হাদীসের নামে জালিয়াতি ৪. জালিয়াতি প্রতিরোধে মুসলিম উম্মাহ ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি
৪. ৭. ২. ‘হাসান’ অর্থাৎ ‘সুন্দর’ বা গ্রহণযোগ্য হাদীস

মুহাদ্দিসগণের পরিভাষায় হাসান হাদীসের মধ্যেও উপর্যুক্ত ৫টি শর্তের বিদ্যমানতা অপরিহার্য। তবে দ্বিতীয় শর্তের ক্ষেত্রে যদি সামান্য দুর্বলতা দেখা যায় তবে হাদীসটিকে ‘হাসান’ বলা হয়। অর্থাৎ হাদীসের সনদের রাবীগণ ব্যক্তিগতভাবে সৎ, প্রত্যেকে হাদীসটি ঊর্ধ্বতন রাবী থেকে স্বকর্ণে শুনেছেন বলে প্রমাণিত, হাদীসটির মধ্যে ‘শুযূয’ ও ‘ইল্লাত’ নেই। তবে সনদের কোনো রাবীর ‘নির্ভুল বর্ণনা’র ক্ষমতা বা ‘যাবত’ কিছুটা দুর্বল বলে বুঝা যায়। তাঁর বর্ণিত হাদীসের মধ্যে কিছু অনিচ্ছাকৃত ভুল-ত্রুটি লক্ষ্য করা যায়। এরূপ ‘রাবী’র বর্ণিত হাদীস ‘হাসান’ বলে গণ্য।[1]

পরিভাষার বিস্তারিত ব্যাখ্যা অপ্রাসঙ্গিক। তবে সাধারণ পাঠকের জন্য আমরা বলতে পারি যে, যে পর্যায়ের প্রমাণাদির ভিত্তিতে একজন বিচারক খুনের অভিযোগে অভিযুক্তকে দীর্ঘ মেয়াদী শাস্তি দেন, কিন্তু মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন শাস্তি প্রদান করেন না, সে পর্যায়ের প্রমাণাদির ভিত্তিতে মুহাদ্দিসগণ একটি হাদীসকে ‘হাসান’ বলে গণ্য করেন। যে সকল বর্ণনাকারীর বর্ণিত হাদীস ‘‘হাসান’’ বা গ্রহণযোগ্য বলে প্রমাণিত হয়েছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বুঝাতে মুাহাদ্দিসগণ আরবীতে (صدوق، لا بأس به، شيخ، صالح الحديث) সত্যপরায়ণ, অসুবিধা নেই, চলনসই ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করেন।

[1] ইরাকী, আত-তাকয়ীদ, পৃ: ৪৫-৬১; ফাতহুল মুগীস, পৃ: ৩২-৪৮; সাখাবী, ফাতহুল মুগীস ১/৭৬-১১০; সুয়ূতী, তাদরীবুর রাবী ১/১৫৩-১৭৮; মাহমূদ তাহ্হান, তাইসীরু মুসতালাহিল হাদীস, পৃ. ৪৫-৫০।