা। আর অঙ্গপ্রত্যঙ্গের যিকর সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সদা সর্বদা আল্লাহর আনুগত্যে রত থাকা। আর এজন্যই সালাতকে কুরআনে যিকর বলা হয়েছে।


কোনো কোনো বুজুর্গ বলেছেনঃ যিকর ৭ ভাবে করা হয় - চোখের যিকর ক্রন্দন, কানের যিকর মনোযোগ দিয়ে আল্লাহর কথা শ্রবণ করা, মুখের যিকর আল্লাহর প্রশংসা করা, হাতের যিকর দান করা, দেহের যিকর আল্লাহর বিধান পালন করা, ক্বলবের যিকর আল্লাহর ভয়ে ভীত হওয়া ও আল্লাহর রহমতের আশা করা এবং আত্মার যিকর আল্লাহর তাকদীর ও ফয়সালার উপর পরিপূর্ণ রাজি ও সন্তুষ্ট হওয়া।[1]

মুল্লা আলী কারী (১০১৪ হি) বলেনঃ আল্লামা ইবনুল জাযারী (৮০৮ হি) বলেছেনঃ “যিকরের ফযীলত শুধু তাসবীহ, তাহলীল, তাকবীর ইত্যাদির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং যিনিই আল্লাহর আনুগত্যে লিপ্ত বা আল্লাহর আনুগত্যমূলক কোনো কর্মে লিপ্ত আছেন তিনিই যিকরে লিপ্ত আছেন বা তিনিই যাকির। সর্বশ্রেষ্ঠ যিকর কুরআন কারীম, তবে রাসূলুল্লাহ (সা.) যেখানে কুরআন ছাড়া অন্য কিছুর মাধ্যমে যিকরের বিধান দিয়েছেন সেখানে সেই যিকরই উত্তম, যেমন রুকু ও সাজদার অবস্থায়। অন্য সকল ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ যিকর কুরআন।”[2]


মুল্লা আলী কারী অন্যত্র বলেনঃ “আল্লাহর যিকর অর্থ ঐ সকল যিকর যা জপ করলে বা পাঠ করলে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যাবে। যেমন, কুরআন তিলাওয়াত, সালাত পাঠ, তাসবীহ, তাহলীল, পিতামাতার জন্য দু‘আ বা অনুরূপ যিকরাদি। আর আল্লাহর যিকরকারী বা যাকির বলতে তাঁকে বুঝান হয় যিনি হাদীস শরীফে বর্ণিত মাসনূন যিকরগুলি সকল সময়ে ও অবস্থায় পালন করেন।”[3]


এ বিষয়ে অন্যান্য উলামায়ে কেরামও অনুরূপ অনেক কথা বলেছেন। তাঁদের কথা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, যিকরের ফযীলত-জ্ঞাপক হাদীসসমূহে সাধারণত যিকর বলতে তাসবীহ, তাহলীল ইত্যাদি আযকার বুঝানো হয়েছে। এছাড়া সকল প্রকারের ইবাদত ও আনুগত্যই যিকরের অন্তর্ভুক্ত।

আমরা এখানে এ যিকরের ফযীলত-জ্ঞাপক কিছু সহীহ বা গ্রহণযোগ্য হাদীস আলোচনা করব। দুই একটি যয়ীফ হাদীসের আলোচনা প্রসঙ্গত আসলে আমি তার দুর্বলতার কথা উল্লেখ করব, ইনশাআল্লাহ। আল্লাহর কাছে তাওফীক প্রার্থনা করছি।


হাদীস শরীফে কয়েকভাবে যিকরের ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছেঃ (১). সাধারণভাবে যিকরের ফযীলত, (২). প্রত্যেক প্রকার যিকরের জন্য বিশেষ ফযীলত এবং (৩). বিশেষ সময়ের বিশেষ যিকরের ফযীলত। প্রথমে আমরা যিকরের সাধারণ ফযীলত বিষয়ক কিছু হাদীস আলোচনা করব।

(১). আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেনঃ (سَبَقَ الْمُفَرِّدُونَ) “নিঃসঙ্গ একাকী মানুষেরা এগিয়ে গেল। সাহাবীগণ প্রশ্ন করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল, মুফাররাদ বা একাকী মানুষেরা কারা?” তিনি বলেনঃ (الذَّاكِرُونَ اللَّهَ كَثِيرًا) আল্লাহর বেশি বেশি যিকরকারীগণ।[4]

অন্য বর্ণনায় তিনি বলেনঃ (المُسْتَهْتَرُونَ بِذِكْرِ اللَّهِ يَضَعُ الذِّكْرُ عَنْهُمْ أَثْقَالَهُمْ فَيَأْتُونَ يَوْمَ القِيَامَةِ خِفَافًا) “একাকী অগ্রগামীগণ হলেন ঐ সকল মানুষ, যারা আল্লাহর যিকরে মত্ত ও সর্বদা বেপরোয়াভাবে আল্লাহর যিকর করেন। যিকরের কারণে তাঁদের (গোনাহের) বোঝা হাল্কা হয়ে যাবে। এজন্য কিয়ামতের দিন তাঁরা হাল্কা হয়ে আল্লাহর দরবারে হাজির হবেন।[5]


(২). মুআয ইবনু জাবাল (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে আমার সর্বশেষ যে কথাটি হয়েছিল, যে কথাটি বলে আমি তাঁর থেকে শেষ বিদায় নিয়েছিলাম তা হলো, আমি প্রশ্ন করেছিলামঃ হে আল্লাহর রাসূল, আল্লাহর নিকট সর্বশ্রেষ্ঠ ও সবচেয়ে প্রিয়

আমল (কর্ম) কোনটি? তিনি বলেছিলেনঃ (أَحَبُّ الأَعْمَالِ إِلَى اللَّهِ أَنْ تَمُوتَ وَلِسَانُكَ رَطْبٌ مِنْ ذِكْرِ اللَّهِ) “আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় কর্ম যে, তুমি যখন মৃত্যু বরণ করবে তখনো তোমরা জিহ্বা আল্লাহর যিকরে আর্দ্র থাকবে।”[6] অর্থাৎ, সদা সর্বদা মুমিন মুখে আল্লাহর যিকর করবে। আল্লাহর যিকরে তাঁর জবান সর্বদা আর্দ্র থাকবে। এরূপ হলে তাঁর যখন মৃত্যু হবে তখনো তাঁর জবান যিকরেই ব্যস্ত থাকবে।


(৩). আব্দুল্লাহ ইবনু বুসর (রাঃ) বলেন, একব্যক্তি বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, ইসলামের বিধানাবলী আমার জন্য বেশি হয়ে গিয়েছে। আমাকে এমন একটি আমল বলে দিন যা আমি দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে থাকব। তিনি বলেনঃ

لا يزال لسانك رطبًا بذكر الله


“তোমার জিহ্বা যেন সর্বদা আল্লাহর যিকরে আর্দ্র থাকে।”[7]

(৪) আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ ৭ শ্রেণীর মানুষকে আল্লাহ কিয়ামতের কঠিন দিনে তাঁর বিশেষ ছায়াতলে আশ্রয় দিবেন যেদিন তাঁর ছায়া ছাড়া কোনো ছায়া থাকবে না। তন্মধ্যে এক শ্রেণীর মানুষঃ

رَجُلٌ ذَكَرَ اللَّهَ خَالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ


“ঐ মানুষ যিনি একাকী আল্লাহর যিকর করেছেন আর তাঁর চোখ থেকে অশ্রুর ধারা নেমেছে।”[8]


(৫) আবু মূসা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ

مَثَلُ البَيْتِ الذي يُذكَرُ اللهُ فيه والبيت الذي لا يذكرُ الله فيه مَثَلُ الحيِّ والميِّت


“যে ঘরে আল্লাহর যিকর হয় আর যে ঘরে আল্লাহর যিকর হয় না তাদের তুলনা জীবিত ও মৃতের ন্যায়।”[9]


(৬) আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ

مَنْ صَلَّى الْغَدَاةَ فِي جَمَاعَةٍ ثُمَّ قَعَدَ يَذْكُرُ اللَّهَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ كَانَتْ لَهُ كَأَجْرِ حَجَّةٍ وَعُمْرَةٍ ... تَامَّةٍ تَامَّةٍ تَامَّةٍ


“যে ব্যক্তি ফজরের সালাত জামাতে আদায় করবে, এরপর বসে সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর যিকরে রত থাকবে। অতঃপর সে দুই রাক’আত সালাত আদায় করবে, সে একটি হজ্ব ও একটি ওমরার সাওয়াব পাবে, পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণ (হজ্ব ও ওমরার সাওয়াব)।”[10]

এই অর্থে আরো অনেক সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। পরবর্তীতে নির্দিষ্ট অধ্যায়ে আমারা এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার করব, ইনশাআল্লাহ।


(৭) আবু দারদা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ

أَلا أُنَبِّئْكُمْ بِخَيْرِ أَعْمَالِكُمْ وَأَزْكَاهَا عِنْدَ مَلِيكِكُمْ وَأَرْفَعِهَا فِي دَرَجَاتِكُمْ وَخَيْرٌ مِنْ إِعْطَاءِ الذَّهَبِ وَالْوَرَقِ وَأَنْ تَلْقَوْا عَدُوَّكُمْ فَتَضْرِبُوا أَعْنَاقَهُمْ وَيَضْرِبُوا أَعْنَاقَكُمْ ؟ قَالُوا مَا ذَاكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ ؟ قَالَ ذِكْرُ اللَّهِ تَعَالَى. وقال معاذ بن جبل ما عمل ادمى من عمل انجى له من عذاب الله من ذكر الله عز وجل


আমি কি তোমাদেরকে বলব না তোমাদের জন্য সর্বোত্তম কর্ম কোনটি? তোমাদের প্রভুর নিকট সবচেয়ে পবিত্র, তোমাদের জন্য সবচেয়ে উঁচু মর্যাদার কারণ, স্বর্ণ ও রোপ্য দান করার চেয়েও উত্তম, জিহাদের ময়দানে শত্রুর মুখোমুখি হয়ে শত্রু নিধন করতে করতে শাহাদত বরণ করার থেকেও উত্তম কর্ম কি তা-কি তোমাদেরকে বলব? সাহাবীগণ বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল, সেই কর্মটি কী? তিনি বললেনঃ ‘আল্লাহর যিকর।’ মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) বলেনঃ আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আল্লাহর যিকরের চেয়ে উত্তম ইবাদত আর কিছুই নেই।” হাদীসটির সনদ হাসান।[11]


(৮) একটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেনঃ

أَكْثِرُوا ذِكْرَ اللهِ حَتَّى يَقُولُوا مَجْنُونٌ


“তোমরা বেশি বেশি আল্লাহর যিকর কর যেন মানুষেরা তোমাদেরকে পাগল বলে।” হাদীসটিকে কোনো কোনো মুহাদ্দিসগণ সহীহ বা হাসান অর্থাৎ গ্রহণযোগ্য বলে গণ্য করেছেন। অপরদিকে অন্যান্য মুহাদ্দিস বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে হাদীসটির সনদের দুর্বলতা প্রমাণ করেছেন। বিস্তারিত আলোচনায় বুঝা যায় যে হাদীসটির সনদ নির্ভরযোগ্য নয়, যয়ীফ বা দুর্বল।[12]


(৯) এই অর্থে অন্য একটি অত্যন্ত যয়ীফ হাদীসে ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছেঃ

اذكروا الله حتى يقول المنافقون إنكم مراءون


“তোমরা এমনভাবে আল্লাহর যিকর করবে যেন মুনাফিকরা বলে যে, তোমরা রিয়াকারী।”[13]


(১০) আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেনঃ

أَنَا مَعَ عَبْدِي مَا ذَكَرَنِي وَتَحَرَّكَتْ بِي شَفَتَاهُ


“আমার বান্দা যতক্ষণ যতক্ষণ আমাকে স্মরণ করেছে (আমার যিকর করেছে) এবং আমার জন্য তার দুই ঠোঁট নড়াচড়া করেছে ততক্ষণ আমি তাঁর সঙ্গে আছি।”[14]


(১১) আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ

لَيَذْكُرَنَّ اللَّهَ قَوْمٌ فِي الدُّنْيَا عَلَى الْفُرُشِ الْمُمُهَّدَةِ يُدْخِلُهُمُ اللَّهُ الدَّرَجَاتِ الْعُلَا


“অনেক মানুষ দুনিয়াতে সুন্দর পরিপাটি বিছানায় আল্লাহর যিকর করবেন, যিকর তাঁদেরকে উচ্চ মর্যাদার মধ্যে প্রবেশ করাবে।” হাদীসটির সনদে কিছু দুর্বলতা আছে। তবে হাফিয হাইসামী হাদীসটির সনদকে হাসান বলেছেন।[15]


(১২) মু’আয (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ

ما عمل آدمي عملا أنجى له من العذاب من ذكر الله تعالى قالوا ولا الجهاد في سبيل الله قال ولا الجهاد في سبيل الله الا أن يضرب بسيفه حتى ينقطع ثلاث مرات


“আযাব থেকে রক্ষার জন্য কোনো মানুষ আল্লাহর যিকরের চেয়ে উত্তম কোনো আমল কখনো করতে পারেনি (আযাব থেকে রক্ষার জন্য যিকরের চেয়ে উত্তম আমল আর কিছুই নেই)। তাঁকে প্রশ্ন করা হলোঃ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও কি যিকরের চেয়ে উত্তম নয়? তিনি বলেনঃ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও যিকরের চেয়ে উত্তম নয়, তবে যদি সে তাঁর তরবারি দ্বারা আঘাত করতে করতে তিন বার শেষ হয়ে যায় (তাহলে তা যিকরের চেয়ে উত্তম হতে পারে)।”[16] জাবির (রাঃ) থেকেও একই অর্থে আরেকটি হাদীস বর্ণিত আছে।[17]


(১৩) আবু মূসা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ

لَوْ أَنَّ رَجُلا فِي حِجْرِهِ دَرَاهِمُ يُقَسِّمُهَا ، وَآخَرُ يُذْكَرُ اللَّهَ ، كَانَ الذَّاكِرُ لِلَّهِ أَفْضَلُ


“যদি কোনো ব্যক্তির কোলে কিছু টাকা থাকে এবং সে তা দান করতে থাকে আর অপর ব্যক্তি আল্লাহর যিকর করে, তাহলে আল্লাহর যিকরকারীই উত্তম বলে গণ্য হবে।”[18]


(১৪) আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ

ما من صدقة أفضل من ذكر الله

“আল্লাহর যিকরের চেয়ে উত্তম কোনো সাদকাহ বা দান নেই।”[19]


(১৫) মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বললাম, আমাকে ওসীয়ত করুন। তিনি বললেনঃ

عليك بتقوى اللهِ ما استطَعْتَ واذْكُرِ اللهَ عندَ كُلِّ حَجَرٍ وشَجَرٍ وما عمِلْتَ من سوءٍ فأَحْدِثْ للهِ فيه توبةً السِّرُّ بالسِّرِّ والعَلانِيَةُ بالعَلانِيَةِ


“তুমি যথাসম্ভব আল্লাহকে ভয় করে (তাকওয়া আঁকড়ে ধরে) চলবে। প্রত্যেক পাথর ও গাছের নিকট আল্লাহর যিকর করবে। কোনো পাপ বা অন্যায় করলে নতুন করে আল্লাহর কাছে তাওবা করবে। গোপনের জন্য গোপনে ও প্রকাশ্যের জন্য প্রকাশ্যে।[20]


(১৬) ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ

مَنْ عَجَزَ مِنْكُمْ عَنِ اللَّيْلِ أَنْ يُكَابِدَهُ وَبَخِلَ بِالْمَالِ أَنْ يُنْفِقَهُ وَجَبُنَ عَنِ الْعَدُوِّ أَنْ يُجَاهِدَهُ فَلْيُكْثِرْ مِنْ ذِكْرِ اللَّهِ


“তোমাদের মধ্যে যে রাত জেগে ইবাদত করতে অক্ষম হয়ে পড়ে, কৃপণতার কারণে সম্পদ দান করতে পারে না, কাপুরুষতার কারণে শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদ করতে অক্ষম হয়, সে যেন বেশি বেশি আল্লাহর যিকর করে।” হাদীসটির সনদ কিছুটা দুর্বল।[21]


(১৭) আনাসের আম্মা বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে ওসীয়ত করুন। তিনি বলেনঃ

اهْجُرِي الْمَعَاصِيَ فَإِنَّهَا أَفْضَلُ الْهِجْرَةِ وَحَافِظِي عَلَى الْفَرَائِضِ فَإِنَّهَا أَفْضَلُ الْجِهَادِ وَأَكْثِرِي مِنْ ذِكْرِ اللَّهِ فَإِنَّكِ لا تَأْتِينَ اللَّهَ غَدًا بِشَيْءٍ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ كَثْرَةِ ذِكْرِهِ


“তুমি সকল পাপ ত্যগ করবে; কারণ পাপত্যগই সর্বোত্তম হিজরত। সকল ফরয ইবাদত নিয়মিত পরিপূর্ণভাবে পালন করবে; কারণ এটিই সর্বোত্তম জিহাদ। বেশি বেশি আল্লাহর যিকর করবে; কারণ তুমি আল্লাহর বেশি বেশি যিকর করার চেয়ে বেশি প্রিয় কোনো বস্তু নিয়ে আল্লাহর দরবারে হাজিরা দিতে পারবে না।” হাদীসটির সনদে কিছু দুর্বলতা আছে।[22]


(১৮) মু’আয ইবনু আনাস (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলঃ “কোন্ মুজাহিদের পুরস্কার সবচেয়ে

বেশি ?” তিনি বললেনঃ

اكثرهم لله تبارك وتعالى ذكرا

“তাদের মধ্যে যে আল্লাহর সবচেয়ে বেশি যিকর করে।”

তখন সে প্রশ্ন করলঃ “তাহলে সবচেয়ে বেশি সাওয়াবের অধিকারী নেককার মানুষ কে?” তিনি বললেনঃ “তাদের মধ্যে যে

আল্লাহর সবচেয়ে বেশি যিকর করে।” এরপর সে সালাত, যাকাত, হজ্ব, দান ইত্যাদি ইবাদতের কথা জিজ্ঞাসা করে। সকল ক্ষেত্রেই রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন :

اكثرهم لله تبارك وتعالى ذكرا

“তাদের মধ্যে যে আল্লাহর সবচেয়ে বেশি যিকর করে।” তখন আবু বকর (রাঃ) ওমরকে (রাঃ) বলেনঃ “যাকিরগণ সকল সাওয়াব নিয়ে গেলেন।” তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেনঃ “হ্যাঁ।” হাদীসটির সনদ দুর্বল।[23]


(১৯) মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ

لم يتحسر أهل الجنة إلا على ساعة مرت بهم لم يذكروا الله فيها


“জান্নাতের অধিবাসীগণ দুনিয়ার কোনো কিছুর জন্য আফসোস করবেন না, শুধুমাত্র যে মুহূর্তগুলি আল্লাহর যিকর ছাড়া অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে সেগুলির জন্য তাঁরা আফসোস করবেন।” হাদীসটির সনদ মোটামুটি গ্রহণযোগ্য।[24]


(২০) আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন :

ما جلس قوم مجلسا لم يذكروا الله فيه الا كان عليهم ترة وما مشى أحد ممشى (ما من أحد مشى طريقا) لم يذكر الله فيه الا كان عليه ترة وما أوى أحد إلى فراشه ولم يذكر الله فيه الا كان عليه ترة


“যদি কয়েকজন মানুষ কোথাও একত্রে বসে কিন্তু সেই বৈঠকে তারা আল্লাহর যিকর না করে তবে তা তাদের জন্য ধ্বংস ও ক্ষতির কারণ হবে। যদি কোনো মানুষ সামান্য পরিমাণও হাঁটে এবং সেই হাঁটার মধ্যে সে আল্লাহর যিকর না করে, তাহলে তা তার জন্য ধ্বংস ও ক্ষতির কারণ হবে। যদি কোনো মানুষ বিছানায় শোয় এবং শোয়া অবস্থায় আল্লাহর যিকর না করে তাহলে তা তার জন্য ধ্বংস ও ক্ষতির কারণ হবে।” হাইসামী হাদীসটির সনদ সহীহ বলে উল্লেখ করেছেন।[25]


(২১) হারিস আল-আশ’আরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মহান আল্লাহ ইয়াহইয়া (আ.)-কে ওহীর মাধ্যমে পাঁচটি বিষয়ের নির্দেশ প্রদান করেন, যেগুলি তিনি পালন করবেন এবং বনী ইসরাঈলকে সেগুলি পালনের শিক্ষা দিবেন : আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক না করা, সালাত (নামায) আদায়কালে মন বা চোখকে এদিক সেদিক না নেওয়া, সিয়াম পালন করা, দান করা এবং

বেশি বেশি আল্লাহর যিকর করা। যিকর সম্পর্কে তিনি বলেনঃ

وأمرهم بذكر الله كثيرا ومثل ذكر الله كمثل رجل طلبه العدو سراعا فى اثره حتى أتى حصنا حصينا فأحرز نفسه فيه وكذالك العبد لا ينجو من الشيطان إلا بذكر الله


“আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন বেশি বেশি আল্লাহর যিকর করার। আর আল্লাহর যিকরের উদাহরণ এমন যে, এক ব্যক্তিকে শত্রুগণ ধাওয়া করে তার পিছে দ্রুত এগিয়ে আসছে। এমতাবস্থায় লোকটি একটি সুসংরক্ষিত দুর্গে এসে পৌঁছাল এবং সে দুর্গের মধ্যে আত্মরক্ষা করল। অনুরূপভাবে বান্দা আল্লাহর যিকর ছাড়া শয়তানের কবল থেকে রক্ষা পায় না।” হাদীসটি সহীহ।[26]


(২২) উপরের সহীহ হাদীসটির অর্থবোধক দুটি যয়ীফ হাদীস আমাদের সমাজে প্রচলিত। আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যয়ীফ হাদীসে বলা হয়েছেঃ

إِنَّ الشَّيْطَانَ وَاضِعٌ خَطْمَهُ عَلَى قَلْبِ ابْنِ آدَمَ فَإِنْ ذَكَرَ اللَّهَ خَنَسَ وَإِنْ نَسِيَ التَقَمَ قَلْبَهُ


“শয়তান তার মুখ আদম সন্তানের কবলবের উপর রেখে দেয়। যদি আদম সন্তান আল্লাহর যিকর করে, তাহলে শয়তান পিছিয়ে যায়। আর যদি সে আল্লাহর কথা ভুলে যায়, তাহলে শয়তান তার ক্বলবকে গিলে ফেলে।” হাদীসটি যয়ীফ।[27]


এই অর্থে আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ

الشيطانُ جاثِمٌ على قلبِ ابنِ آدَمَ، فإِذَا سَهَا وغَفَلَ وَسْوَسَ وَإِذَا (عقل و) ذَكَرَ اللهَ خَنَسَ


“শয়তান আদম সন্তানের কবলবের উপর আসন গেড়ে বসে। যখন সে ভুলে যায় ও বেখেয়াল হয়, তখন সে ওয়াসওয়াসা দিতে থাকে। আর যখন সে সচেতন হয় এবং আল্লাহর যিকর করে তখন শয়তান পিছিয়ে সংকুচিত হয়ে যায়।”[28]


(২৩) আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত একটি যয়ীফ হাদীসে বলা হয়েছেঃ

إِنَّ لِكُلِّ شَيْءٍ صِقَالَةً وَإِنَّ صِقَالَةَ الْقُلُوبِ ذِكْرُ اللَّهِ


“নিশ্চয় প্রত্যেক বস্তুর সাফাই ও পরিচ্ছন্নতা আছে। আর ক্বলব বা অন্তরের পরিচ্ছন্নতা বা ছাফাই আল্লাহর যিকর।” হাদীসটির সনদ যয়ীফ।[29]


দু’টি ভুল ধারণা :


এই যয়ীফ হাদীসটি সমাজে অতি পরিচিত। এখানে দুটি বিষয় ভুল বুঝা হয়:

প্রথমত, ‘আল্লাহর যিকর’ বলতে ‘ আল্লাহ, আল্লাহ,... ’ যিকর বুঝা।

আমরা ইতঃপূর্বে দেখেছি যে, কুরআন ও হাদীসে কখনোই আল্লাহর যিকর বলতে শুধু আল্লাহর নাম জপ করা বা ‘আল্লাহ আল্লাহ’ যিকর করা বুঝানো হয় নি। বরং আল্লাহর নামের মর্যাদা জপ করা বুঝানো হয়েছে। শুধু আল্লাহ নামটি জপ করলে আভিধানিকভাবে তা ‘যিকর’ বলে গণ্য হতে পারে, তবে তা মাসনূন বা সুন্নাত পদ্ধতি নয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) কখনোই সকালে, সন্ধ্যায়, অন্য কোনো সময়ে, নির্দিষ্ট সংখ্যায় বা বেশি বেশি করে শুধু ‘আল্লাহ’ নামটি জপ করেন নি বা করতে শিক্ষা দেন নি। সাহাবীগণও অনুরূপ কিছু করেন নি। এখন যদি কেউ মনে করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর যিকরের জন্য যে সকল বাক্যাদি শেখালেন ও পালন করলেন সেসকল যিকরে ক্বলব সাফ হবে না, আল্লাহর নামের মহিমা, মর্যাদা, গুণগান, স্তুতি প্রকাশক বাক্যাদি জপ করে তাঁর যিকর করলে ক্বলব সাফ হবে না বরং সকল মর্যাদা, প্রশংসা, স্তুতি, মহিমা ও গুণগান জ্ঞাপক শব্দ বাদ দিয়ে শুধুমাত্র তাঁর মহান নামটি জপ করলেই ক্বলব সাফ হবে, তবে ধারণাটি ঠিক হবে না।


মহা মহিমান্বিত আল্লাহর পবিত্র নাম মুমিনের হৃদয়ে সবচেয়ে বড় সম্পদ। তাঁর নামেরই যিকর করতে হবে। তাঁর মহান “আল্লাহ” নামে বা যে কোনো নামে যে কোনো ভাষায় তাঁর স্মরণ করলেই তাঁর যিকরের সাওয়াব মিলবে, ইনশাআল্লাহ। তবে আমাদের চেষ্টা করতে হবে মাসনূন-ভাবে বা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো পদ্ধতিতে আল্লাহর যিকর করার। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর শিক্ষা থেকে আমরা জানতে পরি যে, শুধু নাম জপ করে নয়, বরং তাঁর নামের মহিমা প্রকাশ করে যিকর করতে হবে। তিনি উম্মতকে শত শত প্রকারের যিকর শিক্ষা দিয়েছেন এবং নিজেও পালন করেছেন। কিন্তু শুধু “আল্লাহ” নাম জপ করতে হবে একথা তিনি কোথাও শেখাননি। তাঁর শিক্ষা থেকে আমরা জানতে পারি যে, দু‘আর ক্ষেত্রে আল্লাহর নাম ধরে তাঁকে ডাকতে হবে, দু‘আ করতে হবে, তাঁর সকল মহান নাম ও বিশেষ করে ‘ইসমে আযম’ ধরে তাঁর কাছে দু‘আ করতে হবে। আর যিকরে তাঁর নামের মহিমা, মর্যাদা, গুণগান, স্তুতি প্রকাশক বাক্যাদি জপ করে তাঁর যিকর করতে হবে।


দ্বিতীয়ত, অনেকে মনে করেন, ক্বলব সাফ করতে হলে যিকরের শব্দ দিয়ে জোরে জোরে ক্বলবে ধাক্কা মারা বা আঘাত করার কল্পনা করতে হবে।

এই ধারণাটিও ভুল ও সুন্নাত পরিপন্থী। রাসূলুল্লাহ (সা.) উম্মতকে অগণিত যিকর শিক্ষা দিয়েছেন। কখনো কোথাও যিকরের সময় এ ধরনের শব্দ করতে বা আঘাত করতে শেখাননি। বরং নীরবে ও অনুচ্চস্বরে যিকর করতে শিখিয়েছেন। একেবারে শেষ যুগের কোনো কোনো যাকির মনোযোগ অর্জনের জন্য এ সকল পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। আবার অনেকে তার বিরোধিতা করেছেন। মুজাদ্দিদে আলফে সানী কোনো প্রকার যিকরের সময় কোনো প্রকার শব্দ করতে বা শরীর, মাথা ইত্যাদি নাড়াতে নিষেধ করেছেন। সর্বাবস্থায় এ সকল কাজের সাথে যিকরের কোনো সম্পর্ক নেই। যে কোনো মাসনূন পদ্ধতিতে আল্লাহর স্মরণ করলে মুমিন আল্লাহর যিকরের উপরে বর্ণিত মর্যাদা, ফযীলত, উপকার সবই অর্জন করবেন।

[1] ইবনু হাজার আসকালানী, ফাতহুল বারী ১১/২০৯।

[2] মুল্লা আল-কারী, আল-মিরকাত ৫/৩২।

[3] মুল্লা আল-কারী, আল-মিরকাত ৫/৬০, ৬৫।

[4] সহীহ মুসলিম ৪/২০৬২, নং ২৬৭৬।

[5] তিরমিযী, ৩৫৯৬। তিরমিযী বলেন, হাদিসটি হাসান গারীব।

[6] বুখারী, খালকু আফ’আলিল ইবান ১/৭২, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩/৯৯, হাইসামী, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৭৪-৭৬, মুনযিরী, আত তারগীব ওয়াত তারহীব ২/৩৬৭, আলবানী, সহীহুল জামিয়িস সাগীর ১/৯৫, নং ১৬৫, হাইসামী মাওয়ারিদুয যাম’আন ৭/৩১২।

[7] সুনানে তিরমিযী, কিতাবুয দাওয়াত, নং ৩৩৭৫, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩/৯৬, ইবনু মাজাহ ৩৭৯৩, মুসতাদরাক হাকেম ১/৪৯৫, হাইসামী মাওয়ারিদুয যাম’আন ৭/৩১৩-৩১৫।

[8] সহীহ বুখারী, কিতাবুল আযান, নং ৬৬০।

[9] সহীহ মুসলিম ১/৫৩৯, নং ৭৭৯।

[10] সুনানে তিরমিযী, কিতাবুল জুমু’আহ, নং ৫৮৬।

[11] মুসনাদে আহমাদ ৬/৪৪৬, হাইসামী, মাযমাউয যাওয়াইদ ১০/৭৩, ৭৪, তিরমিযী ৫/৪৫৯, ৩৩৭৭, ইবনু মাজাহ ৩৭৯০, মুসতাদরাক হাকেম ১/৪৯৫, হাইসামি, মাওয়ারিদুয যামাআন ৭/৩১২।

[12] সহীহ ইবনু হিব্বান ৩/৯৯, মুসতাদরাক হাকিম ১/৪৯৯, মুসনাদে আহমাদ ৩/৬৮, আত-তারগীব ২/৩৭২, যয়ীফুল জামিয়িস সাগীর, পৃঃ ১৫৬, নং ১১০৮, সিলসিলাতুল আহাদিসিস যঈফা ২/৯, নং ৫১৭।

[13] মাযমাউয যাওয়াইদ ১০/৭৬। যয়ীফুল জামিয়িস সগীর, পৃঃ ১০৬, আত-তারগীব ২/৩৭২, নং ২২১৫।

[14] মুসনাদে আহমাদ ২/৫৪০, সহীহ ইবনু হিব্বান ২/৯২, ইবনু মাজাহ, নং ৩৭৯২, মুসতাদরাক হাকিম ১/৪৯৬, মাওয়ারিদুয যামআন ৭/৩০৮-৩১২।

[15] সহীহ ইবনু হিব্বান ২/১২৪, মাওয়ারিদুয যামআন ৭/৩১৬, মুসনাদু আবী ইয়ালা ২/৩৫৯, মাযমাউয যাওয়াইদ ১০/৭৮।

[16] তাবারানী। হাফিয হাইসামী বলেন, হাদিসটির সনদ সহীহ। মাযমাউয যাওয়াইদ ১০/৭৪।

[17] তাবারানী। হাদিসটির সনদ সহীহ। মাযমাউয যাওয়াইদ ১০/৭৫।

[18] তাবারানী। সনদ গ্রহনযোগ্য মাজমাউয যাওয়াইয়া ১০/৭৪।

[19] তাবারানী। সনদ সহীহ। মাজমাউয যাওয়াইয়া ১০/৭৪।

[20] তাবারানী। সনদ হাসান। মাজমাউয যাওয়াইয়া ১০/৭৪।

[21] বাযযার, তাবারানী। মাজমাউয যাওয়াইয়া ১০/৭৪।

[22] তাবারানী। মাজমাউয যাওয়াইয়া ১০/৭৫।

[23] আহমাদ, তাবারানী। মাজমাউয যাওয়াইয়া ১০/৭৪।

[24] তাবারানী, মু’জামুল কাবীর ২০/৯৩, মুসনাদুশ শামিয়্যীন ১/২৫৮, বাইহাকী, শু’আবুল ঈমান ১/৩৯২, হাইসামী, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৭৩, মুনযিরী, তারগীব ২/৩৭৫, আলবানী, সহীহুল জামে’ ২/৯৫৮।

[25] সহীহ ইবনু হিব্বান ৩/১৩৩, মাওয়ারিদুয যামআন ৭/৩১৭-৩২২, নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ৬/১০৭, বাইহাকী, শু’আবুল ঈমান ১/৪০৩, নাসাঈ, আমামুল ইয়াওমি পৃঃ ৩১২, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৮০।

[26] সহীহ ইবনু খুযাইমা ৩/১৯৫, মুসতাদরাক হাকিম ১/৫৮২, আত-তারগীব ২/৩৭০-৩৭১।

[27] আত-তারগীব ২/৩৭৩, নং ২২১৭।

[28] আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাসের এই কথাটির সনদ মোটামুটি গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়। দেখুনঃ মুসান্নাফ ইবনি আবী শায়বা ৭/১৩৫, আহাদীসুল মুখতারাহ ১০/৩৬৭, ফাতহুল বারী ৮/৭৪১-৭৪২।

[29] আত-তারগীব ২/৩৬৮, নং ২২০৫।