খায়বার যাওয়ার পথে রাসূলে কারীম (ﷺ) পর্বত অতিক্রম করেন। অতঃপর (ইসরকে ‘আসারও বলা হয়) ‘সাহবা’ নামক উপত্যকা দিয়ে গমন করেন। এরপর রাজী নামক উপত্যকায় গিয়ে পৌঁছেন। (এ রাযী’ কিন্তু ঐ রাযী’ নয় যেখানে আযাল ও ক্বারাহর বিশ্বাসঘাতকতার কারণে বনু লাহইয়ান গোত্রের হাতে আট জন সাহাবী (রাযি.) শাহাদাত বরণ করেন, যায়দ ও খুবাইব (রাঃ)-কে বন্দী করা হয় এবং পরে মক্কায় শাহাদতের ঘটনা সংঘটিত হয়।)

রাযী’ হতে মাত্র একদিন ও একরাত্রির ব্যবধানে বনু গাত্বাফানের জনবসতি অবস্থিত ছিল। যুদ্ধ প্রস্তুতি সহকারে বনু গাত্বাফান খায়বারবাসীগণের সাহায্যার্থে খায়বার অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু পথের মধ্যে তাদের পিছন দিক থেকে কিছু শোরগোল শুনতে পেয়ে তারা ধারণা করল যে, তাদের শিশু ও পশুপালের উপর মুসলিমগণ আক্রমণ চালিয়েছে, এ কারণে তারা খায়বারকে মুসলিমগণের হাতে ছেড়ে দিয়ে পিছন ফিরে চলে।

এরপর রাসূলে কারীম (ﷺ) যে দুজন পথ- অভিজ্ঞ ব্যক্তি যাঁরা সৈন্যদের পথ প্রদর্শনের কাজে নিয়োজিত ছিলেন- তাঁদের মধ্যে এক জনের নাম ছিল হুসাইল- তাঁদের নিকট থেকে এমন এক পথের খোঁজ জানতে চাইলেন যে পথ ধরে মদীনার পরিবর্তে তার উত্তরদিক দিয়ে সিরিয়ার পথ ধরে খায়বারে প্রবেশ করা যায়। নাবী কারীম (ﷺ)-এর এ কৌশল অবলম্বনের উদ্দেশ্য ছিল শাম রাজ্যের দিকে ইহুদীদের পলায়নের পথ রোধ করা এবং বনু গাত্বাফান থেকে ইহুদীদের সাহায্য প্রাপ্তির পথ বন্ধ করে দেয়া।

একজন পথ-অভিজ্ঞ বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! ‘আমি আপনাকে সে পথ দিয়ে নিয়ে যাব।’ অতঃপর আগে আগে চলতে থাকলেন। চলার এক পর্যায়ে তাঁরা এমন এক জায়গায় পৌঁছেন যেখান থেকে একাধিক পথ বাহির হয়ে গেছে। তিনি আরয করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ), এ সকল পথ ধরে গিয়ে আপনি গন্তব্য স্থানে পৌঁছতে পারবেন।’

নাবী (ﷺ) বললেন, ‘প্রত্যেকটি পথের নাম বলে দাও।’

তিনি বললেন, ‘এটির নাম হাযান (কঠিন এবং কর্কশ)। নাবী (ﷺ) এ পথ ধরে যাওয়া পছন্দ করলেন না। দ্বিতীয় পথটির নাম বললেন, ‘শাশ’ (বিযুক্তকরণ এবং চাঞ্চল্যকর) নাবী কারীম (ﷺ) এটাও গ্রহণ করলেন না। তিনি তৃতীয়টির নাম বললেন, ‘হাতিব’ (কাষ্ঠ সংগ্রহকারী) নাবী কারীম (ﷺ) এ পথ ধরে চলতেও অস্বীকার করলেন।

হুসাইল বললেন এখন অবশিষ্ট থাকে আর একটি মাত্র পথ। উমার (রাঃ) বললেন, এ পথটির নাম কী? হুসাইল বললেন, ‘এ পথের নাম ‘মারহাব’। নাবী কারীম (ﷺ) এ পথ ধরে চলা পছন্দ করলেন।