হাদীসের নামে জালিয়াতি ৩. মিথ্যা প্রতিরোধে সাহাবীগণ ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি

বর্ণনা বা সাক্ষ্যের নির্ভুলতা যাচাইএর জন্য প্রয়োজনে বর্ণনাকারী বা সাক্ষীকে শপথ করানো হয়। সত্যপরায়ণ ও আল্লাহভীরু মানুষ ইচ্ছাপূর্বক মিথ্যা বলেন না। তবে তাঁর স্মৃতি তাকে ধোঁকা দিতে পারে বা অনিচ্ছাকৃত ভুলের মধ্যে তিনি নিপতিত হতে পারেন। কিন্তু আল্লাহর নামে শপথ করতে হলে তিনি কখনো পরিপূর্ণ নিশ্চিত না হয়ে কিছু বলবেন না। এজন্য সত্যপরায়ণ ব্যক্তির জন্য শপথ করানো বক্তব্যের নির্ভুলতা যাচাইয়ের জন্য কার্যকর পদ্ধতি। তবে মিথ্যাবাদীর জন্য শপথ যথেষ্ট নয়। তার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রশ্ন (cross interrogation)-এর মাধ্যমে তার বক্ত্যব্যের যথার্থতা যাচাই করতে হয়।

সাহাবীগণ সকলেই ছিলেন সত্যপরায়ণ অত্যন্ত আল্লাহভীরু মানুষ। তা সত্ত্বেও অনিচ্ছাকৃত ভুলের সম্ভাবনা দূর করার জন্য সাহাবীগণ কখনো কখনো হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবীকে শপথ করাতেন। আলী (রা) বলেন:

إِنِّي كُنْتُ رَجُلا إِذَا سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ ﷺ حَدِيثًا نَفَعَنِي اللَّهُ مِنْهُ بِمَا شَاءَ أَنْ يَنْفَعَنِي بِهِ. وَإِذَا حَدَّثَنِي رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِهِ اسْتَحْلَفْتُهُ فَإِذَا حَلَفَ لِي صَدَّقْتُهُ.

‘‘আমি এমন একজন মানুষ ছিলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে কোনো কথা নিজে শুনলে আল্লাহ আমাকে তা থেকে তাঁর মর্জিমত উপকৃত হওয়ার তাওফীক প্রদান করতেন। আর যদি তাঁর কোনো সাহাবী আমাকে কোনো হাদীস শুনাতেন তবে আমি তাকে শপথ করাতাম। তিনি শপথ করলে আমি তার বর্ণিত হাদীস সত্য বলে গ্রহণ করতাম।’’[1]

[1] তিরমিযী, আস-সুনান ২/২৫৭-২৫৮; ইবনু মাজাহ, আস-সুনান ১/৪৪৬।