প্রস্রবণের উপর মুসলিম বাহিনীর যখন শিবির স্থাপন কাজ সম্পন্ন হল তখন সা‘দ ইবনু মু’আয (রাঃ) প্রস্তাব করলেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সৈন্য পরিচালনা বা নেতৃত্ব প্রদানের কেন্দ্রস্থল রূপে একটি ছাউনী নির্মাণ করে দেয়া হোক, যেখানে তিনি অবস্থান করবেন। আল্লাহ না করুন বিজয়ের পরিবর্তে আমাদেরকে যদি পরাজিত হতে হয় কিংবা অন্য কোন অসুবিধাজনক অবস্থার সম্মুখীন হতে হয় তাহলে পূর্ব থেকেই তাঁর নিরাপত্তার জন্য আমরা যেন প্রস্তুত থাকতে পারি। তাঁর এ প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে সমর্থিত হলো। তারপর তাঁরা আরয করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আমরা আপনার জন্য একটি বস্ত্রের ছাউনী নির্মাণ করার মনস্থ করেছি। আপনি ওর মধ্যে অবস্থান করবেন এবং আপনার সওয়ারীগুলো পাশে তৈরি অবস্থায় থাকবে। তারপর আমরা শত্রুদের সঙ্গে মোকাবেলা করব। যদি আল্লাহ পাক আমাদের মান মর্যাদা রক্ষা করে শত্রুদের উপর বিজয় দান করেন তবে সেটা তো হবে আমাদের একান্ত আকাঙ্ক্ষিত ও পছন্দনীয়। আর আল্লাহ না করুন যদি আমরা অন্য অবস্থার সম্মুখীন হই তবে আপনি সওয়ারীর উপর আরোহণ করে আমাদের কওমের ঐ সকল লোকের নিকট চলে যাবেন যারা পিছনে রয়ে গেছেন। হে আল্লাহর নাবী (ﷺ)! প্রকৃতপক্ষে আপনার পিছনে এরূপ লোকেরা রয়েছেন যাঁদের তুলনায় আপনার প্রতি আমাদের ভালবাসা বেশী নয়। যদি তারা অনুমান করতে পারতেন যে, আপনি যুদ্ধের সম্মুখীন হয়ে পড়বেন তবে কখনই তারা পিছনে থাকতেন না। আল্লাহ তা‘আলা তাঁদের মাধ্যমে আপনাকে হিফাযত করবেন। তাঁরা আপনার শুভাকফঙ্ক্ষী এবং তাঁরা আপনার সঙ্গে থেকে যুদ্ধ করবেন।’

তাঁদের এ কথায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) খুশী হলেন ও তাদের প্রশংসা করলেন এবং তাঁদের কল্যাণের জন্যে দুআ করলেন।

সাহাবীগণ যুদ্ধ ক্ষেত্রের উত্তর পূর্বে একটি উঁচু টিলার উপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জন্য আরীশ (তাঁবু) নির্মাণ করলেন যেখান থেকে পূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্রটি দৃষ্টি গোচর হতো। তারপর তাঁর ঐ আরীশের রক্ষণাবেক্ষণের জন্যে সা‘দ ইবনু মু’আয (রাঃ)-এর নেতৃত্বে আনসারী যুবকদের একটি বাহিনী নির্বাচন করা হলো।