আল্লাহর কাছে প্রার্থনাকারীর কিছু কিছু অন্যায় ও ত্রুটি এমন রয়েছে, যার ফলে তার দো‘আ কবুল করা হয় না। যেমন,

১. পানীয় হারাম, খাদ্যবস্তু হারাম অথবা পোশাক-পরিচ্ছদ হারাম হলে। অর্থাৎ প্রার্থনাকারী যদি তার খাদ্য ও পান সামগ্রী এবং পোশাক-আশাক হারাম উপার্জন দিয়ে ক্রয় করে থাকে, তাহলে তার দো‘আ কবুল হবে না।

আবূ হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হে লোক সকল, নিশ্চয়ই আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র বিষয়ই গ্রহণ করেন। আল্লাহ তা‘আলা রাসূলগণকে যে নির্দেশ প্রদান করেছেন, মুমিনদেরকেও সে নির্দেশই প্রদান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلرُّسُلُ كُلُواْ مِنَ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَٱعۡمَلُواْ صَٰلِحًاۖ إِنِّي بِمَا تَعۡمَلُونَ عَلِيمٞ ٥١ ﴾ [المؤمنون: ٥١]

‘হে রাসূলগণ, তোমরা পবিত্র ও ভাল বস্তু থেকে খাও এবং সৎকর্ম কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর সে সর্ম্পকে আমি সম্যক জ্ঞাত।’[1] আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُلُواْ مِن طَيِّبَٰتِ مَا رَزَقۡنَٰكُمۡ وَٱشۡكُرُواْ لِلَّهِ إِن كُنتُمۡ إِيَّاهُ تَعۡبُدُونَ ١٧٢ ﴾ [البقرة: ١٧٢]

‘হে মুমিনগণ, আহার কর আমি তোমাদেরকে যে হালাল রিযক দিয়েছি তা থেকে।’[2] এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দীর্ঘ সফরে উস্কোখুস্কো ও ধূলিমলিন অবস্থায় আকাশের দিকে দু’হাত প্রসারিত করে দো‘আ করে : হে আমার রব! হে আমার রব! অথচ তার পানাহার হারাম, পোশাক-পরিচ্ছদ হারাম এবং হারাম মাল দিয়েই সে খাবার গ্রহণ করেছে, কীভাবে তার দো‘আ কবুল করা হবে!’[3]

২. দো‘আ কবুল হওয়ার জন্য তাড়াহুড়া করা।

৩. আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার জন্য দো‘আ করা। আবূ হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«لَا يَزَالُ يُسْتَجَابُ لِلْعَبْدِ مَا لَمْ يَدْعُ بِإِثْمٍ أَوْ قَطِيعَةِ رَحِمٍ مَا لَمْ يَسْتَعْجِلْ قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا الِاسْتِعْجَالُ قَالَ يَقُولُ قَدْ دَعَوْتُ وَقَدْ دَعَوْتُ فَلَمْ أَرَ يَسْتَجِيبُ لِي فَيَسْتَحْسِرُ عِنْدَ ذَلِكَ وَيَدَعُ الدُّعَاءَ».

‘বান্দার দো‘আ ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল হতে থাকে, যতক্ষণ না সে কোনো গুনাহ বা আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার দো‘আ করে অথবা যতক্ষণ না সে তাড়াহুড়া করে। বলা হলো, তাড়াহুড়া কী ইয়া রাসূলাল্লাহ! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, একথা বলা যে, আমি দো‘আ করেছি, কিন্তু কবুল হতে দেখছি না। অতপর আক্ষেপ করতে থাকে এবং দো‘আ করা ছেড়ে দেয়।’[4]

[1]. মুমিনূন : ৫১।

[2]. বাকারা : ১৭২।

[3]. মুসলিম : ১৫১০।

[4]. বুখারী : ৪০৬৩; মুসলিম : ৩৫২৭।