ঈদের জন্য সাজসজ্জা ও সুগন্ধি ব্যবহার

সহীহ বুখারীতে ‘ঈদ ও তার জন্য সাজসজ্জা গ্রহণ’-এর বাবে বর্ণিত আষারে আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) বলেন, একদা উমার (রাঃ) একটি মোটা রেশমের তৈরী জুববা বাজারে বিক্রয় হতে দেখে তিনি তা নিয়ে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনি এটা ক্রয় করে নিন। এটি ঈদ ও বহিরাগত রাজ-প্রতিনিধিদের জন্য পরিধান করে সৌন্দর্য ধারণ করবেন।’ কিন্তু তিনি বললেন, ‘‘এটি তো তাদের লেবাস, যাদের (পরকালে) কোন অংশ নেই।’’[1]

ইবনে কুদামাহ বলেন, এই হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, উক্ত সময়ে সৌন্দর্য ধারণ করা তাঁদের নিকট প্রচলিত ছিল।[2] উক্ত ঘটনায় আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) সৌন্দর্য ধারণের ব্যাপারে আপত্তি জানালেন না। কিন্তু তা ক্রয় করতে আপত্তি জানালেন; কেননা তা ছিল রেশমের তৈরী।[3]

ত্বাবারানীতে ইবনে আববাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত আছে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ঈদের দিনে একটি লাল রঙের চেক-কাটা চাদর পরতেন।[4]

ইবনে উমার (রাঃ) ঈদের জন্য তাঁর সবচেয়ে বেশী সুন্দর লেবাসটি পরিধান করতেন।[5]

আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) উভয় ঈদে তাঁর সব চাইতে বেশী সুন্দর পোশাকটি পরিধান করতেন।[6]

ইমাম মালেক বলেন, ‘আমি আহলে ইল্মদের কাছে শুনেছি, তাঁরা প্রত্যেক ঈদে সাজসজ্জা ও সুগন্ধি ব্যবহারকে মুস্তাহাব মনে করতেন।’

সুতরাং পুরুষের জন্য উচিত হল, ঈদের নামাযের জন্য বের হওয়ার আগে তার সব চাইতে সুন্দর পোশাকটি পরিধান করবে। অবশ্য মহিলারা ঘর থেকে বের হওয়ার সময় (ভিতর বাহিরের) সর্বপ্রকার সৌন্দর্য প্রদর্শন থেকে দূরে থাকবে। যেহেতু বেগানা পুরুষের সম্মুখে মহিলার সৌন্দর্য প্রকাশ করা হারাম। অনুরূপ হারাম - ঘর থেকে বের হওয়ার আগে কোন প্রকার সে¦ট্, পারফিউম, আতর বা সুগন্ধময় ক্রিম-পাউডার অথবা অন্য কোন প্রসাধন ব্যবহার। যেমন, বাইরে বের হয়ে তার চলনে, বলনে, ভাবে, ভঙ্গিমায় যেন-তেন প্রকারে কোন পুরুষকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করাও বৈধ নয়। যেহেতু সে তো সে সময় কেবল মহান আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্য করার উদ্দেশ্যেই বের হয়। তাহলে যে মুমিন মহিলা তাঁর আনুগত্যে সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে বের হয়, সে আবার তাঁরই নাফরমানি করে টাইটফিট্ বা চুস্ত্ অথবা দৃষ্টি-আকর্ষক রঙিন পোশাক পরিধান করে কি করে অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করে বের হয় কিভাবে?[7]

[1] (বুখারী ৯৪৮নং)

[2] (আল-মুগনী ৩/২৫৭)

[3] (দুরুসু রামাযান অকাফাত লিস্-সায়েমীন ৯৯পৃঃ)

[4] (সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ১২৭৯নং দ্রঃ)

[5] (বাইহাকী ৩/২৮১)

[6] (বাইহাকী, ফাতহুল বারী ২/৫১০)

[7] (দুরুসু রামাযান অকাফাত লিস্-সায়েমীন ৯৯-১০০পৃঃ)