ই’তিকাফের অর্থঃ

ই’তিকাফের আভিধানিক অর্থ হল, কোন জিনিসকে আঁকড়ে ধরা এবং তাতে নিজেকে আবদ্ধ রাখা (রত থাকা, মগ্ন থাকা, লিপ্ত থাকা); তাতে সে জিনিস ভাল হোক অথবা মন্দ। মহান আল্লাহ বলেন,

(مَا هَذِهِ التَّمَاثِيْلِ الَّتِيْ أَنْتُمْ لَهَا عَاكِفُوْنَ)

অর্থাৎ, (ইবরাহীম তার পিতা ও সম্প্রদায়কে বলল,) যে মূর্তিগুলোর পূজায় তোমরা রত আছ, (বা যাদের পূজারী হয়ে বসে আছ) সে গুলো কি? (কুরআনুল কারীম ২১/৫২) অর্থাৎ, তোমরা তাদের সম্মুখে দন্ডায়মান হয়ে পূজায় রত আছ।

শরীয়তের পরিভাষায় আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় বিশেষ ব্যক্তির মসজিদের মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ রেখে সেখানে অবস্থান করা; তথা সকল মানুষ ও সংসারের সকল কাজকর্ম থেকে দূরে থাকা এবং সওয়াবের কাজ; নামায, যিক্র ও কুরআন তেলাঅত ইত্যাদি ইবাদতের জন্য একমন হওয়াকে ই’তিকাফ বলা হয়।[1]

ই’তিকাফের মানঃ

রমাযান মাসে করণীয় যে সব সওয়াবের কর্ম বিশেষভাবে তাকীদপ্রাপ্ত, তার মধ্যে ই’তিকাফ অন্যতম। ই’তিকাফ সেই সকল সুন্নাহর একটি, যা প্রত্যেক বছরের এই রমাযান মাসে - বিশেষ করে এর শেষ দশকে - মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বরাবর করে গেছেন। এ সব কথার দলীল নিম্নরূপঃ-

১। মহান আল্লাহ বলেন,

(أَنْ طَهِّرَا بَيْتِيَ لِلطَّائِفِيْنَ وَالعَاكِفِيْنَ وَالرُّكَّعِ السُّجُوْدِ)

অর্থাৎ, (আর আমি ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে অঙ্গীকারবদ্ধ করলাম যে,) তোমরা উভয়ে আমার (কা’বা) গৃহকে তাওয়াফকারী, ই’তিকাফকারী, রুকূ ও সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখ।

(কুরআনুল কারীম ২/১২৫)

তিনি অন্যত্র বলেন, (وَلاَ تُبَاشِرُوْهُنَّ وَأَنْتُمْ عَاكِفُوْنَ فِي الْمَسَاجِدِ)

অর্থাৎ, আর মসজিদে ই’তিকাফরত অবস্থায় তোমরা স্ত্রী-গমন করো না। (কুরআনুল কারীম ২/১৮৭)

২। আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) প্রত্যেক রমাযানে ১০ দিন ই’তিকাফ করতেন। কিন্তু তাঁর ইন্তেকালের বছরে তিনি ২০ দিন ই’তিকাফ করেন।[2]

৩। আয়েশা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) প্রত্যেক রমাযানে ই’তিকাফ করতেন। ফজরের নামায পড়ে তিনি তাঁর ই’তিকাফগাহে প্রবেশ করতেন।[3]

৪। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) তাঁর ইন্তেকাল অবধি রমাযানের শেষ দশকে ই’তিকাফ করে গেছেন। তাঁর পরে তাঁর স্ত্রীগণও ই’তিকাফ করেছেন।[4]

৫। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ই’তিকাফ করেছেন এবং তাঁর সাহাবাগণও তাঁর সাথে ই’তিকাফ করেছেন।[5]

ই’তিকাফের রহস্যঃ

প্রত্যেক ইবাদতের পশ্চাতে রহস্য, হিকমত ও যৌক্তিকতা আছে একাধিক। এ কথা বিদিত যে, প্রত্যেক আমল হৃদয়ের উপর নির্ভরশীল। যেমন মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘শোন! দেহের মধ্যে এমন এক মাংস-পিন্ড আছে যা ভালো হলে সারা দেহ ভালো হবে এবং তা খারাপ হলে সারা দেহ খারাপ হবে। শোন! তা হল হূৎপিন্ড (অন্তর)।’’[6]

হৃদয়কে যে জিনিস বেশী নষ্ট করে তা হল নানান হৃদয়গ্রাহী মনকে উদাসকারী জিনিস এবং সেই সকল মগ্নতা ও নিরতি; যা মহান আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়ার পথে বাধাস্বরূপ। যেমন উদরপরায়ণতা, যৌনাচার, অতিকথা, অতিনিদ্রা, অতিবন্ধুত্ব, ইত্যাদি প্রতিবন্ধক কর্ম; যা অন্তরের ভূমিকাকে বিক্ষিপ্ত করে এবং তার একাগ্রতাকে আল্লাহর আনুগত্যে বিনষ্ট করে ফেলে। এই জন্য মহান আল্লাহ তাঁর নৈকট্য প্রদানকারী কিছু ইবাদত বিধিবদ্ধ করলেন; যা বান্দার হৃদয়কে ঐ উদাসকারী প্রতিবন্ধক বিভিন্ন অপকর্ম থেকে হিফাযত করে। যেমন রোযা; যে রোযা দিনের বেলায় মানুষকে পানাহার ও যৌনাচার থেকে বিরত রাখে এবং সেই সকল স্বাদ উপভোগ থেকে বিরত থাকার প্রতিচ্ছবি হৃদয়-মুকুরে প্রতিফলিত হয়। আর তাই আল্লাহর সন্তুষ্টির দিকে অগ্রসর হতে শক্তি যোগায় এবং বান্দা সেই কুপ্রবৃত্তির বেড়ি থেকে মুক্তি লাভ করতে সক্ষম হয়; যা তাকে আখেরাত থেকে দুনিয়ার দিকে ফিরিয়ে দেয়।

বলা বাহুল্য, রোযা যেমন পানাহার ও যৌনাচার-জনিত কুপ্রবৃত্তির নানা প্রতিবন্ধক থেকে বাঁচার জন্য হৃদয়ের পক্ষে ঢালস্বরূপ। ঠিক তেমনি ই’তিকাফও বিরাট রহস্য-বিজড়িত একটি ইবাদত। ই’তিকাফ মানুষের সঙ্গে অতিরিক্ত মিলামিশার ফলে হৃদয়ে যে কুপ্রভাব পড়ে এবং অতিকথা ও অতিনিদ্রার ফলে মহান প্রতিপালকের সাথে সম্পর্কে যে ক্ষতি হয় তার হাত হতে রক্ষা করে। আর এতে কোন সন্দেহ নেই যে, অতিবন্ধুত্ব, অতিকথা এবং অতিনিদ্রার কবল থেকে মুক্তি পাওয়াতেই রয়েছে বান্দার বড় সাফল্য; যে সাফল্য তার হৃদয়কে আল্লাহর পথে অগ্রসর হতে শক্তি যোগায় এবং এর প্রতিকূল সকল অবস্থা থেকে তাকে নিরাপত্তা প্রদান করে।[7]

ই’তিকাফের প্রকারভেদঃ

ই’তিকাফ দুই প্রকার; ওয়াজেব ও সুন্নত। সুন্নত হল সেই ই’তিকাফ, যা বান্দা আল্লাহর নৈকট্য ও সওয়াব লাভের উদ্দেশ্যে রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর অনুকরণ করে সেবচ্ছায় করে থাকে। আর এই ই’তিকাফ রমাযান মাসের শেষ দশকে করাই হল তাকীদপ্রাপ্ত; যেমন এ কথা পূর্বে বলা হয়েছে।

পক্ষান্তরে ওয়াজেব হল সেই ই’তিকাফ, যা বান্দা খোদ নিজের জন্য ওয়াজেব করে নিয়েছে। চাহে তা সাধারণ নযর মেনে অথবা শর্তভিত্তিক বিলম্বিত নযর মেনে হোক। যেমন কেউ যদি বলে, আমি আল্লাহর ওয়াস্তে ই’তিকাফ করার নযর মানলাম অথবা আল্লাহ আমার রোগীকে আরোগ্য দান করলে আমি তাঁর জন্য ই’তিকাফ করব - তাহলে সে ই’তিকাফ পালন করা ওয়াজেব।

মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্য (ইবাদত) করার নযর মানে, সে যেন তা পালন করে।’’[8]

একদা উমার (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি জাহেলী যুগে মাসজিদুল হারামে এক রাত্রি ই’তিকাফ করার নযর মেনেছি। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘‘তুমি তোমার নযর পুরা কর।’’[9]

ই’তিকাফের সময়ঃ

ওয়াজেব ই’তিকাফ ঠিক সেই সময় মত আদায় করা জরুরী, যে সময় নযর-ওয়ালা তার নযরে উল্লেখ করেছে। সে যদি এক দিন বা তার বেশী ই’তিকাফ করার নযর মানে, তাহলে তাকে তাই পালন করা ওয়াজেব হবে, যা তার নযরে উল্লেখ করেছে।

আর মুস্তাহাব ই’তিকাফের জন্য কোন নির্দিষ্ট সময় নেই। এমন ই’তিকাফ নিয়ত করে মসজিদে অবস্থান করলেই বাস্তবায়ন হয়; চাহে সে সময় লম্বা হোক অথবা সংক্ষিপ্ত। মসজিদে অবস্থানকাল পর্যন্ত সওয়াব লাভ হবে। মসজিদ থেকে বের হয়ে গিয়ে পুনরায় ফিরে এসে ই’তিকাফ করার ইচ্ছা করলে নিয়ত নবায়ন করতে হবে।[10]

মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ১০ দিন ই’তিকাফ করেছেন; যেমন শেষ জীবনে তিনি ২০ দিন ই’তিকাফ করেছেন। অনুরূপ তিনি রমাযানের প্রথম দশকে, অতঃপর মধ্যম দশকে অতঃপর শেষ দশকে ই’তিকাফ করেছেন।[11]

উমার (রাঃ) তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমি জাহেলী যুগে মাসজিদুল হারামে এক রাত্রি ই’তিকাফ করার নযর মেনেছি। উত্তরে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘‘তুমি তোমার নযর পুরা কর।’’[12]

এ সব কিছু এ কথারই দলীল যে, ই’তিকাফের জন্য কোন নির্দিষ্ট সময় নেই।

যেমন ই’তিকাফ রমাযানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। কারণ, মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) উমার (রাঃ)-কে তাঁর ই’তিকাফের নযর পালন করতে অনুমতি দিলেন। আর তা ছিল রমাযান ছাড়া অন্য কোন মাসে। অতএব সুন্নত হল রমাযানে এবং বিশেষ করে কেবল তার শেষ দশকে ই’তিকাফ করা। যেহেতু শরীয়তের আহকাম রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর আমল থেকেই গ্রহণ করতে হবে। আর তিনি কাযা করা ছাড়া অরমাযানে ই’তিকাফ করেন নি। তদনুরূপ আমরা জানি না যে, সাহাবাদের কেউ কাযা ছাড়া অরমাযানে ই’তিকাফ করেছেন।

কিন্তু উমার (রাঃ) যখন ফতোয়া চাইলেন, তখন তিনি তাঁকে (অরমাযানে) ই’তিকাফের নযর পুরা করার অনুমতি দিলেন। কিন্তু তিনি উম্মতের জন্য তা সাধারণ শরয়ী নিয়ম হিসাবে ঘোষণা করে জান নি; যাতে লোকেদেরকে বলা যাবে যে, ‘তোমরা মসজিদে রমাযান-অরমাযানে যে কোন সময় ই’তিকাফ কর; এটাই হল সুন্নত।’

সুতরাং বাহ্যতঃ যা বুঝা যায় তা এই যে, যদি কোন মুসলিম অরমাযানে ই’তিকাফে বসে, তাহলে তাতে আপত্তির কিছু নেই। আর এ কথাও বলা যাবে না যে, তা বিদআত। কারণ, মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) উমার (রাঃ)-কে তাঁর ই’তিকাফের নযর পুরা করতে অনুমতি দিয়েছেন। পক্ষান্তরে যদি সে নযর মকরূহ অথবা হারাম হত, তাহলে তা পুরা করার অনুমতি দিতেন না। কিন্তু আমরা প্রত্যেকের কাছে এ চাইতে পারি না যে, সে যে কোন সময় ই’তিকাফ করবে। বরং আমরা তাকে বলব, শ্রেষ্ঠ পথনির্দেশ হল, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর পথনির্দেশ। যদি তিনি জানতেন যে, অরমাযানে বরং রমাযানের শেষ দশক ছাড়া অন্য সময়ের ই’তিকাফের কোন বৈশিষ্ট্য বা সওয়াব আছে, তাহলে তিনি আমলে পরিণত করার জন্য উম্মতের কাছে তা প্রচার করে যেতেন। অতএব আমাদের জন্য উত্তম হল রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর অনুসরণ করা।[13]

ই’তিকাফের শর্তাবলীঃ

ই’তিকাফ শুদ্ধ হওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছেঃ-

  1. ই’তিকাফকারীকে মুসলিম হতে হবে।
  2. জ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে।
  3. ভালো মন্দের বুঝ-শক্তিসম্পন্ন হতে হবে।
  4. তাতে তার নিয়ত হতে হবে। প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘যাবতীয় আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল। সুতরাং প্রত্যেক ব্যক্তির তা-ই প্রাপ্য হয়, যার সে নিয়ত করে থাকে।’’
  5. ই’তিকাফ মসজিদে হতে হবে। যেহেতু মহান আল্লাহ বলেন,

(وَلاَ تُبَاشِرُوْهُنَّ وَأَنْتُمْ عَاكِفُوْنَ فِي الْمَسَاجِدِ)

অর্থাৎ, আর মসজিদে ই’তিকাফরত অবস্থায় তোমরা স্ত্রী-গমন করো না। (কুরআনুল কারীম ২/১৮৭) বলা বাহুল্য, তিনি ই’তিকাফের স্থান হিসাবে মসজিদের কথা উল্লেখ করেছেন। অতএব মসজিদ ছাড়া অন্য কোন স্থানে ই’তিকাফ শুদ্ধ হলে আয়াতে তার উল্লেখ আসত না।[14]

অতঃপর জানার কথা যে, ই’তিকাফ ব্যাপকভাবে যে কোন মসজিদে বসেই করা যায়। কিন্তু এতে কোন সন্দেহ নেই যে, মাহাত্ম্যপূর্ণ ৩টি মসজিদ; অর্থাৎ মাসজিদুল হারাম, মাসজিদে নববী এবং মাসজিদে আকসাতে ই’তিকাফ করা সবচেয়ে উত্তম। যেমন উক্ত ৩টি মসজিদে নামায পড়া অন্যান্য মসজিদের তুলনায় বহুগুণে উত্তম।[15]

মসজিদের শর্ত হল, তাতে যেন জামাআত কায়েম হয়। অবশ্য জুমআহ কায়েম হওয়া শর্ত নয়।[16] তবে উত্তম হল জামে’ মসজিদেই ই’তিকাফ করা। যেহেতু মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) জামে’ মসজিদে ই’তিকাফ করেছেন। তাছাড়া সকল নামাযের জামাআতে নামাযী সংখ্যা তাতেই বেশী হয় এবং যাতে জুমআহ পড়ার জন্য নিজের ই’তিকাফ-গাহ ছেড়ে কোন জামে’ মসজিদে যাওয়ার জন্য বাধ্যতামূলকভাবে বের হতে না হয়।[17] পরন্তু আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘ই’তিকাফকারীর জন্য সুন্নত হল, সে কোন রোগীকে দেখা করতে যাবে না ---। আর জামে’ মসজিদ ছাড়া অন্য কোন মসজিদে ই’তিকাফ নেই।’[18]

জ্ঞাতব্য যে, মহিলার জন্য তার বাড়ির মসজিদে (যেখানে সে ৫ অক্ত্ নামায পড়ে সেখানে) ই’তিকাফ শুদ্ধ নয়। কারণ, তা আসলে কোন অর্থেই মসজিদ নয়।

  1. ই’তিকাফকারীকে (বীর্যপাত, মাসিক বা নিফাস-জনিত কারণে ঘটিত) বড় নাপাকী থেকে পবিত্র থাকতে হবে।
  2. কোন প্রকার ফিতনার আশঙ্কা না থাকলে মহিলা যে কোন মসজিদে ই’তিকাফ করতে পারে। বলা বাহুল্য, কোন প্রকার ফিতনার ভয় থাকলে মসজিদে ই’তিকাফ করতে অনুমতি দেওয়া যাবে না। কারণ, সওয়াবের কাজ করতে গিয়ে গোনাহ ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে সওয়াবের কাজ করতে বাধা দেওয়া ওয়াজেব।[19]

তদুপরি শর্ত হল, স্বামী যেন মহিলাকে সে কাজে অনুমতি দেয়। নচেৎ, তার অনুমতি না নিয়েই স্ত্রী ই’তিকাফে বসলে স্বামী ই’তিকাফ ভাঙ্গার জন্য তাকে বাধ্য করতে পারে। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের তাঁবু টাঙ্গানোর পর তিনি তাঁদেরকে ই’তিকাফ করতে বাধা দিয়েছিলেন।[20]

আর সঠিক অভিমত এই যে, ই’তিকাফের জন্য রোযা থাকা এবং সময় নির্ধারিত করা শর্ত নয়। এ কথার দলীল হল, উপর্যুক্ত উমার (রাঃ)-এর হাদীস।[21] যেহেতু তিনি রাতে ই’তিকাফ করার নযর মেনেছিলেন; অথচ রাতে রোযা হয় না।

অবশ্য ই’তিকাফের জন্য রোযা মুস্তাহাব। কেননা, মহান আল্লাহ ই’তিকাফের কথা রোযার সাথে উল্লেখ করেছেন। আর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) কাযা ছাড়া যে ই’তিকাফ করেছেন, তা রোযা রাখা অবস্থায় করেছেন। পরন্তু আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘ই’তিকাফকারীর জন্য সুন্নত হল, সে কোন রোগীকে দেখা করতে যাবে না --। আর রোযা ছাড়া ই’তিকাফ নেই।--’[22]

পক্ষান্তরে সবচেয়ে উত্তম হল রমাযানের শেষ দশকেই ই’তিকাফ করা; যেমন এ কথা পূর্বে আলোচিত হয়েছে।

ই’তিকাফ-গাহে প্রবেশ করার সময়ঃ

পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মুস্তাহাব ই’তিকাফের জন্য কোন ধরাবাঁধা সময় নেই। সুতরাং ই’তিকাফকারী যখনই মসজিদে প্রবেশ করবে এবং সেখানে অবস্থান করে আল্লাহর নৈকট্য লাভের নিয়ত করবে, তখনই সে সেখান থেকে বের না হওয়া পর্যন্ত ই’তিকাফকারী বলে গণ্য হবে। কিন্তু সে যদি রমাযানের শেষ দশকে ই’তিকাফ করতে চায়, তাহলে প্রথম (২১শের) রাত্রি আসার (২০শের সূর্য ডোবার) পূর্বে মসজিদে প্রবেশ করবে। কারণ, মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি আমার সাথে ই’তিকাফ করতে চায়, সে যেন শেষ দশকে ই’তিকাফ করে।’’[23] এখানে শেষ দশক বলতে শেষ দশটি রাতকে বুঝিয়েছেন। আর শেষ দশ রাতের প্রথম রাত হল ২১শের রাত।

পক্ষান্তরে সহীহায়নে প্রমাণিত যে, মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ফজরের নামায পড়ে তাঁর ই’তিকাফ-গাহে প্রবেশ করলেন।[24] এর অর্থ এই যে, ঐ সময় তিনি মসজিদের ভিতরে ই’তিকাফের জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় প্রবেশ করলেন। যেহেতু তিনি মসজিদের ভিতর বিশেষ এক জায়গায় ই’তিকাফ করতেন। যেমন সহীহ মুসলিমে বর্ণিত যে, তিনি পশম নির্মিত তুর্কী ছোট এক তাঁবুর ভিতরে ই’তিকাফ করেছেন।[25] কিন্তু ই’তিকাফের জন্য তাঁর মসজিদে প্রবেশ করার সময় ছিল রাতের প্রথমাংশ।[26]

যে ব্যক্তি রমাযানের শেষ দশকে ই’তিকাফ করবে, সে মসজিদ থেকে বের হবে মাসের শেষ দিনের সূর্য অস্ত যাওয়ার পর। অবশ্য কিছু সলফ মনে করেন যে, শেষ দশকের ই’তিকাফকারী ঈদের রাতটাও মসজিদে কাটিয়ে পরদিন সকালে ঈদের নামায পড়ে তবে ঘরে ফিরবে।[27]

আর যে ব্যক্তি একদিন অথবা নির্দিষ্ট কয়েক দিন ই’তিকাফ করার নযর মেনেছে, অথবা অনুরূপ নফল ই’তিকাফ করতে চায়, সে ব্যক্তি ফজর উদয় হওয়ার আগে আগে ই’তিকাফ-গাহে প্রবেশ করবে এবং সূর্য পরিপূর্ণরূপে অস্ত যাওয়ার পরে সেখান হতে বের হবে।

পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি এক রাত অথবা নির্দিষ্ট কয়েক রাত ই’তিকাফ করার নযর মেনেছে, অথবা অনুরূপ নফল ই’তিকাফ করতে চায়, সে ব্যক্তি পরিপূর্ণরূপে সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে আগে ই’তিকাফ-গাহে প্রবেশ করবে এবং স্পষ্টরূপে ফজর উদয় হওয়ার পরে সেখান হতে বের হবে।[28]

ই’তিকাফকারীর জন্য যা করা মুস্তাহাবঃ

১। ই’তিকাফকারীর জন্য বেশী বেশী নফল ইবাদত করা, নিজেকে নামায, কুরআন তেলাঅত, যিক্র, ইস্তিগফার, দরূদ ও সালাম, দুআ ইত্যাদি ইবাদতে মশগুল রাখা মুস্তাহাব; যে ইবাদত দ্বারা বান্দা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে এবং মুসলিম তার মহান সৃষ্টিকর্তার সাথে সম্পর্ক কায়েম করতে পারে।

প্রকাশ যে, শরয়ী ইল্ম আলোচনা করা, (দ্বীনী বই-পুস্তক পাঠ করা,) তফসীর, হাদীস, আম্বিয়া ও সালেহীনদের জীবনী গ্রন্থ পাঠ করা এবং দ্বীনে ইসলাম ও ফিক্হ সম্বন্ধীয় যে কোন বই-পুস্তক পাঠ করাও উক্ত ইবাদতের পর্যায়ভুক্ত।[29]

তদনুরূপ মসজিদে অনুষ্ঠিত ইলমী মজলিসেও সে অংশগ্রহণ করতে পারে। তবে উত্তম হল, বিশেষ ইবাদত দ্বারা ই’তিকাফ করা; যেমন নামায, যিক্র, কুরআন তেলাঅত প্রভৃতি। অবশ্য দিনে বা রাতে ২/১ টি দর্সে উপস্থিত হওয়া দূষণীয় নয়। কিন্তু ইলমী মজলিস যদি একটানা হতেই থাকে এবং ই’তিকাফকারীও সেই দর্সসমূহের পূর্বালোচনা ও পুনরালোচনা করতে থাকে, আর অনেক বৈঠক বা জালসায় উপস্থিত হয়ে বিশেষ ইবাদত করতে সুযোগ না পায়, তাহলে নিঃসন্দেহে তা ত্রুটির কথা। পক্ষান্তরে সাময়িক ও সবল্প দর্সে ২/১ বার হাযির হলে কোন ক্ষতি হয় না।[30]

২। ই’তিকাফকারী অপ্রয়োজনীয় ও বাজে কথা বলা থেকে দূরে থাকবে এবং তর্কাতর্কি, হুজ্জত-ঝগড়া ও গালাগালি করা থেকে বিরত থাকবে।

৩। মসজিদের ভিতরে একটি জায়গা নির্দিষ্ট করে সেখানে অবস্থান করবে। নাফে’ বলেন, ‘আব্দুল্লাহ বিন উমার মসজিদের সেই জায়গাটিকে দেখিয়েছেন, যে জায়গায় আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ই’তিকাফ করতেন।’[31]

ই’তিকাফকারীর জন্য যা করা বৈধঃ

১। অতি প্রয়োজনীয় ব্যাপারে ই’তিকাফকারী মসজিদ থেকে বের হতে পারে। যেমন ব্যক্তিগত প্রয়োজনে পানাহার করতে, পরনের কাপড় বা শীতের ঢাকা আনতে এবং পেশাব-পায়খানা করতে বের হওয়া বৈধ। তদনুরূপ শরয়ী প্রয়োজনে; যেমন নাপাকীর গোসল করতে অথবা ওযূ করতে মসজিদের বাইরে যাওয়া অবৈধ নয়।[32]

মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘(ই’তিকাফের সময়) নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ব্যক্তিগত প্রয়োজন ছাড়া ঘরে আসতেন না।’

তিনি আরো বলেন, ‘ই’তিকাফকারীর জন্য সুন্নত হল, সে কোন রোগীকে দেখা করতে যাবে না, কোন জানাযায় অংশগ্রহণ করবে না, স্ত্রী-স্পর্শ, কোলাকুলি, বা সঙ্গম করবে না, আর অতি প্রয়োজন ছাড়া মসজিদ থেকে বের হবে না।’[33]

২। মসজিদের ভিতরে ই’তিকাফকারী পানাহার করতে ও ঘুমাতে পারে। তবে মসজিদের পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার খেয়াল অবশ্যই রাখতে হবে।

৩। নিজের অথবা অন্যের প্রয়োজনে বৈধ কথা বলতে পারে।

৪। মাথা অাঁচড়ানো, লম্বা নখ কাটা, দৈহিক পরিচ্ছন্নতার খেয়াল রাখা, সুন্দর পোশাক পরা, আতর ব্যবহার করা ইত্যাদি কর্ম ই’তিকাফকারীর জন্য বৈধ।

মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ই’তিকাফ অবস্থায় নিজের মাথাকে মসজিদ থেকে বের করে হুজরায় আয়েশার সামনে ঝুঁকিয়ে দিতেন এবং তিনি মাসিক অবস্থাতেও তাঁর মাথা ধুয়ে দিতেন এবং আঁচড়ে দিতেন।[34]

৫। ই’তিকাফ অবস্থায় যদি পরিবারের কেউ ই’তিকাফকারীর সাথে মসজিদে দেখা করতে আসে, তাহলে তাকে আগিয়ে বিদায় দেওয়ার জন্য মসজিদ থেকে বের হওয়া বৈধ। সাফিয়্যাহ মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-কে দেখা করতে এলে তিনি এরূপ করেছিলেন।[35]

ই’তিকাফকারীর জন্য যা করা মকরূহঃ

ই’তিকাফকারীর জন্য কোন কিছু ক্রয়-বিক্রয় করা, অপ্রয়োজনে কথা বলা, ইবাদত মনে করে প্রয়োজনেও বিলকুল কথা না বলা ইত্যাদি মকরূহ।[36]

ই’তিকাফ যাতে বাতিল হয়ে যায়ঃ

১। অতি প্রয়োজন ছাড়া মসজিদ থেকে সামান্য ক্ষণের জন্যও ইচ্ছাকৃত বের হলে ই’তিকাফ নষ্ট হয়ে যায়। যেহেতু মসজিদে অবস্থান করা ই’তিকাফের জন্য অন্যতম শর্ত অথবা রুকন।

২। স্ত্রী-সহবাস করে ফেললে ই’তিকাফ বাতিল। কারণ মহান আল্লাহ বলেন,

(وَلاَ تُبَاشِرُوْهُنَّ وَأَنْتُمْ عَاكِفُوْنَ فِي الْمَسَاجِدِ، تِلْكَ حُدُوْدُ اللهِ فَلاَ تَقْرَبُوْهَا)

অর্থাৎ, আর মসজিদে ই’তিকাফরত অবস্থায় তোমরা স্ত্রী-গমন করো না। এ হল আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। অতএব তার নিকটবর্তী হয়ো না। (কুরআনুল কারীম ২/১৮৭)

৩। নেশা বা মস্তিষ্ক-বিকৃতির ফলে জ্ঞানশূন্য হয়ে গেলে ই’তিকাফ বাতিল হয়ে যায়। কারণ তাতে মানুষের ভালো-মন্দের তমীয থাকে না।

৪। মহিলাদের মাসিক বা নিফাস শুরু হলে ই’তিকাফ বাতিল। কারণ, পবিত্রতা একটি শর্ত।

৫। কোন কথা বা কর্মের মাধ্যমে শির্ক, কুফর করলে বা মুর্তাদ্দ্ হয়ে গেলে ই’তিকাফ বাতিল হয়ে যায়। মহান আল্লাহ বলেন,

(لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ)

অর্থাৎ, তুমি শির্ক করলে তোমার আমল পন্ড হয়ে যাবে।

(কুরআনুল কারীম ৩৯/৬৫)[37]

ই’তিকাফ ভঙ্গ এবং তার কাযা করাঃ

ই’তিকাফকারী যতটা সময় ই’তিকাফ করার নিয়ত করেছিল ততটা সময় পূর্ণ হওয়ার আগে সে তা ভঙ্গ করতে পারে। একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) তাঁর স্ত্রীদের ই’তিকাফের তাঁবু তৈরী দেখে তা ভেঙ্গে ফেলতে আদেশ করলেন এবং নিয়ত করার পরে তাঁদের সাথে নিজেও ই’তিকাফ ত্যাগ করলেন। অতঃপর তিনি সেই ই’তিকাফ শওয়াল মাসের প্রথম দশকে কাযা করেন।[38]

উক্ত হাদীস অনুসারে যে বক্তি নফল ই’তিকাফ শুরু করার পর ভঙ্গ করে তার জন্য তা কাযা করা মুস্তাহাব। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি নযরের ই’তিকাফ শুরু করার পর কোন অসুবিধার ফলে ভঙ্গ করে, সুযোগ ও সামর্থ্য হলে তার জন্য তা কাযা করা ওয়াজেব। কিন্তু তা কাযা করার পূর্বেই সে যদি মারা যায়, তাহলে তার তরফ থেকে তার নিকটবর্তী ওয়ারেস কাযা করবে।

নির্দিষ্ট মসজিদে ই’তিকাফের নযরঃ

যে ব্যক্তি মাসজিদুল হারামে ই’তিকাফ করার নিয়ত করেছে, তার জন্য অন্য মসজিদে ই’তিকাফ করা জায়েয নয়। যে ব্যক্তি মসজিদে নববীতে ই’তিকাফ করার নযর মানে, তার জন্যও সেখানেই ই’তিকাফ করা ওয়াজেব। অবশ্য সে মাসজিদুল হারামে ই’তিকাফ করতে পারে। কারণ, এ মসজিদ মসজিদে নববী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। অনুরূপ যদি কেউ মাসজিদুল আকসাতে ই’তিকাফ করার নযর মানে, তার জন্য উক্ত তিনটি মসজিদের যে কোন একটিতে ই’তিকাফ পালন করা ওয়াজেব।

পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি উক্ত তিনটি মসজিদ ছাড়া অন্য মসজিদে ই’তিকাফ করার নযর মানে, তার জন্য ঐ মসজিদে তা পালন করা জরুরী নয়। বরং ইচ্ছামত সে যে কোন মসজিদে ই’তিকাফ করতে পারে। যেহেতু মহান আল্লাহ তাঁর ইবাদতের জন্য কোন নির্দিষ্ট জায়গা নির্বাচন করেন নি। আর যেহেতু উক্ত তিনটি মসজিদ ছাড়া অন্যান্য মসজিদগুলোর পারস্পরিক কোন পৃথক মর্যাদা নেই।[39]

পরিশেষে ব্রাদারানে ইসলাম! এই মৃতপ্রায় সুন্নতকে জীবিত করার জন্য, এর কথা নিজ পরিবার-পরিজন ও ভাই-বন্ধুদের কাছে প্রচার করার জন্য যত্নবান হন। প্রচার ও পালন করুন নিজ সমাজ ও জামাআতের মসজিদে। অবশ্যই আল্লাহ আপনাদেরকে ই’তিকাফের সওয়াবের সাথে সাথে তাদের ই’তিকাফের সওয়াবও দান করবেন, যারা আপনার অনুসরণ করে তা পালন করবে।

[1] (দ্রঃ ফিকহুস সুন্নাহ, সাইয়েদ সাবেক ১/৪১৯, আহকামুস সাওমি অল-ই’তিকাফ, আবূ সারী মঃ আব্দুল হাদী ১৯১পৃঃ, তাযকীরু ইবাদির রাহমান, ফীমা অরাদা বিসিয়ামি শাহরি রামাযান, ইয়াকূব বিন ইউসুফ ২৬পৃঃ)

[2] (বুখারী ২০৪৪নং)

[3] (বুখারী ২০৪১, মুসলিম ১১৭৩নং)

[4] (বুখারী ২০২৬, মুসলিম ১১৭২নং)

[5] (বুখারী ২০১৬, মুসলিম ১১৬৭নং)

[6] (বুখারী ৫২, মুসলিম ১৫৯৯নং)

[7] (দুরুসু রামাযান অকাফাত লিস্-সায়েমীন ৭৬-৭৭পৃঃ)

[8] (বুখারী ৬৬৯৬নং, সুনানে আরবাআহ; আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ)

[9] (বুখারী ২০৩২নং)

[10] (ফিকহুস সুন্নাহ ১/৪২০)

[11] (বুখারী ২০১৬, মুসলিম ১১৬৭নং)

[12] (বুখারী ২০৩২নং)

[13] (দ্রঃ আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/৫০৬-৫০৮)

[14] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/৫০২, ফিকহুস সুন্নাহ ১/৪২১)

[15] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/৫০৫)

[16] (ঐ ৬/৫১১)

[17] (ফিকহুস সুন্নাহ ১/৪২১, তাযকীরু ইবাদির রাহমান, ফীমা অরাদা বিসিয়ামি শাহরি রামাযান ২৬পৃঃ)

[18] (সহীহ আবূ দাঊদ, আলবানী ২১৬০নং)

[19] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/৫১১)

[20] (বুখারী ২০৩৩, মুসলিম ১১৭২নং)

[21] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/৫০৯, কাইফা নাঈশু রামাযান ২৫পৃঃ)

[22] (সহীহ আবূ দাঊদ ২১৬০নং)

[23] (বুখারী ২০২৭নং)

[24] (বুখারী ২০৪১, মুসলিম ১১৭৩নং)

[25] (মুসলিম ১১৬৭নং)

[26] (ফিকহুস সুন্নাহ ১/৪২২, দুরুসু রামাযান অকাফাত লিস্-সায়েমীন ৮০পৃঃ)

[27] (ফিকহুস সুন্নাহ ১/৪২৩, আহকামুস সাওমি অল-ই’তিকাফ, আবূ সারী মঃ আব্দুল হাদী ২০১পৃঃ)

[28] (ঐ)

[29] (ফিকহুস সুন্নাহ ৪/৪২৩)

[30] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/৫০৩, ৫২৯)

[31] (মুসলিম ১১৭১নং)

[32] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/৫২৩)

[33] (সহীহ আবূ দাঊদ ২১৬০নং)

[34] (বুখারী ২০২৮, ২০৩০, মুসলিম ২৯৭নং)

[35] (বুখারী ২০৩৫, মুসলিম ২১৭৫নং)

[36] (ফিকহুস সুন্নাহ ১/৪২৪, কাইফা নাঈশু রামাযান ২৬-২৭পৃঃ)

[37] (ফিকহুস সুন্নাহ ১/৪২৬, কাইফা নাঈশু রামাযান ২৭পৃঃ, আহকামুস সাওমি অল-ই’তিকাফ, আবূ সারী মঃ আব্দুল হাদী ২০৫পৃঃ)

[38] (বুখারী ২০৩৩, মুসলিম ১১৭৩নং)

[39] (ফিকহুস সুন্নাহ ১/৪২৮, কাইফা নাঈশু রামাযান ২৮পৃঃ)