হাদীসের নামে জালিয়াতি শুভাশুভ, সাজসজ্জা, পানাহার ও বিবিধ ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি

আলীর (রা) নামে প্রচারিত একটি বানোয়াট হাদীস:

عَمَّمَنِيْ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَوْمَ غَدِيْرِ خُمٍ بِعِمَامَةٍ سَدَلَهَا خَلْفِيْ، ثُمَّ قَالَ: إِنَّ اللهَ أَمَدَّنِيْ يَوْمَ بَدْرٍ وَحُنَيْنٍ بِمَلاَئِكَةٍ يَعْتَمُّوْنَ هَذِهِ الْعِمَامَةَ، وَقَالَ: إِنَّ الْعِمَامَةَ حَاجِزَةٌ بَيْنَ الْكُفْرِ وَالإِيْمَانِ

‘‘গাদীর খুমের দিনে রাসূলুল্লাহ আমাকে পাগড়ী পরিয়ে দেন এবং পাগড়ীর প্রান্ত পিছন দিকে ঝুলিয়ে দেন। এরপর বলেন: বদর ও হুনাইনের দিনে আল্লাহ আমাকে এভাবে পাগড়ী পরা ফিরিশতাদের দিয়ে সাহায্য করেছেন। আরো বলেন: পাগড়ী কুফর ও ঈমানের মাঝে বেড়া বা বাঁধা।’’[1]

উপরের অধিকাংশ হাদীসের বিষয়ে মুহাদ্দিসগণ একমত যে, তা জাল। দু-একটি হাদীসকে কেউ জাল এবং কেউ অত্যন্ত দুর্বল বলেছেন।[2]

দ্বিতীয়ত: পাগড়ী-সহ সালাতের ফযীলত

রাসূলুল্লাহ ﷺ বা তাঁর সাহাবীগণ কখনো শুধু নামাযের জন্য পাগড়ী পরিধান করেছেন এরূপ কোন কথা কোথাও দেখা যায় না। তাঁরা সাধারণভাবে পাগড়ী পরে থাকতেন এবং পাগড়ী পরেই নামায আদায় করতেন। এখন প্রশ্ন হলো পাগড়ী-সহ সালাতের অতিরিক্ত কোন সাওয়াব আছে কিনা?

এবিষয়ে কয়েকটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে এবং মুহাদ্দিসগণ একমত যে, সেগুলো সবই বানোয়াট। সুপরিচিত মিথ্যাবাদী রাবীগণ এগুলো বানিয়েছেন বলে প্রমাণিত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে আমি হাদীসগুলো উল্লেখ করছি। বিস্তারিত আলোচনার জন্য পোশাক বিষয়ক পুস্তকটি দ্রষ্টব্য।

[1] বাইহাকী, আস-সুনানুল কুবরা ১০/১৪; বুসীরী, মুখতাসারু ইতহাফুস সাদাহ ৩/৩৮৫-৩৮৬; ইবনু হাজার, আল-মাতালিবুল আলিয়াহ ৩/৬; যাহাবী, মীযানুল ইতিদাল ১/৪২৬, ৪/৬৭; আল-মুগনী ১/৯১, ১/৩৩৩, ২/৭৮৪।

[2] সাখাবী, আল-মাকাসিদ, পৃ: ২৯৭-২৯৮, নং ৭১৭; আজলূনী, কাশফুল খাফা ২/৯৪।