৪. জামাআতে সালাত আদায়ে নবীগণের সাথে হজ্জ

জামাআতে সালাত আদায় করা মুমিনের অন্যতম দায়িত্ব। কুরআনে মুমিনগণকে একত্রে সালাত আদায়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অগণিত সহীহ হাদীসে জামাআতে সালাত আদায়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জামাআত ছেড়ে একা সালাত আদায়কারীকে মুনাফিক বলা হয়েছে। আযান শোনার পরেও যে ব্যক্তি অসুস্থতা বা ভয়ের ওযর ছাড়া জামাআতে না এসে একা সালাত আদায় করবে তার সালাত কবুল হবে না বলে সহীহ হাদীসে বলা হয়েছে।

‘জামাতে সালাত আদায়ের’ বিধান সম্পর্কে ফিকহী পরিভাষাগত মতভেদ রয়েছে। কেউ বলেছেন সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, কেউ বলেছেন ওয়াজিব ও কেউ বলেছেন ফরয। এ মতভেদ একান্তই পরিভাষাগত। কারণ সকলেই একমত যে, পুরুষের জন্য ওযর ছাড়া ফরয সালাত একা আদায় করলে কঠিন গোনাহ হবে। সালাত হবে কি না সে বিষয়ে কিছু মতভেদ রয়েছে।

এ সকল সহীহ হাদীসের পাশাপাশি জালিয়াতগণ এ বিষয়ে অনেক জাল হাদীস তৈরি করেছে। আর এ বিষয়েও সহীহ হাদীসগুলো বাদ দিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ সব জাল হাদীসই বই পুস্তকে লেখা হয় ও ওয়াযে বলা হয়। সহীহ হাদীসে বলা হয়েছে যে, ইশা ও ফজরের সালাত জামাতে আদায় করলে সারারাত্র তাহাজ্জুদের সালাত আদায়ের সাওয়াব হবে, ফজরের সালাত জামাতে আদায় করলে আল্লাহর দায়িত্বে থাকা যাবে ... ইত্যাদি। কিনত এ সকল ‘সামান্য’ সাওয়াবের কথায় মন না ভরায় জালিয়াতগন বানিয়েছে:

مَنْ صَلَّى صَلاَةَ الصُّبْحِ فِيْ الْجَمَاعَةِ فَكَأَنَّمَا حَجَّ مَعَ آَدَمَ خَمْسِيْنَ حَجَّةً..

‘‘যে ব্যক্তি ফজরের সালাত জামাআতে আদায় করল সে যেন আদম (আঃ) এর সাথে ৭০ বার হজ্জ করল ...।’’ এভাবে প্রত্যেক ওয়াক্তের সাথে একজন নবীকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে...।[1]

অনুরূপ বানোয়াট কথার মধ্যে রয়েছে: যে ব্যক্তি ফজর ও ইশার সালাত জামাতে আদায় করল, সে যেন আদমের (আঃ) পিছনে সালাত আদায় করল...। এভাবে এক এক সালাতের জন্য এক এক নবীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে...।[2]

[1] সুয়ূতী, যাইলুল লাআলী, পৃ.৮৩; সাগানী, আল-মাউদূ‘আত পৃ. ৪২; পাটনী, তাযকিরা, পৃ. ৩৯, ১০৬; শাওকানী, আল-ফাওয়াইদ ১/৫৫।

[2] অধ্যাপিকা কামরুন নেসা দুলাল, নেক কানুন, পৃ ১০২-১০৩।