হারাম ও কবিরা গুনাহ হারাম ও কবীরা গুনাহ্ পরিচিতি মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ আল-মাদানী ১ টি
১২৮. পণ্যের দোষ-ত্রুটি ক্রেতাদের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা

পণ্যের দোষ-ত্রুটি ক্রেতাদের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা আরেকটি হারাম কাজ।

’উক্ববাহ্ বিন্ ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

الْـمُسْلِمُ أَخُوْ الْـمُسْلِمِ، وَلَا يَحِلُّ لـِمُسْلِمٍ بَاعَ مِنْ أَخِيْهِ بَيْعًا فِيْهِ عَيْبٌ إِلاَّ بَيَّنَهُ لَهُ.

‘‘একজন মুসলিম অন্য মুসলিমের ভাই। অতএব কোন মুসলিম অন্য কোন মুসলিম ভাইয়ের কাছে ত্রুটিযুক্ত কোন কিছু বিক্রি করলে তার জন্য সে ত্রুটি লুকিয়ে রাখা কখনোই জায়িয নয়। বরং তা তাকে অবশ্যই জানিয়ে দিতে হবে’’।

(ইব্নু মাজাহ্ ২২৭৬ স’হীহুল্ জামি’, হাদীস ৬৭০৫)

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদ্যের একটি স্তূপের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি উক্ত স্তূপে হাত ঢুকিয়ে দিলে ভেতরের খাদ্য ভেজা দেখতে পান। তখন তিনি বলেন:

مَا هَذَا يَا صَاحِبَ الطَّعَامِ ؟ قَالَ: أَصَابَتْهُ السَّمَاءُ يَا رَسُوْلَ اللهِ! قَالَ: أَفَلَا جَعَلْتَهُ فَوْقَ الطَّعَامِ كَيْ يَرَاهُ النَّاسُ؟ مَنْ غَشَّ فَلَيْسَ مِنِّيْ.

‘‘এটা কি, হে খাদ্যের মালিক? সে বললো: হে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! বৃষ্টি হয়েছিলো তো তাই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তুমি কেন ভেজা খাদ্যগুলো উপরে রাখলে না তা হলেই তো মানুষ তা দেখতে পেতো। যে কোন মুসলিমকে ধোঁকা দিলো তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই’’।

(মুসলিম ১০২)

প্রত্যেক ব্যবসায়ীকে এ কথা জানতে হবে যে, বেচা-বিক্রিতে কাউকে ধোঁকা দিলে সে ব্যবসায় বরকত ও সত্যিকারের সমৃদ্ধি কখনোই আসে না। হঠাৎ দেখা যাবে কোন একটি জটিল রোগ একই চোটে লক্ষ লক্ষ টাকা নষ্ট করে দিলো। হঠাৎ ব্যবসায় ধস নেমে কোটি কোটি টাকা নষ্ট হয়ে গেলো।

’হাকীম বিন্ ’হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

الْبَيِّعَانِ بِالْخِيَارِ مَا لَمْ يَتَفَرَّقَا، فَإِنْ صَدَقَا وَبَيَّنَا بُـوْرِكَ لَهُمَا فِيْ بَيْعِهِمَا، وَإِنْ كَذَبَا وَكَتَمَا مُحِقَتْ بَرَكَةُ بَيْعِهِمَا.

‘‘ক্রেতা-বিক্রেতা ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যাপারে স্বাধীন যতক্ষণ না তারা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়। যদি তারা এ ক্ষেত্রে সত্যবাদিতার পরিচয় দেয় এবং পণ্যের দোষ-ত্রুটির ব্যাপারে উভয়ে খোলাখুলি আলোচনা করে তা হলে আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত দিবেন। আর যদি তারা এ ক্ষেত্রে মিথ্যার আশ্রয় নেয় এবং পণ্যের দোষ-ত্রুটি একে অপর থেকে লুকিয়ে রাখে তা হলে আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের ক্রয়-বিক্রয় থেকে বরকত উঠিয়ে নিবেন’’। (বুখারী ২১১০)