পানাহার বলতে পেটের মধ্যে যে কোন প্রকারে কোন খাদ্য অথবা পানীয় পৌঁছানোকে বুঝানো হয়েছে; চাহে তা মুখ দিয়ে হোক অথবা নাক দিয়ে, পানাহারের বস্ত্ত যেমনই হোক; উপকারী বা উপাদেয় হোক অথবা অপকারী বা অনুপাদেয়, হালাল হোক অথবা হারাম, অল্প হোক অথবা বেশী।

বলা বাহুল্য, (বিড়ি, সিগারেট, গাঁজা প্রভৃতির) ধূমপান রোযা নষ্ট করে দেয়; যদিও তা অপকারী, অনুপাদেয় ও হারাম পানীয়।

প্লাস্টিক বা কোন ধাতুর মালা গিলে ফেললে রোযা নষ্ট হয়ে যাবে; যদিও তা পেটে গেলে দেহের কোন উপকার সাধন হবে না। তদনরূপ যদি কেউ কোন অপবিত্র বা হারাম বস্ত্ত ভক্ষণ করে, তাহলে তারও রোযা নষ্ট হয়ে যাবে।[1]

পানাহারে রোযা নষ্ট হওয়ার মূল ভিত্তি হল মহান আল্লাহর এই বাণী,

(وَكُلُوْا وَاشْرَبُوْا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ)

অর্থাৎ, আর তোমরা পানাহার কর, যতক্ষণ পর্যন্ত না (রাতের) কালো অন্ধকার থেকে ফজরের সাদা রেখা তোমাদের নিকট স্পষ্ট হয়েছে। (কুরআনুল কারীম ২/১৮৭)

সুতরাং ফজর উদয় হওয়ার আগে পর্যন্ত মহান আল্লাহ রোযাদারের জন্য পানাহার বৈধ করেছেন। অতঃপর তিনি রাত পর্যন্ত রোযা রাখার আদেশ দিয়েছেন। আর তা হল রোযা নষ্টকারী জিনিস থেকে বিরত থাকার নাম। তিনি বলেন,

(ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ)

অর্থাৎ, অতঃপর তোমরা রাত পর্যন্ত রোযা পূর্ণ কর। (কুরআনুল কারীম ২/১৮৭) অর্থাৎ, মাগরেব পর্যন্ত।

আর মহান আল্লাহ (হাদীসে কুদসীতে) বলেন, ‘‘সে আমার (সন্তুষ্টি লাভের) আশায় নিজের প্রয়োজনীয় পানাহার ও যৌনাচার পরিহার করে।’’[2]

সুতরাং যে সেবচ্ছায় পানাহার করবে তার রোযা নষ্ট হয়ে যাবে। সে গোনাহগার হবে, বিধায় তার জন্য তওবা ওয়াজেব এবং কাযাও। অবশ্য এর জন্য কোন কাফ্ফারা নেই। তবে ইচ্ছা করে কেউ রোযা নষ্ট করার পর তা কাযা করলেও তা কবুল হবে কি না -তা নিয়ে মতভেদ আছে।

[1] (দ্রঃ আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/৩৭৯, সামানিয়া ওয়া আরবাঊন সুআলান ফিস্-সিয়াম ১৪পৃঃ)

[2] (বুখারী ১৮৯৪, মুসলিম ১১৫১নং)