হারাম ও কবিরা গুনাহ হারাম ও কবীরা গুনাহ্ পরিচিতি মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ আল-মাদানী ১ টি
১১১. নামাযের কোন রুকন ইমামের আগে আদায় করা

নামাযের কোন রুকন ইমামের আগে আদায় করা আরেকটি হারাম কাজ ও কবীরা গুনাহ্। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

أَمَا يَخْشَى الَّذِيْ يَرْفَعُ رَأْسَهُ قَبْلَ الإِمَامِ أَنْ يُحَوِّلَ اللهُ رَأْسَهُ رَأْسَ حِمَارٍ أَوْ يُحَوِّلَ صُوْرَتَهُ صُوْرَةَ حِمَارٍ.

‘‘ওই ব্যক্তি কি ভয় পাচ্ছে না যে ইমাম সাহেবের পূর্বেই রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে নেয় যে, আল্লাহ্ তা‘আলা তার মাথাকে গাধার মাথায় রূপান্তরিত করবেন অথবা তার গঠনকে গাধার গঠনে পরিণত করবেন’’।

(বুখারী ৬৯১; মুসলিম ৪২৭; আবূ দাউদ ৬২৩)

তিনি আরো বলেন:

لَا تَسْبِقُوْنِيْ بِالرُّكُوْعِ وَلَا بِالسُّجُوْدِ وَلَا بِالْقِيَامِ وَلَا بِالْقُعُوْدِ وَلَا بِالاِنْصِرَافِ.

‘‘তোমরা আমার আগে রুকু, সিজদাহ, উঠা, বসা ও সালাম আদায় করবে না’’। (মুসলিম ৪২৬)

আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ ও আব্দুল্লাহ্ বিন উমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) কোন রুকন আদায়ে ইমামের অগ্রবর্তীকে উদ্দেশ্য করে বলেন:

لَا وَحْدَكَ صَلَّيْتَ وَلَا بِإِمَامِكَ اِقْتَدَيْتَ

‘‘(তোমার নামাযই হয়নি) না তুমি একা পড়লে না ইমাম সাহেবের সাথে পড়লে’’। (রিসালাতুল ইমাম আহমাদ)

যে কোন কাজ ইমাম সাহেবের একটু পরেই করতে হবে। অর্থাৎ ইমাম সাহেব যখন তাকবীর দিয়ে পুরোপুরি রুকুতে চলে যাবেন তখন মুক্তাদিগণ রুকু করতে অগ্রসর হবেন। তেমনিভাবে ইমাম সাহেব যখন তাকবীর দিয়ে সিজদার জন্য জমিনে কপাল ঠেকাবেন তখনই মুক্তাদিগণ তাকবীর দিয়ে সিজদায় যাবেন। ইমাম সাহেবের আগে, বহু পরে ও সমানতালে কোন রুকন আদায় করা যাবে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

الإِمَامُ يَرْكَعُ قَبْلَكُمْ وَيَرْفَعُ قَبْلَكُمْ

‘‘ইমাম সাহেব তোমাদের আগেই রুকু করবেন এবং তোমাদের আগেই রুকু থেকে মাথা উঠাবেন’’। (মুসলিম ৪০৪ ইবনে খুযাইমা, হাদীস ১৫৯৩)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন:

إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوْا وَلَاتُكَبِّرُوْا حَتَّى يُكَبِّرَ، وَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوْا وَلَا تَرْكَعُوْا حَتَّى يَرْكَعَ.

‘‘ইমাম সাহেব হচ্ছেন অনুসরণীয়। তাই তিনি তাকবীর সমাপ্ত করলে তোমরা তাকবীর বলবে। তোমরা কখনো তাকবীর বলবে না যতক্ষণ না তিনি তাকবীর বলেন। তিনি রুকুতে চলে গেলেই তোমরা রুকু শুরু করবে। তোমরা রুকু করবে না যতক্ষণ না তিনি রুকু করেন’’।

(বুখারী ৩৭৮, ৮০৫, ১১১৪; মুসলিম ৪১৪, ৪১৭; আবূ দাউদ ৬০৩)

তিনি আরো বলেন:

إِذَا كَبَّرَ الإِمَامُ فَكَبِّرُوْا وَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوْا وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ وَقَاْلَ: سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ فَارْفَعُوْا وَقُوْلُوْا رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ وَإِذَا سَجَدَ فَاسْجُدُوْا.

‘‘যখন ইমাম সাহেব তাকবীর সমাপ্ত করবেন তখন তোমরা তাকবীর বলবে। আর যখন তিনি রুকুতে চলে যাবেন তখন তোমরা রুকু শুরু করবে। আর যখন তিনি রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে ‘‘সামি‘আল্লাহু লিমান্ হামিদাহ্’’ বলবেন তখন তোমরা রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে’’রাববানা ওয়া লাকাল্ হাম্দ’’ বলবে। আর যখন তিনি সিজদায় যাবেন তখন তোমরা সিজদাহ শুরু করবে’’। (বুখারী ৭২২, ৭৩৪, ৮০৫; মুসলিম ৪১৪)

বারা বিন ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

كَاْنَ النَّبِيُّ  إِذَا انْحَطَّ لِلسُّجُوْدِ لَا يَحْنِيْ أَحَدٌ ظَهْرَهُ حَتَّى يَضَعَ النَّبِىُّ  جَبْهَتَهُ عَلَى الَارْضِ.

‘‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সিজদাহর জন্যে ঝুঁকে পড়তেন আমাদের কেউ নিজ পৃষ্ঠদেশ বাঁকা করতো না যতক্ষণ না নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ কপাল জমিনে রাখতেন’’। (বুখারী ৬৯০, ৮১১; মুসলিম ৪৭৪; আবূ দাউদ ৬২১)