হাদীসের নামে জালিয়াতি ৯. জাল হাদীস চিহ্নিতকরণে বাঙালী আলিমগণ ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি
৯. ১. ৬. তাফসীর-গ্রন্থসমূহে বিদ্যমান জাল হাদীস

তাফসীর গ্রন্থসমূহের জাল হাদীস প্রসঙ্গে তিনি বলেন: ‘‘এক্ষণে আসুন তফছিরগুলির মধ্যে জাল হাদিছ আছে কি তাহার সমালোচনা করা হউক। তফছিরে এবনো জরির ও তফছিরে এবনো কছির অতি উৎকৃষ্ঠ তফছির, এই দুই তফছিরের হাদিগুলি গ্রহণের উপযুক্ত। তদ্ব্যতীতে অন্যান্য তফছিরে অনেক জাল হাদিছ আছে, (ইমাম ফখরুদ্দীন রাযীর রচিত) তফছিরে কবিরের ১/৩৪ পৃষ্ঠায় (أنا أفصح من نطق بالضاد)- (দোয়াদ উচ্চারণকারীদের মধ্যে আমিই সবচেয়ে বেশি বাক-সৌন্দর্যের অধিকারী)-এই কথাটি হাদিছ বলিয়া লিখিত আছে, কিন্তু ইহার কোন ছনদ বা মূল হাদিছের কেতাবে নাই। তমইজোল কালাম মেনাল খবিছ ৪০ পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য। তফছিরে আহমদির ২৭ পৃষ্ঠায় ছুরা জেনের তফছিরে এই মর্ম্মের একটি হাদিছ আছে: ‘মছজিদে দুনইয়ার কথা বলিলে চল্লিশ বৎসরের আমল (এবাদত) নষ্ট হইয়া যায়।’’ ইহাকে হাদিছ বলিয়া উল্লেখ করা হইয়াছে, কিন্তু মওজুয়াতে কবিরের ৬৯ পৃষ্ঠায় উহাকে জাল হাদিস বলা হইয়াছে। এইরূপ তফছির বয়জবি ও কাশ্যাফে প্রত্যেক ছুরার শেষাংশে যে ছুরার ফজিলত লেখা আছে, তাহার অধিকাংশ জাল হাদিছ। এক্ষেত্রে জাল হাদিছগুলি জাল বুঝিতে বা জাল বলিয়া প্রকাশ করিতে হইবে, তাই বলিয়া কি তফছির পাঠ নাজায়েজ বলিয়া প্রকাশ করিতে হইবে?’’[1]

[1] মোহাম্মাদ রুহুল আমিন, সিরাজগঞ্জের বাহাস, পৃষ্ঠা ৪০-৪১।