উপদেশ ২৬. কবরের শাস্তি আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ ১ টি

عَنْ الْمِقْدَامِ بْنِ مَعْدِيْ كَرِبَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم لِلشّهِيْدِ عِنْدَ اللهِ سِتُّ خِصَالٍ يُغْفَرُ لَهُ فِىْ اَوَّلِ دَفْعَةٍ وَيُرى مَقْعَدُهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَيُجَارُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَيَأْمَنُ مِنَ الْفَزْعِ الْاَكْبَرِ وَيُوْضَعُ عَلى رَأْسِهِ تَاجُ الْوَقَارِ الْيَاقُوْتَةِ مِنْهَا خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا وَيُزَوِّجُ ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِيْنَ زَوْجَةً مِّنَ الْحُوْرِ الْعِيْن وَيُشَفَّعُ فِىْ سَبْعِيْنَ مِنْ اَقْرِبَائِه.

মেক্দাম ইবনে মা’দী কারেব (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, আল্লাহর নিকট শহীদের জন্য ছয়টি বিশেষ পুরস্কার রয়েছে। (১) শরীরের রক্তের প্রথম ফোটা ঝরতেই তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয় এবং প্রাণ বের হওয়ার পূর্বেই তার জান্নাতের জায়গাটি তাকে দেখিয়ে দেয়া হয় (২) কবরের শাস্তি হ’তে তাকে রক্ষা করা হয় (৩) কিয়ামতের দিনের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করা হবে। (৪) তার মাথার উপর সম্মান ও মর্যাদার মুকুট পরানো হবে। তাতে থাকবে একটি ইয়াকুত, যা দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে সবকিছুর চেয়ে উত্তম। (৫) তাকে বড় বড় চক্ষু বিশিষ্ট ৭২ জন হুর দেয়া হবে এবং (৬) তার সত্তর জন নিকটতম আত্মীয়ের সুপারিশ কবুল করা হবে। হাদীছে বুঝা যায় কবরের শাস্তি চূড়ান্ত, তবে যারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে এবং তাদের জানমাল কোন কিছু নিয়ে ফিরেনি অর্থাৎ শহীদ হয়, তাদেরকে কবরের শাস্তি হ’তে রক্ষা করা হবে (ইবনে মাজাহ, মিশকাত হা/৩৮৩৪)

عَنْ عَوْفٍ بْنِ مَالِكٍ قَالَ صَلّى رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلى جَنَازَةٍ فَحَفِظْتُ مِنْ دُعَائِهِ وَهُوَ يَقُوْلُ اَلّلَهُمَّ اغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ وَعَفِهِ وَاعْفُ عَنْهُ وَ اَكْرِمْ نُزُلهُ وَوَسِّعْ مَدْخَلَهُ وَاَغْسِلْهُ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَنَقِّه مِنَ الْخَطَايَا كَمَا نَقَّيْتَ الثَّوْبَ الْاَبْيَضَ مِنَ الدَّنَسِ وَاَبْدِلْهُ دَارًا خَيْرًا مِّنْ دَارِهِ وَاَهْلَا خَيْرًا مِّنْ اَهْلِهِ وَزَوْجًا خَيْرًا مِنْ زَوْجِهِ واَدْخِلْهُ الْجَنَّةَ وَاَعِذْهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ عَذَاب النَّارِ وفى رواية وَقِهِ فِتْنَةَ الْقَبْرِ وَعَذَابَ النَّارِ قَاَل حَتىَّ تَمَنَّيْتُ اَنْ اَكُوْنَ اَنَا ذلِكَ الْمَيِّتُ.

আ’ওফ ইবনে মালিক (রা.) বলেন, নবী করীম (সা.) একবার এক জানাযার ছালাত আদায় করলেন। আমি তার দো‘আর কিছু অংশ মনে রেখেছি। তিনি তাতে বললেন, হে আল্লাহ! তুমি তাকে ক্ষমা কর, তার প্রতি দয়া কর, তার প্রতি নিরাপত্তা অবতীর্ণ কর, তাকে ক্ষমা কর, তাকে সম্মানিত আতিথ্য দান কর, তার থাকার স্থানকে প্রসারিত কর, তাকে পানি, বরফ ও তুষার দ্বারা ধুয়ে দাও, অর্থাৎ তার গুনাহ্ মাফ করে দাও। তাকে গুনাহ্ খাতা হ’তে পরিস্কার কর যেভাবে তুমি পরিস্কার কর সাদা কাপড়কে ময়লা হ’তে। তার ঘর অপেক্ষা উত্তম ঘর তাকে দান কর, তার পরিবার অপেক্ষা উত্তম পরিবার তাকে দান কর, তার স্ত্রী অপেক্ষা উত্তম স্ত্রী দান কর, তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও এবং কবরের আযাব থেকে রক্ষা কর এবং জাহান্নামের শাস্তি থেকে বাঁচাও। অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে তাকে কবরের ফেতনা হ’তে বাঁচাও এবং জাহান্নামের শাস্তি হ’তে রক্ষা কর। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আকাংখা করছিলাম যে, যদি ঐ মৃত্যু ব্যক্তি আমিই হ‘তাম (বাংলা মুসলিম ৪র্থ খন্ড, মিশকাত হা/১৫৬৬)। অত্র হাদীছ দ্বারা বুঝা গেল জানাযার সময় নবী করীম (সা.) কবরের শাস্তি হ’তে পরিত্রাণ চাইতেন।

عَنْ عَاِئشَةَ اَنَّ النّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَسْتَعِيْذُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ فِتْنَةِ الدّجّالِ وَقَالَ إِنّكُمْ تُفْتَنُوْنَ فِىْ قُبُوْرِكُمْ.

আয়েশা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (সা.) সর্বদা আল্লাহর নিকট কবরের শাস্তি হ’তে আশ্রয় চাইতেন। আর দাজ্জালের ফিতনা হ’তে পরিত্রাণ চাইতেন এবং বলতেন তোমাদেরকে কবরে বিপদের মুখোমুখি করা হবে (নাসাঈ হা/২০৬৫; হাদীছ ছহীহ)

عَنْ عَاِئشَةَ قَالتْ دَخَلَتْ عَلَىَّ عَجُوْزَتَانِ مِنْ عُجُزِ يَهُوْدِ الْمَدِيْنَةِ فَقَالَتَا اِنّ اَهْلَ الُقبُوْرِ يُعَذّبُوْنَ فِىْ قُبُوْرِهِمْ فَكَذَّبْتُهُمَا وَلَهُمْ اَنْعَمُ اَنْ اُصَدِّقَهُمَا فَخَرَجَتَا وَدَخَلَ عَلَىّ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فسَلَّم فَقُلْتُ يَارَسُوْلَ اللهِ اَنَّ عَجُوْزَتَيْنِ مِنْ عُجُزِ يَهُوْدِ الْمَدِيْنَةِ قَالَتَا اِنَّ اَهْلَ الْقُبُوْرِ يُعَذّبُوْنَ فِىْ قُبُوْرِهِمْ قَالَ صَدَقَتَا اَنّهُمْ يُعَذّبُوْنَ عَذَابًا تَسْمَعُهُ الْبَهَائِمُ كُلُّهَا فَمَا رَأَيْتُهَ صَلَّى صَلَاةً اِلَّا تَعَوَّذَ مِنْ عَذَابِ القبَْرِ.

আয়েশা (রাঃ) বলেন, মাদীনার ইহুদী বৃদ্ধা মহিলাদের মধ্য হ’তে দু’জন বৃদ্ধা মহিলা আমার নিকট আসল এবং বলল, নিশ্চয়ই কবরবাসীকে তাদের কবরে শাস্তি দেয়া হয়। তাদের কথা বিশ্বাস করতে না পারায় আমি তাদের কথা অস্বীকার করলাম। তারপর নবী করীম (সা.) আমার নিকট আসলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল(সা.) ! মদীনার বৃদ্ধা মহিলাদের মধ্য হ’তে দু’জন বৃদ্ধা মহিলা বলল, নিশ্চয়ই কবরবাসীকে তাদের কবরে শাস্তি দেয় হয়। নবী করীম (সা.) বললেন, তারা ঠিক বলেছে। নিশ্চয় তাদেরকে কবরে এত কঠিন শাস্তি দেয়া হয় যে, সমস্ত চতুস্পদ প্রাণী শুনতে পায়। আয়েশা (রাঃ) বলেন, তারপর থেকে আমি রাসূল(সা.) -কে এমন কোন ছালাত আদায় করতে দেখিনি যে, তিনি ছালাত শেষে কবরের শাস্তি হ’তে পরিত্রাণ চাইতেন না। অর্থাৎ কোন ছালাত আদায় করলে ছালাত শেষে কবরের শাস্তি হ’তে পরিত্রাণ চাইতেন। হাদীছে বুঝা গেল কবরের শাস্তি হ’তে পরিত্রাণ চাওয়া আমাদের জন্য একান্ত জরুরী।

সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) -এর অভ্যাস ছিল তিনি ফজরের নামায শেষে প্রায় আমাদের দিকে মুখ করে বসতেন এবং জিজ্ঞেস করতেন, তোমাদের কেউ আজ রাত্রে কোন স্বপ্ন দেখেছ কি? বর্ণনাকারী বলেন, আমাদের কেউ স্বপ্ন দেখে থাকলে সে তাঁর নিকট বলত। আর তিনি আল্লাহর হুকুম মোতাবেক তার তা‘বীর বর্ণনা করতেন। যথারীতি একদিন সকালে জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের কেউ (আজ রাত্রে) কোন স্বপ্ন দেখেছে কি? আমরা বললাম, না। তখন তিনি বললেন, কিন্তু আমি দেখেছি। আজ রাত্রে দুই ব্যক্তি আমার নিকট আসল এবং তারা উভয়ে আমার হাত ধরে একটি পবিত্র ভূমির দিকে (সম্ভবত তা শাম বা সিরিয়ার দিকে) নিয়ে গেল। দেখলাম, এক ব্যক্তি বসে আছে আর অপর এক ব্যক্তি লোহার সাঁড়াশি হাতে দাঁড়ানো। সে তা উক্ত বসা ব্যক্তির গালের ভিতরে ঢুকিয়ে দেয় এবং তা দ্বারা চিরে গর্দানের পিছন পর্যন্ত নিয়ে যায়। অতঃপর তার দ্বিতীয় গালের সাথে অনুরূপ ব্যবহার করে। ইত্যবসরে প্রথম গালটি ভাল হয়ে যায়। আবার সে (প্রথমে যেভাবে চিরেছিল) পুনরায় তাই করে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি? তারা উভয়ে বলল, সামনে চলুন। সন্মুখের দিকে চললাম। অবশেষে আমরা এমন এক ব্যক্তির কাছে এসে পৌঁছলাম, যে ঘাড়ের উপর চিৎ হয়ে শুয়ে রয়েছে, আর অপর এক ব্যক্তি একখানা ভারী পাথর নিয়ে তার মাথার কাছে দাঁড়িয়ে আছে। সে তার আঘাতে শায়িত ব্যক্তির মাথা চুর্ণ-বিচুর্ণ করছে। যখনই সে পাথরটি নিক্ষেপ করে (মাথা চুর্ণ-বিচুর্ণ করে) তা গড়িয়ে দূরে চলে যায়, তখনই সে লোকটি পুনরায় পাথরটি তুলে আনতে যায় সে ফিরে আসার পূর্বে ঐ ব্যক্তির মাথাটি পূর্বের ন্যায় ঠিক হয়ে যায় এবং পুনরায় সে তা দ্বারা তাকে আঘাত করে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি? তারা উভয়ে বলল, সামনে চলুন। আমরা সম্মুখের দিকে অগ্রসর হলাম। অবশেষে একটি গর্তের নিকট এসে পৌঁছলাম, যা তন্দুরের মত ছিল। তার উপর অংশ ছিল সংকীর্ণ এবং ভিতরের অংশটি ছিল প্রশস্ত। তার তলদেশে আগুন প্রজ্জ্বলিত ছিল। আগুনের লেলিহান শিখা যখন উপরের দিকে উঠত, তখন তার ভিতরে যারা রয়েছে তারাও উপরে উঠে আসত এবং উক্ত গর্ত হ’তে বাহিরে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হ’ত আর যখন অগ্নিশিখা কিছুটা শিথিল হ’ত, তখন তারাও পুনরায় ভিতরের দিকে চলে যেত। তার মধ্যে রয়েছে কতিপয় উলঙ্গ নারী ও পুরুষ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি? তারা উভয়ে বলল, সামনে চলুন, সুতরাং সম্মুখের দিকে অগ্রসর হ’লাম এবং একটি রক্তের নহরের নিকট এসে পৌঁছলাম। দেখলাম, তার মধ্যস্থলে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছে এবং নহরের তীরে একজন লোক দন্ডায়মান। আর তার সম্মুখে রয়েছে প্রস্তরখন্ড। নহরের ভিতরের লোকটি যখন তা থেকে বের হওয়ার উদ্দেশ্যে কিনারার দিকে অগ্রসর হ’তে চায়, তখন তীরে দাঁড়ানো লোকটি ঐ লোকটির মুখের উপর লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করে এবং সে লোকটিকে ঐ স্থানে ফিরিয়ে দেয় যেখানে সে ছিল। মোটকথা, লোকটি যখনই বাহিরে আসার চেষ্টা করে, তখনই তার মুখের উপর পাথর মেরে ,যেখানে ছিল পুনরায় সেখানে ফিরিয়ে দেয়। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি? সঙ্গীদ্বয় বলল, সামনে চলুন। আমরা সম্মুখে অগ্রসর হয়ে শ্যামল সুশোভিত একটি বাগানে পৌঁছলাম। বাগানে ছিল একটি বিরাট বৃক্ষ। আর উক্ত বৃক্ষটির গোড়ায় উপবিষ্ট ছিলেন, একজন বৃদ্ধ লোক এবং বিপুল সংখ্যক বালক। এ বৃক্ষটির সন্নিকটে আরেক ব্যক্তিকে দেখতে পেলাম, যার সম্মুখে রয়েছে আগুন, যাকে সে প্রজ্জ্বলিত করছে। এরপর আমার সঙ্গীদ্বয় আমাকে ঐ বৃক্ষের উপরে আরোহণ করালো এবং সেখানে তারা আমাকে বৃক্ষরাজির মাঝখানে এমন একখানা গৃহে প্রবেশ করালো যে, এরূপ সুন্দর ও মনোরম ঘর আমি আর কখনো দেখিনি। তার মধ্যে ছিল কতিপয় বৃদ্ধ, যুবক, নারী ও বালক। অনন্তর তারা উভয়ে আমাকে সে ঘর হ’তে বের করে বৃক্ষের আরও উপরে চড়ালো এবং এমন একখানা গৃহে প্রবেশ করালো যা প্রথমটি হ’তে সমধিক সুন্দর ও উত্তম। তাতেও দেখলাম, কতিপয় বৃদ্ধ ও যুবক। অনন্তর আমি উক্ত সঙ্গীদ্বয়কে বললাম, আপনারা উভয়েই তো আমাকে আজ সারা রাতে অনেক কিছু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখালেন। এখন বলেন, আমি যা কিছু দেখেছি তার তাৎপর্য কি? তারা উভয়ে বলল, হ্যাঁ, (আমরা তা জানাবো)। ঐ যে এক ব্যক্তিকে দেখেছেন সাঁড়াশি দ্বারা যার গাল চিরা হচ্ছে, সে মিথ্যাবাদী, সে মিথ্যা বলত এবং তার নিকট হ’তে মিথ্যা রটানো হ’ত। এমন কি তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ত। অতএব, তার সাথে ক্বিয়ামত পর্যন্ত ঐ আচরণ করা হবে, যা আপনি দেখেছেন। আর যে ব্যক্তির মস্তক পাথর মেরে ঘায়েল করতে দেখেছেন, সে ঐ ব্যক্তি, আল্লাহ তা‘আলা যাকে কুরআন শিক্ষা দিয়েছিলেন, কিন্তু সে কুরআন হ’তে গাফেল হয়ে রাত্রে ঘুমাতো এবং দিনেও তার নির্দেশ মোতাবেক আমল করত না। সুতরাং তার সাথে ক্বিয়ামত পর্যন্ত ঐ আচরণই করা হবে, যা আপনি দেখেছেন। আর (আগুনের) তন্দুরে যাদেরকে দেখেছেন, তারা হ’ল যেনাকারী (নারী-পুরুষ)। আর ঐ ব্যক্তি যাকে (রক্তের) নহরে দেখেছেন, সে হ’ল সুদখোর। আর ঐ বৃদ্ধ ব্যক্তি যাকে একটি বৃক্ষের গোড়ায় উপবিষ্ট দেখেছেন, তিনি হলেন হযরত ইবরাহীম (আঃ) তাঁর চতুস্পার্শ্বে শিশুরা হ’ল মানুষের সন্তানাদি। আর যে লোকটিকে অগ্নিকুন্ড প্রজ্জ্বলিত করতে দেখেছেন, সে হ’ল দোযখের দারোগা মালেক। আর প্রথম যে ঘরটিতে আপনি প্রবেশ করেছিলেন, তা (জান্নাতের মধ্যে) সর্বসাধারণ মুমিনদের গৃহ। আর যে ঘর যে পরে দেখেছেন, তা শহীদদের ঘর। আর আমি হলাম, জিব্রাঈল এবং ইনি হলেন, মীকাঈল। এবার আপনি মাথাটি উপরের দিকে তুলে দেখুন। তখন আমি মাথাটি তুলে দেখলাম, যেন আমার মাথার উপরে মেঘের মত কোন একটি জিনিস রয়েছে। অপর এক বর্ণনায় আছে, একের পর এক স্তরবিশিষ্ট সাদা মেঘের মত কোন জিনিস দেখলাম। তাঁরা বললেন, তা আপনারই বাসস্থান। আমি বললাম, আমাকে সুযোগ দিন আমি আমার ঘরে প্রবেশ করি। তারা বললেন, এখনও আপনার হায়াত বাকী আছে, যা আপনি এখনো পূর্ণ করেননি। আপনার যখন নির্দিষ্ট হায়াত পূর্ণ হবে, তখন আপনি আপনার বাসস্থানে প্রবেশ করবেন (বুখারী, বাংলা মিশকাত হা/৪৪১৬)

অত্র হাদীছে যে কঠোর শাস্তির কথা বলা হয়েছে, তা মরণের পরে কবরের শাস্তির কথা বলা হয়েছে। একমাত্র আল্লাহর ভয় মানুষের অন্তরে থাকলে মানুষ কবরের শাস্তি হ’তে রক্ষা পেতে পারে।