বরযাত্রীর অর্ধেক সংখায় কনেযাত্রী আসে বরের বাড়ি কনে-জামাই নিতে। অপ্রয়োজনে কনের বাপও এর মাধ্যমে বহু কুটুমের মান রক্ষা বা বর্ধন করে থাকে। যাই বা হোক বরের বাপের কাছে হাফ প্রতিশোধ তো নেওয়া হয়!

কোন কোন অঞ্চলে নববধূর মাতৃলয় যাত্রার পূর্বের রাত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়কে অনুষ্ঠান করে ‘চৌথী গোসল’ দেওয়া হয়। অতঃপর স্বামী তার স্ত্রীকে কোলে তুলে কোন ঘরে প্রবেশ করতে চাইলে বখশিশের লোভে দরজা আগলে দাঁড়ায় স্বামীর কিংবা স্ত্রীর কোন উপহাসের (?) পাত্র বা পাত্রী। বখশিশ পেলে তবেই দরজা ছাড়া হয়!

বিদায়ের পূর্বে বধূ সকলের হাতে মিষ্টি, চিনি বা (পিতৃলয় হতে আসা) গুড় বিতরণ করে। এতে সে নাকি সকলের কাছে মিষ্টি-মধুর হয়ে সংসার করতে পারে! অতঃপর এগানা-বেগানা সকলের পা স্পর্শ করে অথবা সালাম মুসাফাহা করে বিদায় ও দুআ নেয়। অনেক বৃদ্ধ-বৃদ্ধা পায়ে সালাম নেওয়ার সময় ‘আল্লাহকে সালাম কর মা’ ব’লে থাকে। কিন্তু তা যে হারাম, তা কেউ তাকে জানায় না। বরং না করলে বধূর বেআদবীর চর্চা হয়ে থাকে!

অতঃপর কনে সহ জামাই শ্বশুর বাড়িতে গেলে প্রথম সাক্ষাতে শালী বা শালাজদের তরফ হতে মজাকের এক কঠিন পরীক্ষার আপ্যায়ন গ্রহণ করতে হয়। ‘ট্রে’-তে উবুড় করা গ্লাসে শরবত-পানি, তা জামাইকে সিধা করে পান করতে হয়। অথবা লবণ, চিনি ও সাদা পানির রঙিন শরবত; তাকে সঠিক শরবত চিনে খেতে হয়! এখান হতেই শুরু হয় উপহাসের পাত্র-পাত্রীদের সামনা-সামনি হাসি-আমোদ ও মান-অপমানের মাধ্যমে পরিবেশ নোংরা করার পালা। যে উপহাস স্বামী-স্ত্রীতে করলে বুড়িরা বলে, ‘ছিঃ ছিঃ একেবারে বউ পাগলা! কথায় বলে, দিনে ভাশুর আর রাতে পুরুষ!’

এরপর শুরু হয় অষ্টমঙ্গলা। অষ্টমঙ্গলার সাজ-পোশাক নিয়ে রাগ-অনুরাগ। অনুরূপ ন’দিন, হলুদ মঙ্গলা, ঢেঁকি মঙ্গলা, বাদগস্তি, খ্যান প্রভৃতি বিজাতীয় আচার ও অনুষ্ঠান!

এ ছাড়া রয়েছে হানিমুন ও বিবাহ-বার্ষিকী পালন---যা পাশ্চাত্য সভ্যতার অনুকরণে তথাকথিত সভ্যশ্রেণীর মানুষেরা ক’রে অর্থের অপচয় ঘটিয়ে থাকে। প্রিয় নবী (ﷺ) বলেন,

مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ.

‘‘যে ব্যক্তি যে জাতির অনুরূপ আচরণ ক’রে থাকে, সে ব্যক্তি সেই জাতিরই দলভুক্ত।’[1]

[1] (ফাতাওয়াল মারআহ ৫০পৃঃ, ফাতাওয়া ইবনে উসাইমীন ২/৭৫৯)