পুত্র পোষার মত জামাই পোষার রেওয়াজও একান্ত নিরুপায় বা শখের ক্ষেত্রে কোন কোন লোকে মেনে থাকে। আর সাধারণতঃ কোন নিরুপায় অথবা আদরলোভী যুবকই ঘর-জামাই গিয়ে থাকে। অবশ্য ইসলামের নীতি হল, স্বামী তার স্ত্রী নিজের কাছে রাখবে। অর্থাৎ স্ত্রীর ভরণ-পোষণ ও বাসস্থানের দায়িত্ব স্বামীর উপর।[1]
এর বিপরীত হলে সাধারণতঃ ফলও বিপরীত হয়। অর্থাৎ দ্বীনদারী না থাকলে অথবা কম থাকলে স্ত্রীই স্বামী সেজে বসে। তাছাড়া একজন গরীব লোক যদি ধনীর মেয়ে বিয়ে করে এবং তারই বাসস্থান ও ভরণ-পোষণে স্বামী অনুগৃহীত হয়, তাহলে সে স্ত্রী পায় না বরং পায় একজন শাসক। আর তখন সেই জামাইয়ের অসম্মান, অনাদর ও অশান্তির কথা সীমা অতিক্রম করে যায়। সমাজে ঘর-জামাই প্রসঙ্গে যে সকল প্রবাদ প্রচলিত আছে তা এ কথারই বাস্তবতা প্রমাণ করে।
যেমন বলা হয়, ‘ঘর-জামায়ের মান নাই।’
‘ঘর-জামাইরাই বদ হয়।’
‘ঘর-জামাই উড়নচন্ডেই হয়। কারণ, ধন-মাল তার নিজের কামাই নয় তো।’
‘আহমক নম্বর ছয়,
যে পরের বাড়ি ঘর জামাই রয়।’
‘কালো বামন, কটা শুদ্র, বেঁটে মুসলমান,
ঘর-জামাই পোষ্যপুত্র পাঁচজনাই সমান!’
‘ঘর জামায়ের পোড়ার মুখ,
মরা-বাঁচা সমান সুখ!’
‘বাইরের জামাই নুরুল আলম, ঘরের জামাই নুরো,
ভাত খেয়ে নাও নুরুল আলম, ভাত খেসেরে নুরো!’
‘রুয়ের মুড়ো কাষ্ঠ মুড়ো দাও আমার পাতে,
আড়ের মুড়ো ঘৃত মুড়ো দাও জামায়ের পাতে!’
‘যা ছিল আমানী-পান্তা মায়ে-ঝিয়ে খেনু,
ঘর-জামাই শামুর তরে ধান শুকাতে দিনু!’
সুতরাং এমন সংসারে যে সুখ নেই তা বলাই বাহুল্য।