হাদীসের নামে জালিয়াতি ৯. জাল হাদীস চিহ্নিতকরণে বাঙালী আলিমগণ ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি

আল্লামা আবুল ফিদা ইসমাঈল হাক্কী (১১২৭ হি) রচিত ‘তাফসীর রুহুল বায়ান’ গ্রন্থের বহুসংখ্যক হাদীসকে আল্লামা আবূ জাফর জাল বলে চিহ্নিত করেছেন। বস্ত্তত ইসমাঈল হাক্কী ও আবূ জাফর সিদ্দিকী দুজনই প্রসিদ্ধ সূফী। তবে তাসাউফের দুপ্রান্তে তাদের অবস্থান। আল্লামা হাক্কী কাশফ বা বুজুর্গদের অজুহাতে অগণিত জাল হাদীস উল্লেখ করেছেন। পক্ষান্তরে আল্লামা আবূ জাফর সিদ্দিকী হাদীসের বিশুদ্ধতা নির্ণয়ে কাশফ বা বুজুর্গের মতের গুরুত্ব প্রদানের কঠোর বিরোধিতা করেছেন। রুহুল বায়ান গ্রন্থের যে সকল হাদীস জাল বলে তিনি চিহ্নিত করেছেন সেগুলির মধ্যে রয়েছে: ‘আমার উম্মাতের আলিমগণ বনী ইসরাঈলের নবীগণের মত’, ‘আমি আল্লাহ থেকে এবং মুমিনগণ আমা থেকে’, ‘আমি ও আবূ বকর প্রতিযোগিতার দুটি ঘোড়ার মত’, ‘দারিদ্র আমার গৌরব এবং আমি তারই অহংকার করি’, ‘মুমিনের অন্তর (কালব) আল্লাহর গৃহ’, ‘আমাকে যখন মি’রাজে নেওয়া হলো তখন প্রথম আসমানে আমি সবুজ ঝুটি ও সাদা পালক ওয়ালা একটি মোরগ দেখলাম ...’, ‘যে ব্যক্তি আলিমগণের সাথে সাক্ষাত করল সে যেন আমার সাথেই সাক্ষাত করল...’, ‘যে ব্যক্তি আমাকে সফর মাস অতিক্রান্ত হওয়ার সুসংবাদ প্রদান করবে আমি তাকে জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করব’, ‘তোমরা মৃত্যু বরণ কর তোমাদের মৃত্যুর আগেই’, ‘তুমি না হলে আমি মহাকাশসমূহ (বিশ্ব) সৃষ্টি করতাম না’... ইত্যাদি।[1]

[1] আবূ জাফর সিদ্দিকী, প্রাগুক্ত: উর্দু, পৃ. ১২-৯৯, বাংলা, পৃ. ৪৯০-৫১৫।